
তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর ভরসা অন্তরের বিষয়। কাজকর্মের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা অর্জনের জন্য আল্লাহতায়ালা যে পথ নির্ধারিত করে দিয়েছেন, তা অবলম্বন করতে হবে। ভালো অর্জনের জন্য এবং মন্দ থেকে বাঁচার জন্য তাঁর নির্দেশিত পথেই চলতে হবে। কর্মহীন বসে থাকার কথা তিনি বলেননি। না দুনিয়ার ব্যাপারে; না আখেরাতের ব্যাপারে।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে আল্লাহতায়ালার ওপর অধিক ভরসাকারী আর কে আছে? তারপর সাহাবায়ে কেরাম। কিন্তু তারা আখেরাতের মুক্তি ও সফলতা অর্জনের জন্য পুরো জীবন আল্লাহর বিধান মোতাবেক চলেছেন। নামাজ পড়েছেন, রোজা রেখেছেন, জাকাত দিয়েছেন, হজ করেছেন, দান-সদকা করেছেন এবং আল্লাহর সব বিধান পালন করেছেন। তবে এসবের পেছনে তাদের বিশ্বাস ছিল, এগুলোই আমাকে মুক্তি দেবে না। মুক্তি দেবেন আল্লাহতায়ালা। তাঁর রহমতের ওপরই আমাদের ভরসা। আমি শুধু চেষ্টা করছি। এই চেষ্টা তাঁরই আনুগত্য, তাঁর কাছ থেকে মুক্তি লাভের আকুতি। আশা একটাই, তিনি আমাকে নাজাত দেবেন। ঠিক দুনিয়ার বিষয়েও মুমিনের ভরসা থাকবে আল্লাহর ওপর। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো...।’ (সুরা জুমা, আয়াত : ১০)
আরও পড়ুন: স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব
আল্লাহতায়ালা আদেশ করেছেন তাঁর ওপর ভরসা করার, আবার তিনিই আদেশ করেছেন নামাজ শেষে ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ার। এর তাৎপর্য হলো, মানুষ তার সাধ্য অনুযায়ী কাজ করবে, কিন্তু বিশ্বাস থাকবে আল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর। আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্ম ও উপকরণে; আর অন্তর আল্লাহর সঙ্গে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে কর্ম করছি আর অন্তরে ভরসা পোষণ করছি আল্লাহর ওপর। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বিচক্ষণ ওই ব্যক্তি, যে নিজের কর্মের হিসাব নেয় এবং মৃত্যুর পরের জন্য আমল করে। অক্ষম ওই ব্যক্তি, যে প্রবৃত্তির অনুসারী কিন্তু আল্লাহতায়ালা সম্পর্কে অলীক আশা পোষণ করে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৪৫৯)
লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক