![অনলাইনে পর্যটন সেবায় এগিয়ে গোযায়ান](uploads/2024/02/08/1707372387.porjo-jab.jpg)
দেশের পর্যটন খাতের সমস্যা ও এর সম্ভাবনা নিয়ে খবরের কাগজ কথা বলেছে অনলাইন ট্রাভেলসবিষয়ক প্রতিষ্ঠান গোযায়ানের ব্যবস্থাপক (বিপণন) সাবিক মাহমুদ খানের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারজানা লাবনী।
খবরের কাগজ: পর্যটন এগিয়ে নিতে আপনার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
সাবিক মাহমুদ: ভ্রমণের সময় পর্যটকদের অভিজ্ঞতাকে স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ করাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। মানুষ ঘুরতে বা কোনো কাজের জন্য দেশের ভেতর বা দেশের বাইরে যেতে চাইলে বিশ্বস্ত কোনো মাধ্যম পেত না। ইন্টারনেট ব্যবহারে সীমাবদ্ধতার কারণে সব ধরনের তথ্য পাওয়াও সম্ভব ছিল না। সেক্ষেত্রে ফ্লাইট, হোটেল এবং ট্যুর সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য এবং সেবা গোযায়ান একটা অনলাইন প্ল্যাটফরমের আওতায় নিয়ে এসেছে। গোযায়ানের উদ্দেশ্য হলো অনলাইন প্ল্যাটফরম ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্রমণপিপাসুদের ভ্রমণকে আরামদায়ক করা।
খবরের কাগজ: এসব পদক্ষেপের ফলে কী সুফল মিলছে?
সাবিক মাহমুদ: গোযায়ান পর্যটন খাতকে প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত করে ভ্রমণসংক্রান্ত সব তথ্যকে পর্যটকদের হাতের নাগালে নিয়ে এসেছে। এতে করে একটা ভ্রমণ পরিকল্পনা করার জন্য পর্যটকদের সময় অপচয় কম হচ্ছে। পর্যটন খাতে প্রযুক্তিগত এই পরিবর্তন একটি সময়োপযোগী পরিবর্তন বলে আমরা মনে করি। ঘরে বসে নিজেই যাচাই করে বুকিং করতে পারা পর্যটকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করছে এবং তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে নিজেরাই স্বচ্ছ একটা ধারণা পাচ্ছে।
খবরের কাগজ: দেশে বিদেশে ঘুরতে গেলে আপনার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা করা হয়?
সাবিক মাহমুদ: গোযায়ানের অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ডোমেস্টিক এবং ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটের সব ধরনের তথ্যই রয়েছে। গোযায়ান থেকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বা সব উদ্দেশ্যেই ফ্লাইট বা হোটেল বুকিং করা যাবে। আমাদের প্ল্যাটফরম থেকে বুকিং করতে গেলে পর্যটকরা ফ্লাইট বা হোটেল যেটাই হোক তার বিস্তারিত সব রকমের তথ্য এমনকি ছবিও পেয়ে যাবেন।
সেক্ষেত্রে একজন কাস্টমার সব কিছু জেনে তার বুকিং করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কেউ যদি নিজের মতো করে কোনো ট্যুর প্ল্যান করতে চায়, সব তথ্য দিয়ে দিলে গোযায়ানের প্ল্যাটফর্ম থেকে সেটিও করা যাবে। এই দিকটি মাথায় রেখে গোযায়ান দেশের বিভিন্ন ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এতে করে দেশের ভেতর ঘোরাঘুরি অনেকটাই ঝামেলামুক্ত হয়েছে। আরও সুবিধার কথা বলতে গেলে দেশের সব বড় বড় ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে সাধারণ মানুষের মনে পেমেন্ট সংক্রান্ত দুশ্চিন্তাগুলোও অনেকাংশে কমে এসেছে।
খবরের কাগজ: আপনার দৃষ্টিতে বর্তমানে পর্যটন খাতের সমস্যাগুলো কী?
সাবিক মাহমুদ: পর্যটন খাতে সমস্যার কথা বলতে গেলেই সচেতনতার ব্যাপারটা চলে আসে। মানুষ এখনো ভ্রমণে গেলে তাদের কী কী সুযোগ-সুবিধা থাকতে পারে তা নিয়ে খুব একটা জানেন না। আবার ভ্রমণ করার আগ্রহ থাকলেও অনলাইন বুকিংয়ের ব্যাপারে এখনো অনেকেই ইতস্তত বোধ করে। অনলাইন বুকিংয়ে পর্যটকদের অভ্যস্থ করা এক্ষেত্রে খুবই জরুরি। কাস্টমারদের এই ভরসার জায়গা হওয়ার জন্য গোযায়ান প্রতিনিয়ত তৎপরতা চালিয়ে থাকে।
খবরের কাগজ: এসব সমস্যার সমাধানে সরকারের কাছে আপনারা কী চান?
সাবিক মাহমুদ: এক্ষেত্রে আমাদের যে ব্যাপারটা সাহায্য করতে পারে সেটি হবে সাধারণ মানুষকে প্রযুক্তির প্রতি আরও নির্ভরশীল হতে উদ্বুদ্ধ করা। সরকার থেকে এমন সচেতনতামূলক উদ্যোগ পর্যটন খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে বলে আমরা মনে করি। তার পাশাপাশি দেশের ভেতরের পর্যটনকেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির জন্যও সরকার কিছু উদ্যোগ নিতে পারে।
খবরের কাগজ: আমাদের দেশে পর্যটন খাতের সম্ভাবনা কেমন?
সাবিক মাহমুদ: আমরা মনে করছি আমাদের দেশের মানুষ আস্তে আস্তে ভ্রমণকে তাদের নিত্যদিনের অংশ করে নিচ্ছে। ভ্রমণ এখন শুধু উচ্চবিত্তদের জন্য বললে ভুলই হবে। সবাই চায় বছরে একবার হলেও পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে দেশে বা দেশের বাইরে ঘুরতে যাবে। পর্যটকদের ভ্রমণের পরিধিও এতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে গোযায়ান সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তাই বলা যায় আমাদের দেশে পর্যটন খাতের সম্ভাবনা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
কলি