টানা ঈদ ও বাংলা নববর্ষের ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসবেন চা বাগান, হাওর আর টিলাবেষ্টিত শ্রীমঙ্গলে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন পর্যটনসংশ্লিষ্টরা। তাই পর্যটকদের বরণ করতে সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেছেন তারা।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে শ্রীমঙ্গলের বেশীরভাগ হোটেল-রিসোর্ট-কটেজের রুমগুলো বুকিং হয়ে গেছে। বাকিগুলোও আগামী ১-২ দিনের মধ্যে বুকিং হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তারা।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোন।
ইট-কাঠের যান্ত্রিক শহরের কোলাহল থেকে সবুজে ঘেরা শ্রীমঙ্গলে ক্লান্তি দূর করতে এই ছুটিতে লাখো পর্যটকের সমাগম হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চা বাগান, হাইল হাওর, বাইক্কা বিল, চা কন্যার ভাস্কর্য, রমেশ রাম গৌড়ের আবিষ্কৃত সাত রঙের চা, বধ্যভূমি ৭১, বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র, রাবার বাগান, গোল টিলা, হজম টিলা, সীতেশ বাবুর বন্যপ্রাণী সেবাকেন্দ্র, খাসিয়া পুঞ্জি, মনিপুরী সম্প্রদায়ের তাঁতশিল্প, গারোপল্লী, ভাড়াউড়া লেক, শংকর টিলাসহ শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখতে প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা শ্রীমঙ্গলে আসেন।
এ ছাড়াও শ্রীমঙ্গলের পার্শ্ববর্তী উপজেলা কমলগঞ্জে অবস্থিত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এবং মাধবপুর লেকও ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে।
পর্যটনকল্যাণ পরিষদ শ্রীমঙ্গলের আহ্বায়ক কুমকুম হাবিবা বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে পর্যটক বরণে আমরা ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। রমজানের বন্ধের সুযোগে কমবেশি সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, কটেজের মালিকরা তাদের প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সাজিয়েছেন। রিসোর্টগুলোর উচ্চ বাজেটের রুমগুলো প্রায় সবই ভাড়া হয়ে গেছে। মধ্যম বাজেটের রুমগুলো এখনও কিছু বুকিং বাকি আছে। আশাকরি এগুলোও খালি থাকবে না।’
বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের শ্রীমঙ্গল শাখার সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে এবার আমাদের ট্যুর অপারেটরদেরও ব্যস্ত বেড়েছে। এবারের ঈদকে সামনে রেখে আমরা বেশ কিছু প্যাকেজ বিক্রি করতে পেরেছি, আশা করছি ঈদের আগে আরও কিছু পর্যটক ভ্রমণ প্যাকেজ নেবে।’
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমেদ বলেন, ‘পর্যটকরা প্রতি বছর ঈদের সময়টাতে চায়ের রাজধানীখ্যাত শ্রীমঙ্গলে সপরিবারে ঘুরতে আসেন। আমরাও প্রতিবছর সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করি। প্রতি বছরের মত এবারও আমরা পর্যটকদের বরণ করার জন্য মুখিয়ে আছি।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন খবরের কাগজকে বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় সকল প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর লেকে আমাদের দুটি দল থাকবে। পাশাপাশি আরও দুটি ভ্রাম্যমাণ দল শহরজুড়ে থাকবে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়ও আমরা থাকব। জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। কোনো পর্যটক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে আমাদের বিশেষ নজর থাকবে।
হৃদয় শুভ/সাদিয়া নাহার/অমিয়/