ঢাকা ৩ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিশুরাই হবে আসল স্মার্ট, তারাই দেশ চালাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম
শিশুরাই হবে আসল স্মার্ট, তারাই দেশ চালাবে: প্রধানমন্ত্রী
শনিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিমডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন ও ‘এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: খবরের কাগজ।

শিশুরাই হবে আসল স্মার্ট, তারাই দেশ চালাবে, এখন থেকে সবাইকে সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৬ জুলাই) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিমডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন ও ‘এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব। ভবিষ্যতে শিশুরাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে। শিশুরাই হবে আসল স্মার্ট। তারাই দেশ চালাবে। আমরা এক সময় চাঁদেও যাব, সবাইকে এখন থেকে সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে, পড়াশোনা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই উদ্যোগের ফলে ছোট শিশুরা স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের অর্জন সম্পর্কে জানতে পারবে। আমাদের দুর্ভাগ্য ৭৫-এর পর ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। মানুষের জানা উচিত কীভাবে স্বাধীনতা পেলাম। স্বাধীনতার পর যে কাজগুলো সেগুলোও জানতে হবে। জাতির পিতা ছোটবেলা থেকেই সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন। মানুষের জন্য তার আলাদা দরদ ছিল।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু নিজের সুখ-শান্তি দেখেননি, মানুষের জন্যই কাজ করেছেন। লক্ষ্য ছিল কীভাবে মানুষকে উন্নত জীবন দেবেন, কীভাবে ছোট্ট শিশুরা সুন্দর জীবন পাবে। ছোট সোনামণিদের জন্য দোয়া রইলো।’

দুই দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকা দিয়ে তাকে স্বাগত জানায় এবং শিক্ষার্থী লাবণ্য ও মোহাইমিন ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেয়। 

বেলা ১১টার দিকে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন ও এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি’ শীর্ষক অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।
এ সময় তিনি বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন। অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক। 

এরপর শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করে গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতার স্মৃতিবিজরিত ছবি দিয়ে সাজানো গ্যালারি পরিদর্শন করেন। শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজ খবর নেন ও কিছুক্ষণ সময় কাটান।

বেলা সাড়ে ১১টায় টুঙ্গিপাড়া শেখ রাসেল পৌর শিশু পার্ক পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর দুপুর ১২টার দিকে টুঙ্গিপাড়া মাল্টিপারপাস পৌর সুপার মার্কেট পরিদর্শন করেন তিনি। 

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর চাচা শেখ কবির হোসেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাজমা আক্তার, প্রধানমন্ত্রীর আসনের উন্নয়ন প্রতিনিধি মো. শহীদ-উল্লা-খন্দকার, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম, পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. বাবুল শেখ, পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, গিমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসানসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে কর্মসূচী শেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন। সেখান থেকে পূর্ব নির্ধারিত সফরসূচি সংক্ষিপ্ত করে দুপুর ১টা ৪৪ মিনিটে সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।

বাদল সাহা/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

সাবেক ২ এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২১ পিএম
সাবেক ২ এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত
দুর্নীতি দমন কমিশন

অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খানের (দিলীপ) অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুদক উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুর্নীতি বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। 

সূত্র জানায়, বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নিজ নামে বরিশালের আগরপুর রোড, রূপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দায়, ঢাকার নলটোনা, বরগুনার পাথরঘাটায় মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। বরগুনার কাঁঠালতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫৮ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে। তার নিজ নামে ব্যবসার পুঁজি রয়েছে ১৫ কোটি ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ৪৬ লাখ টাকার অন্যান্য বিনিয়োগ রয়েছে। নিজ নামে ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো, মাইক্রো বাস, টয়োটা প্রিমিও কারসহ ৩টি গাড়ি, স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ও নগদ ১৮ লাখ ৫০ হাজার ৫৪০ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে দুদকে গোয়েন্দা ইউনিট। 

এদিকে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান (দিলিপ) দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। ২০২৩-২৪ করবর্ষে স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮০০ টাকা ও নিজ নামে ৮ কোটি ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৭ টাকাসহ মোট ৮ কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার ৬৩৭ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। যার মধ্যে নিজ নামে নগদ ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৫ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা করা অর্থ ৪ কোটি ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৯৮৫ টাকা। সঞ্চয়পত্র ২ কোটি ২০ লাখ টাকা, নিজ নামে ৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১টি এলিয়ন গাড়ি, নিজ নামে ল্যান্ডক্রুজার, ডাম্পট্রাক, কার ও জাহাজ রয়েছে। দেশে-বিদেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। 

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকা অনুদান

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ পিএম
জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকা অনুদান
জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ ১০০ কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা জানান ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। শহিদ মুগ্ধের যমজ ভাই স্নিগ্ধ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। আন্দোলন দমনে কঠোর হয় গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকার। সেই আন্দোলনে যেসব মানুষ শহিদ হয়েছেন এবং যারা গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’।”

তিনি আরও বলেন, ‘এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সাতটি উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মধ্যে একটি উদ্যোগ হচ্ছে, আন্দোলনে অংশ নিয়ে যারা আহত হয়ে অর্থসংকটে ভুগছেন এবং যারা নিহত হয়েছেন– তাদের জরুরি আর্থিক সহায়তা, এককালীন একটি ভাতা ও মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। এটা এই সপ্তাহেই আমরা শুরু করব।’

ফাউন্ডেশনের প্রতি সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ সরকারের পক্ষ থেকে চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা যারা দেশে বিদেশে আছেন এই ফাউন্ডেশনে অনুদান দেবেন।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এরই মধ্যে সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আহতদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। এ বিষয়ে আমরা হাসপাতালগুলোর সঙ্গে কাজ করছি। একই সঙ্গে এরই মধ্যে যেসব আহত আন্দোলনকারী নিজেদের অর্থ ব্যয় করেছেন চিকিৎসার জন্য সেসব অর্থ তাদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা আহত এবং নিহত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনেও কাজ করছি।’

‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর সভাপতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেক্রেটারি আন্দোলনে শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। এ ছাড়া কাজী ওয়াকার আহমেদ কোষাধ্যক্ষ, উপদেষ্টাদের মধ্যে আছেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, নূরজাহান বেগম ও শারমিন মুর্শিদ। এতে আরও ১৪ জন সাধারণ সদস্য রয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল ফাউন্ডেশনের সদস্যরা বৈঠকে বসবেন। পরবর্তী করণীয় ঠিক করে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সহযোগিতা করার কাজ শুরু করা হবে।’



বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম
বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ-সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক এ প্রতিশ্রুতি দেন। 

তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য ২০০  কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এই অর্থ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সহায়তা করা হবে।’

জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে- এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।’

নতুন ঋণ-সহায়তার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটি সরকারের চলমান প্রকল্পে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলারের তহবিল পুনর্বিন্যাসের কথা বলেছে।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান জানান, অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহজ শর্তের ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেবে, যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে।

সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’ হবে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, প্রতিবছর যে ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন, তারাও এর সুফল পাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরক্টেরকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা যে নতুন যাত্রার সূচনা করেছি, তাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলগুলোর শর্তে নমনীয় হতে হবে।’

তিনি এই বহুপক্ষীয় ঋণ প্রদানকারী সংস্থাকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘আমাদের ধ্বংসাবশেষ থেকে নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন এবং ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসন আমলে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে তিনি বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাংকের কাছে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার মতো প্রযুক্তি রয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশে দুর্নীতিকে শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে দক্ষতার প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহায়তা করতে সম্মত হন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পারলে খুশি হব।’

আবদৌলায়ে সেক জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা বর্ণিল গ্রাফিতি ও ম্যুরাল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘৩০ বছরের চাকরিজীবনে অন্য কোথাও এমন দেখিনি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের ক্ষমতায়ন করতে হবে।’

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৭২

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৭২
ডেঙ্গু

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮৭২ জন। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১১৩ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ২১৩ জন।

এর আগের ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত রবিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৬৭ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১১৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৯১, খুলনা বিভাগে ১০ জন রয়েছেন। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

শেখ হাসিনার নামে সারা দেশে ১৮১ মামলা

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
শেখ হাসিনার নামে সারা দেশে ১৮১ মামলা
শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এর কয়েক দিন পর থেকে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে সারা দেশে ১৮১টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬০টিই হত্যা মামলা। হত্যা মামলাগুলোতে শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত, রাজধানীর বিভিন্ন থানা এবং ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে মামলাগুলো করেছেন আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারের স্বজনরা।

মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ, ছাত্রলীগের নেতা তানভীর হাসান সৈকত, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান প্রমুখ।

এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক তিন আইজিপিসহ ৮৮ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক তিন আইজিপি, সাবেক দুই ডিএমপি কমিশনার ও র‍্যাবের সাবেক দুই ডিজি, এসবি সাবেক প্রধান ও সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া প্রমুখ। আসামি করা হয়েছে ১১ জন ডিআইজি ও ১৪ জন এসপিকেও। তা ছাড়া ১৬ জন এডিসি, ৬ জন সহকারী কমিশনার (এসি) ১৩ জন ওসি, ৯ জন পুলিশ পরিদর্শক, ১৩ জন এসআই, ১ জন এএসআই ও ৩ জন পুলিশ কনস্টেবলকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ৩৭টি, সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ৭টি, ডিবিপ্রধান হারুনের বিরুদ্ধে ৩৮টি এবং সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে মঙ্গলবারও শেখ হাসিনার নামে চারটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনটি হত্যা মামলা হয়। আদালত মামলার বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং আবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর মডেল থানার পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। অন্য মামলাটি করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে আহত মো. জাহাঙ্গীর নামে এক ভুক্তভোগী। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মামলাটি করেন তিনি।