
চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফেসবুক লাইভে এসে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া মো. সাজ্জাদ ওরফে ছোট সাজ্জাদকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তিনি এখনো রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ছাড়া তিনি এখনো অনেককে হুমকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন।
গত ২১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন স্থানীয় ইট-বালির ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন তাহসীন। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় সাজ্জাদ তার দলবলসহ হাজির হয়ে গুলি করে আফতাব উদ্দিনকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সাজ্জাদসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট রাতে নগরের অক্সিজেনের কুয়াইশ এলাকায় দুর্বৃত্তরা মো. আনিস ও মাসুদ কায়সার নামে দুজনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। এই জোড়া হত্যার আলাদা মামলায় সাজ্জাদকে আসামি করা হয়। সে হিসেবে দুই মাসের ব্যবধানে তার বিরুদ্ধে তিনটি খুনের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পুলিশ সাজ্জাদকে ধরতে গেলে তিনি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান। এরপর থেকে ফেসবুকে তার কর্মকাণ্ড বেড়েছে।
এর মধ্যে ‘এমডি সাজ্জাদ হোসাইন’ নামে আইডি থেকেই তিনি গত ২৮ জানুয়ারি রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে পেটানোর হুমকি দেন।
এর আগে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তৃতীয় লিঙ্গের শিলা ও আরেক নারীকে নিয়ে আপত্তিকর সব লেখা তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমার চোখের সামনে পড়িস না, পড়লে তোদের বাবারা তোদেরকে আর বাঁচাতে পারবে না।’ পোস্টে ওই দুজনের ছবিতে লাল ক্রস চিহ্ন দেন। সেই পোস্টের এক মাস ১৯ দিন পর গত সোমবার সন্ধ্যায় রাঙামাটির বেতবুনিয়ার একটি বাসা থেকে পুলিশ শিলার লাশ উদ্ধার করে। এদিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে নিয়মিত পোস্ট করেছেন সাজ্জাদ।
এ ছাড়া তার স্ত্রী শারমিন আক্তার গত ১৫ জানুয়ারি নিজের ভ্রূণ হত্যা ও পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ‘অল হোপ ইটস গন’ নামে একটি পেজও চালান সাজ্জাদ। ওই পেজে তিনি ওসি আরিফকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট, বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও ও সংবাদ শেয়ার করেন।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, ‘সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। তার অবস্থান জানতে পারলে আমরা তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করব।’
রাঙামাটির কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘শিলা হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে নিয়ে মো. সাজ্জাদ ওরফে ছোট সাজ্জাদ পোস্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু আপাতত তার কোনো সম্পৃক্ততা আমরা পাইনি।’