
ঢাকায় ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের অভিনব জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে সরকারি জায়গা হস্তান্তর করে বিনিময়ে ফ্ল্যাট উপহার নিয়েছেন তিনি। টিউলিপের প্রভাব খাটিয়ে বিধি-বিধান ভেঙে রাজউকের প্রায় দুই বিঘা জমি দখল ও প্লট-ফ্ল্যাটের অনুমোদন করিয়ে নেয় ইস্টার্ন হাউজিং।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অনুমোদিত মামলায় টিউলিপ ছাড়াও রাজউকের সাবেক সহকারী আইন কর্মকর্তা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সরদার মোশারফ হোসেনকে আসামির তালিকায় আনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে আগামী সপ্তাহে মামলাটি করা হবে বলে জানিয়েছে দুদক।
অনুমোদিত মামলায় বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২-এর ৭১ নম্বর রোডের বাসার একটি ফ্ল্যাটের মালিক টিউলিপ সিদ্দিক। গত মার্চে সেই ফ্ল্যাটের খোঁজ পায় দুদক। পরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।
ফ্ল্যাটটির হস্তান্তরসংক্রান্ত ধারাবাহিক আদ্যোপান্ত খুঁজতে গিয়ে পুরো প্রক্রিয়াজুড়েই অভিনব জালিয়াতির নানা ফিরিস্তি পান দুদক কর্মকর্তারা। তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরীকে প্রায় দুই বিঘা জমি ৯৯ বছরের জন্য বরাদ্দ দেয় তৎকালীন ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট। বরাদ্দের দলিলে তাকে হস্তান্তর না করার শর্ত দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৭৪ সালের পর হস্তান্তরের মাধ্যমে দুই হাত ঘুরে সেই সম্পত্তি চলে যায় ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের কাছে।
২০০০ সালে টিউলিপ সিদ্দিকের আপন খালা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব খাটিয়ে সমস্ত বিধি-বিধান ভেঙে ইস্টার্ন হাউজিংকে লিগ্যাল পার্সন হিসেবে উল্লেখ করে আমমোক্তার অনুমোদন ও ৩৬টি ফ্ল্যাটে বিভাজন করেন রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর বিনিময়ে ওই প্লট ও বিল্ডিংয়ের ২০১ নম্বর ফ্ল্যাটটি নেন টিউলিপ সিদ্দিক। আর এই অনিয়মের দায় থাকলেও মারা যাওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরী, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ও রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা ডক্টর মুহাম্মদ সেলিমকে আসামি করার সুযোগ নেই।
এর আগে পূর্বাচলে শেখ পরিবারের ৬০ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের আরেক মামলায় টিউলিপ সিদ্দিককে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।