ঈদ ও বাংলা নববর্ষের ছুটিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। বন্দরের ইমিগ্রেশন ভবন, বারান্দা ও বাইরে উপচেপড়া ভিড়। সার্ভারের ধীরগতি, রোদ ও তীব্র গরমের কারণে কয়েক শতাধিক পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার হতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
দুপুরের দিকে সরেজমিনে আখাউড়া চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ যাত্রী ইমিগ্রেশন কাজ সম্পন্ন করতে অপেক্ষা করছেন। যাত্রীদের লম্বা লাইন ডেস্ক থেকে বারান্দা অতিক্রম করে বাহিরে চলে এসেছে। অনেক যাত্রী তীব্র গরম ও রোদের মধ্যে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে।
একে তো ঝরাজীর্ণ ভবন তার উপর বসার ও বিশ্রাম নেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় যাত্রীদের যেন ভোগান্তির শেষ নেই। বেশি বিপাকে পড়েছেন রোগী ও শিশুদের নিয়ে আসা সঙ্গীরা।
ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গড়ে প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ যাত্রী পারাপার হয়। এবার ঈদ ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে লম্বা ছুটি থাকায় আজ দিনের শুরুতেই চাপ বাড়তে থাকে। তবে যাত্রী পারাপারে যাওয়ার সংখ্যাটা বেশি হলেও আশার সংখ্যাটা তুলনামূলকভাবে অনেকটা কম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের দিন (১১ এপ্রিল) বন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার হয় ৪৭৫ জন। এর মধ্যে আগমনী যাত্রীর সংখ্যা ১৩৮ জন ও বহির্গমন যাত্রীর সংখ্যা ৩৩৭ জন। অথচ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার হয় ৫০০ যাত্রী। এর মধ্যে বহির্গমন ৩৫৪ জন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এসব যাত্রীদের বেশির ভাগই চিকিৎসা ও ভ্রমণ করতে ভারতে যাচ্ছেন।
গরমে ক্লান্ত হয়ে ইমিগ্রেশনের বারান্দায় শিশু সন্তানকে নিয়ে বসে থাকা সিলেটের বড়লেখার সুভা দেব জানান, প্রায় আড়াই ঘন্টা আগে তিনি এসেছেন। অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। জানেন না কখন ইমেগ্রেশন কাজ কখন শেষ করতে পারবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের রিফাত মিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ছুটি থাকায় ভারতে ঘুরতে যাচ্ছি। সামনে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন মনে হয় যেতে যেতে বিকাল হয়ে যাবে।
কুমিল্লার আসাদ নামে এক যাত্রী জানায়, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছি। আগরতলা থেকে বিমানে কলকাতা হয়ে বেঙ্গালুর যাব। এ পারের পর সেই পারের ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি রয়েছে বলে শুনেছি। অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেওয়ান মোরশেদুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘ছুটির কারণে যাত্রীদের চাপ অনেকটা বেশি। সার্ভারের ধীরগতির কারণে যাত্রীদের চাপ সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও দ্রুত সময়ে যেন যাত্রী পারাপার হতে পারে আমরা সেই চেষ্টা করছি।’
জুটন বনিক/জোবাইদা/অমিয়/