বাণিজ্য সহজীকরণ এবং রাজস্ব আদায়ে শৃঙ্খলা ও গতিশীলতা আনতে নতুন কাস্টমস আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন আইনটি কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৭ মে) চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে নতুন কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর পরিচিতি শীর্ষক কর্মশালায় এ কথা বলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও চট্টগ্রাম কাস্টম এবং এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের যৌথ আয়োজনে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওমর হাজ্জাজ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সরকার আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, নতুন নতুন শিল্পায়ন ও রাজস্ব আহরণ পদ্ধতি যুগোপযোগী এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাস্টমস আইন ২০২৩ প্রণয়ন করে। আইনটি কার্যকর করার আগে ব্যবসায়ীদের মতামত নেওয়া ও অবহিত করতে এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন এই আইনটির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ব্যবসায়ীকে কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কমানো এবং আর্থিক শৃঙ্খলা ও রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনা’ এই আইনের মাধ্যমে রাজস্ব প্রদানকারী ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত ও হেনস্তার শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, ‘আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হচ্ছে কাস্টমস আইন, ২০২৩। আইন সম্পর্কে ব্যবসায়ী সমাজকে জানাতে এ ধরনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাস্টমস আইন ও আন্তর্জাতিক কাস্টমস অর্গানাইজেশন এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতিমালার আলোকে এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে বাণিজ্য সহজীকরণ ও কর আদায়ে শৃঙ্খলা আনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই আইনের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পের সুরক্ষার বিষয়টি আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হবে দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থা। আইনে ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তাই স্টেকহোল্ডার কনসালটেশনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আইনে। এই আইন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হলে তা সময়ে সময়ে সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।’ তাই আইনের যে বিষয়গুলো অস্পষ্ট মনে হচ্ছে তা তুলে ধরার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম-কমিশনার কামরুল হাসান বলেন, ‘নতুন আইনে ২৬৯টি ধারা রয়েছে, যার কিছু কিছু আগের আইনে ছিল। আবার কিছু কিছু ধারা সংযোজন করা হয়েছে। সংযোজিত নতুন ধারাগুলোর মধ্যে রয়েছে- পণ্য ঘোষণা প্রতিস্থাপন, পণ্য ঘোষণার সংশোধন ও প্রত্যাহার, সেল্ফ ক্লিয়ারেন্স, কনসালটেশন, ট্রান্সপারেন্সি ইস্যু, আমদানি-রপ্তানিকারকের দায়িত্ব, কতিপয় যানবাহনের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ, বিলম্বিত পরিশোধ ইত্যাদি নতুন আইনে সংযোজিত করা হয়েছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চেম্বার পরিচালক এ কে এম আক্তার হোসেন, অঞ্জন শেখর দাশ ও মাহফুজুল হক শাহ, রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মহ রাশেদ, লুব-রেফের এমডি মোহাম্মদ ইউসুফ, নাহার গ্রুপের পরিচালক ড. আবদুল হাই, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল হক খান স্বপন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান ও বিএসআরএমের সিনিয়র ম্যানেজার মীর আলী মাহবুব হোসেন, চট্টগ্রাম কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, উপ-কমিশনার রোখসানা খাতুন প্রমুখ।
তারেক মাহমুদ/সালমান/