চতুর্থ অধ্যায়
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ: শব্দদ্বিত্ব
বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন: শব্দদ্বিত্ব কাকে বলে? এটি কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ সংজ্ঞা লেখ।
উত্তর: অভিন্ন বা সামান্য পরিবর্তিত চেহারায় কোনো শব্দ পরপর দুবার ব্যবহৃত হলে তাকে শব্দদ্বিত্ব বলে। শব্দদ্বিত্ব তিন প্রকার। যথা- ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব, অনুকার দ্বিত্ব ও পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব।
(ক) ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব: কোনো প্রাকৃতিক ধ্বনির অনুকরণে যেসব শব্দ তৈরি হয়, সেগুলোকে ধ্বন্যাত্মক শব্দ বলে। একাধিক ধ্বন্যাত্মক শব্দ মিলে ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব তৈরি হয়। যেমন- কোনো ধাতব পদার্থের সঙ্গে অন্য কিছুর সংঘর্ষে ‘ঠন’ ধ্বনি শোনা যায়। এই ‘ঠন’ একটি ধ্বন্যাত্মক শব্দ। ‘ঠন’ শব্দটি পরপর দুবার ব্যবহৃত হলে ‘ঠন ঠন’ ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব সৃষ্টি করে। আরো কয়েকটি উদাহরণ- শোঁ শোঁ, কুট কুট, ঝমঝম ইত্যাদি। অনেক সময় কল্পিত ধ্বনির ভিত্তিতেও ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব তৈরি হতে পারে। যেমন- টনটন, ছমছম ইত্যাদি।
আরো পড়ুন : শব্দগঠন পরিচ্ছেদের ১টি বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর
(খ) অনুকার দ্বিত্ব: পরপর প্রয়োগ হওয়া কাছাকাছি চেহারার শব্দকে অনুকার দ্বিত্ব বলে। এতে প্রথম শব্দটি অর্থপূর্ণ হলেও প্রায় ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শব্দটি অর্থহীন হয় এবং প্রথম শব্দের অনুকরণে তৈরি হয়। যেমন- অঙ্ক-টঙ্ক, চুপচাপ ইত্যাদি। অনেক সময় অনুকার দ্বিত্বের দ্বিতীয় অংশে ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন ঘটে; যেমন- আম-টাম, কেক-টেক, ঘর-টর, গরু-টরু ইত্যাদি। আবার অনুকার দ্বিত্বের দ্বিতীয় অংশে স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটতে পারে; যেমন- আড়াআড়ি, ঘোরাঘুরি, চুপচাপ ইত্যাদি।
(গ) পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব: একই শব্দ পরপর দুইবার ব্যবহৃত হলে তাকে পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব বলে। যেমন- জ্বর জ্বর, হাতে হাতে ইত্যাদি। পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব বিভক্তিহীন হতে পারে।
যেমন- পরপর, কবি কবি, ভালো ভালো ইত্যাদি। পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব বিভক্তিযুক্ত হতে পারে; যেমন- হাতে হাতে, কথায় কথায়, জোরে জোরে ইত্যাদি।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক (বাংলা)
রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা
কবীর