সন্তানকে ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসা লাভের উপায়। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সন্তানকে চুমু খাওয়াও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের উপায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘‘রাসুল (সা.) একবার হাসান ইবনে আলি (রা.)-কে চুম্বন করেন। সে সময় তার কাছে আকরা ইবন হাবিস তামিমি (রা.) উপবিষ্ট ছিলেন। আকরা ইবন হাবিস (রা.) বলেন, ‘আমার ১০টি ছেলে আছে, আমি তাদের কাউকেই কোনো দিন চুম্বন দিইনি।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না।’’ (বুখারি, হাদিস: ৫৯৯৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সন্তানকে চুমু খেতেন
শিশুরা হলো সবচেয়ে দুর্বল শ্রেণি, যাদের দয়ামায়া, আদর-স্নেহ ও কোমল আচরণের বেশি প্রয়োজন হয়। নববি সুন্নাহ মুসলিমদের জন্য আবশ্যক করেছে শিশুদের স্নেহ করতে। শুধু তাই নয়, শিশুদের স্নেহ করলেই বোঝা যাবে, অন্তর পরিশুদ্ধ। কীভাবে তাদের প্রতি স্নেহ করবে, তাদের ওপর দয়া করবে, সেই রূপরেখাও বর্ণিত আছে হাদিসে। এর একটি হলো তাদের চুম্বন করা। আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ছেলে ইবরাহিমকে তুলে নিয়ে চুমু খান এবং তাকে নাকে-মুখে লাগান।’ (বুখারি, হাদিস: ১২৪১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সন্তানকে কোলে নিতেন
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে শিশুদের প্রতি বেশি দয়া প্রদর্শনকারী আমি আর কাউকে দেখিনি।’ তিনি বলেন, ‘(রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ছেলে) ইবরাহিম (রা.) মদিনার উপকণ্ঠে এক নারীর দুগ্ধপোষ্য ছিল। রাসুল সেখানে যেতেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে যেতাম। তিনি সে (দুধমাতার) ঘরে প্রবেশ করতেন, আর সেখানে ধোঁয়া হতো। (কেননা) তার গোত্র ছিল কর্মকার। তিনি ছেলেকে কোলে নিতেন এবং স্নেহ করতেন। অতঃপর তিনি ফিরে আসতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৩১৬)
শিশুদের প্রতি দয়া করা সুন্নত
যে সময় সমাজ শিশুদের প্রতি এরকম কোমল আচরণে অভ্যস্ত ছিল না, সে সময় রাসুল শিশুদের প্রতি এরকম আচরণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা যদি তোমাদের অন্তর থেকে দয়ামায়া উঠিয়ে দেন, তাহলে আমি কী করব?’ (মুসলিম, হাদিস: ২৩১৭)
ইসলাম প্রতিটি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছে। ইসলামে ধনী-গরিব, সাদা-কালোর কোনো পার্থক্য নেই। সবাই সমান। জাহেলি যুগে শিশুদের হত্যা করা হতো, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। ইসলাম নারী, কন্যাসন্তান ও শিশুর সুরক্ষায় বিধান করে দিয়েছে যে, যুদ্ধের সময়ও এদের ওপর আক্রমণ করা যাবে না। তাদের জন্য অধিকার নিশ্চিত করেছে।
লেখক: আলেম ও গবেষক