রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার আরও সময় নিতে চায়। বুঝে নিতে চায় রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাবও। এ ছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও বিবেচনায় নিয়ে এগোতে চায় সরকার। আর এ কারণেই ছয় কমিশন পুরোপুরি গঠন ও কাজ শুরু করতে সরকার আরও কিছুটা সময় নিতে চাইছে।
এদিকে বিএনপিসহ (অংশীজন) অন্যান্য রাজনৈতিক দল এ প্রশ্নে নিজেদের করণীয় নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে প্রস্তাবও তৈরি করছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে।
এদিকে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সঙ্গে কথা বলেননি সরকারের সংশ্লিষ্ট কেউ। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘এখন এই ধরনের কোনো বিষয় নেই। বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী এবং যে দলের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সেই দল আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেওয়ার একটা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চলছে। যে দলের জনপ্রিয়তা তৃণমূলে বিস্তৃত, সেই দলের নাম নিলেই অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়। যারা এই দলের অনুসারী, তাদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। এখন আর এই দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো কোনো কথা বলে না।’
বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব
সূত্রমতে, এরই মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য বিএনপির ছয় সদস্যের কমিটি কাজ শুরু করেছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খবরের কাগজকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র মেরামত বা সংস্কারের যে উদ্যোগ নিয়েছে, বিএনপি তাকে স্বাগত জানিয়েছে। বিএনপি মনে করে, দ্রুত সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া প্রয়োজন। এরই মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে বিএনপি কাজ শুরু করেছে। প্রস্তাব তৈরির কাজ শেষ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে তৈরি চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাব অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে। আশা করি, বিএনপির দেওয়া সংস্কার প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করা হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত খুবই ভালো উদ্যোগ। আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাব ঠিক করছি।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে বিএনপি ইন্টারনাল (অভ্যন্তরীণ) কমিটি গঠন করেছে। সেখান থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব সাজেস্ট করা হবে, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে তা আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তুলে ধরব। আশা করি, দু-এক দিনের মধ্যে আমাদের প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপির সমাবেশে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত জবাবদিহিমূলক সরকার এবং সংসদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য সামনে রেখেই সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া দরকার। জনগণের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছাড়া উন্নয়ন-গণতন্ত্র বা সংস্কার কোনোটিই টেকসই ও কার্যকর হয় না।’
নির্বাচনের লক্ষ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসনের সংস্কার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘সক্ষম এবং উপযুক্ত’ গড়ে তুলতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিএনপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার এজেন্ডা সেটিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে না পারলে গণ-অভ্যুত্থানের সাফল্য ব্যাহত করতে ষড়যন্ত্রকারী চক্র নানা সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।’
প্রস্তাব তৈরি করছে জাতীয় পার্টি
জাতীয় পার্টির প্রস্তাবে সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে প্রশাসন দলীয়করণমুক্ত করা এবং অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রস্তাবে রাখা হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহম্মদ কাদের (জি এম কাদের) খবরের কাগজকে বলেন, ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে দ্রুত সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে। প্রশাসনসহ সব জায়গায় দলীয়করণ হয়েছে। সংস্কারের মাধ্যমে এসব দলীয়করণ দূর করতে হবে। রাষ্ট্রকাঠামো ঠিক না করে নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। আবারও আমরা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেখতে চাই না।’
তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। না হলে আবারও স্বৈরশাসন শুরু হবে, স্বৈরশাসকের জন্ম হবে। দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে একবার আওয়ামী লীগ, একবার বিএনপি সরকার গঠন করে কর্তৃত্ববাদী সরকার তৈরি করেছিল। ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর একই ঘটনা ঘটেছে। দেশ ও প্রশাসন সম্পূর্ণ দলীয়করণ করা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের জন্য দুই পক্ষই চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, সরকার পতনের আগে প্রশাসনে আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ ছিল। আওয়ামী লীগ সরে যাওয়ার পর এখন বিএনপির প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। তাই প্রশাসন সম্পূর্ণ দলীয়করণমুক্ত হয়, এমন পদক্ষেপ এখন জনগণের আকাঙ্ক্ষা। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্যও সংস্কার প্রয়োজন। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে হলে অর্থ খাতে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রস্তাব থাকবে। জাতীয় পার্টি রাষ্ট্র মেরামতের জন্য সব খাতেই সুষ্ঠু, বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার চায়। এসব সংস্কার দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। এরপর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাব
এদিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রেখে সংবিধান সংশোধনসহ কয়েকটি প্রস্তাব তৈরি করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে এ বিষয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। প্রস্তাবে একক কর্তৃত্বপরায়ণ কোনো সরকার যাতে আগামীতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নির্বাচনি ব্যবস্থা, রাজনৈতিক বিভেদ ও বিভাজন কমিয়ে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি বাদ দেওয়ার কথা থাকবে।
দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা আবদুল হালিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে আমরা প্রস্তাব দেওয়ার কথা চিন্তা করছি। বাংলাদেশে আর যাতে একক কর্তৃত্বপরায়ণ সরকার না আসে, এমন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা আমরা বলব।’
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে জামায়াতের দলীয় ফোরামে সংস্কার বিষয়ে কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দল
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা তখনই বলেছিলাম এটা ঠিক হচ্ছে না। রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে শুরুতেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। সব পয়েন্টেই আলোচনা করা দরকার; বিশেষ করে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে এখনই আলোচনা করা দরকার। আমরা এখন জানতে পারলাম সরকার ছয়টি কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। যদি চিঠি পাই, তবে আমরা যাব। আলোচনায় গেলে প্রথমেই জানতে চাইব, সংস্কারের লক্ষ্যে কী কী করতে চায়। তারা এই সংস্কারের বিষয়ে আমাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ মতামত চাইলে তখন আমরা তা পেশ করব। আমাদের ডাকলে আমরা আমাদের পরামর্শ দেব। নির্বাচন সংস্কার নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রস্তাব আগে থেকেই ঠিক করা আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি আমাদের সঙ্গে নাও বসে, তাহলে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে সেসব প্রস্তাব দেশবাসীকে জানিয়ে দেব।’
গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর খবরের কাগজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বাংলাদেশকে আমরা নতুনভাবে বিনির্মাণের সুযোগ পেয়েছি। সেখানে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি প্রতিটি স্টেকহোল্ডারের মতামতের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক সংসদ এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের ব্যাপারে আমাদের প্রস্তাব তুলে ধরব। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংস্কার, শিক্ষা খাতসহ রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকবে। ইতোমধ্যে আমরা রাষ্ট্র সংস্কারে আমাদের প্রস্তাব চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছি।’
এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু খবরের কাগজকে বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কার এজেন্ডা মোটা দাগে তিনটি। প্রথমত, আমরা রাজনৈতিক দল ও সরকার কাঠামোতে সংস্কার চাই; দ্বিতীয়ত, আইন ও বিচারব্যবস্থার সংস্কার এবং তৃতীয়ত, জনপ্রশাসন ও পুলিশি ব্যবস্থাপনার সংস্কার। আমাদের প্রস্তাব হলো- দলের প্রধান ও সরকারপ্রধান একই ব্যক্তি হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদে পরপর অথবা বিরতি দিয়ে দুই মেয়াদের বেশি কেউ নির্বাচিত হতে পারবেন না। দলের প্রধান ও দায়িত্বশীল পদগুলোতেও একজন ব্যক্তি দুই বা তিন মেয়াদের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এতে দলে গণতন্ত্রের চর্চা, নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি ও জবাবদিহির পথ সুগম হবে। ব্যক্তি বা পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির পথ রুদ্ধ হবে এবং দুর্নীতি কম হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। আর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রথমে বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিকের নাম ঘোষণা করা হলেও পরে তা পরিবর্তন করে অধ্যাপক আলী রীয়াজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১ অক্টোবর থেকে ছয় কমিশনের কাজ পুরোদমে শুরুর কথা থাকলেও তা হয়নি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রধান নির্বাচন করা হয়েছে। এর মানে কমিশনের কাজ কিন্তু শুরু হয়েছে। তবে পুরোদমে শুরু করার আগে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা বসতে চায়। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোই আমাদের স্টেকহোল্ডার (অংশীজন)। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে।’
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার খবরের কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে আট থেকে নয়জনকে সদস্য হিসেবে, সর্বোচ্চ ১০ জন নেওয়া হবে। সদস্যদের বিষয়ে আমি মতামত দিয়েছি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের ঊর্ধ্বতনরা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যদের বিষয়ে আরও বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন। তাই সদস্য বাড়তে বা কমতে পারে। আমি আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। সংস্কারকাজে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পরামর্শ আশা করছি।’
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই সংস্কারের বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখন সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে সদস্য চূড়ান্ত করার পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সংস্কার বিষয়ে শুধু রাজনৈতিক দল না, সমাজের অন্যদের মতামতেরও গুরুত্ব দিতে চাই। সবার কাছ থেকেই মতামত নেওয়া হবে।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে সংস্কার সম্পর্কে বলেন, মানুষের আস্থা ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে এবং নির্মম অতীত যেন আর ফিরে না আসে, সে জন্য আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট খাতে সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। নির্বাচনব্যবস্থা, সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা-ব্যবস্থা সংস্কারে স্বাধীন কমিশন গঠন করেছি। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের সংস্কারের জন্য পৃথক কমিশনসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।