সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে স্বেচ্ছায় থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া পরোয়ানাভুক্ত আসামি আবদুল মতিন (৩৫)।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে সুধারাম মডেল থানায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে দুপুরে আন্ডারচর ইউনিয়নের চৌরাস্তা বাজার থেকে আবদুল মতিনকে গ্রেপ্তার করলে পুলিশকে পিটিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয় সহযোগীরা।
আবদুল মতিন আন্ডারচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলী হায়দার বকশীর ছেলে।
তার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।
মতিনকে ছিনিয়ে নেওয়া সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
পুলিশ জানায়, দুপুর ১২টার দিকে আন্ডারচর ক্যাম্প পুলিশ আবদুল মতিনকে চৌরাস্তা বাজার থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার সহযোগীরা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবদুর রব চৌধুরীসহ কনস্টেবলদের পিটিয়ে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে আসামির সহযোগীরা অভিযানে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. ইব্রাহিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহিন বিল্লাহ ও সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী হায়দার বকশীর লোকজনের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এতে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবদুর রব চৌধুরী, এএসআই (এবি) মাকছুদুর রহমান, কনস্টেবল মো. সোহেল ও মো. জুয়েল আহত হন। তাদেরকে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী হায়দার বকশীসহ তার ১৪ সহযোগীকে আটক করে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার রাতে ছিনিয়ে নেওয়া আসামি আবদুল মতিনকে থানায় আত্মসমর্পণ করিয়ে তার বাবা আলী হায়দার বকশীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় একটি পক্ষ।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি ছিনিয়ে নেওয়া আসামির আত্মসমর্পণের বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আসামি ছিনিয়ে নেওয়া সন্দেহভাজন ১৩ জনের সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান আলী হায়দার বকশীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। তবে আগেই বলা হয়েছিল, ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে হাজির করলে তার বাবাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে আসামিকে পেয়ে তার বাবাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার এ ঘটনায় রাতে ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে ‘পুলিশ অ্যাসল্ট’ মামলা করা হয়েছে। বুধবার সকালে আটক ১৪ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
ইকবাল মজনু/জোবাইদা/অমিয়/