রাজধানীর পার্ক ও খেলার মাঠ দখলমুক্ত করুন । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

রাজধানীর পার্ক ও খেলার মাঠ দখলমুক্ত করুন

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
রাজধানীর পার্ক ও খেলার মাঠ দখলমুক্ত করুন

রাজধানীতে সবুজায়ন কমেছে আধুনিকায়নের নামে। কংক্রিটের রাজধানীতে নিঃশেষ হওয়ার পথে পার্ক ও খেলার মাঠ। যে কয়টি অবশিষ্ট আছে, সেগুলোও নির্মাণকাজে ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। তা ছাড়া পার্ক-মাঠ থাকার ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক বৈষম্যও রয়েছে। তাপপ্রবাহের কবলে পড়ে মানুষ ছুটে যেতে চায় সবুজ শীতল গাছগাছালির ছায়ায়। বাসার কাছে কোথায় আছে সবুজঘেরা পার্ক কিংবা উদ্যান, যেখানে একটু ছায়া পাওয়া যায়। এলাকায় পার্ক বা মাঠ থাকলেও অনুন্নত এলাকায় ঘনবসতির কারণে এগুলো নেই বললেই চলে। ফলে রাজধানীর শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হচ্ছে না। হুমকির মুখে পড়েছে রাজধানীর জীববৈচিত্র্য। রাজধানীতে সবুজায়ন বাড়ানোর কিছু পরিকল্পনা থাকলেও এর গতি খুবই ধীর বলে মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা শহরে যে আয়তন সেই তুলনায় ৬১০টি মাঠ থাকা দরকার। কিন্তু আছে মাত্র ২৩৫টি। এগুলো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে ওয়ার্ড সংখ্যা ১২৯। এর মধ্যে ৪১টি ওয়ার্ডে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ঢাকা শহরে গত ২২ বছরে পার্ক ও মাঠের সংখ্যা কমেছে ১২৬টি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) এক জরিপে দেখা যায়, ঢাকার ২৩৫টি খেলার মাঠের মধ্যে ১৪১টি প্রাতিষ্ঠানিক। অর্থাৎ জনসাধারণের জন্য উপযুক্ত নয়। মাত্র ৪২টি খেলার মাঠ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এর মধ্যে দখল হয়ে আছে ১৬টি। এ ছাড়া ১৭টি সরকারি মাঠ, ২৪টি আবাসিক কলোনি মাঠ এবং ১২টি ঈদগাহ রয়েছে।

দুই সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫টি ওয়ার্ডে পার্ক বা মাঠ রয়েছে মাত্র ২৭টি। এর মধ্যে ছয়টি পার্ক বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫০টি ওয়ার্ডে পার্ক রয়েছে মাত্র ২৩টি। বিদ্যমান এসব পার্ক ও খেলার মাঠের অধিকাংশেই নেই সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার। ফলে নাগরিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন নির্মল বায়ুসেবন, ব্যায়াম ও হাঁটাচলার অধিকার থেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যেকোনো শহরের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য প্রায় ৯ বর্গমিটার খোলা জায়গা দরকার। এই খোলা জায়গা হওয়া উচিত পার্ক ও খেলার মাঠ। কিন্তু ঢাকা শহরে এর পরিমাণ এক বর্গমিটারেরও কম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী যে দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, এর জন্য অনেকাংশে দায়ী পার্ক-খেলার মাঠ না থাকা। পরিবেশ ধ্বংস না করে উন্নয়ন কীভাবে করা যায়, সেই উপায় বের করতে হবে। রাজধানীতে খেলার মাঠ বেদখল হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আরও উদাসীন। স্বল্প আয়ের মানুষসহ নগরের সব এলাকা ও শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে খেলার মাঠ, পার্ক সুবিধাদি নিশ্চিত করতে হবে। উত্তরা, বনানীর মতো পরিকল্পিত এলাকায় বিনোদন সুবিধাদি না বাড়িয়েই জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়তে দেওয়া হচ্ছে। ফলে এসব এলাকায় বাসযোগ্যতা কমছে।

বিআইপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান খবরের কাগজকে বলেন, খেলার মাঠকে আধুনিক নগর পরিকল্পনার বিনোদন সুবিধার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামো হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যে মাঠগুলো অবশিষ্ট আছে, সেগুলোতে সবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

পার্ক ও খেলার মাঠে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের পাশাপাশি বিদ্যমান পার্ক ও খেলার মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। বেদখল হওয়া মাঠ ও পার্কগুলোকে দখলমুক্ত করতে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

বন্ধ সীমান্ত হাট সচল করুন

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:২৭ এএম
বন্ধ সীমান্ত হাট সচল করুন

২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ রোধ করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়। এখন পর্যন্ত তা চালু না হওয়ায় বিপাকে আছেন হাটের ব্যবসায়ীরা। ঠিক কখন চালু হবে, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কিছু বলতে পারছেন না হাটসংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে যে বকেয়া পাওনা আছে, তাও আদায় করতে পারছেন না তারা। দেশের অন্য সীমান্ত হাটগুলো চালু হলেও কসবা সীমান্ত হাট না খোলায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ রয়েছে, সীমান্তের বাইরের এলাকার ক্রেতাদের ভিড়ের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা হাটের সুফল পুরোপুরি পাচ্ছেন না। তাই হাটটি চালু করার ব্যাপারে খুব একটা মাথাব্যথা নেই হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির। 

খবরের কাগজের তথ্যমতে, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী পাঁচ কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দাদের জন্য দুই দেশের যৌথ উদ্যোগ এবং অর্থায়নে সীমান্ত হাট চালু হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার তারাপুর সীমান্ত এবং ভারতের সিপাহীজলা জেলার কমলাসাগর সীমান্তে ২০১৫ সালের জুনে যাত্রা শুরু হয় সীমান্ত হাটের। বাংলাদেশ অংশে এটি কসবা সীমান্ত হাট নামে পরিচিত। হাটে বাংলাদেশ ও ভারতের ৫০টি করে মোট ১০০টি দোকান রয়েছে। হাটটি মূলত সীমান্তের বাসিন্দাদের জন্য হলেও বাইরের ক্রেতারাই এখানে বেশি আসতেন। তাদের অনেকেই ব্যবসার উদ্দেশ্যে ভারতীয় পণ্য কিনে নিয়ে যেতেন। কিন্তু করোনা মহামারি দেখা দিলে ২০২০ সালের ১০ মার্চ থেকে সীমান্ত হাটের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে দুই দেশের হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ২৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকার বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হয়েছিল। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ৩৭ লাখ ৭২ হাজার এবং ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশি পণ্য কেনাবেচা হয়েছে ২০ লাখ ৭৭ হাজার টাকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সময় ভারতীয় পণ্য দ্বিগুণেরও বেশি বেচাকেনা হয়েছে। 

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় দোকানঘরের অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি সেগুলো সংস্কার করে হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি। ব্যবসায়ীরা হাটটি চালু না হওয়ায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। অনেক ব্যবসায়ীকে লোকসান দিয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হচ্ছে। এ জন্য অনেকেই চরম অর্থকষ্টে রয়েছেন। অনেকে অভিযোগ করে বলছেন, এ বিষয়ে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও হাট খুলে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ দেশের অন্য সীমান্ত হাটগুলো চালু করে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। দীর্ঘদিন হাট বন্ধ থাকায় অনেক ব্যবসায়ী অর্থকষ্টে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করতেও বাধ্য হয়েছেন। হাটটি সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য হলেও সব সময়ই ভারতীয় দোকানগুলোতে বাইরের ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। ফলে প্রায় পাঁচ বছর হাট চললেও এর সুফল পুরোপুরি ভোগ করতে পারেননি সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। হাটে দুই দেশের বাণিজ্যে সমতা না থাকার প্রধান কারণ হলো, সীমান্ত এলাকার বাইরের বাসিন্দাদের হাটে অবাধে প্রবেশ এবং প্রচুর ভারতীয় পণ্য কেনা। 

সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি (বাংলাদেশ অংশ) জেসমিন সুলতানা খবরের কাগজকে বলেন, দীর্ঘদিন হাট বন্ধ থাকায় অবকাঠামোগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেগুলোর সংস্কারকাজ এখনো চলছে। সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার পর হাটটি খোলার ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসতে পারে। তবে কবে নাগাদ হাটটি খুলে দেওয়া হবে, সেটি স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। 

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে সমতা ফিরিয়ে আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে। সীমান্তের বাইরের এলাকার ক্রেতাদের হাটে অবাধে প্রবেশের বিষয়ে যে অভিযোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। দুই দেশের যৌথ আলোচনার মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা নিরসন করে বাণিজ্যে সমতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। বন্ধ সীমান্ত হাট সচল হলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন, সেই সঙ্গে দেশের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

বনের জায়গায় কাসাভা চাষ বন্ধ করুন

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১০:১০ এএম
বনের জায়গায় কাসাভা চাষ বন্ধ করুন

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কাঞ্চননগর ইউনিয়নে দেড় হাজার একর সংরক্ষিত বন উজাড় করে কাসাভা চাষ করা হচ্ছে। প্রায় এক যুগ আগে লাগানো গাছগুলো কেটে সাবাড় করে লাগানো হয়েছে কাসাভা। টিলার পর টিলার বন ধ্বংস করে লাগানো হচ্ছে কাসাভা। স্থানীয়দের মতে, কাসাভা চাষ করছেন স্থানীয় ও পাশের উপজেলার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের কাছ থেকে পাইকারি দামে কাসাভা নিয়ে যায় প্রাণ গ্রুপ। বিষয়টি স্থানীয় বিট কর্মকর্তা জানলেও এ থেকে প্রতিকার হয়নি। বন বিভাগ বন উজাড়ের দায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করলেও খবরের কাগজ প্রতিনিধিদের সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে পাহাড়ি, বাঙালি এবং বন বিভাগের লোকজন মিলেমিশে বন উজাড় করছেন।

তথ্য বলছে, চট্টগ্রামের নারায়ণ ঘাট রেঞ্জের আওতায় উত্তর কাঞ্চননগর মৌজায় বন বিভাগের ৩ হাজার ৭৩৭ একর সংরক্ষিত বন রয়েছে। এর মধ্যে দেড় হাজার একরের বেশি টিলায় কাসাভা চাষ হয়েছে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে প্রায় শত বছরের পুরোনো শত শত একর সেগুন, আকাশমণি, গামারি, বহেড়ার বাগান উজাড় করে সেখানে ব্যাপকভাবে কাসাভা চাষ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, কাসাভাচাষিরা বন বিভাগ থেকে একর হিসেবে ভাড়া নিয়ে কাসাভা চাষ করেছেন। প্রাণ গ্রুপ থেকে তারা চাষের খরচ পান। ফসল তোলার পর কেজি ১০ টাকা করে প্রাণ গ্রুপ কিনে নিয়ে যায়। যেহেতু বিক্রির দুশ্চিন্তা নেই, সে জন্য কাসাভা চাষের দিকেই চাষিরা ঝুঁকছেন। এমনকি কাসাভা চাষে সরকারি কর্মকর্তাদেরও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

কাসাভা চাষে যেমনি ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য, তেমনি মরছে গবাদিপশুও। আবাস নষ্ট হওয়ায় বন্য প্রাণী খুবই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। প্রাকৃতিক ইকোসিস্টেম বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। প্রাণ-প্রকৃতি সবই বিলুপ্ত। চারদিকে এখন শুধুই কাসাভা আর কাসাভা। এখন যে জাতের কাসাভা আবাদ হচ্ছে এটা যদি কোনো পশুপাখি খেয়ে থাকে, তা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। এতে শুকিয়ে যাচ্ছে হালদার পানির উৎস। বন উজাড় করে মরূকরণের কারণে প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলোও শুকিয়ে যাচ্ছে। 

ভরাট হয়ে যাচ্ছে খাল, ঝিরি, ছড়া ও ঝরনা। চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটছে। প্রাকৃতিক মাছ প্রজননক্ষেত্র হালদার শাখা শুকিয়ে পরিণত হয়েছে গোচারণ ভূমিতে। হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, বনের সঙ্গে পানির সম্পর্ক আছে। যে পাহাড়ে যত বেশি গাছ থাকে, সেই পাহাড় তত বেশি পানি সংরক্ষণ বা ধারণ করবে। তা ছোট ঝরনার মাধ্যমে খালে এসে পড়ে। বন ধ্বংসের কারণে ঝিরি, ঝরনা, খাল শুকিয়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। দেশের রুই-জাতীয় মাছের একমাত্র প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে পানি নেই। কারণ পানির উৎসগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। 

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, কাসাভা একদিকে ওষুধ, আবার কিছু ক্ষেত্রে এর পাতা গবাদিপশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এমনকি বেশি খেলে পশুর মৃত্যুও হতে পারে। তবে আসল কারণ বের করার জন্য কাসাভা এবং ওই গাছের পাতা পরীক্ষা করা জরুরি।

সংরক্ষিত বন উজাড় করে কাসাভা চাষ কোনোভাবেই কাম্য নয়। জীববৈচিত্র্য এবং ইকোসিস্টেম রক্ষায় বন বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ইদানীং পাহাড়ি বন উজাড় করে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পাহাড় ধ্বংসলীলায় মেতেছে। বন বিভাগও নীরব দর্শকের ভূমিকায়। আঙুল তুলছে একে অপরের দিকে। কর্মকর্তারা বলছেন, তারা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছে অসহায়। তা হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কী ভূমিকা রেখেছে! আশা করছি, অচিরেই পাহাড় এবং বনখেকো এই অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সরকার এসব অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বন, পাহাড় সুরক্ষিত হোক।  

স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়হীনতা দূর করুন

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১০:৫৪ এএম
স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়হীনতা দূর করুন

স্বাস্থ্য খাতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দক্ষতা ও দুর্নীতির ভয়ে অনেক সময় খরচ করতে ব্যর্থ হতে হয় এই বিভাগের কর্মকর্তাদের। স্বাস্থ্য অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা প্রতিবছরের অব্যাহত অর্থ ফেরত দেওয়াকে এই খাতের বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, যখন স্বাস্থ্য খাতের সংকটের কথা বলা হয়, তখনই পর্যাপ্ত বাজেট না পাওয়ার অজুহাত আসে। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে যে পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়, তা তারা খরচ করতে পারে না।

সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট স্বাস্থ্য খাতের অর্থ বরাদ্দ ও খরচ নিয়ে যৌথভাবে এক গবেষণা পরিচালনা করে। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে অর্থ বরাদ্দ খরচের খাতওয়ারি চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, কোনো খাতেই বরাদ্দ করা অর্থ খরচ করতে পারেনি। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের জন্য ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়, যা মোট জাতীয় বাজেটের ৫ শতাংশ। যদিও সংশোধিত বাজেটে কিছুটা কমে যায়। আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা জানান, চলতি অর্থবছরে আগের তুলনায় খরচ কিছুটা বেশি করা হয়েছে। কারণ এ বছর স্বাস্থ্য খাতের পঞ্চবার্ষিকের শেষ বছর। ফলে গত পাঁচ বছরে যে কাজগুলো আটকে ছিল, তা এই মেয়াদের মধ্যে শেষ করা না গেলে নতুন পঞ্চবার্ষিকের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ এখনো কম। আবার যা বরাদ্দ রয়েছে তাও খরচ করতে ব্যর্থ হয়। এটা খুবই দুঃখজনক। এখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে স্বাস্থ্য খাতের কার্যকর কোনো উন্নতি ঘটবে না। খরচ করতে না পারার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পাশাপাশি রয়েছে দরপত্রের জটিলতাও। অডিট প্রক্রিয়াতেও রয়েছে নানা ঝামেলা। অনেক কর্মকর্তা নানা ধরনের অনিয়মের আশঙ্কায় থাকেন। তারা ভয়ে তড়িঘড়ি করে কোনো কেনাকাটায় যেতে চান না; বরং টাকা ফেরত দেওয়াই শ্রেয় মনে করেন। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য খাত নিয়ে কাজ করা অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, স্বাস্থ্য বাজেট নিয়ে কেবল বরাদ্দ আর খরচের টানাপোড়েনে থাকলেই হবে না। এর ঊর্ধ্বে উঠে আরও বড় আঙ্গিকে কাজ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ক্ষেত্রবিশেষে সংস্কার দরকার। তবে এটা ঠিক যে স্বাস্থ্য খাতের বাজেট কম। এটা অবশ্যই বাড়ানো দরকার। আর যে টাকা বরাদ্দ হয় তা খরচ করতে না পারা অবশ্যই ব্যর্থতা। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের বিকেন্দ্রীকরণ এখনো হয়নি। মাঠপর্যায়ে স্থাপনা থাকলেও স্থানীয় ব্যবস্থাপকদের অনেক কিছুর জন্যই কেন্দ্রের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। জরুরি অনেক কাজ স্থানীয় ব্যবস্থাপকরা করতে পারেন না, তাদের সেই স্বাধীনতা নেই। ফলে অনেক সেবা বন্ধ থাকে।

স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়হীনতা দূর করতে সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। এ খাতের কেনাকাটায় গতিশীলতা আনতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতের জন্য আলাদা অডিট ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাদের কারণে বরাদ্দের অর্থ খরচ করা হয় না, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতের যেকোনো পরিকল্পনা গ্রহণ থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা রাখতে হবে। সমন্বয় ও তদারকির দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে আইনি ব্যবস্থা

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১১:২৩ এএম
নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে আইনি ব্যবস্থা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মোট ১ হাজার ৭৩৩ প্রার্থী। ওই নির্বাচনের পর ২১টি আসনের ৪৫ জন প্রার্থীর নির্বাচনি ব্যয়ের রিটার্ন নিয়ে গবেষণা করে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা টিআইবি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ব্যয়ের রিটার্ন জমা দেওয়া এসব প্রার্থীর মধ্যে ৪০ জন ব্যয়ের রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এই প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাবের তথ্য গবেষণা করে টিআইবি দেখতে পায়, বেশির ভাগ প্রার্থী তাদের প্রকৃত ব্যয়ের তথ্য গোপন করেছেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক দলকে প্রার্থী অনুপাতে ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দলের ক্ষেত্রে নির্বাচনি ব্যয় বিবরণী জমা না দেওয়ার কারণে কোনো দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের নজির নেই। অনেকে নির্বাচনি ব্যয়ের তথ্য কৌশলে গোপন করেন। 

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর চার মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দেননি শতাধিক প্রার্থী ও ৯টি রাজনৈতিক দল। চট্টগ্রামসহ তিন জেলার প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব এখনো পুরোপুরি বুঝে পাননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের দুর্বলতার কারণেই বন্ধ হচ্ছে না এসব অনিয়ম। সংসদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে খবরের কাগজের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরপিও আইনে উল্লিখিত ভোট-পরবর্তী নির্ধারিত সময়ে ২৮টি দলের মধ্যে নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব ইসিতে জমা দিয়েছে মোট ১৯টি রাজনৈতিক দল। 

সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের বিপরীতে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ১ হাজার ৯৭৭ জন। তাদের মধ্য থেকে ভোটের পর নির্বাচনি ব্যয় বিবরণী জমা দিয়েছেন ১ হাজার ৭৪৮ প্রার্থী। অন্যদিকে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো নির্বাচনি ব্যয় বিবরণী জমা দেননি শতাধিক প্রার্থী। এ ছাড়া তিন জেলা- চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ ও নাটোরের প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব এখনো বুঝে পাননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এবার প্রার্থীদের জন্য ভোটারপ্রতি সর্বোচ্চ ব্যয় ১০ টাকা এবং ভোটার সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, একজন প্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনি ব্যয়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে প্রার্থীদের জন্য জেল-জরিমানা আর দলের ক্ষেত্রে নিবন্ধন বাতিলের যে বিধান রয়েছে, তা এখনো কার্যকর করা হয়নি। সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, দলের ক্ষেত্রে না হলেও নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব জমা না দেওয়ার সংখ্যা মনে নেই, বেশ কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে আমাদের সময় মামলা করা হয়েছিল। অনেকে জেলেও গিয়েছিলেন। এ ছাড়া কয়েকজনকে জরিমানা বা অর্থদণ্ড করা হয়। নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব নিয়ে এই লুকোচুরি বন্ধে আইন করার পরামর্শ দেন তিনি। 

নির্বাচনের প্রকৃত ব্যয় লুকানো, সময়মতো রিটার্ন দাখিল না করা, এগুলো হরহামেশাই লক্ষ করা যায়। কমিশনকে এসব অনিয়মের ব্যাপারে সুস্পষ্ট আইন করতে হবে। অপরাধীদের শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের অনিয়ম দিনে দিনে বাড়ছে। নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব যথাসময়ে না দিলে দলের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। অনিয়ম রোধে নৈতিক ও জনকল্যাণমুখী রাজনীতিতে কীভাবে ফিরে আসা যায়, তার নীতি-কৌশল দলগুলোকেই নির্ধারণ করতে হবে। সে কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার প্রয়োজন। 

পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ১১:২৯ এএম
পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে পদক্ষেপ নিন

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে পুঁজি হারিয়ে বের হয়ে এসেছেন অনেক বিনিয়োগকারী। তথ্য বলছে, পুঁজিবাজারে ২০১৫ সালের জুন মাসের শেষে বিনিয়োগকারী ছিলেন ৩১ লাখ ৯৫ হাজার। পুঁজিবাজারের এই পতনের জন্য বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ও আতঙ্কিত হওয়া বড় কারণ। টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে অনেকে হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছেন। শেয়ারবাজার থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে নেই আইনের কঠোর প্রয়োগ। তাই বিনিয়োগকারীদের আস্থা আসেনি। প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার সময় পুঁজিবাজার নিয়ে আশার কথা শোনা গেলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যেন ৫০ হাজার টাকার লভ্যাংশের ওপর কর প্রত্যাহার করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন থেকে একগুচ্ছ সুপারিশ করা হয়েছে। পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে নতুন নতুন কোম্পানি আনা প্রয়োজন। তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট কর ব্যবহারের ব্যবধান বাড়ানোর মাধ্যমে সেটি করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর থেকে চাপ কমাতে না পারলে বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। পুঁজিবাজারের লভ্যাংশকে করমুক্ত আয় হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। 

বড় বা ভালো মানের প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত না হলে পুঁজিবাজারের ওপর আস্থা বাড়বে না। তাই ওই সব প্রতিষ্ঠানের ঋণ, মূলধন বা ব্যবসার আকৃতির ওপর তালিকাভুক্তির একটি কাঠামো নির্ধারণ করা যেতে পারে। 

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত ও বাজেটবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনে পুঁজিবাজারের গতি বাড়াতে রাজস্ব ছাড়সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু রাজস্ব আদায় কমে যেতে পারে- এমন আশঙ্কা এখন পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) খসড়া বাজেট প্রস্তাবে কিছুই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। পুঁজিবাজারে বিশেষ সুবিধায় অপ্রদর্শিত অর্থ (কালোটাকা) বিনিয়োগের পক্ষে এনবিআর মতামত দিলেও বিপক্ষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আর তাই এ পদক্ষেপ আগামী অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। 

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও অধ্যাপক আবু আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, বেশির ভাগ উন্নত দেশে পুঁজিবাজার থেকে অর্থনীতির মূলধারায় যোগ হয় বড় অঙ্কের অর্থ। ওই সব দেশের সরকার শেয়ারবাজার থেকে আপৎকালীন অর্থ নিয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র কিছুটা অন্য রকম। গত এক যুগে হাজার হাজার কোটি টাকার কারসাজি করা হলেও কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। দীর্ঘ সময়েও পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আসেনি।

বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারবিমুখ হচ্ছেন, এটা রেগুলেটরদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। বিশ্লেষকদের সুপারিশগুলো বিবেচনায় এনে বাজেটে পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে কর আদায়ের বিকল্প নেই। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে আরও মনোযোগী হতে হবে। বাজেটের মতো বড় আয়োজনের বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। এক কথায় পুঁজিবাজারের গতি ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে পারলে অর্থনীতিতে সফলতা আসবে।