‘অপমানের দায় নিয়ে এভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মতো নিকৃষ্ট আর কিছু নেই। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে’।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে সিলেটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘তারা এখন দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করতে মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিদেশি বন্ধুদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। মানুষ এখন অনেক সজাগ। বাংলাদেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে। শান্তি বিঘ্নিত করতে দফায় দফায় চেষ্টা চলছে। একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে ইনশাআল্লাহ।‘
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার নৃশংসতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জানান দিয়েছিল তারা ক্ষমতার থাকতে খুন-গুমের পথ বেছে নিবে। সেদিন থেকে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর পর বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছে। তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নির্বিচারে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা যেসব নিরীহ জনগণকে খুন করেছে তাদের পরিবারের কাছে জানতে চাই তারা আর এ ধরণের রাজনীতি চায় কিনা? যারা পঙ্গুত্ববরণ করেছে তাদের থেকে এ বিষয়ে মতামত নিন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন ও ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আল্লাহর হুকুম ও জনগণের ভালোবাসায় জামায়াতে ইসলামী সে সুযোগ পেলে আমাদের হাত দিয়ে কোন চাঁদাবাজি হবে না, কোনো চাঁদাবাজি বরদাশতও করা হবে না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটির ওপর কোনো দখল বাণিজ্য হতে দেওয়া হবে না। অফিসে বসে কেউ ঘুষ খাওয়ার দু:সাহস দেখাতে পারবে না। যুব সমাজের হাতকে কারিগরের হাতে রূপান্তরিত করা হবে। উন্নত দেশের মতো পড়ালেখা শেষ করার আগেই তাদের হাতে কাজ আসবে। আমরা তাদরেকে এমন যোগ্য কারিগর হিসেবেই তৈরি করব। আমরা যুবসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
ধর্মীয় সম্প্রতির প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা কোথাও নিরাপত্তার জন্য পাহারা দিতে হবে না। একজন নাগরিক তার ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে ও সমাজে সবজায়গায় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করবে। এদেশে নারী-পুরুষের সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে রাষ্ট্রগঠনের সুযোগ পেলে দেশের নারীরা মর্যাদা ও ইজ্জতের সহিত তাদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। তারা যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কাজে অবদান রাখবেন।’
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে দলের প্রতিটি কর্মীকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতে আমীর বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের পক্ষে এককভাবে ছাত্র-জনতার স্বপ্নের দেশ গঠন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন গোটা জাতির ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা ও সহযোগিতা। আমরা শান্তি, অগ্রগতি, ন্যায়বিচার ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
এই কর্মী সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম ও মাওলানা মাশুক আহমদ।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান ও সিলেট মহানগর আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।
শাকিলা ববি/সুমন/এমএ/