হঠাৎ কেন জনপ্রিয় লাক্ষা দ্বীপ! । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

হঠাৎ কেন জনপ্রিয় লাক্ষা দ্বীপ!

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম
হঠাৎ কেন জনপ্রিয় লাক্ষা দ্বীপ!
লাক্ষা দ্বীপের স্বচ্ছ পানিতে নৌকায় ঘুরছেন পর্যটকরা। ছবি: সংগৃহীত

আপনি যখন ভারতের কেরালা রাজ্যের কোচি থেকে ৪৯০ কিলোমিটার পশ্চিমে আরব সাগরের মাঝে লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জে অবতরণ করবেন, ঠিক তখন চারপাশে নীল জলরাশি দেখতে পাবেন। সৈকতে শত শত নারিকেল গাছের সারি। সমুদ্রের দিকে একটু এগোলে পানির রঙ হয় ফিরোজা, আবার গভীর সমুদ্রে পানির রঙ পান্না নীল।  
 
সংস্কৃত ভাষায় লাক্ষা দ্বীপ-এর অর্থ এক লাখ দ্বীপ। এটি ভারতের একমাত্র প্রবালপ্রাচীর, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের ঠিক ওপরে অবস্থিত। লাক্ষা দ্বীপে মোট ৩৬টি দ্বীপ রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি প্রবালপ্রাচীর। এই দ্বীপগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার লোক বাস করেন। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই মাছ ধরা ও নারিকেল চাষের ওপর নির্ভরশীল। 

প্রবালপ্রাচীরের অগভীর জল, সামুদ্রিক জীবন ও প্রবাল  প্রাচুর্যের কারণে লাক্ষা দ্বীপ ভারতের সাঁতার ও স্কুবা ডাইভের সেরা জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া দ্বীপের রাতের আকাশ আরেকটি দর্শনীয় বিষয়।

 

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে পরিবারের সঙ্গে লাক্ষা দ্বীপে বেড়াতে আসেন শালিনা সিভি। তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবনে এত তারা, নক্ষত্রমণ্ডল ও ছুটন্ত তারকা দেখিনি-যতটা আমি দ্বীপে তিন দিনের ভ্রমণে দেখেছি। লাক্ষা দ্বীপ হলো একটি সুন্দর, নির্মল দ্বীপ- যেখানে জীবন শ্লথ বলে মনে হয়। কিন্তু সেখানে একটি পরাবাস্তব প্রশান্তি আপনি অনুভব করবেন।’ 

এ দ্বীপের আর একটি মিস না করা অ্যাডভেঞ্চার হলো রাতে মাছ ধরা। এ দ্বীপের পর্যটকরা জেলেদের সঙ্গে মাছ ধরার অভিযানে যোগ দিতে পারেন। চাইলে স্কিপজ্যাক ও ইয়েলোফিন টুনা মাছ ধরার চেষ্টা করতে পারেন। একই সঙ্গে রয়েছে কয়েকটি সরকার পরিচালিত ডাইভ সেন্টার, কায়াকিং, উইন্ড সার্ফিং, প্যারাসেলিং ও অন্যান্য জলক্রীড়া কার্যক্রম।  
 
এ ছাড়াও স্থানীয়দের পরিচালিত অনেক হোমস্টে রয়েছে, যা আপনার ভ্রমণকে করবে আরামদায়ক। পর্যটকদের আনোগোনা বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে কিছু স্থানীয় ব্যবসায়ী দ্বীপটিতে পর্যটন কোম্পানি গড়ে তোলার কার্যক্রমও শুরু করেছেন।
 
তবে শান্ত, স্নিগ্ধ, নীল জলরাশি পরিবেষ্টিত দ্বীপটি গত বছরও খুব বেশি মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিল না। এ বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাক্ষা দ্বীপের প্রবাল দ্বীপ ভ্রমণের পর পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে বহু গুণ।   

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ভূতাত্ত্বিক শ্রদ্ধা মেনন জানান, এটি সত্যিই চিত্তাকর্ষক একটি স্থান। একটি গবেষণার কাজে গত দুই বছরে তিনবার তিনি এই দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণ করেছেন। প্রতিবার তিনি কোচি থেকে লাক্ষা দ্বীপের উদ্দেশে ছোট প্লেনে চড়ে এসেছেন। প্রতিবারই প্লেনের যাত্রী ছিল হাতেগোনা। যাদের মধ্যে ছিলেন দ্বীপের বাসিন্দা ও সরকারি কর্মকর্তারা।

লাক্ষাদ্বীপের ফ্লাইটগুলো কোচি থেকে ছেড়ে যায় এবং আগত্তি দ্বীপে অবতরণ করে। ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু এ বছরের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাক্ষা দ্বীপে যাওয়ার পর ভারতীয় পর্যটকদের এই দ্বীপের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণ। 

নরেন্দ্র মোদি সৈকতে হাঁটার ও স্ফটিক-স্বচ্ছ জলে সাঁতারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশ করে জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, ‘লাক্ষা দ্বীপের সৌন্দর্য কথায় বর্ণনা করা যাবে না। যারা সারাবিশ্বের সমুদ্রসৈকত ও দ্বীপ দেখতে পছন্দ করেন, আমি তাদের লাক্ষা দ্বীপে আসার আহ্বান জানাই।’

সেই থেকে পর্যটকপ্রেমীদের কাছে দ্বীপপুঞ্জটি স্পটলাইটে পরিণত হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস অনুসারে, লাক্ষা দ্বীপের জন্য গুগলে এত বেশিবার অনুসন্ধান করা হয়েছে, যা বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ভারতের বৃহত্তম ভ্রমণ বুকিং পোর্টাল মেকমাইট্রিপ দাবি করছে, মোদির সফরের পর লাক্ষা দ্বীপের জন্য ইন-প্ল্যাটফর্ম অনুসন্ধান তিন হাজার ৪০০ শতাংশ বেড়েছে।

লাক্ষা দ্বীপ সোসাইটি ফর প্রমোশন অব ন্যাচার ট্যুরিজম অ্যান্ড স্পোর্টসের (স্পোর্টস) ওয়াটার স্পোর্টস প্রশিক্ষক আব্দুল সামাদ জানান, এই অঞ্চলে পর্যটন পরিচালনা করা হয় স্পোর্টসের ফোনলাইনের মাধ্যমে। এ লাইন এর আগে কখনো এত ব্যস্ত ছিল না। দিনে দুই-একজন পর্যটক অনুসন্ধান করতেন। কিন্তু গত মাস থেকে প্রতিদিন অন্তত ১০টি ফোনকল আসছে। 

এদিকে ২০২১ সাল থেকে মুম্বাই, কোচি ও গোয়া থেকে লাক্ষা দ্বীপে যাতায়াত করা জাহাজ কর্ডেলিয়া ক্রুজ কর্তৃপক্ষ জানায়, মোদির সফরের পর থেকে জাহাজটির বুকিং প্রায় আড়াই হাজার শতাংশ বেড়েছে।

ওয়াটার স্পোর্টস প্রশিক্ষক আব্দুল সামাদ আরও জানান, বাড়তি পর্যটকের চাপ সামলাতে ইতিমধ্যে সুহেলি ও কদমত দ্বীপে নতুন রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
 
এমনকি গত ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তার বাজেট বক্তৃতায় দেশটির পর্যটনশিল্পের প্রসার ঘটাতে লাক্ষা দ্বীপের সঙ্গে ভারতের অন্য দ্বীপগুলোর ভালো সংযোগ তৈরির কথা উল্লেখ করেছেন।

কিন্তু দ্বীপের বিনাশশীল পরিবেশ কি পর্যটনের বিকাশ ঘটাতে পারবে? এটা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মাঝে।

১৫ বছর ধরে লাক্ষা দ্বীপে কাজ করা জিভিআইর সংরক্ষণ পরিচালক বর্ধন পাটাঙ্কর জানান, এই প্রবাল প্রাচীরগুলো প্রাচীন আগ্নেয়গিরির অবশিষ্টাংশ যা অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ধীরে ধীরে সমুদ্রপৃষ্ঠের ঠিক ওপরে ডুবে গেছে। প্রবাল প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত লাক্ষা দ্বীপ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র কয়েক মিটার ওপরে। বিশ্বের বেশির ভাগ দ্বীপের মতো লাক্ষা দ্বীপেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

লাক্ষা দ্বীপ রিসার্চ কালেকটিভের মতে, উপকূলীয় ক্ষয়ের কারণে দ্বীপপুঞ্জের ভূমি আস্তে আস্তে সংকুচিত হচ্ছে, এমনকি ২০১৭ সালে একটি দ্বীপ সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে গেছে। গত দুই দশকে লাক্ষা দ্বীপে চারটি প্রধান এনএসও-সম্পর্কিত তাপমাত্রার বিচ্যুতি (হাওয়া এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার তারতম্য সৃষ্টিকারী একটি জলবায়ু ঘটনা) দেখা গেছে। এর পাশাপাশি গত কয়েক বছরে তিনটি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ও হয়েছে।

পাটাঙ্কর বলেন, বিজ্ঞানীদের রক্ষণশীল ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে ২০৫০ সালের মধ্যে লাক্ষা দ্বীপ সমুদ্রের নিচে চলে যাবে। যদি পর্যটনসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প এবং মাছ ধরার কারণে দ্বীপে অতিরিক্ত লোকসমাগম হয়, তবে তা দ্বীপ ও এর পরিবেশের জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে।


লাক্ষা দ্বীপের প্রশাসনিক কেন্দ্র কাভারত্তি। ছবি: সংগৃহীত 

স্পোর্টস জানিয়েছে, দ্বীপগুলোতে পর্যটকদের চাপ কমাতে তারা পারমিট সিস্টেম ব্যবহার করবে। ইতিমধ্যে তারা জাহাজগুলোকে দ্বীপে যাতায়াত করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে দ্বীপটিতে রাতে অবস্থান করা মানুষের সংখ্যা কমবে। ফলে উৎপন্ন বর্জ্যের পরিমাণও কমে আসবে। 
 
যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, বড় জাহাজগুলো নিয়মিত যাতায়াত করলে দ্বীপের সূক্ষ্ম প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে ভূতাত্ত্বিক শ্রদ্ধা মেনন বলেন, দ্বীপে পর্যটক আগমন অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত হতে হবে, যেন তা লাক্ষা দ্বীপের বাস্তুসংস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়।
 
নির্জন ও দারুণ সুন্দর এই দ্বীপটি রক্ষা প্রসঙ্গে পাটাঙ্কর বলেন, ‘আমি মনে করি দ্বীপটি স্থানীয়দের হাতেই সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে। দ্বীপটি রক্ষায় তাদের ক্ষমতায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে তাদের সঙ্গে কাজ করা দ্বীপ এবং এর পরিবেশের জন্য সেরা হবে।’ সূত্র : বিবিসি

অনুলিখন: ইসরাত জাহান চৈতী

পর্যটন সম্ভাবনাময় সুসং দুর্গাপুর

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১১:৫৭ এএম
পর্যটন সম্ভাবনাময় সুসং দুর্গাপুর

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। যেখানে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদনদী, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্রসৈকত, প্রাচীন ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো যুগ যুগ ধরে আলোচিত। ফলে ভ্রমণপিপাসু মানুষকে বারবার আকৃষ্ট করে বাংলাদেশ। কেউ কেউ আবার বাংলার সৌন্দর্যে পুলকিত ও মুগ্ধ হন এবং রূপসী বলে আখ্যায়িত করেন। বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। ফলে দেশে এ শিল্পের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। দেশের কোনো কোনো জায়গা শুধুই দর্শনীয় স্থান নয়, যেন পৃথিবীর বুকে একখণ্ড স্বর্গ। সেসব স্থানের একটি হলো ‘সুসং দুর্গাপুর’।

মেঘালয়ের কোলঘেঁষে ময়মনসিংহ বিভাগের উত্তরে নেত্রকোনায় অবস্থিত এক টুকরো স্বর্গ  ‘সুসং দুর্গাপুর’। শান্ত, স্নিগ্ধ ও চারপাশে সবুজে আবৃত মনোরম পরিবেশ। তাছাড়া রয়েছে সুউচ্চ পাহাড়, হ্রদ, টিলা, বিভিন্ন সংস্কৃতির ছোঁয়া ও নদনদীর সমাহার। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য অন্যতম আদর্শ স্থান।

দুর্গাপুরের বুনো হাতি

 চারদিকে সবুজ গাছগাছালি আর তারই মাঝে একটি  ‘সাদা মাটির পাহাড়’। একটি দুটি নয়, শতাধিক সাদামাটির টিলা আছে সেখানে। চীনামাটিকে সাদামাটি বলে আখ্যায়িত করলেও চীনামাটি পুরোপুরি সাদা নয়। বরং কোথাও লালচে, ধূসর, হালকা নীলাভ, গোলাপি, ঈষৎ বেগুনি, হলুদ কিংবা টিয়া রঙেরও। বিচিত্র রঙের মাটির সংমিশ্রণ দেখা যায় পাহাড়গুলোয়। এর নিচেই রয়েছে আবার স্বচ্ছ নীল পানির হ্রদ। আর বিস্তৃত মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। পাহাড় কেটে মাটি উত্তোলন করার ফলে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। সেসব গর্তে বা ঢালুতে বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হয়েছে এ স্বচ্ছ নীল পানির হ্রদ। চীনামাটির পাহাড়ের কাছেই রয়েছে কমলার বাগান, বিজিবি ক্যাম্প ও নয়নাভিরাম আরও দর্শনীয় স্থান। বর্তমানে চীনামাটি উত্তোলন বন্ধ থাকায় এটি পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম একটি টুরিস্ট স্পটে। বিজয়পুর চীনামাটির পাহাড়ের রয়েছে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অতুলনীয় গুরুত্ব। এটি টারশিয়ারি যুগের পাহাড়ের অন্তর্ভুক্ত। এখানকার মাটি মিহি, কোমাল- ট্যালকম পাউডারের মতো, যা সিরামিক শিল্পের প্রধান কাঁচামাল। বাংলাদেশের খনিজ সম্পদের অন্যতম খনিজ অঞ্চল বিজয়পুর। পুরো এলাকা ঘিরে ছোট-বড়ো টিলা বা পাহাড় ও সমতল ভূমি মিলিয়ে দৈর্ঘ্যে ১৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার ও প্রস্থে ৬০০ মিটার খনিজ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। এ পর্যন্ত ৫ লাখ মেট্রিক টন মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। মজুদ আছে ১৩.৭৭ লাখ মেট্রিক টন। উল্লেখ্য, এই প্রাকৃতিক সম্পদটিকে জিআই স্বীকৃতি দিতে নিবন্ধনের আবেদন করেছিল নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়। ২০২১ সালে এসে স্বীকৃতি পায়।

দুর্গাপুর জমিদার বাড়ি

সুসং দুর্গাপুরের আরেকটি আকর্ষণ হলো সোমেশ্বরী নদী। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড়ের বিঞ্চুরীছড়া, বাঙাছড়া প্রভৃতি ঝরনাধারা ও পশ্চিম দিক থেকে রমফা নদীর স্রোতধারা একত্রিত হয়ে সোমেশ্বরীর সৃষ্টি। দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর ও ভবানীপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এটি বাংলাদেশ ও  ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য ৫০ কিলোমিটার, গড় প্রশস্ততা ১১৪ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। রানীখং পাহাড়ের পাশ দিয়ে দক্ষিণ দিকে শিবগঞ্জ বাজারের কাছে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় এটি। সোমেশ্বরী নদীতে ঘুরে বেড়ালেই চোখে পড়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ঘেঁষে সবুজঘেরা ও লাল চীনা মাটির অসংখ্য পাহাড়। বছরের বেশির ভাগ সময় এর একপাশজুড়ে থাকে ধুধু বালুচর, অন্য পাশেই হালকা নীলাভ জল। নদীর একপাশে খরস্রোতা বয়ে চলার দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। শীত শুরু হলেই ভিন্ন রূপ ধারণ করে নদীটি। শুকনো মৌসুমে সোমেশ্বরী যৌবন হারিয়ে প্রায় মরা নদীতে রূপ নেয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি সোমেশ্বরী নদী কয়লা, নুড়ি-পাথর ও সিলিকা বালু বয়ে আনে। কয়লা, নুড়ি-পাথর ও সিলিকা বালুতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে হাজারো মানুষ। কেউ কেউ আর্থিক অবস্থারও উন্নতি করেছেন। দুর্গাপুরের বালু এখন দেশব্যাপী জনপ্রিয়। আর এ নদীতে রয়েছে মহাশোল মাছ। যা বাংলাদেশে এ মাছটির অন্যতম আবাসস্থল।

তাছাড়া বৈচিত্র্যময় জনবসতি, ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ছুটে চলা আদিবাসী, ক্ষুদ্র ও নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর কিছু প্রতিষ্ঠান, সাধু জোসেফের ধর্মপল্লী, রানীখং মিশন, ক্ষুদ্র ও নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, ফান্দা ভ্যালি, টঙ্ক শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ, কমরেড মণি সিংহের বাড়ি, মণি সিংহ জাদুঘর, সুসং মহারাজার সুদৃশ্য বাড়ি, রাশমণি স্মৃতিসৌধ, কমলা রানীর দিঘি, কংস নদ, আত্রাখালী নদী, চণ্ডীগড় গ্রামের মানবকল্যাণকামী অনাথালয়, কুল্লাগড়ার রামকৃষ্ণ মঠ, দুর্গাপুর সদরের দশভুজা মন্দির, বিজয়পুরের স্থলশুল্ক বন্দর, বিরিশিরি বধ্যভূমিসহ আরও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণপিপাসুদের দারুণ ভাবে আকৃষ্ট করে।

এত ঐতিহাসিক স্থান ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও পর্যটনশিল্পে কিছুটা পিছিয়ে সুসং দুর্গাপুর। নানা প্রতিকূলতার জন্য পর্যটনশিল্প বিকাশ লাভ করছে না, দেশব্যাপী আলোড়িত হচ্ছে না। যার মধ্যে অন্যতম হলো রাস্তার বেহাল দশা। বালু দুর্গাপুরের জন্য আশীর্বাদ হলেও পর্যটনশিল্পে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বালুবাহী ট্রাকের কবলে তৈরি হচ্ছে অসহনীয় জ্যাম। যোগাযোগ সমস্যা, নিরাপত্তার অভাব ও নানা ভোগান্তির কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। ফলে প্রতিনিয়ত কমছে পর্যটকের সংখ্যা।

তবে নানান প্রতিকূলতার মাঝেও দুর্গাপুর নিয়ে স্বপ্ন দেখছে জনগণ, আশা করছে দুর্গাপুরেও স্থলবন্দর হবে এবং সবকিছু উপেক্ষা করে, পর্যটনশিল্পে দেশে আলোকিত নাম হবে। এজন্য সোমেশ্বরী নদীর বালু যথাযথ ব্যবহার, চীনা মাটির পাহাড়ে যেতে তেরী বাজার ও শিবগঞ্জের মাঝে ব্রিজ নির্মাণ, রাস্তার বেহাল দশা সমাধানে বিকল্প রাস্তা তৈরি কিংবা দুর্গাপুর পর্যন্ত ট্রেন লাইন আনার মতো যুগান্তকারী উন্নয়ন হলেই তবে পর্যটনশিল্পে এগিয়ে যাবে সুসং দুর্গাপুর।

জাহ্নবী

বাংলাদেশে রবি পর্যটন

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০২:১৩ পিএম
বাংলাদেশে রবি পর্যটন
শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাচারিবাড়ি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। সে সম্পর্কটা যেমন মানসিক, তেমনি আত্মীয়তার। জমিদারি কাজের তদারকি করার জন্যও তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন বেশ কয়েকবার। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিময় কিছু জায়গার পর্যটন নিয়ে জানাচ্ছে পর্যটন ডেস্ক

শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি


কুষ্টিয়া জেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের ঐতিহাসিক কুঠিবাড়ি। ১৮০৭ সালে রামলোচন ঠাকুরের উইল সূত্রে রবীন্দ্রনাথের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর এ জমিদারির মালিকানা পান। এখানে বসেই কবি রচনা করেন সোনারতরী, চিত্রা, চৈতালী, কথা ও কাহিনী, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য ও খেয়ার অধিকাংশ কবিতাসহ আরও অনেক রচনা। এখানে বসেই ১৯১২ সালে কবি ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ শুরু করেন। শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাদুঘর।


রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি ও নানাবাড়ি


খুলনা ও যশোর জেলার শেষ সীমানায় খুলনার ফুলতলা উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে দক্ষিণডিহি গ্রাম। গ্রামের ঠিক মধ্যখানে রয়েছে জমিদার বাড়ির বিশাল প্রাঙ্গণ। এটাই রবীন্দ্রনাথ-মৃণালিনীর স্মৃতিধন্য দোতলা ভবন-বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি। অন্যদিকে খুলনার রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের পিঠাভোগ গ্রামে রয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানাবাড়ি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মা সারদা সুন্দরী দেবীর জন্ম এই গ্রামে। রবীন্দ্রনাথের কাকিমা ত্রিপুরা সুন্দরী দেবী এবং স্ত্রী মৃণালিনী দেবী দক্ষিণডিহি গ্রামেরই মেয়ে। যৌবনে কবি দক্ষিণডিহি গ্রামে মামা বাড়িতে এসেছিলেন।


শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাচারিবাড়ি
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক জমিদারি ছিল। কবির দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর নীলকরদের একটি কুঠি নিলামে কিনে নেন। ২৯ বছর বয়সে ১৮৯০ সালে সর্বপ্রথম শাহজাদপুরে জমিদারি তত্ত্বাবধান করতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এরপর ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত জমিদারির কাজে এখানে যাওয়া-আসা ও অবস্থান করেন কবি। জমিদারি খাজনা আদায়ের একটি পুরোনো দোতলা ভবন রয়েছে, বর্তমানে সেটা জাদুঘর।


পতিসর কুঠিবাড়ি


নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে আত্রাই উপজেলার পতিসর। এখানে নাগর নদীর তীরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের জমিদারির কালিগ্রাম পরগনার সদর কাছারি ছিল এখানে। রবীন্দ্রনাথের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৩০ সালে এ জমিদারি কিনেছিলেন। জমিদারি দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম পতিসরে আসেন রবীন্দ্রনাথ। শিলাইদহ ও শাহজাদপুরের মতোই প্রায় পতিসরের দোতলা কুঠিবাড়ি। বাড়ির সামনের প্রশস্ত খোলা মাঠ নাগর নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে থাকাকালীন ১৯০৫ সালে কবি পতিসরে কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। নোবেল পুরস্কারের এক লাখ টাকাও তিনি এই ব্যাংকে দান করেন।


কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন


নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত এই স্কুলটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই নোবেল পুরস্কারে পাওয়া অর্থ দিয়ে নির্মাণ করেছিলেন। বাংলাদেশে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের তিনটি জমিদারি ছিল। সেগুলো হলো- কুষ্টিয়া জেলার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাদপুর ও নওগাঁ জেলার কালীগ্রামে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালীগ্রামের জমিদারের দায়িত্ব পেয়ে ১৮৯১ সালের ১৩ জুন কালীগ্রামে আসেন। শেষবার আসেন ১৯৩৭ সালের ২৭ জুলাই। ওই বছরই কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে রথীন্দ্রনাথের নামে হাইস্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর তার পুত্র রথীন্দ্রনাথ উত্তরাধিকার সূত্রে জমিদারির দায়িত্ব পান। তিনি ১৯৪৫ সালের দিকে দাম্পত্য সঙ্গী প্রতিমা দেবীসহ তিনি কালীগ্রামে আসেন। নিজের নামে নির্মিত ইনস্টিটিউশনের প্রতি তার টান ছিল। তিনি সেই সময় শিক্ষক-ছাত্রদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।

কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন সেই সময়ে মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের দেওয়া আশীর্বাণী, চিঠি, প্রজাদের উদ্দেশে দেওয়া তার শেষ ভাষণ, তার দেওয়া বিভিন্ন বই এই ইনস্টিটিউশনে সংগ্রহ করা আছে। এই প্রতিষ্ঠানে কালীগ্রামের শেষ জমিদার রবীন্দ্রনাথের পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি, রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ প্রতিমা দেবীর চিঠিসহ রবীন্দ্রনাথের অনেক স্মৃতিস্মারক সংগ্রহ করা আছে।

জাহ্নবী

 

শিক্ষা-পর্যটন

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:৪১ পিএম
শিক্ষা-পর্যটন

দার্শনিকদের দাবি, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে পর্যটন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ যেহেতু অনুসন্ধান, যুক্তি, নান্দনিকতা ও মূল্যবোধ দিয়ে দর্শন পরিচালিত। সেহেতু শিক্ষা ও দর্শন এমনভাবে সম্পর্কযুক্ত যে, বলতে গেলে দুটো বিষয় মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষের সক্ষমতা, দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধসহ সব রকমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক গুণগুলো গড়ে ওঠে। আত্মোন্নয়নে তো শিক্ষার কোনো বিকল্পই নেই। তাই পরিপূর্ণ শিক্ষা অর্জনের জন্য যেতে হবে চার দেয়ালের বাইরে। শিক্ষা-পর্যটনে।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলো শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা-পর্যটনের আয়োজন করে। আমাদের দেশেও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের ভ্রমণে নিয়ে যায়। তবে এই ভ্রমণগুলো বেশির ভাগ সময় পিকনিক রূপে হয়ে থাকে। কখনো আবার শিক্ষা সফর হিসেবে ঐতিহাসিক স্থান বা জাদুঘর পরিদর্শনেও নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর আয়োজন একটু অন্য রকম। নানা ঐতিহাসিক, বা মনোরম প্রাকৃতিক জায়গা ছাড়াও শিক্ষা পর্যটনে তারা স্কুল বা কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যান নামকরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে কোনোরকম হইহুল্লোড় বা উচ্চশব্দে বাজনা বাজিয়ে নাচ গান নয়। সুশৃঙ্খলভাবে সেখানে শিক্ষার্থীরা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়টি ঘুরে দেখে। আমরাও এমন শিক্ষা-পর্যটনের উদ্যোগ নিতে পারি। উন্নত রাষ্ট্রের শিক্ষা-পর্যটনের মতো আমরাও শিক্ষার্থীদের প্রথমে ছোট ছোট দলে ভাগ করে নিতে পারি। এক এক দলে ৩০ বা ৪০ জন করে শিক্ষার্থী রাখতে পারি। প্রতিটি দল পরিচালনার জন্য একজন শিক্ষক দায়িত্ব নিতে পারেন। বাসের সামনে শুধুমাত্র ব্যানার লাগিয়ে রওনা দিতে পারি শিক্ষা-পর্যটনের উদ্দেশ্যে। সেটা হতে পারে নিজ জেলারই সুন্দর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে। সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যেই যেন আবার আমরা ফিরে আসতে পারি। দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে করা যায় তাহলে তো কথাই নেই।

শিক্ষা-পর্যটনে যাওয়ার আগে আমরা শিক্ষার্থীদের সাত দিনের একটা ছোট্ট প্রশিক্ষণ দিয়ে নিতে পারি। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে থাকতে পারে শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা, সময়ানুবর্তিতা ইত্যাদি। এতে শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর চারপাশের পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি ঘুরে দেখার সময় এই প্রশিক্ষণগুলো তাদের সাহায্য করবে। উন্নত বিশ্বের শিক্ষার্থীদের মতো আমাদের শিক্ষর্থীরাও বিষয়ভিত্তিক বিভাগগুলোর কোন বিভাগে কী নিয়ে পড়াশোনা হয় তা মনোযোগ দিয়ে দেখবে এবং ধারণা নেবে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানবে। পড়াশোনার পরিবেশ সম্পর্কে জানবে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেখেও তারা অনুপ্রাণিত হবে। ভবিষ্যতে তারা উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। তাদের বড় হওয়ার স্বপ্নগুলো আরও বড় হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঘুরে এসে তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে সে বড় হয়ে কোন বিষয় নিয়ে পড়তে চায়। কিংবা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়।

শিক্ষা-পর্যটনের মাধ্যমে শিক্ষার মান হবে উন্নত ও মজবুত। আন্তন চেখভের মতে, ‘কম পোড়া ইটের তৈরি বাড়িতে বসবাস যেমন আতঙ্কের সৃষ্টি করে তেমনি দুর্বল শিক্ষা কখনো উন্নত সমাজ গড়তে পারে না। তাই শিক্ষা মজবুত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মজবুত শিক্ষার মাধ্যমেই মজবুত সমাজ গড়ে উঠবে। আর শিক্ষা পরিপূর্ণ ও মজবুত করতে শিক্ষা-পর্যটনের ভূমিকা অপরিসীম।

জাহ্নবী

 

প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে ঘুরে আসুন সুরঞ্জনা-শুভসন্ধ্যায়

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫২ এএম
প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে ঘুরে আসুন সুরঞ্জনা-শুভসন্ধ্যায়
সুরঞ্জনা ইকোপার্ক

ঘুরতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। আর ঈদ এলে তো কথাই নেই। নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে অনেকের পরিকল্পনার শেষ নেই। এই পরিকল্পনা যদি কোলাহলমুক্ত সবুজে ঘেরা কোনো প্রকৃতি, নদী কিংবা স্নিগ্ধ বালুময় সমুদ্রের তীরে অবকাশ যাপনের জন্য না করা যায় তাহলে যেন তৃপ্তি নেই! এবার এমনি দুটি স্থান শুভসন্ধ্যা ও সুরঞ্জনা ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন এবারের ঈদে। 

শুভসন্ধ্যা

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের উপকূলীয় বরগুনা জেলার প্রধান তিনটি নদী- পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বরের জল মোহনার সাগরে মিশে যাওয়ার স্নিগ্ধ বেলাভূমির বালুচর শুভসন্ধ্যা। যার একদিকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন অপরদিকে সীমাহীন বঙ্গোপসাগর। 

সাগরঘেঁষা নয়নাভিরাম এই সৈকতটি তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়া এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে এটি নলবুনিয়া চর নামে পরিচিত। এ চরের বনাঞ্চল প্রায় ১০ কিলোমিটার। 

২০০৬ সালে ৫৮ হেক্টর জমিতে এখানে নন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল গড়ে তোলে বন বিভাগ। ঝাউগাছ, খইয়্যা বাবলা, মাউন্ট, আকাশমনি, অর্জুন, কালি বাবলা, কড়ই, খয়ের ও বাদামসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে এখানে। 

বিস্তীর্ণ বেলাভূমির এই বনাঞ্চলের সাগর প্রান্তে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই উপভোগ করা যায়।

সুরঞ্জনা

ইকোট্যুরিজমের উন্নয়নের লক্ষে সম্প্রতি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বরইতলা সংলগ্ন বিষখালী ও খাকদোন নদীর মোহনায় গড়ে তোলা হয়েছে সুরঞ্জনা নামে একটি ইকোপার্ক। ভ্রমণপিপাসু বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কমবেশি প্রতিদিনই এখানে বেড়াতে আসেন।

এখানে রয়েছে প্রাণ-প্রকৃতির অবাধ বিচরণ। ছৈলা, গোলপাতা, কেওড়াসহ নানা ধরনের বনজ বৃক্ষে ঘেরা  দৃষ্টিনন্দন এই ইকোপার্কের মাঝখানে বসানো হয়েছে বিশালাকারের কুমির ও কাঁকড়ার অবয়ব।

বাঘ, সিংহ, হরিণ, বক, জিরাফসহ বেশকিছু জীবজন্তুর অবয়বও বয়েছে এখানে। 

এ ছাড়াও এখানকার জল ও স্থলে পাখি, বেজি, শিয়াল, কাঁঠবিড়ালি, গুইসাপ, কাকড়া, গিরগিটিসহ নানা প্রাণির দেখা মিলবে। 

যেভাবে যাবেন-

পর্যটকরা সাধারণত নৌ ও স্থলপথেই বরগুনা আসেন। ঢাকা থেকে বিকেল ৫টায় বরগুনার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যায়। এ ছাড়া গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে আসা যাবে বাসেও। সকাল ৮টার মধ্যে লঞ্চ বরগুনা পৌঁছাবে। আর পদ্মা সেতু হয়ে বাসে লাগবে মাত্র ৬ ঘন্টা।  

বরগুনা শহরে স্বল্প খরচে আবাসিক হোটেল, ডাকবাংলো, এনজিওর রেস্টহাউস পাওয়া যায়। তাই বরগুনা পৌর শহরে পৌঁছে যেকোনো একটিতে রুম নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ুন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। 

প্রথমেই বরগুনা পৌরসভার সামনে থেকে আটোরিকশা রিজার্ভ করে কিংবা মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে চলে যাবেন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য সুরঞ্জনা ইকোপার্কে। 

সুরঞ্জনায় ঘোরাঘুরির পর শুভসন্ধ্যায় যেতে প্রথমে তালতলীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যানবাহন ও ট্রলারে যাবেন তালতলী সদরে। সেখান থেকে ভ্যান, রিকশা বা মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে সোজা কাঙ্খিত শুভসন্ধ্যায়। 

বরগুনায় রাত কাটানোর পরদিন বিকেল ৩টার লঞ্চে কিংবা সন্ধ্যা বা রাতে বাসে ফিরতে পারবেন ঢাকায়। 

মহিউদ্দিন অপু/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

ঈদে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত নওগাঁর বিনোদন কেন্দ্রগুলো

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম
ঈদে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত নওগাঁর বিনোদন কেন্দ্রগুলো
নিয়ামতপুরের ঘুঘুডাঙা তালসড়ক। ছবি: খবরের কাগজ

সাজ সাজ রব নওগাঁর ঐতিহাসিক ও প্রকৃতিক নিদর্শন, যাদুঘর, দর্শনীয় ও বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে। জেলার পাহাড়পুরে অবস্থিত যাদুঘর ও ঐহিতাসিক সোমপুর বিহারের আঙ্গিনায় এবার ঈদের ছুটিতে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের আগমন ঘটবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া কুসুম্বা শাহি মসজিদ, আলতাদিঘি শালবন, পতিসর বরীন্দ্র কাচারি বাড়ি, ঘুঘুডাঙা তাল সড়ক ও জবই বিলে প্রতিদিন লাখো দর্শনার্থীর আগম ঘটবে। বাড়তি চাপ সামাল দিতে প্রস্তুতি গ্রহনের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পাহাড়পুর:
ধর্মীয় উৎসব বিশেষ করে ঈদ, দূর্গাপূজা এবং সরকারি ছুটির দিনে পাহাড়পুর যাদুঘর ও বৌদ্ধ বিহারে স্বভাবিকের চেয়ে কয়েকগুন দর্শনার্থী বাড়ে। ইতোপূর্বে ঈদুল ফিতরে সবচেয়ে বেশি মানুষের সমাগম দেখা গেছে। আশেপাশের এলাকার মানুষ ছাড়াও দেশের প্রায় সব প্রান্তের বিনোদনপ্রেমীরা ঈদে ছুটে আসেন বিহার ও যাদুঘরে। বিদেশি পর্যটকদের আগমনও বাড়ে। এ জন্য কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়।

ঈদ সামনে রেখে এবারও যাদুঘরের ভেতরের মূল্যবান ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ নতুন করে সাজানো হচ্ছে। এছাড়া বিহার ও যাদুঘরের প্রতিটি স্থানে ধোয়া মোছা ও রঙয়ের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। রেস্টহাউস, ফুলের বাগান, পিকনিক ও পার্কিং এরিয়াগুলো আগের চেয়ে আরও গোছানো ও সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে। 

প্রত্নত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত মোট চার দিন সরকারি ছুটি। কিন্তু ঈদের দিন থেকে অন্তত এক সপ্তাহ জুড়ে দর্শনার্থীর আগমনে মুখর থাকবে পাহাড়পুর। আগতদের বিনোদন নির্বিঘ্ন করতে কয়েক দফায় স্থানীয় বাসিন্দা বা অংশীজন, প্রশাসনের কর্মকর্তা, থানা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। 

যেহেতু দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় হবে তাই নিরাপত্তা জোরদার করতে যাদুঘরের পাশাপাশি বিহার অংশে নতুন করে আরও ৫০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশপথগুলো ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া বিহারের প্রতিটি প্রান্তে নিরাপত্তাকর্মীরা আগতদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকবে। 

কুসম্বা শাহি মসজিদ:
ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে হাজারো মুসল্লি সকাল থেকেই ভিড় করেন মান্দা ঐতিহাসিক কুসম্বা শাহি মসজিদে। মসজিদের ভেতরে ও বাইরে মিলিয়ে নামাজ আদায় করা হয়। এখানে তিন থেকে চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। 

মুসল্লিরা জানান, প্রায় সাড়ে ৪০০ বছর আগে সুলতানি আমলে নির্মিত কুসুম্বা শাহি মসজিদ। ঈদের ছুটিতে ঐতিহাসিক এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে এবং সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ থেকে সাত হাজার মানুষ আসেন। 

স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্রুহানী সুলতান গামা বলেন, পাঁচ টাকার নোটে মুদ্রিত কুসুম্বা মসজিদে আগত দর্শনার্থীদের সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা জোড়দার করতে এ বছর নতুন করে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আনসার সদস্য, পুলিশ ও গ্রামপুলিশ নিয়োজিত রাখা হয়েছে। 

আলতাদিঘি শালবন:
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত বিশাল আকৃতির ঐতিহাসিক দীঘি ও প্রাকৃতিক শালবন ঘিরে বিনোদনকেন্দ্র। সুযোগ পেলেই বিনোদন ও প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসনে এই বন দেখতে। ঈদে মানুষের ভিড় বাড়বে অন্তত ১০ গুন। পাশের জয়পুরহাট, বগুড়া, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের আগম ঘটে আলতাদীঘি শালবনে। তাই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

পতিসর:
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজস্ব জমিদারি কালী গ্রামের কাচারি বাড়ি পতিসর। এবার ঈদের কদিন পরেই ২৫ বৈশাখ কবির জন্মোৎসব। তাই এখন থেকেই দর্শনার্থীর সামাল দেওয়ার প্রস্ততি চলছে।

তাল সড়ক ও জবই বিল: 
জেলার নিয়ামতপুরের ঘুঘুডাঙা তালসড়ক ও সাপাহার উপজেলার জবই বিলে ঈদের ছুটিতে বিনোদনপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। দেশের নানা প্রান্তের মানুষ ছুটে আসেন বরেন্দ্র অঞ্চলের মুগ্ধতা ছড়ানো ঐতিহাসিক প্রকৃতিক ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে। তাই ঈদের দিন ঘনিয়ে আসতেই সাজসাজ রব পড়েছে ওই এলাকাগুলোতে। 

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তা পাহাড়পুর যাদুঘর ও বৌদ্ধ বিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল হক আরজু খবরের কাগজকে জানান, আবহাওয়া ভাল থাকলে ঈদের দিন থেকেই কুসম্বা মসজিদে প্রচুর মানুষের আগমন ঘটবে। পাহাড়পুরে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে। সরকারি ছুটির দিনগুলোতে ভ্রমণপিপাসু ও বিনোদনপ্রেমীদের আগমনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব স্থানে নিযোজিতদের দম ফেলার সময় থাকে না। সপ্তাহ খানেক পর থেকে ভিড় কমতে শুরু করে।

তিনি বলেন, ঈদের মৌসুমে এবার কুসুম্বা মসজিদ, পাহাড়পুর যাদুঘর, বিহার ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলো মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ দর্শনার্থীর আগম ঘটবে। আর শুধু পাহাড়পুর বিহারের আঙ্গিনাতেই ১৫ দিনে পা পড়বে অন্তত আড়াই লাখ দর্শনার্থীর।

তিনি আরও বলেন, দূরের ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য কুসুম্বা মসজিদের পাশে একটি ও পাহাড়পুর বিহার এলাকায় নতুন করে আরও একটি রেস্টহাউস প্রস্তুত করা হয়েছে। ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে প্রত্ন নিদর্শন ও গবেষকদের লেখা, পত্রিকা, বই ও পুস্তিকা পাহাড়পুর যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। আগতরা বিহারের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি সহজেই নিদর্শনগুলোর ঐতিহাসিক পটভূমি ও গুরুত্ব জানতে পারবেন। 

নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, নওগাঁ জেলা প্রাকৃতিক ও  প্রত্নতত্ত্বসম্পদে ভরপুর। মান্দা কুসুম্বা শাহি মসজিদ, পাহাড়পুর যাদুঘর ও সোমপুর বিহারসহ ঐতিহাসিক নিদর্শন ও বিনোদনকেন্দ্র এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঈদের আগে থেকেই পোশাকধারী থানা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সড়কগুলোতেও যাতে কেউ চাঁদাবাজি ও বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেদিকে কড়া নজর দেওয়া হয়েছে। 

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা জানান, ঈদে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কয়েকগুন বাড়বে। সেদিকে খেয়াল রেখে জেলা আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সড়কে নিরাপত্তা ও দূর্ঘটনারোধে একাধিক স্থানে চেকপোস্ট বাসানো হবে। বিনোদনকেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে মানুষের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষনিক মাঠে কাজ করবে। 

শফিক ছোটন/অমিয়/