দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ-এর সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাববছরে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ৩ শতাংশ।
সর্বশেষ ২০২৩ হিসাববছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ২০২২ সালেও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল ব্যাংকটি। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ২০২৩ সালে ৬৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মুনাফা করেছে, যা ২০১৯ সালের পর সর্বোচ্চ। ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মোট ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ আকারে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে নিয়ম অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির শেয়ারের দামের উত্থান-পতনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সীমা আরোপ ছিল না। উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ডিএসই সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ হিসাববছরে ইসলামী ব্যাংকের সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৯৫ পয়সা, যা ২০২২ সালে ছিল ৩ টাকা ৮৩ পয়সা। সমাপ্ত হিসাববছরে ব্যাংকটির পুনর্মূল্যায়ন হওয়া শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ৪৫ টাকা ২৪ পয়সা। এটি ২০২২ সালে ছিল ৪৩ টাকা ২১ পয়সা। এ ছাড়া গত বছর ইসলামী ব্যাংকের নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো পার শেয়ার বা শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থের প্রবাহ হয়েছে ঋণাত্মক ১০ টাকা ৬৩ পয়সা, যা এর আগের বছর ছিল ঋণাত্মক ৫৫ টাকা ৬৮ পয়সা।
ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য আগামী ২৫ জুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ইসলামী ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ প্রদানের প্রস্তাব অনুমোদন করবেন। এ জন্য আগামী ১৬ মে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড তাদের পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে চায়। এ জন্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে তারা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ কোটি টাকা করতে চায়। এদিকে গত বুধবার অনুষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ইসলামী ব্যাংকের সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৩৫ পয়সা। অন্যদিকে প্রথম প্রান্তিকে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ঋণাত্মক ২৮ টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ঋণাত্মক ৫২ টাকা ৬ পয়সা। এ ছাড়া প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ৪৫ টাকা ৪০ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৩ টাকা ৪৩ পয়সা।
এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইবিবিএল মুদারাবা পারপেচুয়াল বন্ডের পরিচালনা পর্ষদ সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ মুনাফা রেট ঘোষণা করেছে। ডিএসই সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৫ জুন ইসলামী ব্যাংকের এজিএম অনুষ্ঠানের পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঘোষিত মুনাফা বিতরণ সম্পন্ন করা হবে। এ মুনাফা দিতে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মে।
ইসলামী ব্যাংক বলছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির নগদ ও নগদ সমতুল্য ব্যালেন্স ছিল ২১ হাজার ৯৪৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬০৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা এবং সারা দেশে ৩৯৪টি শাখা, ২৪৯টি উপশাখা ও ২ হাজার ৭৭১টি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে।
এমএ/