ইসরায়েল রাফায় স্থল অভিযান শুরু করতে পারে এমন শঙ্কায় গত সপ্তাহে দেশটিতে বোমার শিপমেন্ট যেতে দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ওই শিপমেন্টে ২ হাজার পাউন্ড ওজনের ১ হাজার ৮০০ বোমা এবং ৫০০ পাউন্ড ওজনের ১ হাজার ৭০০ বোমা ছিল। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন এ বিষয়ে।
রাফা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে উদ্বেগ রয়েছে, তা পুরোপুরিভাবে নিরসন করতে পারেনি ইসরায়েল। রাফার বেসামরিকদের নিরাপদে রাখা নিয়েও সেরকম কোনো পরিকল্পনা জানাতে পারেনি দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের ওই পদক্ষেপ নিয়ে ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
গাজা উপত্যকায় এখনো হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে সেখানে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটি। ওই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে মিসরের সঙ্গে গাজার রাফার সীমান্ত পারাপারের অংশটুকু ট্যাংক দিয়ে দখলে নেয় তারা।
বিবিসির খবর বলছে, বিশেষভাবে রাফাকে ঘিরে তীব্র বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েল। স্থানীয় চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিনগত রাতের হামলায় এক পরিবারের সাতজন মারা গেছেন।
গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাফা সীমান্ত পারাপার খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শুধু ওই স্থান দিয়েই স্থলপথে ত্রাণ ঢুকছিল গাজায়। এ ছাড়া মানুষও শুধু ওই অংশটি দিয়েই যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে পালাতে পেরেছে।
গত সোমবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী রাফায় অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষকে শহরের ভেতরেই পূর্ব দিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা হামাস যোদ্ধাদের নির্মূলে ও অবকাঠামো অপসারণে ‘সীমিত’ অভিযান শুরু করবে।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে মিসরের কায়রোয় আলোচনা প্রচেষ্টা এখনো অব্যাহত রয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিরাও যাতে মুক্তি পায়।
হোয়াইট হাউস প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েলের রাফায় স্থল অভিযান শুরু করা উচিত না- এই অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এখন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ রয়েছে, যাদের যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, কীভাবে রাফার জনসাধারণের মানবিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা হবে এবং হামাসের বিরুদ্ধে সেখানে ঠিক কীভাবে ভিন্ন পন্থায় ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে সংলাপে বসেছি। ওই আলাপগুলো এখনো চলছে এবং আমাদের উদ্বেগ পুরোপুরি নিরসন হয়নি।
হোয়াইট হাউস প্রশাসনের কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েলি নেতারা এখন এরকম একটি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর কারণে আমরাও আমাদের বিশেষ কিছু অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টিকে সতর্কভাবে পর্যালোচনা করছি, যা হয়তো রাফায় ব্যবহৃত হতে পারে। এটি এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ওই পর্যালোচনার ফলাফল হিসেবে আমরা গত সপ্তাহে অস্ত্রের একটি শিপমেন্ট স্থগিত করে দিয়েছে। সেটিতে ২ হাজার পাউন্ড ওজনের ১ হাজার ৮০০ বোমা ও ৫০০ পাউন্ড ওজনের ১ হাজার ৭০০ বোমা ছিল। আমরা বিশেষভাবে ভেবেছি, ওই বোমাগুলো কীভাবে ব্যবহার করা হবে ও ঘনবসতিতে সেগুলো কী প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে। বিশেষ করে ২ হাজার পাউন্ডের বোমাটির ব্যবহার নিয়ে আমরা ভেবেছি।
অজ্ঞাতনামা ওই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন যে, তাদের পর্যালোচনা অব্যাহত রয়েছে। সূত্র: বিবিসি