শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ দিল টিএমজিবি । খবরের কাগজ
ঢাকা ২১ বৈশাখ ১৪৩১, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ দিল টিএমজিবি

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:০২ পিএম
শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ দিল টিএমজিবি
ছবি : খবরের কাগজ

প্রযুক্তি সাংবাদিকদের সংগঠন টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ তুলে দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। 

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে দ্বিতীয়বারের মতো ‘টিএমজিবি-লুনা সামসুদ্দোহা শিক্ষাবৃত্তি ২০২৩’ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন টিএমজিবির সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের ডিজিটালাইজেশনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘এখন অভিভাবকদের কাছে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার পাশাপাশি সন্তানদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা। যে দেশটি লাঙল-জোয়ালের দেশ ছিল, যে দেশটি প্রযুক্তিতে পিছিয়ে ছিল, শিল্পে পিছিয়ে ছিল, সেই জায়গায় পৃথিবী যেখানে বদলে গেছে, বাংলাদেশও এখন বদলে গেছে। এখন যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন। এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে দেশ ডিজিটালাইজেশনে এগিয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এখন ইন্টারনেটের প্রসার হয়েছে। তাই কোনো শিক্ষার্থীর কাছে এখন ডিজিটাল যন্ত্র না পৌঁছালে তারা স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়ে থাকবে। এক সময় যখন কোনো তথ্য পেতে লাইব্রেরিতে পড়ে থাকতে হতো, সেখানে হাতের ডিভাইস থেকেই সে সেকেন্ডের মধ্যে সেটি জানতে পারছে।’ 

তিনি বলেন, ‘এই ডিজিটাল যন্ত্রের মধ্যে কিন্তু সবই পাওয়া যায়। এখানে যেমন খারাপ কনটেন্ট আছে, তেমনি ভালো কনটেন্ট আছে। অনেক অভিভাবক এসব কিছু নজরদারি করে না বলে শিশুরা খারাপ কনটেন্টের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তাই অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে এবং তাদের ডিভাইস থেকেই জ্ঞান অর্জনের সুযোগ দিতে হবে।’ 

টিএমজিবি তার সদস্যদের ১৭ সন্তানকে এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেছে। এ ছাড়া ২১ জনকে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়।

টিএমজিবি সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন সভাপতির বক্তব্যে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে লুনা সামসুদ্দোহার অবদান স্মরণ করেন। তিনি এ সময় তার নামে শিশুদের জন্য টিএমজিবি শিক্ষাবৃত্তি প্রণয়ন করতে পারায় তার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইক্যাব)-এর সভাপতি শমী কায়সার, সহসভাপতি মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর সহসভাপতি তানভীর ইব্রাহিম, ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করীম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজির (বিডাব্লিউআইটি) সভাপতি রেজওয়ানা খান, সাধারণ সম্পাদক আছিয়া খালেদা নীলা, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান খান জিহাদ, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট ইকবাল বাহার জাহিদ এবং বিজয় ডিজিটালের সিইও জেসমিন জুঁই। অনুষ্ঠানে টিএমজিবি সদস্যদের সন্তানদের বৃত্তির পাশাপাশি সার্টিফিকেটও প্রদান করা হয়। 

দেশের প্রযুক্তি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অন্যতম পথিকৃত প্রয়াত লুনা সামসুদ্দোহার নামে সদস্যদের সন্তানদের জন্য এই শিক্ষাবৃত্তি প্রবর্তন করে টিএমজিবি। দোহাটেক নিউ মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের প্রথম নারী চেয়ারম্যান লুনা সামসুদ্দোহার জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকায়। ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

জোবাইদা/অমিয়

ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ১২:৪০ এএম
ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে শুক্রবার (৩ মে) সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ১৪ দিন পর এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। শেষ গত ১৮ এপ্রিল ডেঙ্গুতে বরিশালে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে এ সময়ের মধ্যে আক্রান্ত হয়ে আরও ৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬ জন রোগী।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন ও নারী ১৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ মে পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ হাজার ২৪৮ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৩৭৮ জন ও নারী ৮৭০ জন।

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১১:৫৭ পিএম
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের
ছবি : সংগৃহীত

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান নিয়ার ইস্ট সাউথ এশিয়া (নেসা) সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের একটি প্রতিনিধিদল গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শনকালে এ প্রশংসা করেন।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বাসসের

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ৪৬ সদস্যের দলটির নেতৃত্ব দেন নেসা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ডিস্টিংগুইশ প্রফেসর ড. হাসান আব্বাস। এ সময় প্রতিনিধিদলটি মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে অংশগ্রহণ করে। প্রতিনিধিদলে ওয়াশিংটন ডিসিতে নেসা সেন্টার আয়োজিত একটি সেমিনারে ২৮টি দেশের অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ড. আব্বাস ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে বক্তৃতাকালে সন্ত্রাস, সহিংস চরমপন্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে আমি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের দ্বারা দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি।

ড. আব্বাস বলেন, নেসা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কামনা করে এবং আরও সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ দেখতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান দূতাবাসে নেসা সেন্টারের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

রাষ্ট্রদূত ইমরান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং দেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি রোহিঙ্গাসংকট এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য এবং গ্লোবাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড রিজিলিয়েন্স ফান্ড (জিসিইআরএফ)-এ দেশের অগ্রগতির ওপরও আলোকপাত করেন।

রাষ্ট্রদূত সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবিলার জন্য সব দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। কোনো দেশের পক্ষে এককভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়।

দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গাসংকট প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ইমরান মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত সব রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভূমিতে টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, যদি সমস্যাটি আরও দীর্ঘায়িত হয়, তবে এটি সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত এবং উন্নয়ন উদ্যোগকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ফার্স্ট সেক্রেটারি আতাউর রহমান এবং এর সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন কাউন্সেলর ও দূতালয়প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।

‘শান্তির সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত বাংলাদেশের প্রস্তাব জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩১ পিএম
‘শান্তির সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত বাংলাদেশের প্রস্তাব জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত
ছবি : বাসস

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত বাংলাদেশের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত গত বৃহস্পতিবার সাধারণ পরিষদের হলে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবটি প্রথম গৃহীত হয়েছিল। তারপর থেকে বাংলাদেশ প্রতিবছর সাধারণ পরিষদে শান্তির সংস্কৃতির ওপর একটি উচ্চস্তরের ফোরাম আহ্বান করছে।

৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ এ অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক উচ্চস্তরের ফোরামে শান্তির সংস্কৃতির রূপান্তরমূলক ভূমিকার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। যেন শান্তি, সমতা এবং শান্তি বিনির্মাণকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা যায়।

এ বছর প্রস্তাবনাটি বিশ্বব্যাপী ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জাতিসংঘের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। এটি প্রতিরোধমূলক কূটনীতি, সংলাপ এবং সবস্তরে সুস্থ বিতর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেয়। এ ছাড়া সংঘাত প্রতিরোধ এবং সমাধানে নারীর ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং এই জাতীয় প্রক্রিয়াগুলোতে নারীদের সমান এবং অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শান্তির সংস্কৃতির প্রস্তারের প্রাসঙ্গিকতা বেড়েছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এটি বিশ্বে শান্তি বজায় রাখার জন্য জাতিসংঘের সনদের বাধ্যবাধকতা পরিপূরক করার একটি কার্যকর উপায় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এই বছরের প্রস্তাবটি ১১২টি দেশ সমর্থন করেছে। সূত্র: বাসস

 

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে তিন বছরে ১৩ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১১:১৪ পিএম
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে তিন বছরে ১৩ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ
ছবি : সংগৃহীত

গত বছরের তুলনায় বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশ আরও দুই ধাপ পিছিয়েছে। এই নিয়ে পরপর তিন বছরে সূচকে বাংলাদেশের ১৩ ধাপ অবনমন ঘটল। এই তিন বছরে ১৫২তম থেকে ১৬৫তম অবস্থানে নেমে গেল বাংলাদেশ।

সাম্প্রতিক সময়ে এই সূচকে বাংলাদেশের বড় অবনমন ঘটেছিল ২০২২ সালে। ওই বছর ২০২১ সালের তুলনায় ১০ ধাপ অবনমন হয়েছিল বাংলাদেশের। পরের দুই বছর ২০২৩ ও ২০২৪ সালে যথাক্রমে আরও এক ধাপ ও দুই ধাপে পেছায় বাংলাদেশ।

শুক্রবার (৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ২০২৪ সালের হালনাগাদ সূচক প্রকাশ করেছে। এতে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫তম, স্কোর ২৭ দশমিক ৬৪। ২০২৩ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৩তম। স্কোর ছিল ৩৫ দশমিক ৩১।

এদিকে গতবারের মতো এবারও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচকে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। এবার নরওয়ের পর রয়েছে ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস ও ফিনল্যান্ড। আর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে যথাক্রমে আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া (১৮০তম), সিরিয়া (১৭৯তম), আফগানিস্তান (১৭৮তম), উত্তর কোরিয়া (১৭৭তম) ও ইরান (১৭৬তম)।

এদিকে এবারের সূচকে প্রতিবেশী দেশ ভারত দুই ধাপ অগ্রগতি হয়ে ১৫৯তম অবস্থানে আছে। আর দুই ধাপ অবনমন হয়ে পাকিস্তান আছে ১৫২তম অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ১৫০তম, মালদ্বীপ ১০৬তম, ভুটান ১৪৭তম ও নেপাল ৭৪তম অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৫৫তম, রাশিয়ার ১৬২তম এবং চীনের অবস্থান ১৭২তম।

আরএসএফ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণমাধ্যম কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে, তার ওপর ভিত্তি করে এই সূচক প্রকাশ করে আসছে। রাজনীতি, সামাজিক, আইনি সুরক্ষা, অর্থনীতি ও নিরাপত্তা- এ বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করা হয়। গত বছরের তুলনায় সামাজিক ও নিরাপত্তা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আছে আগের মতো। আর অন্য তিন ক্ষেত্রে অবনমন হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনায় আরএসএফ বলেছে, বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি নাগরিকের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তাদের সংযোগ সামান্য। সংবাদ ও তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটভিত্তিক মাধ্যমগুলোর ভূমিকা বাড়ছে।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও বাংলাদেশ বেতার সরকারি প্রচার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত মালিকানায় ৩ হাজার প্রিন্ট মিডিয়া (দৈনিক ও সাময়িকী), ৩০টি রেডিও স্টেশন, ৩০টি টিভি চ্যানেল ও কয়েক শ নিউজ সাইট রয়েছে।

আলোচনায় আরএসএফ বলছে, ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকরা পছন্দ না হলেই সাংবাদিকদের ওপর সহিংস হামলা চালিয়ে আসছেন। কোনো সাংবাদিককে চুপ করিয়ে দিতে বা সংবাদমাধ্যমকে বন্ধ করতে বিচারিক হয়রানি অব্যাহত রয়েছে। সম্পাদকরা এ ধরনের বৈরী পরিস্থিতিতে সরকারি ভাষ্যকে চ্যালেঞ্জ করে, এমন বিষয় সতর্কতার সঙ্গে এড়িয়ে যান।

আলোচনায় আরএসএফ সাইবার নিরাপত্তা আইনেরও (সিএসএ) সমালোচনা করেছে। আরএসএফের মতে, বাংলাদেশে ব্যক্তিমালিকানাধীন সংবাদমাধ্যমের বেশির ভাগই হয়েছে এ দেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতির মধ্যে আত্মপ্রকাশ করা বড় ব্যবসায়ীদের হাত ধরে। তারা নিজেদের সংবাদমাধ্যমকে দেখেন প্রচারণা, প্রভাব বিস্তার ও মুনাফা তৈরির একটি হাতিয়ার হিসেবে। এ ক্ষেত্রে তারা সম্পাদকীয় স্বাধীনতা বজায় রাখার চেয়ে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন।

জাহানারা ইমামের জন্মবার্ষিকী নির্মূল কমিটি গঠিত না হলে কট্টরপন্থি দলগুলো আরও শক্তিশালী থাকত

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম
নির্মূল কমিটি গঠিত না হলে কট্টরপন্থি দলগুলো আরও শক্তিশালী থাকত
ছবি : সংগৃহীত

শহিদজননী জাহানারা ইমাম যদি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন না করতেন, তা হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের সমমনা কট্টরপন্থি দলগুলো এখনকার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী থাকত বলে মন্তব্য করেছেন তরুণ ব্লগার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও রাজনীতিবিদরা।

শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শহিদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জাহানারা ইমামের আন্দোলনে তরুণদের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তারা এই মন্তব্য করেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে শহিদজননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। জাহানারা ইমামের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গণ-আদালতে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিচার শুরু হয়।

শুক্রবার দিনের অনুষ্ঠানসূচি শুরু হয় সকাল ৮টায় মিরপুরে শহিদজননী জাহানারা ইমামের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে। পরে বিকেলের আলোচনা সভায় ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র কেন্দ্রীয় আইটি সেলের সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তপন পালিতের সভাপতিত্বে এবং অনলাইন বহুভাষিক সাময়িকী ‘জাগরণ’-এর সহকারী সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী সুশীল মালাকারের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ব্লগার লেখক মারুফ রসূল।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আইটি সেলের সভাপতি শহিদসন্তান আসিফ মুনীর, নির্মূল কমিটির আইন সহায়ক কমিটির সদস্য ড. খন্দকার তানজির মান্নান, চলচ্চিত্র নির্মাতা ইসমাত জাহান, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট শামস রাশীদ জয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আশেক মাহমুদ সোহান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ছাত্র ও জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অপূর্ব চক্রবর্তী।

চলচ্চিত্র নির্মাতা ইসমাত জাহান বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়ার পরও একাত্তরের ঘাতকরা কিন্তু থেমে নেই, তারা বিভিন্নভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফলও হচ্ছে। কারণ তারা সংগঠিত। তাদের অর্থের অভাব নেই। সদস্যেরও অভাব নেই। দেশের সরকারি বেসরকারিসহ প্রায় ক্ষেত্রেই তাদের সদস্যদের ঢুকিয়ে দিয়েছে এবং নীরবে বিভিন্নভাবে মানুষের চিন্তাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে তারা। তাদের কারণে মানুষ অনেক বেশি অপরাধপ্রবণ, অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। তাই নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা, তোমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস কর, তবে তোমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’

মূল প্রবন্ধে ব্লগার লেখক মারুফ রসূল বলেন, ‘শহিদজননী জাহানারা ইমাম মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে চিনতে শিখিয়েছিলেন আতশকাচ দিয়ে। একটি অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য জনমানসিকতায় যে সংবেদনশীলতা প্রয়োজন জাহানারা ইমাম তা শনাক্ত করেছিলেন।’