মহান মে দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রামের জাহাজভাঙা শিল্পের শ্রমিকরা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম এ কর্মসূচি আয়োজন করে। কর্মসূচিতে কয়েক শ শ্রমিক অংশ নেন। সমাবেশ শেষে শ্রমিকরা লাল ছাতা নিয়ে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি নগরীর জামালখান, আন্দরকিল্লা, চেরাগী পাহাড়সহ বেশ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি শ্রমিকনেতা তপন দত্ত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব ফজলুল কবির মিন্টু। বক্তব্য রাখেন ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামালসহ অন্যরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) মে দিবসে উত্থাপিত প্রধান দাবি অনুযায়ী দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমকে তাদের ১ নং কনভেনশন হিসেবে গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশে দেশে দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ শ্রম আইনে দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমের বিষয়টি যুক্ত করা হলেও জাহাজভাঙা সেক্টরসহ সমগ্র দেশের বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে শ্রমিকরা এত কম মজুরি পান যে, তা দিয়ে জীবনধারণ করা একেবারেই অসম্ভব। এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। অন্যদিকে শ্রমিকরাও তাদের প্রয়োজনীয় খরচের ঘাটতি মেটানোর জন্য অতিরিক্ত কাজ করতে আগ্রহী হন, যা মে দিবসের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বক্তারা আরও বলেন, জাহাজভাঙা শ্রমিকদের জন্য ২০১৮ সালে ঘোষিত নিম্নতম মজুরি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। ইতোমধ্যে নিম্নতম মজুরি ঘোষণার সময়কাল পাঁচ বছর অতিক্রম করেছে। শ্রম আইন অনুযায়ী নতুন করে নিম্নতম মজুরি ঘোষণা আবশ্যক হলেও সরকার এবং মালিকপক্ষ সেই ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এবারের মে দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘শ্রমিক-মালিক গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ উল্লেখ করে শ্রমিকনেতারা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট শ্রমিক প্রয়োজন। আর স্মার্ট মজুরি ছাড়া স্মার্ট শ্রমিক পাওয়া যাবে না। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে শ্রমিকদের স্মার্ট মজুরি দিতে হবে। অন্যথায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা একটি অন্তঃসারশূন্য স্লোগানে পরিণত হবে।