ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের ৯ বাড়ি-ফ্ল্যাটের খোঁজ পেয়েছে দুদক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের ৯ বাড়ি-ফ্ল্যাটের খোঁজ পেয়েছে দুদক
ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান মিয়ার (আবদুস সোবহান গোলাপ) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া তার নামে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৯টি বাড়ি ও ফ্ল্যাটের খোঁজ পেয়েছে দুদক, যার বাজারমূল্য অন্তত ৩২ কোটি টাকা। দেশে থেকে টাকা পাচার করে তিনি বিদেশে ওই সব সম্পদ কিনেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপ ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তার নিজের ৫১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৯৭ কোটি ৬৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৮৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। তার নামে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্সে ৯টি ফ্ল্যাট ও বাড়ি রয়েছে। বিদেশে থাকা ফ্ল্যাট ও বাড়ির বাজারমূল্য অন্তত ৩২ কোটি টাকা। তিনি অবৈধ উপায়ে অর্জিত এসব অর্থসম্পদ গোপনে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেছেন; যা ২০০৪ সালের ৫(২) ধারায় ফৌজদারি অসদাচরণ এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অর্থ পাচারসংক্রান্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ইইউর নতুন তালিকায় নিরাপদ বাংলাদেশ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫২ এএম
ইইউর নতুন তালিকায় নিরাপদ বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কসোভো, বাংলাদেশ, কলম্বিয়া, মিসর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিসিয়াকে ‘নিরাপদ উৎস দেশ’ হিসেবে  ঘোষণা করেছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) এ ঘোষণা করা হয়।  এ পদক্ষেপের ফলে ওই দেশগুলোর নাগরিকদের আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণযোগ্যতার সম্ভাবনা কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইইউর অভিবাসনবিষয়ক কমিশনার ম্যাগনাস ব্রুনার বলেন, 'অনেক সদস্য রাষ্ট্রেই আশ্রয় আবেদনের একটি বড় ব্যাকলগ রয়েছে। তাই আশ্রয় সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়ার পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব, তা-ই করা এখন অপরিহার্য।'

এদিকে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে এই উদ্যোগটি সমালোচনার মুখে পড়েছে। কারণ, এতে করে অনুমান করা হবে যে এসব দেশের নাগরিকদের আশ্রয়ের আবেদন যথাযথ নয়- এমন একটি পূর্বধারণা থেকেই প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হতে পারে। জনমত নেতিবাচক হওয়ার কারণে ইউরোপীয় জনপরিসরে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব বাড়ছে। এতে কট্টর-ডানপন্থী দলগুলোর রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে অনিয়মিত প্রবেশ ঠেকানো ও দ্রুত বহিষ্কারের পক্ষে চাপ বেড়েছে।

কমিশন জানায়, যেসব দেশ ইইউ প্রার্থীতার মর্যাদা পায় তারাও নীতিগতভাবে ‘নিরাপদ’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তবে সংঘর্ষে জর্জরিত দেশগুলোর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকবে, যেমন ইউক্রেন এই তালিকা থেকে বাদ থাকবে।

২০১৫ সালে ইইউ একটি অনুরূপ তালিকা প্রকাশ করেছিল, কিন্তু তুরস্ককে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে বিতর্কের কারণে সেই পরিকল্পনা পরিত্যক্ত হয়।

কমিশনের মতে, ভবিষ্যতে এই তালিকাটি সম্প্রসারিত বা পর্যালোচিত হতে পারে। তালিকাটি এমন দেশগুলোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি যেখান থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যক আবেদনকারী আসে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন সদস্য দেশ এরই মধ্যে নিজেদের মতো করে ‘নিরাপদ’ দেশ চিহ্নিত করে থাকে। যেমন ফ্রান্সের তালিকায় রয়েছে মঙ্গোলিয়া, সার্বিয়া ও কেপ ভার্দে।

তবে ইইউয়ের লক্ষ্য হলো একটি সমন্বিত ও অভিন্ন নীতিমালা তৈরি করা। যাতে সব সদস্য রাষ্ট্র একই মানদণ্ড অনুসরণ করে। এক্ষেত্রে সদস্য রাষ্ট্ররা চাইলে অতিরিক্ত দেশ যুক্ত করতে পারবে। তবে তালিকা থেকে কোনো দেশ বাদ দিতে পারবে না।

‘প্রতারণামূলক ও বিপজ্জনক’ পদক্ষেপ বলে অভিযোগ

কমিশন আরও জানায়, প্রত্যেক আশ্রয় আবেদন এখনও পৃথকভাবে পর্যালোচনা করতে হবে এবং আবেদনকারীদের সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। এভাবেই বর্তমান সুরক্ষা বিধানগুলো কার্যকর থাকবে। তবে পরিকল্পনাটি কার্যকর করতে হলে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। ইউরো-মেড রাইটস নামের একটি ছাতাসংগঠন বলেছে, তালিকাভুক্ত কয়েকটি দেশে নাগরিকদের ও অভিবাসীদের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রমাণ রয়েছে।

তাদের ভাষায়, 'এই দেশগুলোকে ‘নিরাপদ’ আখ্যায়িত করা প্রতারণামূলক ও বিপজ্জনক।'

ইইউ সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স জানায়, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অনিয়মিত প্রবেশের সংখ্যা ৩৮ শতাংশ কমে ২,৩৯,০০০-তে দাঁড়ায়। তবে ২০২৩ সালে প্রায় এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবেশের ঘটনা ঘটে।

গত অক্টোবর মাসে ইতালি, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশের নেতৃত্বে ইইউ নেতারা দ্রুত ফেরত পাঠানোর জন্য নতুন আইন প্রণয়নের আহ্বান জানান এবং অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধে ‘উদ্ভাবনী’ পন্থা মূল্যায়নের জন্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।

বর্তমানে ইইউ থেকে যারা বহিষ্কারের নির্দেশ পান, তাদের মধ্যে ২০ শতাংশেরও কম ব্যক্তিকে নিজ দেশে ফিরিয়ে পাঠানো সম্ভব হয় বলে ইইউ জানিয়েছে।

গত মাসে ইইউ একটি নতুন ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব দেয়, যাতে সদস্য দেশগুলো ইউরোপের বাইরেই অভিবাসন প্রত্যাবাসন কেন্দ্র স্থাপন করতে পারে।

ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ানতেদোসি বুধবার এই পদক্ষেপকে 'ইতালীয় সরকারের জন্য একটি সাফল্য' বলে অভিহিত করেছেন। সূত্র: বাসস

মেহেদী/

বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস আজ হিমোফিলিয়া রোগীরা অভিশপ্ত নন

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৮ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
হিমোফিলিয়া রোগীরা অভিশপ্ত নন
প্রতীকী ছবি

হিমোফিলিয়া একটি জন্মগত রক্তক্ষরণজনিত রোগ। এই রোগের জন্য রোগী কোনোভাবেই দায়ী নন। এটা ছোঁয়াচে রোগও নয়। অথচ অনেক পরিবারের সদস্যরা এ ধরনের রোগীকে অভিশপ্ত মনে করেন। এই ধারণা বা কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

চিকিৎসকরা বলছেন, এ রোগে শরীরের কোথাও কেটে বা ছিঁড়ে গেলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না। শরীরে অল্প আঘাতে বা কোনো আঘাত ছাড়াই অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে, যেমন কনুই, হাঁটু অথবা গোড়ালিতে এরকম রক্তক্ষরণ হতে পারে। সামান্য আঘাতেও কখনো কখনো রোগীর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কালো দাগ হয়ে যায়।

এই রোগে সাধারণত পুরুষরা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। নারীরা এই রোগের বাহক হয়ে থাকেন। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে নারীদেরও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জন্মগতভাবে না হলেও অন্য রোগের কারণে হিমোফিলিয়া হতে পারে। হিমোফিলিয়া রোগীর সঙ্গে মামাতো, খালাতো বোন কিংবা রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কারও বিয়ে হলে ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই হিমোফিলিয়ায় আক্রান্তের আশঙ্কা থাকে।

‘হিমোফিলিয়া এ’- জমাট বাঁধার ফ্যাক্টর এইটের ঘাটতির কারণে হয়। ‘হিমোফিলিয়া বি’- ফ্যাক্টর নাইনের ঘাটতির কারণে হয়। এগুলো সাধারণত বাবা-মায়ের থেকে একটি অকার্যকর জিনের এক্স ক্রোমোজোমের মাধ্যমে উত্তরাধিকারসূত্রে চলে আসে।

দেশে কত হিমোফিলিয়া রোগী রয়েছেন তার নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। তবে প্রতি ১০ হাজারে একজনের হিমোফিলিয়া হওয়ার আশঙ্কা করা হয়। হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোগী রয়েছেন ৩ হাজার ৩২৮ জন। দেশে এই রোগের চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানও অপ্রতুল। মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এই রোগের চিকিৎসা হয়। সেগুলো হলো শাহবাগের বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক), শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেম হাসপাতাল, সশস্ত্র বাহিনী ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, গ্রিন ভিউ ক্লিনিক, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার মোহাম্মদপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট ও যশোরের রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড সেন্টারে চিকিৎসা হয়। সরকারি পর্যায়ে জেলা উপজেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে এই রোগের চিকিৎসা হয় না।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মতো আজ বাংলাদেশে পালিত হবে বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস। নারী ও মেয়েদের বিলম্বিত রক্তক্ষরণ বা হিমোফিলিয়া হয়- এটাই হচ্ছে এবারের সচেতনতামূলক প্রতিপাদ্য বিষয়। 

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ডা. আদনান হাসান মাসুদ বলেন, হিমোফিলিয়া রোগীরা কোনোভাবেই অভিশপ্ত বা কলঙ্কিত নন। অনেকে মনে করেন যেহেতু বংশগত রোগ, ফলে অভিশপ্ত ও কলঙ্কিত মনে করা হয়। রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা হতাশ বোধ করেন। কিন্তু চিকিৎসা করালে রোগীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। ওষুধসহ রোগীদের চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের রেল ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৪ এএম
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের রেল ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল
ছবি : খবরের কাগজ

দেশের সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবারের রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর নতুন সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান আন্দোলনরত পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিশেষ বার্তায় এসব তথ্য জানা যায়। 

প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে এবং শিক্ষা উপদেষ্টার আহ্বানে বৈঠকে বসছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় সারা দেশে রেল ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল থাকবে। বৈঠকের উপর ভিত্তি করে ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’ এর পরবর্তী কর্মসূচি জানানো হবে।

বার্তায় বলা হয়, ‘‘আজ ১৭ এপ্রিল রোজ বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের হস্তক্ষেপে শিক্ষা উপদেষ্টার আহ্বানে বৈঠকে অংশগ্রহণ করবে ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’। সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিদ্ধান্তক্রমে বৈঠক চলাকালীন সময়ে রেল ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল থাকবে। বৈঠকের উপর ভিত্তি করে সারা বাংলাদেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জন্য পরবর্তী কর্মসূচি প্রকাশ করা হবে।’’

গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে সারাদেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।  আন্দোলনের কারণে সারাদেশের মহাসড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

পরে রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে আজ বৃহস্পতিবার রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি হলো-
১) জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কতৃর্ক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন এবং মামলার সাথে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

২) ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিলসহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করে একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিকভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।

৩) উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (১০ম গ্রেড) পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪) কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সকল শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। 

৫) কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরাবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

৬) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক হতে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। 

অমিয়/

ঢাকা-ইসলামাবাদ সচিব পর্যায়ের বৈঠক বৃহস্পতিবার

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০০ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৮ পিএম
ঢাকা-ইসলামাবাদ সচিব পর্যায়ের বৈঠক বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ ১৫ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক (এফওসি)। সর্বশেষ এ বৈঠক হয়েছিল ২০১০ সালে। বৈঠকে অংশ নিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের প্রধান ইশরাত জাহান।

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন আমনা বালুচ। বৈঠকে বাংলাদেশ পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে সব বিষয়ে আলোচনা করবেন তারা।

এফওসি বৈঠক শেষে আগামী ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। পরদিন দুদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ বিষয়ে খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ অতীতের টানাপোড়েন পেছনে ফেলে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায়, তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন বাদ দিয়ে নয়।’ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার দায়ে পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনার প্রসঙ্গ, আটকে থাকা সম্পত্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি এখনো আলোচনায় আছে। এ বিষয়ে তৌহিদ হোসেন সাফ জানিয়ে দেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে একাত্তরকে উপেক্ষা করা হবে না। সৌজন্য সাক্ষাতে কঠিন প্রসঙ্গ না তুললেও আনুষ্ঠানিক আলোচনায় এসব বিষয় তুলে ধরা হবে।’

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়েও ঐকমত্য হয়। আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় ইসলামাবাদ ও ঢাকার সম্পর্কে ছিল টানাপোড়েন। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্ক স্বাভাবিক ও গভীর করার পথে অগ্রসর হন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

পল্লবীতে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে শিশু হত্যা, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
পল্লবীতে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে শিশু হত্যা, গ্রেপ্তার ১
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পল্লবীতে একটি মোটর সার্ভিসিংয়ের দোকানে গাড়িতে হাওয়া দেওয়া মেশিনের (কমপ্রেশার) সাহায্যে পেটে বাতাস গ্যাস ঢুকিয়ে চার বছরের শিশুকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিশুর নাম আবু বকর সিদ্দিক। এ ঘটনায় আকাশ নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম। এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরের বাউনিয়াবাদ এলাকার একটি মোটর সার্ভিসিংয়ের গ্যারেজে এ ঘটনা ঘটে। 

পায়ুপথে বাতাস প্রবেশ করানোর কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় একজন অজ্ঞাতনামাসহ চারজনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা করেছেন শিশুটির মা আয়শা। আসামিদের একজন কিশোর হওয়ায় শিশু আইন ২০১৩ অনুসারে তার নাম উল্লেখ করা হলো না। বাকি দুই আসামি রাজু (২০) ও মো. সুজন খান (৩৬)।

তিনি বলেন, আকাশ নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খেলার ছলে ঘটনাটি ঘটেছে দাবি করেছে ওই কিশোর। তবে চরম অমানবিক হত্যাকাণ্ড। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

স্থানীয়রা জানায়, গত মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় স্কুলে ক্লাস শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবু বক্কর বাসায় ফিরে যায়। তার মা একজন গার্মেন্টস কর্মী। আবু বক্করের বড় ভাই জিহাদ (১১ বছর) স্থানীয় একটি মোটর গ্যারেজে কাজ করে। এরপর বেলা ৩টার দিকে আবু বক্কর গ্যারেজে বড়ভাই জিহাদের কাছে গেলে ওই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। উপস্থিত কয়েকজন কিশোর বক্করের বড়ভাই জিহাদকে কলা-রুটি কিনে আনতে পাঠায়। এ সময় অন্য কিশোররা আবু বক্করের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করে। গাড়ির হাওয়া দেওয়ার পাইপ শিশুটির পায়ুপথে ঢুকিয়ে হাওয়া দেয়। এ সময় অতিরিক্ত চাপে শিশুটির পেট ফুলে যায়। আবু বক্কর বমি করে। তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে।

এ সময় স্থানীয়রা দ্রুত শিশুটিকে প্রথমে রাবেয়া ক্লিনিকে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর আবু বক্করের পরিবার পল্লবী থানায় মামলা করেছেন।