
নবজাতকের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে জন্ম হয় একজন নতুন মায়ের। আবার সন্তান বড় হতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে মায়েরও বয়স বাড়তে থাকে। আমরা যখন টিনএজার তখন সাধারণত মায়েদের জীবনে চলে মধ্যম পর্যায়। এসময় শারীরিক, মানসিক, হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে তারাও নানারকম ক্লান্তিকর অনুভূতি, একাকীত্ব বা নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। এসময়টাই কিন্তু মায়ের বন্ধু হয়ে উঠার চমৎকার সময়।
মায়ের কর্মজীবন সহজ করা
সন্তান জন্মদান, লালন-পালনের মূল দায়িত্বটা থাকে মায়ের উপর। সন্তানকে শৈশবে দেখাশোনা করতে গিয়ে অনেকে চাকরি জীবনের অনেক সম্ভাবনা, অর্জন ছাড় দেন। কেউ কেউ আবার চাকরি ছেড়ে পুরো সময়টাই ব্যয় করেন সন্তানের জন্য। কৈশোরে এসে কিন্তু সেই ত্যাগের প্রতিদান দেওয়ার অনেকটাই সুযোগ পাওয়া যায়। একইসঙ্গে ঘর ও বাইরের কাজ সামলানো অনেকাংশেই কঠিন হয়ে পড়ে মায়েদের জন্য। তাই সন্তান ছেলে বা মেয়ে হোক বাড়ির কাজে সাহায্য করলে মায়ের জন্য কর্মস্থলে মনোযোগ দেওয়া কিংবা মেধা বিকাশের চর্চা করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়।
কথা বলার সঙ্গী
বয়স বৃদ্ধি, সাংসারিক চাপ, ব্যস্ততা বিভিন্ন কারণে মধ্য বয়সে মায়েরা একা অনুভব করতে শুরু করেন। জীবনের এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে মায়ের ঝুলিতে জমে যায় নানান সুখ-দুঃখের কথা, না বলা কথা, নানান অভিজ্ঞতা। শৈশবে মায়ের ব্যক্তিগত আলাপ বুঝার মতো হয়তো বয়স থাকে না। তবে কৈশোর থেকে আমরা যত বড় হতে থাকি ততই মায়ের সঙ্গে মানসিক যোগাযোগের বয়সের ব্যবধানটা কমে আসতে থাকে। তাই কৈশোর থেকেই মায়ের সঙ্গে গল্প করার ও কথা ভাগাভাগি করার সম্পর্ক গড়ে তুলো।
মেনোপজ সম্পর্কে সচেতন হওয়া
মায়ের পিরিয়ড বা মাসিক চক্রের সঙ্গে রয়েছে গর্ভধারণ, সন্তান জন্মদান তথা নাড়ির সম্পর্ক। আবার মধ্য বয়সেই যখন মায়ের মাসিক বন্ধ হয়ে যায় বা মেনোপজ ঘটে তখন শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে মায়েদের মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শরীর দূর্বল অনুভব করা, বিষণ্ন বোধ করার মতো সমস্যা দেখা দেয়। শৈশবে যেমন আমাদের সার্বক্ষণিক মায়ের সহাচার্য প্রয়োজন হয় তেমনি এসময়টাতেও মায়ের মানসিক মনোবল ও শরীরের প্রতি বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। এসময় মায়ের পছন্দ মতো খাবার খাওয়ানো, মন-মেজাজ খারাপ থাকলে পাশে থাকা, একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার মতো কাজ করলে তিনিও নতুন এই পরিস্থিতি সহজে সামাল দিতে পারেন।
শরীরের যত্ন নেওয়া
মধ্য বয়স থেকেই বেশিরভাগ মায়েরা হাড় ক্ষয়জনিত রোগে ভুগতে থাকেন। এজন্য শরীর ব্যাথা, ক্লান্ত অনুভব করা, চলাচলে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে। জানো কি হাড় ক্ষয়ের এই রোগের সঙ্গেও রয়েছে সন্তান জন্মদানের সম্পর্ক? এসময় মায়ের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়ার মধ্য দিয়েই জানানো যেতে পারে কৃতজ্ঞতা।