৯ মে পর্যন্ত বন্ধ চুয়েট, হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

৯ মে পর্যন্ত বন্ধ চুয়েট, হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ চুয়েট, হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) আগামী ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি শর্তসাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চুয়েটের রেজিস্ট্রার ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আগামী ৯ মে পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা, উচ্ছৃঙ্খলা ও সহিংসতা পরিহার এবং রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদ ধ্বংসে সম্পৃক্ততা থাকবে না শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে এক শিক্ষার্থী তালহা জোবায়ের খবরের কাগজকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা-সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ২০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈঠক হয়। সেখানে আমাদের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা কেউ হল ছেড়ে যাইনি। পাশাপাশি আমাদের আন্দোলন এখনো পর্যন্ত আমরা স্থগিত ঘোষণা করিনি। আজ (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের একটা বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। তবে আজ আমরা কোনো প্রকার বিক্ষোভ বা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করিনি। শনিবার (আজ) আমরা পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানাতে পারব।’ 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের এবং শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। হল ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আসায় আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসের মূল সড়কের বাইরে ও ক্যাম্পাসের ভেতরে গোল চত্বরে দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। 

গত সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সেলিনা কাদের চৌধুরী কলেজসংলগ্ন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এরা হলেন শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন। শান্ত সাহা পুরকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২০০১১০০) ও তৌফিক হোসেন একই বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২১০১০০৬) ছিলেন। আহত জাকারিয়া হিমু চুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওই দুই শিক্ষার্থী মোটরসাইকেলে রাঙ্গুনিয়া থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন। এ সময় চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট থেকে ছেড়ে আসা ‘শাহ আমানত’ নামে একটি বাস শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেলে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এ সময় তারা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনার পর ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা। 

এমএ/

আইন অনুষদের ডিন পদ ফিরে পেলেন অধ্যাপক রহমতউল্লাহ

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম
আইন অনুষদের ডিন পদ ফিরে পেলেন অধ্যাপক রহমতউল্লাহ
অধ্যাপক ড. মো. রহমতউল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত

হাইকোর্টের নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন অনুষদের ডিন পদ ফেরত পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. রহমতউল্লাহ।

বুধবার (৮ মে) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিন্ডিকেট সদস্য খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে পুনর্বহালের ব্যাপারে হাইকোর্টের একটা রায় ছিল। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ডিন পদ ফিরিয়ে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।’

গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অভিযোগে তাকে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যদিও এ ঘটনায় তিনি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করলে তাকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাবির ২ শিক্ষককে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাবির ২ শিক্ষককে অব্যাহতি
ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। তাই তাদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সিন্ডিকেট।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট বৈঠকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ ও ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে- উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে যৌন নিপীড়ন সেলের অধিকতর তদন্ত চলাকালীন দুই অধ্যাপককে ওই অব্যাহতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ১২তম ব্যাচের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষার সমন্বিত কোর্সে (লিখিত ও মৌখিক) কম নম্বর দিয়ে ফলাফল ধস নামানোর অভিযোগ তুলে অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ২৮ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে ওই শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের নম্বর কম দিয়েছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাদির জুনাইদ।

তারই তিন দিনের মাথায় যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে বিভাগের এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দেন। সঙ্গে কিছু অডিও রেকর্ড ও মেসেজের স্ক্রিনশটও জমা দেন তিনি। এ ছাড়া রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও তার বিরুদ্ধে ঢাবিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত এই অধ্যাপককে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

যদিও অধ্যাপক নাদির জুনাইদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এর পেছনে অন্য কিছু দেখছেন।

বিভাগের পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার আগে ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে ফলিত গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফেরদৌস জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগে একটি কোর্সে খণ্ডকালীন শিক্ষক। একই বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

আরিফ জাওয়াদ/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

ঢাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ১০:৫০ এএম
ঢাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে এমফিল ও পিএইচডি থিসিসে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। এবার তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য খবরের কাগজকে নিশ্চিত করে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছিরকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ এবং তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম জাভেদ আহমেদ।

এর আগে গেল বছরের ২৯ আগস্ট স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফ বিল্লাহ এ নিয়ে ঢাবি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), কলা অনুষদের ডিন এবং সব সিন্ডিকেট সদস্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

আরিফ জাওয়াদ/জোবাইদা/অমিয়/

ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে ছাত্রলীগের মারধরের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০৬:৩৭ পিএম
ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে ছাত্রলীগের মারধরের অভিযোগ
রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাফিউল ইসলাম জীবন। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের এক নেতা ও তার বন্ধুকে তিন ঘণ্টা আটকে মারধর ও পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (৬ মে) রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। তবে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা।

ভুক্তভোগীরা হলেন রাবির শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) নাফিউল ইসলাম জীবন ও তার বন্ধু ইউনুস খান। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। অপরদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব, সহসভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, সাদিকুল ইসলাম সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ ও মাদার বখশ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মিশকাত হাসান।

ভুক্তভোগী, ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৯টার দিকে নাফিউল ও তার বন্ধু ইউনুস খান ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। কিন্তু একপর্যায়ে তাদের অনুসরণ করা হচ্ছে বুঝতে পারলে তারা মোটরসাইকেলে করে রোকেয়া হলের পেছন দিয়ে ফ্লাইওভারসংলগ্ন গেট দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে ছাত্রলীগ নেতারা তাদের পথরোধ করেন এবং জোর করে মাদার বখশ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে আসেন। কক্ষটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের। এর কিছুক্ষণ পর সেই কক্ষে আসেন গালিব ও ছাত্রলীগের অভিযুক্ত অন্য নেতারা। তারা নাফিউলকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করলে তাকে মারধর শুরু করেন গালিব এবং একপর্যায়ে পিস্তল দেখিয়ে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এ সময় আরেক ভুক্তভোগী ইউনুস খান ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বললে তাকেও চড়-থাপ্পড় মারেন গালিব। খবর পেয়ে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে রাত ১টার দিকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে তুলে দেন ছাত্রলীগ নেতারা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা নাফিউল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিব আমাকে মারধর করেছেন। প্রায় তিন ঘণ্টা আমাকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। এ ছাড়া তারা জোরপূর্বক আমার মোবাইল চেক করেন।’

ভুক্তভোগী নেতাকে উদ্ধার করার পর রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ছাত্রদল। এ সময় ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘একা পেয়ে আমাদের সংগঠনের এক নেতাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর ও ভীতি প্রদর্শন করে কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে ছাত্রলীগ। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’ এ ছাড়া ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব খবরের কাগজকে বলেন, ‘ওই ছেলেকে কোনো ধরনের মারধর, হুমকি কিংবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। তবে এর আগেও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। সেই সন্দেহ থেকে তাকে নিয়ে এসে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তার কাছে সংগঠনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস পাওয়া গেলেও ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, এমন কিছু তার কাছে আমরা পাইনি। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করেছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘ঘটনা জানতে পেরে আমি ওই হলে দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছি। তারা সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। তবে মারধর বা ভয়ভীতি প্রদর্শনের কোনো অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ পেলে ঘটনা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

শাবিপ্রবিতে হবে পাখির অভয়ারণ্য

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ১০:৫০ এএম
শাবিপ্রবিতে হবে পাখির অভয়ারণ্য
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখির অভয়ারণ্য করার জন্য নির্ধারিত জায়গা লাল পতাকা দিয়ে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়েছে/ খবরের কাগজ

টিলা ও জলাভূমির ৩২০ একর জায়গাজুড়ে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। ভূমির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পুরো এলাকায় রয়েছে প্রাণপ্রকৃতির ছাপ। টিলাভূমির সবুজ বন আর সমতলে জলাভূমি ঘিরে আছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বিচরণ। এই বিচরণকে নির্বিঘ্ন করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ৩৮ বছর পর ক্যাম্পাসে গড়া হচ্ছে পাখির অভয়ারণ্য। একই সঙ্গে অভয়ারণ্য ঘিরে তৈরি করা হবে নান্দনিক ওয়াকওয়ে ও লেক। সিলেট সিটি করপোরেশনের সহায়তায় পাখির অভয়ারণ্য গড়ার কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফুডকোর্ট সংলগ্ন এলাকায় লাল নিশান লাগানো। সেখানে ৮৯ হাজার ৭২৭ স্কয়ার ফিট জায়গায় লেক খনন করা হচ্ছে। লেকের চারপাশে থাকবে ওয়াকওয়ে। লেক-ওয়াকওয়ের মধ্যে ১২ হাজার ৭০১ স্কয়ার ফিট জায়গা থাকবে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে সংরক্ষিত। ১৯৮৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের পর এই প্রথম ক্যাম্পাসে পাখির অভয়ারণ্য হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের নির্দেশনায় প্রকৃতিবান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লেক খননে সহযোগিতা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিলোরোড ও কিলোরোডের পাশের লেক সংস্কারে যৌথভাবে সহযোগিতা করে সিসিক। পাশাপাশি ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন ও আলোকিত রাখতেও সহযোগিতা করবে সিসিক। সিটি করপোরেশন এলাকা বর্ধিত হওয়ায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এখন সিসিকের অন্তর্ভুক্ত। এই অন্তর্ভুক্তির সুফল হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নান্দনিক উন্নয়নে সিসিকের সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকিতে লেক, ওয়াকওয়ে ও পাখির অভয়ারণ্য গড়তে একটি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত করা হয়েছে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামকে।

কমিটির কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং পরিবেশকে সুন্দর রাখা। জলবায়ু পরিবর্তন ও বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত পরিবেশ রক্ষায় গাছ এবং প্রাণিসম্পদকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে লেক, ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে পাখির অভয়ারণ্য গড়ার কাজটি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ কাজটি সম্পন্ন হলে প্রাণী ও প্রকৃতির সুরক্ষায় অনন্য এক নিদর্শন স্থাপন হবে বলে আমি মনে করি।’

পাখির অভয়ারণ্য গড়াসহ নান্দনিক ওয়াকওয়ে-লেক নির্মাণকাজে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘সিসিকের সহযোগিতায় আমরা এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিলোরোডে কার্পেটিংয়ের কাজ করেছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজে আমরা সবসময় সিসিককে পাশে পাচ্ছি। আশা করি সিসিকের সহযোগিতায় এ কাজটিও আমরা শেষ করতে পারব। এটি হলে সিলেটের অন্যতম নান্দনিক নিদর্শন হবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়।’

প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করা হবে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা চাই সবুজ ক্যাম্পাস আরও সবুজ হোক, প্রকৃতিবান্ধব হোক। লেকগুলো সংস্কার করে জলাধার হিসেবে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি যেন ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে। আমরা সবসময় চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যেন প্রাকৃতিক ও সুন্দর থাকে। প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি না করে আমরা উন্নয়নমূলক কাজগুলো করে থাকি। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা এবার লেকের মধ্যে পাখির অভয়ারণ্য তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে করে দেশীয় পাখির পাশাপাশি অতিথি পাখির আবাসস্থল হিসেবে এটা ব্যবহৃত হতে পারে।’

পাখির অভয়ারণ্য গড়ার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসকে প্রকৃতিবান্ধব করার উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। সিলেটের স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’-এর সমন্বয়ক মোহাম্মদ আশরাফুল কবীর বলেন, ‘যে জায়গায় অভয়ারণ্য গড়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, সেটি অনেকটা নিরিবিলি হওয়ায় শীতে সেখানে অতিথি পাখির বিচরণ দেখা যায়। বর্তমান বাস্তবতায় পাখিদের আবাসস্থল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাখির অভয়ারণ্য গড়ার উদ্যোগটি হবে মাইলফলক। এই কর্মযজ্ঞকে আমরা অভিনন্দন জানাই।’