চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) আগামী ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি শর্তসাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চুয়েটের রেজিস্ট্রার ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আগামী ৯ মে পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা, উচ্ছৃঙ্খলা ও সহিংসতা পরিহার এবং রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদ ধ্বংসে সম্পৃক্ততা থাকবে না শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে এক শিক্ষার্থী তালহা জোবায়ের খবরের কাগজকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা-সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ২০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈঠক হয়। সেখানে আমাদের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা কেউ হল ছেড়ে যাইনি। পাশাপাশি আমাদের আন্দোলন এখনো পর্যন্ত আমরা স্থগিত ঘোষণা করিনি। আজ (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের একটা বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। তবে আজ আমরা কোনো প্রকার বিক্ষোভ বা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করিনি। শনিবার (আজ) আমরা পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানাতে পারব।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের এবং শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। হল ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আসায় আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসের মূল সড়কের বাইরে ও ক্যাম্পাসের ভেতরে গোল চত্বরে দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন।
গত সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সেলিনা কাদের চৌধুরী কলেজসংলগ্ন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এরা হলেন শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন। শান্ত সাহা পুরকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২০০১১০০) ও তৌফিক হোসেন একই বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২১০১০০৬) ছিলেন। আহত জাকারিয়া হিমু চুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই দুই শিক্ষার্থী মোটরসাইকেলে রাঙ্গুনিয়া থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন। এ সময় চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট থেকে ছেড়ে আসা ‘শাহ আমানত’ নামে একটি বাস শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেলে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এ সময় তারা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনার পর ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
এমএ/