রাজশাহীতে পুকুরের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

রাজশাহীতে পুকুরের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
রাজশাহীতে পুকুরের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ছবি : খবরের কাগজ

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় খেলতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে রজব আলী (৫) ও কেয়া খাতুন (৫) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার খাড়তা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

রজব আলী রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের খাড়তা গ্রামের রুবেল হোসেনের ছেলে এবং কেয়া খাতুন নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার মুকুল হোসেনের মেয়ে। এই দুই শিশু খালাতো ভাই-বোন।

মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরিদাস মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে খবরের কাগজকে জানান, দুই শিশু সকালে খেলাধুলা করতে বাড়ি থেকে বের হয়। এক পর্যায়ে তারা বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে ডুবে যায়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পুকুরে তাদের মরদেহ ভেসে ওঠে।

পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিশুর লাশ পারিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এনায়েত করিম/জোবাইদা/অমিয়/

‘সংস্কারের অভাবে’ সেতু ভেঙে খালে

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১১:৩২ এএম
‘সংস্কারের অভাবে’ সেতু ভেঙে খালে
বরগুনার তালতলীর সুলিজ খালের ওপর নির্মিত সেতুটি কয়েক দিন আগে ভেঙে খালে পড়ে যায়। এতে স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। খবরের কাগজ

বরগুনার তালতলীর সুলিজ খালের ওপর প্রায় ৩০ বছর আগে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকে সাধারণ মানুষের চলাচল থাকলেও ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর ছিল না। গত আট বছর আগে থেকে একটু একটু করে সেতুটি ভাঙতে থাকে। পিলারের বেশির ভাগ অংশেই পড়ে যায় মরিচা! শেষ পর্যন্ত ব্রিজটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ১০ গ্রামের অন্তত দশ হাজার মানুষ। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও নারীরা পড়েছেন বিপাকে। দুই কিলোমিটার পথ ঘুরে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে।

জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা জানান, নিয়মিত সংস্কার করা হলে ব্রিজটি ভেঙে পড়ত না। এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে হলেও শিগগিরই এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দ্রুত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ব্রিজটির কাজ শুরু করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের কবিরাজপাড়া এলাকার বেন্টার সুলিজ খালের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সেতুটি নির্মাণ করে। এই সেতু দিয়ে নিশানবাড়িয়া, সওদাগরপাড়া, বারোঘর বাজার, চেয়ারম্যান বাজার, কুয়াকাটা, লাউপাড়া, তাঁতিপাড়া, ফকিরহাট, তালতলীসহ ১০ গ্রামের অন্তত দশ হাজার মানুষ চলাচল করেন। একই সঙ্গে তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হরিণখোলা আলিয়া মাদরাসাসহ চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী আসা-যাওয়া করে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্তমানে সেতুটি ভেঙে পড়ায় জনসাধারণ ও স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীদের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিকল্প হিসেবে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের পথ ঘুরে তাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি বাড়ার পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে চার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া। তাই দ্রুত নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. নাঈম বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যাওয়ায় এখন আমাদের বিকল্প পথ হিসেবে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন নারী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ অঞ্চলের দশ গ্রামের মানুষের কথা চিন্তা করে হলেও এখানে দ্রুত একটি নতুন ব্রিজ বানানো প্রয়োজন। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন অন্তত দশ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।’

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. শাহাদাত বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি রুগ্ন অবস্থায় পড়ে ছিল। তখন কেউ এদিকে নজর দেননি। এখন এটি ভেঙে পানিতে ডুবে আছে। দ্রুত এ সংকটের সমাধান প্রয়োজন।’

নিয়মিত সংস্কার না করায় ব্রিজটির আজ এমন দশা উল্লেখ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নুরজাহান বেগম খবরের কাগজকে বলেন, ‘৩০ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা। তবে গত আট বছর আগে থেকে একটু একটু করে এটি ভাঙতে শুরু করে। সেতুর পিলারগুলো অনেক আগে থেকে ক্ষয়ে যেতে থাকে। নিয়মিত সংস্কার করা হলে আজ এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরাজী মো. ইউনুচ বলেন, ‘এখানে দ্রুত একটি নতুন সেতু স্থাপন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’

এলজিইডি তালতলী উপজেলার প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, নতুন সেতু বানানোর জন্য শিগগিরই দরপত্র আহ্বানের কাজ শুরু হবে।’

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরগুনায় ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ৩০০টি সেতু নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় হালকা যান চলাচলের জন্য লোহার বিমের ওপর কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে সেতুগুলো বানানো হয়। প্রকল্পের অধীনে নির্মিত এসব সেতুর ২৬৬টিই এখন চলাচলের অনুপযোগী। কোথাও কোথাও স্থানীয়রা বাঁশ, কাঠ দিয়ে কোনোরকমে চলাচল করলেও এসব সেতুতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। ২০০৫ সালে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর থেকে এসব সেতুর আর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। 

চোরের হাত থেকে মোটরসাইকেল রক্ষায় হ্যান্ডকাফ!

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১১:২৬ এএম
চোরের হাত থেকে মোটরসাইকেল রক্ষায় হ্যান্ডকাফ!
ছবি: সংগৃহীত

চোরের হাত থেকে বাঁচাতে মোটরসাইকেলের জন্য নেওয়া হয় আলাদা সুরক্ষা ব্যবস্থা। কেউ ব্যবহার করে হাইড্রোলিক লক কেউবা ব্যবহার করে থাকেন জিপিএস ট্র্যাকারও। তবে এসবের বাইরে মোটরসাইকেলের চাকায় তালার পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে আসামির জন্য বরাদ্দ হ্যান্ডকাফ। এমনই এক ঘটনা জন্ম দিয়েছেন শরীয়তপুরের এক পুলিশ সদস্য। নিজের শখের মোটরসাইকেল রক্ষায় বেছে নিয়েছেন অভিনব এই পন্থা। ইতোমধ্যে এ ঘটনার বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেলটির মালিক পালং মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মাসুদ রানা। তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বর্তমানে ওই এলাকার চলাচলের একমাত্র সড়কটিতে সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এতে সড়কে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই ওই পুলিশ সদস্য বাসার অদূরে মোটরসাইকেলটি রেখে বাসায় যাতায়াত করেন। এদিকে চুরি হওয়ার আশঙ্কায় গাড়িটির চাকায় হ্যান্ডকাফ ব্যবহার করেন তিনি। তবে তার মোটরসাইকেলের পেছনে কোনো নম্বর প্লেট নেই। শুধু লেখা রয়েছে পুলিশ।

খান মুহাম্মদ শিহান নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মোটরসাইকেলের চাকায় হ্যান্ডকাফ লাগানো দুটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘হাতকড়া ঝুলছে মোটরসাইকেলের হাইড্রোলিক প্লেটে।’ আর সেই পোস্টে বেশ কয়েকজন মজার কমেন্টও করেছেন। কামরুজ্জামান পলাশ খান নামের এক ব্যক্তি সেখানে কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল গ্রেপ্তার।’ কাওসার মাহমুদ শান্ত নামের আরেক ব্যক্তি কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল যখন হত্যা মামলার আসামি।’

মোটরসাইকেলে হ্যান্ডকাফ লাগানোর বিষয়ে আইন কী বলে? জানতে চাইলে জেলা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট সহিদুল ইসলাম সজীব বলেন, ‘বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন, প্রবিধান ৩৩০-এ হাতকড়ার ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে, হাতকড়া সবসময় ব্যবহার উপযোগী রাখতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য পেশাগত কাজ ছাড়া ব্যক্তিগত কাজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন না।’

এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য মাসুদ রানা বলেন, ‘মাঝে মধ্যেই অনেক মোটরসাইকেলের তালা ভেঙে চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। আমার বাসার সামনে কাজ চলমান থাকায় মোটরসাইকেলটি বাসায় নিতে পারি না। তাই চুরি এড়াতে মোটরসাইকেলটি হাতকড়া দিয়ে তালা মেরে রাখি।’ বিষয়টি জানতে জেলা সুপার মো. মাহবুবুল আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

‘মনে হচ্ছে জীবনের শেষ ভোট দিলাম’

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১১:১৫ এএম
‘মনে হচ্ছে জীবনের শেষ ভোট দিলাম’
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কাকরাইদ আখালিয়া গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী তারা মিয়া। খবরের কাগজ

‘জীবনের শেষ ভোট দিলাম আজকে মনে হচ্ছে, আর ভোট দিতে পারব কি না জানি না, বয়স তো কম হলো না। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছি। কোথাও বের হতে পারি না। আজকে উপজেলায় ভোট হচ্ছে। তাই ভোট দিলাম স্ত্রীর সহযোগিতা নিয়ে। ভোট দিয়ে খুবই শান্তি পেলাম। অনেক দিন পর সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে।’ কথাগুলো বলছিলেন, টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার কাকরাইদ আখালিয়া গ্রামের মৃত সামাদ আলীর ছেলে ৬৫ বছর বয়সের তারা মিয়া।

তারা মিয়া আরও বলেন, ‘অসুস্থ থাকার কারণে সংসারে অভাব অনটন। কোনো মেম্বার বা চেয়ারম্যান আমাকে সহযোগিতা করে নাই। আজকে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে শুনলাম। তাই মনের মতো একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছে। তাই নিজের স্ত্রীকে বললাম যে, আমাকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাও, ভোট দিব। তারপর স্ত্রী রহিমা আমাকে নিয়ে এসেছে ভোটকেন্দ্রে।’

তারা মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম খবরের কাগজকে বলেন, ‘হুইল চেয়ারের জীবন আমাদের। ছেলে সন্তান যা সহযোগিতা করে, তা দিয়ে সংসার চালাই। দীর্ঘদিন ধরে আমার স্বামী অসুস্থ। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাই না কোথাও থেকে। এবার আমাদের পরিচিত ও কাছের মানুষ নির্বাচন করছে, যার কারণে হুইল চেয়ারে করে স্বামীকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছি ভোট দেওয়ার জন্য।’

কাকরাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, ‘কাকরাইদ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজারের ওপরে। আনসার সদস্যরা তারা মিয়াকে সহযোগিতা করেছেন ভোট প্রয়োগ করতে। এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।’

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মতিয়ুর রহমান বলেন, ‘প্রথম ধাপে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষে টাঙ্গাইলের দুটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ অবাধ ও সুষ্ঠু করতে ইতোমধ্যে ৭ প্লাটুন বিজিবি, ২ প্লাটুন র‍্যাব, প্রতিটি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ, ১৫ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া দুটি উপজেলায় একজন করে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।’

প্রথম ধাপে টাঙ্গাইলের তিনটি উপজেলা ধনবাড়ী, মধুপুর ও গোপালপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গোপালপুর উপজেলায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ম‌রিয়ম আখতার মুক্তা গত শুক্রবার ময়মন‌সিংহ মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে গত রবিবার নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে গোপালপুর উপজেলা পরিষদের সব পদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন। 

নিজ কেন্দ্রে ভোট দিলেন সাকিব

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১১:১০ এএম
নিজ কেন্দ্রে ভোট দিলেন সাকিব
ভোট দিচ্ছেন সাকিব আল হাসান। ছবি: খবরের কাগজ

মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।

গতকাল বুধবার (৮ মে) দুপুরে জেলার‌‌ সাহাপাড়ার সরকারি ১১১ নং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি ।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল সদর উপজেলা ও শ্রীপুর উপজেলায় একসঙ্গে ভোট গ্রহণ শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে, যা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘দুটি উপজেলায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল ৮টা থেকে। সদর উপজেলায় ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১২০টি ও শ্রীপুর উপজেলায় ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৫৭টি। 

উৎফুল্ল চা জনগোষ্ঠীর ভোটাররা

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১১:০৬ এএম
উৎফুল্ল চা জনগোষ্ঠীর ভোটাররা
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর চা-বাগানের শ্রমিকরা ভোট দিতে এসেছেন। খবরের কাগজ

চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের তিন উপজেলায় গতকাল ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালের দিকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গেছে চা-শ্রমিকদের মাঝে। ভোটের দিন হওয়ায় কারখানার পাশাপাশি চা-পাতা তোলার কাজ ছিল বন্ধ। তাই দিনটিকে তারা কাজে লাগিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, তার একটি ভোট পছন্দের প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের কারণ হতে পারে। তাই নাগরিক অধিকার প্রয়োগের জন্য তারা ভোট দিতে এসেছেন। যদিও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও চা-শ্রমিক ছাড়া বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম।

জানা গেছে, জেলায় সাতটি উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ভোট হয়েছে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখায়। জেলার এই তিন উপজেলায় চা-বাগান রয়েছে ৫৯টি। আর চা-বাগানের ভোটার সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার। এর মধ্যে কুলাউড়ায় রয়েছে ২৩টি চা-বাগান, সেখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার; জুড়ীতে ১৬টিতে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার; বড়লেখায় ২০টি, যেখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার।

ভোট দিতে আসা কয়েকজন চা-শ্রমিক জানান, ভোটের দিন চা-শ্রমিকদের চায়ের পাতা সংগ্রহ করা বা কারখানা সচল রাখা হয়নি। ভোটের জন্য দেওয়া হয়েছে ছুটি। এই ছুটি তারা পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন। কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর চা-বাগানের শ্রমিক সুমনা কুর্মি ও জীবন গোয়ালা উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘ভোট দেওয়া তো নাগরিক দায়িত্ব। আমি ভোট না দিলে আমার প্রার্থী জিতবে না, তাই ভোট দিতে আসলাম।’ শ্রমিকের সন্তান সজল কৈরী বলেন, ‘আমাদের ভোটে যেহেতু জয়-পরাজয় নির্ধারণ হবে, তাই এবার আমরা হিসেব করেই ভোট দিয়েছি।’ আরেক চা-শ্রমিকের সন্তান মিন্টু দেশোয়ারা বলেন, ‘বাগানে আজ (বুধবার) কাজ নেই। তাই চা জনগোষ্ঠীর ভোটাররা প্রায় সবাই ভোট দিতে এসেছেন। আমার কাছে এটা একটা উৎসব।’

সরেজমিনে দেখা যায়, তিন উপজেলার বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রই ছিল ফাঁকা। কেন্দ্রের বাহিরে প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মীদেরও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে কেন্দ্রের ভেতরে ভোটারের লাইন একদমই ফাঁকা। যদিও চা-বাগান এলাকায় ভোটার ও উৎসুক জনতার ভিড় ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুর ১টা পর্যন্ত তিন উপজেলার চা-বাগান এলাকার ভোটকেন্দ্র ছাড়া অন্যান্য ভোটকেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগই ছিল ফাঁকা। কুলাউড়ার নবীন চন্দ্র মডেল উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ইফতেখার হোসেন ভূঁইয়া জানান, ‘এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩৮ হাজার ২৭ জন। সকাল ১০টার দিকে ভোট পড়ে প্রায় ৫৫টি।’

জুড়ী উপজেলার তরুণ ভোটার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার ব্যাপারে অনীহা রয়েছে। আমি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখেছি, প্রার্থীদের সমর্থকরাই ভোট দিতে এসেছেন। সাধারণ ভোটারদের তেমন চোখে পড়েনি।’
গাজীপুর চা-বাগান বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার ৪ হাজার ৩১৯ জন। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জ্যোতিষ কান্তি দাস জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভোট পড়ে মাত্র ২৮৫টি। জুড়ী দক্ষিণ জাঙ্গীরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার নরেন্দ্র বিকাশ চক্রবর্তী জানান, ওই ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ৪ হাজার ৭০১ জন। বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৭০১টি।

এ ছাড়া বড়লেখার অনেক ভোটকেন্দ্র দুপুর ১টা পর্যন্ত ছিল অনেকটাই ভোটার শূন্য। তখন পর্যন্ত ২ থেকে ৪ হাজার ভোটারের ভোটকেন্দ্রে শতাধিকেরও বেশি ভোট পড়েনি।

জেলার তিনটি উপজেলার ২১৬টি কেন্দ্রের মধ্যে কুলাউড়ায় ১০৩টি, জুড়ীতে ৪৪টি এবং বড়লেখায় ৬৯টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এই তিন উপজেলার মোট ভোটার ৬ লাখ ১১ হাজার ৯৬৯ জন। এর মধ্যে কুলাউড়ায় ২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪৮ জন, জুড়ীতে ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৫৫ জন এবং বড়লেখায় ২ লাখ ৩ হাজার ৫৬৬ জন।