কলেজপড়ুয়া ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বাবাও। গত ২৯ এপ্রিল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ছেলে শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া। এরপর গতকাল শুক্রবার ছেলের কবরের জন্য বাঁশ কাটতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সাদেক আলী ভূঁইয়া। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে বাবা-ছেলের মৃত্যুতে আত্মীয়স্বজনদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জানা গেছে, গত সোমবার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ভাদুঘর এলাকায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয় সাদেক আলী ভূঁইয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা। শাহাদাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের ছাত্র ছিল। পড়াশোনার জন্য সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের কলেজপাড়ায় বড় বোনের বাসায় থাকত। তার মা শিরিন বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডাকঘরে চাকরি করতেন।
গত সোমবার বিকেলে আখাউড়া থেকে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হয় শাহাদাত। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাদুঘর এলাকায় একটি ট্রাককে অতিক্রম করার চেষ্টা করে সে। এ সময় সামনের দিক থেকে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে ধাক্কা লেগে ট্রাকের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তবে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা বন্ধুটি প্রাণে বেঁচে যায়।
সাদেক আলীর চাচাতো ভাই ওয়াসিম ভূঁইয়া বলেন, ‘ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সাদেক আলী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার অ্যাজমা ছিল। গতকাল ছেলের কবরে বেড়া দিতে সকালে অসুস্থ শরীর নিয়েই বাঁশ কাটতে যান তিনি। এ সময় বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাদেক আলী ভূঁইয়ার দুই ছেলে এক মেয়ে। নিহত শাহাদাত তার ছোট ছেলে। বড় ছেলে সৌদি আরবে থাকেন। এই ছেলেকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল। মাত্র ১০ দিন আগে ছেলেকে শখ করে নতুন মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন। ছেলের শোক সইতে না পেরেই আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’