ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

নামসর্বস্ব দলের আবেদনের হিড়িক নিবন্ধন-প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনুন

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম
নামসর্বস্ব দলের আবেদনের হিড়িক
নিবন্ধন-প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনুন

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য বর্ধিত সময় শেষ হয়েছে গত রবিবার। ইসির তথ্য অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে শেষ দিনে আবেদন পড়ে ৫০টির বেশি। এ পর্যন্ত ইসিতে মোট আবেদন করেছে ১৪৭টি রাজনৈতিক দল। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ ইসির ডেসপাচ থেকে তথ্য একীভূত করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানাবে ইসি সচিবালয়। সবকিছু যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্য দলকে নিবন্ধন দেবে ইসি। শেষ দিনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধন পেতে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

 খবরের কাগজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর গত ১০ মাসে গঠিত হয়েছে অন্তত ৩০টি দল। এর মধ্যে প্রায় দুই মাস আগে আত্মপ্রকাশ করা দলও এবার আবেদনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এত কম সময়ে কীভাবে নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবেদনকারী দলগুলো সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের মধ্যে মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ দলের নিবন্ধনের শর্ত পূরণের যোগ্যতা রয়েছে। বাকি ৯৭ শতাংশ দলের বেশির ভাগই নামসর্বস্ব। অনেক দলের কার্যালয়ের ঠিকানা, এমনকি ফোন নম্বর পর্যন্ত ভুয়া। 

আবেদনকারী অনেক দলের নেতা-কর্মী দূরের কথা, বেশির ভাগেরই নেই কার্যালয়। ইসিতে দেওয়া ঠিকানায় বেশির ভাগ দলের কোনো অস্তিত্বই নেই। কমিশনে উল্লিখিত ঠিকানায় রয়েছে কারও বাড়ি বা অফিস। এসব দলের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের বেশির ভাগই ব্যবসায়ী, সাবেক আমলা ও পেশাজীবী। এর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ছাড়া বেশির ভাগ দলের অস্তিত্ব শুধু কাগজে-কলমে। 

অন্তর্বর্তী সরকারের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ডিসেম্বরে ভোটের লক্ষ্য ধরে নতুন রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিতে গত ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। সে সময় ইসিতে আবেদন করে ৬৫টি নতুন রাজনৈতিক দল। এরপর এনসিপিসহ বেশ কিছু দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলের নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা ২০ এপ্রিল থেকে বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। সম্প্রতি আদালতের আদেশে ইসির নিবন্ধন স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আর নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

 গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলের ইসির নিবন্ধন পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এর বাইরে নিবন্ধনের জন্য দলের গঠনতন্ত্রের সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বিধান রয়েছে। নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনে বিদ্যমান আইন-বিধি অনুযায়ী ১০টি তথ্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। নিবন্ধনের জন্য জমা পড়া আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ে ইসির একটি কমিটি রয়েছে। আবেদনকারীরা শর্ত পূরণ করেছে কি না, কমিটির সদস্যরা সেটি দেখবেন। আইনে উল্লিখিত শর্তগুলো পূরণ করতে না পারা কোনো দলকেই নিবন্ধন দেওয়া হবে না। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে মাঠে কাজ করছে। 

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার খবরের কাগজকে বলেন, নতুন দলের জন্ম ইতিবাচক হলেও তা যদি নামসর্বস্ব ব্যবসায়িক স্বার্থরক্ষা বা আলোচনায় আসার জন্য গঠিত হয় তা গণতান্ত্রিক চর্চার সুফল বয়ে আনবে না। এসব দল দেশ ও জনগণের কোনো কাজেও আসবে না। কারণ তাদের অনেকেরই উদ্দেশ্য ভোটের আগে বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা বা আসন ভাগাভাগি করে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করা। 

রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন জরুরি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তা হতে হবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে। নিবন্ধন বিধিমালার যে শর্তগুলো আছে সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনকে যাচাই করতে হবে। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন-প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।

মব ভায়োলেন্স থামছেই না  পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম
মব ভায়োলেন্স থামছেই না 
পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

দেশে মব ভায়োলেন্স প্রতিনিয়তই ঘটছে। সরকার, সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার কঠোর পদক্ষেপের কথা বলা হলেও থামানো যাচ্ছে না এ অপরাধ। এখন প্রশ্ন উঠেছে, মব ভায়োলেন্স থামানোর ব্যাপারে পুলিশ আসলে কতটা সক্রিয়। পাশাপাশি এ বাহিনীর সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের মতে, পুলিশ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। নিরপেক্ষভাবে পুলিশের দায়িত্ব পালনের মতো রাজনৈতিক পরিস্থিতি আছে কি না, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, প্রতিদিন যেসব মব ভায়োলেন্সের খবর আসছে, এতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠছে। কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারে তিনজনকে হত্যা, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই, পটিয়া থানায় হামলাসহ সম্প্রতি বেশ কিছু মব সন্ত্রাসের ঘটনায় চরম উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে। 

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মব ভায়োলেন্স বা ‘গণপিটুনির’ ঘটনায় কমপক্ষে ৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। অপরাধ বিশ্লেষকরা এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বল ভূমিকা বা তৎপরতার অভাবকে দায়ী করছেন। তাদের মতে, মব ভায়োলেন্স ঠেকাতে গিয়ে পুলিশ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করছে। বেশির ভাগ মব ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটছে রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষের মধ্যে। ফলে নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় যাবে, কারা এখন মাঠে শক্তিশালী, সেসব হিসাব কষছেন পুলিশের অনেকেই। অনেক ক্ষেত্রে আবার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে গিয়ে পুলিশ নিজেরাও মব ভায়োলেন্সের শিকার হচ্ছে। নানা ‘ট্যাগ’ দিয়ে অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে তুলকালাম কাণ্ড ঘটানো হচ্ছে। এসব পরিস্থিতির কারণে পুলিশ অনেক সময় দ্বিধাগ্রস্ত বা ধূম্রজালের মধ্যে পড়ছে। ঘটনার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে তাদের কী করা উচিত বা কোনটি সঠিক, অনেক ক্ষেত্রে তারা তা বুঝতে পারছে না। 

মব ভায়োলেন্সের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পৃক্ততা বা যোগসূত্র টানছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এ ধরনের পথ বেছে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এসব বিষয়ে সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান কাঠামো বাংলাদেশ পুলিশ এখনো সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বলে মনে করেন তারা। কারণ হিসেবে বলছেন, পুলিশও হরহামেশা মব ভায়োলেন্সের শিকার হচ্ছে। তারাও মব সন্ত্রাস থেকে রেহাই পাচ্ছে না। গত ছয় মাসে পুলিশের ওপর দুই শতাধিক হামলা বা মব ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটেছে। 

সামাজিক অপরাধ বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ৫ আগস্ট-পরবর্তী যেসব মব ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই রাজনৈতিক যোগসাজশে বা পূর্ববিরোধের সূত্র ধরে। মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে সামাজিক অস্থিরতা যেমন বাড়ে, তেমনি মানুষের মৌলিক অধিকার, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ে। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এ জাতীয় পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারছে না। কী করবে তা নিয়েও দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছে। পুলিশ শক্তভাবে ঘুরে না দাঁড়ালে সাধারণ মানুষের আস্থা আরও নষ্ট হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা রাষ্ট্রকেই মানুষের মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। 

সরকারকে মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মব ভায়োলেন্স বা এ জাতীয় বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা শক্তভাবে ঘুরে না দাঁড়ালে আস্থার সংকটে পড়বে।

ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কারোপে গ্রহণযোগ্য সমাধানই কাম্য

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৮ পিএম
ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কারোপে গ্রহণযোগ্য সমাধানই কাম্য

ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কারোপের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বুধবার। এই ইস্যুতে বাংলাদেশ কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের আগেই তা জানাতে হবে ট্রাম্প প্রশাসনকে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজার ধরে রাখতে পারবে কি না, এ নিয়ে দেশের রপ্তানিকারকরা উদ্বেগে আছেন। তারা বলেছেন, গ্রহণযোগ্য সমাধান না হলে রপ্তানি খাত বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্প বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। কারণ ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা কার্যকর হলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে। গত ৩ এপ্রিল হঠাৎ ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বাড়তি ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিভিন্ন শুল্কহার আরোপ করে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৬০টি দেশের ক্ষেত্রে। বাড়তি শুল্ক আরোপ কার্যকরের কথা ছিল ৯ এপ্রিল। তবে ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্র বাড়তি শুল্কহার কার্যকরের ঘোষণা তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখে। স্থগিতের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বুধবার। তার আগেই বাংলাদেশকে তার অবস্থান জানাতে হবে ট্রাম্প প্রশাসনকে। যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক না কমায় তাহলে বর্তমানের চেয়ে বেশি হারে বাংলাদেশি পণ্য সে দেশের বাজারে প্রবেশ করাতে হবে। তখন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে বাংলাদেশের জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এখন বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ বেশি রপ্তানি করে। বিপরীতে আমদানি করে কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয়েছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি ৬ বিলিয়ন ডলার। এই ঘাটতি কমিয়ে আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সে জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী দেশটি। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক চুক্তি করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই চুক্তির অগ্রগতি কতদূর, শেষ পর্যন্ত চুক্তি হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সরকার চেষ্টা করছে একটা ভালো চুক্তি করার, যাতে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষিত থাকে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও লাভবান হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শর্তগুলো যদি মানা সম্ভব হয় তাহলে চুক্তি হবে। আলোচনা চলছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। ৮ ও ৯ জুলাই ইউএসটিআরের সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা এই ইস্যুতে আরও একটি বৈঠক করবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর পাশাপাশি ভারত, ভিয়েতনাম ও জাপানে পাল্টা শুল্কের হার কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উল্লিখিত দেশগুলো কী করছে তা অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশকে। সেটা হলে দর-কষাকষি করতে সুবিধা হবে। 

ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কারোপ বিষয়ে চলছে শেষ মুহূর্তের দর-কষাকষি। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সেখানে অবস্থান করছে। আশা করছি, সরকার অর্থনীতির সক্ষমতা বিবেচনায় রেখে রপ্তানি খাতকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতার গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথে এগোবে।

গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা
কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি

গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলা নিয়ে রাজধানীবাসীর অভিযোগ অন্তহীন। দিন যায়, কিন্তু সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ঢাকায় সড়কের তুলনায় যানবাহন বেশি। আদর্শ পরিস্থিতি হচ্ছে এ রকম- যেকোনো নগরীর মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ এলাকায় সড়ক থাকা দরকার। ঢাকায় সে তুলনায় আছে মাত্র ৭-৮ শতাংশ। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জনসংখ্যার চাপ এবং বেসরকারি গাড়ির আধিক্য ঢাকার সড়কগুলোকে আরও সংকুচিত করেছে। 
গণপরিবহনসংকটের মূল কারণ অবশ্য নিহিত রয়েছে অন্যত্র। স্বার্থান্বেষীদের স্বার্থ রক্ষাই রাজধানীর গণপরিবহনব্যবস্থাকে আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছে। খবরের কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই সংকট এবার আরও তীব্র হতে চলেছে।

রাজধানী ঢাকায় এখন বাস চলছে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, ঢাকার সড়কে ৫ হাজার ৫৪২টি বাস চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। এর বাইরে অনুমোদনহীনভাবে চলছে আরও ১ হাজার ৮০টি বাস। ইতোমধ্যে ঢাকার সড়কগুলো যানবাহনের চাপে যানজটে বিপর্যস্ত। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হচ্ছে আরও আড়াই হাজারের মতো নতুন বাস। 
জানা গেছে, রাজধানীতে বাস চলাচলের অনুমোদন দেওয়ার দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারাই নতুন করে ২১টি বাস কোম্পানিকে ২৩টি রুটে আড়াই হাজার বাস চালানোর অনুমোদন (রুট পারমিট) দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ সড়ক কর্তৃপক্ষের কিছু সদস্যকে ‘ম্যানেজ’ করে বেসরকারি বাস কোম্পানির প্রভাবশালী মালিকরা ওই সুযোগ নিয়েছেন। আপত্তি উঠেছিল এভাবে এই মুহূর্তে নতুন করে রুট পারমিট না দেওয়ার।

 কিন্তু পরিবহনমালিকদের চাপে তা গ্রাহ্য করা হয়নি। অভিযোগ ওঠে, সরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে পাশ কাটিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এই অনুমোদন দিয়েছে। ডিএমপিরই একজন কর্মকর্তা আপত্তি জানিয়ে বলেছিলেন, ঢাকার বাস রুটগুলোকে যৌক্তিক (র‌্যাশনালাইজ) সমন্বয় সাধন না করে রুট পারমিট দেওয়া সমীচীন হবে না। কিন্তু সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করে নতুন রুট পারমিট এবং বাস নামানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রুট পারমিট ছাড়াই অবশ্য রাজধানীতে আগে থেকেই অনেক বাস চলছে। এক রুটের নামে অনুমোদন নিয়ে বাস চালানো হচ্ছে অন্য রুটে, এ রকম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। অধিকাংশ বাসের রুট পারমিট আবার মেয়াদোত্তীর্ণও হয়ে গেছে। এ ছাড়া নগরবাসীর চোখের সামনে লক্কড়ঝক্কড় বাস তো চলছেই।

 কিছুদিন আগে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছিলেন, ঢাকার সড়ক থেকে এসব পুরোনো বাস সরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো রাজধানীবাসীর চোখে তা দৃশ্যমান হয়নি। সব মিলিয়ে ঢাকার গণপরিবহনে চলছে চরম নৈরাজ্য। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হলেও বাস্তবে কিছুই বদলায়নি। দিন দিন তা জটিল হচ্ছে। রাজধানীর সড়কে নতুন করে আড়াই হাজার বাস নামলে এই সংকট আরও তীব্রতর হবে, তাতে সন্দেহ নেই। ঢাকায় গণপরিবহনের অংশ হিসেবে বাসের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে, কিন্তু তার আগে ট্রাফিকব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা দরকার।

 সেটা না করে বাসের সংখ্যা বাড়ালে নগরে চলাচলে স্বস্তি পাওয়া যাবে না। আমরা তাই মনে করি, অবিলম্বে বাস রুটের অনুমোদনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে এমনিতেই ঢাকায় যানজটের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে, তার ওপরে এই সিদ্ধান্ত মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো এই মহানগরীর মুমূর্ষু দগদগে অবস্থাকে আরও দৃশ্যমান করে তুলবে। এই আশঙ্কা থেকেই আমরা মনে করি, রুট পারমিটের অনুমোদন বাতিল করে বিদ্যমান অবস্থার ভেতর থেকেই গণপরিবহনে শৃঙ্খলার সূচনা করা প্রয়োজন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সব মহল বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ নগরবাসীকে চলাচলবান্ধব রাজধানী উপহার দেবেন বলে আমরা আশা করছি। 

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করুন

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১১:৩১ এএম
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি
পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করুন

বছরের ব্যবধানে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এবার আমনের পর বোরো ধানের বেশি ফলন হলেও চালের দাম কমেনি; বরং বেড়েছে। গত এক বছরে দেশে চাল, সয়াবিন তেলসহ অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। কিছুটা কমেছে মুরগি, ডিম ও চিনির দাম। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় এমনিতেই সাধারণ মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা। তার ওপর দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য চালের দামের অসহনীয় বৃদ্ধি সংকটকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তুলেছে। চাল উৎপাদনে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পান না; অন্যদিকে ভোক্তাকে বেশি দরে চাল কিনতে হচ্ছে। মধ্যস্বত্বভোগীরা অধিক মুনাফার আশায় চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ থেকে ৩৯ শতাংশ। কারণ গত বছরের জুনে ৫২ থেকে ৫৮ টাকায় এই চাল বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৬০ থেকে ৬৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪৮ থেকে ৫০ টাকার মোটা চাল বর্তমানে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। ৬৫ থেকে ৭২ টাকার সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮২ টাকা। দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলছে, গত বছরের জুনে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৬৩ টাকায়, বর্তমানে তা ১৮৮ টাকায় ঠেকেছে। মাছের দামের ক্ষেত্রে একই চিত্র। পাঙাশ, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন মাছের দাম বেড়েছে। বছরের ব্যবধানে সবজির দামও বেড়েছে। 

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাসির-উদ-দৌলা খবরের কাগজকে বলেন, 'আমরা চাল, ডাল, মুরগি, ডিম থেকে শুরু করে সবজির পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে থাকি। নির্ধারিত দরে কোনো কোনো পণ্য বিক্রি হয়; আবার কোনোটা হয় না। কমবেশি দরে বিক্রি হয়। আমাদের লোকবল দিয়ে বাজার যাচাই করে তার তথ্য প্রকাশ করা হয়। বাজারে যাতে এসব পণ্য যৌক্তিক মূল্যে বিক্রি হয়, আমরা সেটাই প্রত্যাশা করি।' 

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে বাজার তদারকি বাড়াতে হবে। বিশেষ করে চালের দাম কারা এবং কীভাবে বাড়াচ্ছে, সেই সিন্ডিকেট খুঁজে বের করতে হবে। অভিযোগ আছে, মিলমালিকরা ইচ্ছামতো চালের দাম বাড়াচ্ছেন। ভোক্তা অধিদপ্তর খুচরা পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে কিছু জরিমানা করে থাকলেও তাতে কোনো কাজ হয় না। মধ্যস্বত্বভোগীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

 বোরো ধানের মৌসুম এলেও চালের এমন মূল্যবৃদ্ধি কেউই স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন না। বাজারে যাতে যৌক্তিক দামে পণ্য পাওয়া যায়, সে জন্য সরকারকে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বাজার নিয়ন্ত্রণে বেশ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছিল। যে কার্যক্রমে ছাত্র প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেছিল কিন্তু সেই অবস্থায় এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। প্রত্যাশা করছি, পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার নিত্যপণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ইসির নির্বাচনি প্রস্তুতি জনপ্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট হন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ১২:০১ পিএম
ইসির নির্বাচনি প্রস্তুতি
জনপ্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট হন

দেশের রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে জাতীয় নির্বাচন। সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়নি বলে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় তৈরি হয়েছিল, তা এখনো কাটেনি। কিন্তু গত মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে যে সংশয় ছিল, তা দূর করে দিয়েছেন। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রস্তুতি চলছে ‘ফুল গিয়ারে’ (পুরোদমে)। নির্বাচনের তারিখ ও শিডিউল যথাসময়ে জানানো হবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, সিইসি নাসির উদ্দিন এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহলে যে আলোচনা-গুঞ্জন-সংশয়-সন্দেহ ছিল, সেসব অনেকাংশে দূর হয়েছে। 

নির্বাচন নিয়ে এই সংশয় প্রথমে দূর হয় গত ১৩ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডন বৈঠকের মধ্য দিয়ে। প্রধান উপদেষ্টা তখন বলেছিলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচনের আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। প্রধান উপদেষ্টার এই কথায় তখন জনমনে নির্বাচন নিয়ে স্বস্তি ফেরে। 

তবে এর পরই কোনো কোনো মহলকে নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক তৎপরতায় যুক্ত হতে দেখা গেছে। এ রকম পরিস্থিতিতে লন্ডন বৈঠকের ১১ দিন পর গত ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। এরপর গুঞ্জন ওঠে, এবার ইসি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে। কিন্তু সেটা হয়নি। এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা এবং সিইসির মধ্যেকার ‘সৌজন্য’ সাক্ষাতের পাঁচ দিনের মাথায় সিইসি জানিয়ে দিলেন, নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকার একই তরঙ্গে রয়েছে। যথাসময়ে নির্বাচনের তারিখ ও শিডিউল জানানো হবে। কমিশনের মনোযোগ এখন জাতীয় নির্বাচনের দিকে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী তারা স্বাধীন, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চান। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কথা থেকে বোঝা যায়, নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারির সম্ভাব্য নির্বাচন নিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত। নির্বাচন উপলক্ষে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন এবং ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫’ গেজেট আকারেও তারা প্রকাশ করেছেন।
এই প্রস্তুতি শুধু ইসির নয়, রাজনৈতিক দলগুলোও নিচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। 

কয়েকটি দল ইতোমধ্যে প্রার্থী বাছাই ও ঘোষণা করে নির্বাচনের মাঠে নেমে পড়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ফেব্রুয়ারিতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- এমনটা ধরে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে তারা মহড়াও দেবে।

এসব নানামুখী তৎপরতা থেকে স্পষ্ট, দেশ নির্বাচনি সড়কে উঠে পড়েছে। গন্তব্য ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে। আমরাও মনে করি, নির্বাচন নিয়ে সংশয় দূর হওয়া প্রয়োজন। দেশ দীর্ঘদিন ধরে নানা সংকটের মধ্য দিয়ে চলেছে, যত দ্রুত নির্বাচন হবে তত দ্রুত এই সংকট থেকে মানুষের মুক্তি মিলবে। সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনই যেকোনো সরকারকে দেশ শাসনের বৈধতা দেয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসও জাতির কাছে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এখন যে অন্তর্বর্তী অবস্থার মধ্য দিয়ে চলেছি, তাও চিরস্থায়ী নয়। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে এর অবসান হওয়া জরুরি। আশা করব, দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকারের সহায়তায় নির্বাচন কমিশন এই জনপ্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট থাকবে।