ঢাকা ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিএনপির ধৈর্যের পরীক্ষা!

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০২:২৫ পিএম
বিএনপির ধৈর্যের পরীক্ষা!
বিএনপি

প্রখ্যাত ফরাসি দার্শনিক ও লেখক ভিক্টর হুগোর মতে, ‘জীবনের দুঃখকে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সাহস আর ধৈর্য।’ আমেরিকার রেনেসাঁর জনক রালফ ওয়ালডু ইমারসন বলেছেন, ‘প্রকৃতির গোপন শক্তিটিকে অর্জন করার চেষ্টা করো। গোপন শক্তিটি হলো ধৈর্য।’ 

সুরা আল-ইমরান, সুরা আল-নাহলসহ পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরায়ও ধৈর্য সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালার একাধিক বাণী রয়েছে। এগুলোর মূল সারমর্ম হলো, ধৈর্যশীলকে মহান আল্লাহ পছন্দ করেন।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি এখন কতটা ধৈর্য ধরবে, তা নিয়েই মূলত আলাপ-আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি কৌতূহলী সুধী সমাজসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে একটাই প্রশ্ন, বিএনপি কি ধৈর্য ধরতে পারবে? নাকি তাদের তাড়াহুড়োয় সব নষ্ট হয়ে যাবে?

এমন প্রশ্নে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৈনিক খবরের কাগজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে ‘ইনটেনশন অব দ্য গভর্নমেন্ট’ এটি স্পষ্ট হওয়া দরকার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে তিনি বলেছেন, আমরা বলেছি তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চাই। তার মতে, নির্বাচনে বেশি দেরি করলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিএনপির ধৈর্য ধরা উচিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, বিএনপি তো সংগ্রাম করছে, লড়াই করছে। বিএনপির রাজনীতি তো বিএনপিকে করতেই হবে। রাজনৈতিক যে কর্মকাণ্ড, জনগণের কাছে যাওয়া, মিছিল, সভা-সমাবেশ করা এসব থাকবে। ‘অ্যাট দ্য সেইম টাইম’ সামনে যে নির্বাচন হবে, বিএনপিকে তার প্রস্তুতিও নিতে হবে। 

তবে মির্জা ফখরুলের প্রকাশ্য বক্তব্য এমন হলেও বিএনপি এবং তার সমর্থকদের ধৈর্য ও সহনশীলতার ওপরই দেশের আগামী দিনের রাজনীতি তথা দেশ বিনির্মাণ অনেকাংশে নির্ভর করছে। বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়া না হলে আন্দোলন-পূর্ব এবং পরবর্তী রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তা বিনির্মাণ করা না হলে দেশ পরিচালনা যেমন কঠিন হবে; তেমনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানও সম্ভব হবে না। তবে নানা সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, বিএনপির ভেতরের বড় একটি অংশ ক্ষমতার স্বাদ নেওয়ার জন্য এখনই নানা তৎপরতা শুরু করেছে। কেউ কেউ অতি উৎসাহ দেখাচ্ছেন, যা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা-আলোচনা শুরু হয়েছে। 

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সুধী সমাজের প্রতিনিধিরাও বলছেন, আজকে বাংলাদেশের যে প্রধান সমস্যা, তা মূলত গণতন্ত্রহীনতা ও সুশাসনের অভাবের ফলেই উদ্ভূত। এ দুটিই ফিরিয়ে আনতে গেলে রাষ্ট্র সংস্কার প্রয়োজন। এই সংস্কার সংবিধানে ১২৩ অনুচ্ছেদে প্রণীত ‘সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়ার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন’ দিয়ে সম্ভব নয়। এমনকি ‘দৈব-দুর্বিপাক’ হলেও তারও নব্বই দিনের মধ্যে সম্ভব নয়। তবে আশার কথা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের ‘ধীরে চলার’ পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়ার দাবি তুলবে। তবে দলটির দায়িত্বশীল নেতারা ড. ইউনূসের সরকারকে সময় দেওয়ার পক্ষে। কারণ তারা বুঝতে পারছেন যে, তাড়াহুড়ো করে নির্বাচন করতে গেলে সবকিছু ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে আন্দোলনের নিয়ামক শক্তি ছাত্রসমাজের সঙ্গে তাদের বিরোধ তৈরি হতে পারে। ছাত্ররা বিগড়ে গেলে বিএনপির একক চাপে নির্বাচন আদায় শেষমেশ কঠিন হতে পারে; এমনকি আন্দোলনের ফলাফলও নস্যাৎ হয়ে যেতে পারে। এমন আশঙ্কা নিতান্ত কম নয়। 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের নিয়ামক শক্তি ছাত্রসমাজও এই রাষ্ট্র সংস্কার চাইছে। বিএনপি ও তাদের সমর্থক দলগুলোও ১৫ বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে যে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। বিএনপি নেতারা এমন কথাও বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের এমন দশা করেছে যে এই ক্ষত ঠিক করতে এক যুগ লেগে যাবে। ফলে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বেশ সময় দরকার। ইতোমধ্যে উচ্চ আদালত, পুলিশ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন শুরু হয়েছে। কিন্তু সার্বিকভাবে পুলিশ ও প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে নির্বাচন করতে গেলে নির্বাচন যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে, তেমনি নির্বাচন করার প্রশাসনিক বা কাঠামোগত সক্ষমতাও এই মুহূর্তে সরকারের যে নেই, এটি বেশ স্পষ্ট। 

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, এমন ধারণা জনমনে বেশ অনেক দিন ধরেই প্রতিষ্ঠিত। পর্যবেক্ষকদের মতে, এমন সম্ভাবনা থেকেই বিগত সরকার কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তিনটি নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে। তা ছাড়া বিএনপিকে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে গণ-অভ্যুত্থানের প্রধান নিয়ামক শক্তি ছাত্রসমাজের সঙ্গে কোনো কারণে তাদের দূরত্ব তৈরি হলে পরিস্থিতি অনুকূলে নাও থাকতে পারে। ড. ইউনূস এবং সরকারের উপদেষ্টারা যাতে রুষ্ট না হন, সেটি বিবেচনায় রাখা বেশ জরুরি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রদের আন্দোলনের ফসল বলে সবাই মনে করে। ফলে তাদের মনোভাব বুঝেই বিএনপিকে এগোতে হবে। 

গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নিয়েছে। দুই দিন ছুটির পর মাত্র গতকাল রবিবারই অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে। বিএনপি ও তার সমর্থক দলগুলোর ধৈর্যের পরীক্ষার পালা এখন থেকে শুরু হলো।

ঐক্য বিনষ্টের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
ঐক্য বিনষ্টের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে : মির্জা ফখরুল
জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : খবরের কাগজ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে আমাদের যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল, তা যেন আমরা অটুট রাখতে পারি। আজকে সুপরিকল্পিতভাবে সেই ঐক্যকে বিনষ্ট করার একটি চক্রান্ত চলছে। সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ 

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

জাস্ট নিউজের সম্পাদক ও মানবাধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক মুশফিকুল ফজল আনসারী প্রায় এক দশক যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে ছিলেন। বাংলাদেশে তার প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি আয়োজন করেন জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও সাংবাদিক সমবায় সমিতি লিমিটেড। এ সময় সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীকে ফুলেল সংবর্ধনা দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের নেতারা।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-জনতার একটা অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করেছি। কিন্তু এই বিজয় তখনই সুসংহত হবে, যদি আমরা এটাকে ধরে রাখতে পারি। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী গণতন্ত্রের সত্যিকারের নায়ক। আমরা যখন কথা বলতে পারিনি, তখন মুশফিক আমেরিকা এবং ইউরোপে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এমন সন্তান বাংলার ঘরে ঘরে জন্ম নেওয়া দরকার। মুশফিক আমাদের ও দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে হিরো হিসেবে থাকবেন।’ 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সরকারি কর্মকর্তা সমিতির নেতা ড. নেয়ামত উল্যাহ, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কবি আব্দুল হাই শিকদার। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম প্রমুখ।

দেশ পুনর্গঠনে নতুন বার্তা দেবেন তারেক রহমান : ডা. জাহিদ

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ পিএম
দেশ পুনর্গঠনে নতুন বার্তা দেবেন তারেক রহমান : ডা. জাহিদ
যৌথ সভায় কথা বলছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। ছবি : খবরের কাগজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ১৫ সেপ্টেম্বর বিএনপির সমাবেশ থেকে আগামী দিনের বাংলাদেশ পুনর্গঠনে নতুন বার্তা দেবেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে। সেই সমাবেশ হবে অন্যতম বৃহৎ সমাবেশ।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর সমাবেশের প্রস্ততি নিয়ে যৌথ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কাজী সাইদুল আলম বাবুল প্রমুখ। 

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর নেতা-কর্মীরা নিজেদের ভবিষ্যতের আখের গোছানোর জন্য দেশের সম্পত্তিকে পৈতৃক সম্পত্তির মতো করে লুটপাট করেছে। শেখ হাসিনার সরকার ২০১৪ সালে বিনাভোটে নির্বাচন করেছে, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করেছে, ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন করে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সেই সঙ্গে নিজের ক্ষমতাকে বাঁচিয়ে রাখতে সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করতে করতে একটি দলীয় সংবিধানে পরিণত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছে। আইন-আদালতকে যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে ব্যবহার করেছে।’

গুম-খুন প্রসঙ্গ টেনে ডা. জাহিদ বলেন, ‘বিরোধীদলের নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে। যে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা তাকে হত্যা বা গুম করা হয়েছে।’

ভোটের অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে খালেদা জিয়া দীর্ঘ সময় আন্দোলন করেছেন। এখন তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা আন্দোলন করছি। বিএনপি আন্দোলনে ছিল, থাকবে। যতদিন পর্যন্ত ভোটের অধিকার আর গণতন্ত্র ফিরে না আসবে।’

এবারের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস বিশেষ গুরুত্ব বহন করে মন্তব্য করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে শহিদদের স্মরণে ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের স্মরণ করতেই ১৪ সেপ্টেম্বরের সমাবেশ। সেখানে কথা বলবেন শহিদ পরিবারের সদস্যরা।’ এ উপলক্ষে বিএনপি দুদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বলেও জানান তিনি।

ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মানেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ। আওয়ামী লীগ আসলেই একের পর গণমাধ্যম বন্ধ হয়। ইলিয়াস আলীর কবর কোথায়? বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা কোথায়? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।’

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ নিরপেক্ষ নির্বাচন : এবি পার্টি

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ নিরপেক্ষ নির্বাচন : এবি পার্টি
প্রতিনিধি সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। ছবি : খবরের কাগজ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়া বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির শীর্ষ নেতারা।

তারা বলেন, ‘দেশ এখনো পুরো স্থিতিশীল নয়। পুরো পরিবেশের দিকে নজর রাখতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মেজর হায়দার মিলনায়তনে দিনব্যাপী এবি পার্টির জেলা ও মহানগর প্রতিনিধি সম্মেলনে নেতারা এসব কথা বলেন।

পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়ার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।  

সভাপতির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের পর আমরা নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি শুরু করেছি। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরও বিগত স্বৈরাচারের পদলেহনকারী নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দেয়নি। আদালতের মাধ্যমে এবি পার্টি নিবন্ধন পেয়েছে। এখন আমাদের জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।’

আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, ‘জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হাজারো শহিদের রক্ত ঝরেছে। অতীতের মতো জনগণের অধিকার লুণ্ঠিত হওয়ার আর কোনো সুযোগ দেব না। এখন থেকে এবি পার্টির নেতাদের মাঠে-ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।’ 

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘জেলা ও মহানগর নেতারাই পার্টির মূল খুঁটি। আপনারা আমাদের ঘোষণা বা নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজ নিজ জেলা ও মহানগরে জনসম্পৃক্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে গণমুখী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামুন।’

তিনি বলেন, ‘এবি পার্টিকে আগামী দিনে গণমানুষের দলে পরিণত করতে হবে। ইউনিয়ন, উপজেলা, থানা ও মহানগরীর সব ইউনিট শক্তিশালী হয়ে আসছে।’ জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান মঞ্জু। 

সম্মেলনে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘রাষ্ট্র মেরামত এবং নতুন বাংলাদেশ তৈরিতে আমরা ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। আমরা এমন দেশ আর চাই না যেখানে ক্ষমতায় থাকার পর শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যেতে হয়, অবৈধভাবে বর্ডার পার হতে গিয়ে জনরোষের শিকার হতে হয়। এমন রাষ্ট্র চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, সব নাগরিক তার অধিকার পাবে।’ 

সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, সহকারী সদস্যসচিব ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, গাজীপুর জেলা সদস্যসচিব এম আমজাদ খান, দিনাজপুর জেলা সদস্যসচিব মেহেদী হাসান চৌধুরী পলাশ, কুমিল্লা জেলা সমন্বয়ক মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক, কক্সবাজার জেলা আহ্বায়ক এনামুল হক শিকদার প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

শেখ পরিবার দেশটাকে জমিদারি মনে করত : রিজভী

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৫ পিএম
শেখ পরিবার দেশটাকে জমিদারি মনে করত : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

শেখ পরিবার বাংলাদেশটাকে জমিদারি মনে করত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দিনাজপুরে গুলিতে আহত দিনমজুর রশিদুল ও তার সন্তানকে দেখতে যান রিজভী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ‘আমরা বিএনপির পরিবার’-এর মাধ্যমে নগদ টাকা, খাদ্য ও উপহারসামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ মন্তব্য করেন।

গণমাধ্যমে প্রচারিত শেখ হাসিনার নিজেকে প্রধানমন্ত্রী দাবি করে ফোন রেকর্ডের বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন হারানোর বেদনা থেকে। কারণ শেখ পরিবার বাংলাদেশটাকে জমিদারি মনে করত। এভাবে ১৫-১৬ বছর দেশ পরিচালনা করেছেন। যেই বিরুদ্ধে কথা বলতে গেছেন, তাকে অদৃশ্য করে দিয়েছেন। বিরোধী কোনো কণ্ঠস্বর তিনি রাখতে চাননি। দমনের জন্য একদিকে যেমন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালাকানুন করেছেন, তেমনি প্রত্যক্ষভাবে দমনের জন্য এমনভাবে র‌্যাব-পুলিশকে গঠন করেছিলেন, যাদের অধিকাংশ কর্মকর্তা ছিলেন আওয়ামী লীগ ঘরানার অথবা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দানবীয় সরকারের পতন ঘটাতে দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্দোলনে বিএনপির ৮০০-এর বেশি নেতা-কর্মী গুম হয়েছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন অসংখ্য নেতা-কর্মী। দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্দোলনের পটভূমিতে গত জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থানের অগ্নিমশাল জ্বলে ওঠায় এর চূড়ান্ত পরিণতি হয়েছে শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া।’

রিজভী আরও বলেন, ‘বিএনপির কেউ যদি চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার খবর পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ পর্যন্ত ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রশিদুল গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার স্ত্রী এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। রশিদুলের চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে সন্তানকে দত্তক রেখে ২৫ হাজার টাকা আনার খবর প্রকাশিত হয়েছিল গণমাধ্যমে। এই খবর দেখে তাদের সহায়তার নির্দেশ দেন তারেক রহমান। এ সময় দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন, সহসভাপতি মোকারম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন। 

নেতা-কর্মীদের মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান গোলাম পরওয়ারের

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পিএম
নেতা-কর্মীদের মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান গোলাম পরওয়ারের
রুকন সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি : খবরের কাগজ

দল-মত, ধর্ম-বর্ণ বাছ-বিচার না করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে দলের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাধ্যমে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাই এই বিজয়কে টেকসই ও অর্থবহ করতে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’ 

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে একটি কনভেশন সেন্টারে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা পূর্ব-পশ্চিম অঞ্চল আয়োজিত রুকন সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে আরেও বক্তব্য রাখেন উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা আবুল ইহসান এবং মজলিসে শুরা সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন প্রমুখ। 

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জামায়াতের ঘরের খুঁটি হচ্ছে রুকন। মূলত রুকনরাই সংগঠনের মূল শক্তি। তাই তারা যেমন মর্যাদাবান, সর্বোপরি তাদের দায়িত্বও অনেক বেশি। তাই জামায়াতের শপথের কর্মীদের নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি সৃষ্টিতে আত্মনিয়োগ করতে হবে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে আগামী দিনে নিজেদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশ ও জাতির কল্যাণে রুকনদের যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘জামায়াতের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়েছে, সৃষ্টি হচ্ছে গণজোয়ার। তাই এই ইতিবাচক ধারাকে কাজে লাগাতে জামায়াতের সব স্তরের জনশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে-ময়দানে কাজ করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অভ্যুত্থানের অর্জিত বিজয়কে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ভূমিকা পালন করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘হাজারো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদরা আমাদের জাতীয় বীর। তাদের রক্তের পথ ধরেই জাতির বিজয় সোপান রচিত হয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থেই শহিদদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।’

শফিকুল ইসলাম/সালমান/