অভিযোগ । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

অভিযোগ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
অভিযোগ

হত্যার অভিযোগে বিচার হচ্ছিল এক লোকের। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ বেশ শক্ত, তবে একটাই সমস্যা, যাকে খুন করা হয়েছে তার লাশ পাওয়া যায়নি। আসামিপক্ষের উকিল বুঝলেন, সম্ভবত তার মক্কেলের শাস্তি হয়ে যাবে। সেজন্য একটা বুদ্ধি করলেন তিনি। জুরির উদ্দেশে বললেন, ‘জুরি বোর্ডের মাননীয় সদস্যবৃন্দ, আপনাদের সবাইকে আমি একটি বিস্ময় উপহার দিতে যাচ্ছি।

এখন থেকে এক মিনিটের মধ্যে যিনি খুন হয়েছেন বলা হচ্ছে সেই ব্যক্তি দরজা দিয়ে ঢুকবে।’ এই বলে তিনি আদালতের প্রবেশপথের দিকে তাকালেন। তার দেখাদেখি জুরি বোর্ডের সদস্যসহ সবাই উদগ্রীব হয়ে প্রবেশপথের দিতে তাকাল। এভাবে এক মিনিট পেরিয়ে গেল, কিন্তু কেউ এল না।

এবার উকিল বললেন, ‘আসলে এ কথাটি আমি বানিয়ে বানিয়ে বলেছিলাম, কিন্তু দেখা গেল, আপনারা সবাই উদগ্রীব হয়ে দরজার দিকে তাকিয়েছেন। তার মানে, আসলেই ওই ভদ্রলোক মারা গেছেন কি না, তা নিয়ে আপনাদের মনেও সন্দেহ আছে। অতএব, আমি অনুরোধ করছি, আপনারা আমার মক্কেলকে নির্দোষ বলে রায় দিন।’

তবুও জুরি বোর্ডের সদস্যরা বললেন আসামি দোষী।

‘কিন্তু,’ প্রতিবাদের সুরে উকিল বললেন, ‘তার অপরাধ নি  ‘তবে আপনার মক্কেল একবারও তাকায়নি।’

কলি

পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এত গরম লাগে ক্যান?

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এত গরম লাগে ক্যান?

দৃশ্য-১
নায়িকার বাবা: তোর এত বড় সাহস! তুই আমার মেয়ের দিকে হাত বাড়াস। তুই জানিস, আমার মেয়ে এই ভয়াবহ গরমে এসি ছেড়ে ঘুমায়, এসি গাড়িতে ঘোরে, এসি ছেড়ে গোসল করে? তোর কী আছে? যেদিন গরমকে ঠাণ্ডা করতে এসি কিনতে পারবি, সেদিন আসবি। চলে যা এখান থেকে।

নায়ক: চৌধুরী সাহেব, টাকা দিয়ে আপনি গরমকে ঠাণ্ডা করতে পারবেন, কিন্তু মনে রাখবেন, টাকা দিয়ে আপনি ভালোবাসাকে ঠাণ্ডা করতে পারবেন না। আমার ভালোবাসা সত্যি হলে একদিন আমি লাইলিকে পাবই পাব। গুডবায় চৌধুরী সাহেব।

দৃশ্য-২
ভিলেন: কী গো লাইলি, এই গরমে শর্টকাট ড্রেস পরে কোথায় যাচ্ছ? গরম লাগছে বুঝি? চলো আজ তোমাকে ঠাণ্ডা করে দিই।
নায়িকা: বাঁচাও। বাঁচাও। মজনু...নু...নু...নু...উ
নায়ক: ইয়ালি...ঢিসুম...ইয়া টিসা টিসা।

দৃশ্য-৩
নায়ক: মা মা...তুমি কোথায়? আমি গরমকে ঠাণ্ডা করে দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি মা। আজ আমি বড় একটা চাকরি পেয়ে গেছি। সেই চাকরির অ্যাডভান্স বেতন দিয়ে আজ আমি এসি কিনে এনেছি।

নায়কের মা: তোর বাবা বেঁচে থাকলে আজ খুব খুশি হতো। তার স্বপ্ন ছিল, তুই একদিন গরমকে ঠাণ্ডা করে দেওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করবি। তুই তোর বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছিস। এবার আমি মা হয়ে তোকে আদেশ করছি, যে চৌধুরী গরমকে ঠাণ্ডা করে দেওয়ার যোগ্যতা নেই বলে তোকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিল, তাকে বলে আয় তুইও এখন তার সমান যোগ্যতা অর্জন করেছিস। যা।

দৃশ্য-৪
নায়ক: চৌধুরী সাহেব, আমরা গরিব হতে পারি; কিন্তু আমরাও গরমকে ঠাণ্ডা করে দিতে পারি। আজ আপনার বাড়িতে যে এসি আছে, আমার বাড়িতেও সেই এসি আছে। আপনি আর আমি আজ সমানে সমান।

নায়িকা: ড্যাড, তুমিই তো বলেছিলে, মজনু এসি কেনার সামর্থ্য অর্জন করতে পারলে তার হাতে আমাকে তুলে দেবে। তুমি তোমার কথা রক্ষা করো ড্যাড।

নায়িকার বাবা: হেরে গেলাম রে, হেরে গেলাম। তোদের ভালোবাসার গরমের কাছে আমি হেরে গেলাম। যাও মজনু, তোমার লাইলিকে নিয়ে যাও। আজ তোমাকে কোনো বাধা দেব না। আজ আমি বুঝতে পেরেছি, সূর্যের গরমের কাছে ভালোবাসার গরম কোনো ব্যাপার না।

কলি 

বইমেলার স্মৃতি

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০৪:৩৭ পিএম
বইমেলার স্মৃতি

বইমেলায় একটা টিভি চ্যানেল থেকে ফোন করেছে ইন্টারভিউয়ের জন্য। আমি বই নিয়ে গেলাম সেখানে। সাংবাদিক বললেন, ভাই দুইটা মিনিট অপেক্ষা করেন, একজন লেখক ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। তারটা শেষ হলেই আপনারটা শুরু হবে। আমি ঘাড় নেড়ে বললাম, আচ্ছা।

শুভ্র কেশের একজন ষাটোর্ধ্ব নারী লেখক ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। পান চিবানোর মতো চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলছেন। সূর্যের আলো চলে যাচ্ছে। ক্যামেরাম্যান শেষ করার জন্য বারবার তাড়া দিচ্ছেন উপস্থাপককে। উপস্থাপক মুখে কিছুটা বিরক্তি মিশিয়ে ওই লেখকের দিকে তাকিয়ে আছেন কিন্তু ওই নারী লেখক কথা বলা শেষ করছেন না। তার বুকের ভেতর জমানো কথা এখনো অনেক বাকি। তিনি সেসব কথা জাতিকে শোনাতে চান।

আমি দাঁড়িয়ে আছি। হাতের আঙুল ফুটাচ্ছি। প্রোডিউসার এসে বললেন, ভাই আরেকটু সময় নেব। আমি হাই তুলে বললাম, নেন।
ওই নারী লেখকের ইন্টারভিউ শেষ। আমি ভাবলাম, যাক বাবা বাঁচা গেল। তাড়াতাড়ি শেষ করে স্টলে যাই। অনেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসে নিশ্চয়ই ফিরে যাবেন।মন খারাপ করবেন।

কিন্তু না, সিনেমার মোড় ঘুরে গেল। ওই নারী লেখক আবার এসে বললেন, আমি অনেকগুলো পুরস্কার পেয়েছি। সেগুলোর কথা বলা হয়নি। ক্যামেরা চালু করো।

ক্যামেরাম্যান বাধ্য হয়ে ক্যামেরা অন করল। উপস্থাপক পাথরের মূর্তির মতো মুখে প্লাস্টিকের হাসি নিয়ে মাইক্রোফোন ধরে রাখল। আমি সুযোগ খুঁজছি পালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু প্রোডিউসার আমার সঙ্গে থাকার কারণে পালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমি নড়নচড়ন করলেই তিনি আমাকে খপ করে ধরে ফেলবেন।

আরও ১০ মিনিট চলল ওই নারী লেখকের ইন্টারভিউ। এবার তিনি বেশ খুশি। উঠে যাবেন যাবেন সময়ে তিনি আবার দুম করে সেটে বসে পড়লেন। দাঁত সবকটি বের করে বললেন, আমার নাতি-পুতির কথা আছে এই বইতে। সেটা বলতে ভুলে গেছি। এই ক্যামেরা আবার চালু করো। আবার ক্যামেরা চালু হলো। সূর্য মামা টাটা বলে টুপ করে ডুবে গেল। ওই লেখকের বয়সজনিত কারণে কেউ মেজাজ দেখাতে পারল না। শুধু ক্যামেরাম্যান ক্যামেরা রেখে পাশে গিয়ে হুতুম প্যাঁচার মতো মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকল।

আমি একটা চিকন হাসি দিয়ে প্রোডিউসারকে বললাম,

- ভাই অনেক হইছে, এবার আমি যাই!

- লাইট, ক্যামেরা সব রেডি, এবার আপনার পালা ভাই!

কলি

রক্ষা করো সুন্দরবন

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
রক্ষা করো সুন্দরবন

সুন্দরবন যাচ্ছে পুড়ে
ব্যাঘ্র হরিণ পালাও দূরে।
হিট অফিসার নাই রে বনে
‘কুল সেন্টার’ মিলবে কনে?
করবে আগুন সর্বহারা
কী মুসিবত নতুন ফাঁড়া।

বজ্রাঘাতে মরছে মানুষ
সব বেদিশা নাই কোনো হুঁশ।
তাপের দহন যায় না সহন
আরাম আয়েশ হারাম তাই,
ঘোর কলিকাল একেই বলে
লানত থেকে নাজাত চাই।
বনসম্পদ পুড়ছে বেবাক
স্বস্তি রিলিফ কোথায় পাই?

কলি

আক্কেল দাঁত

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০৪:৩২ পিএম
আক্কেল দাঁত

২০২৩ সাল। আমার জীবনে বয়ে নিয়ে এল কু কু। খুলেই বলছি। বছরের প্রথম দিনেই ঘুম থেকে উঠে দেখি কথা বলতে পারছি না। গাল ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। দাঁতে প্রচণ্ড ব্যথা। ব্যথার তীব্রতায় টিকতে না পেরে এলাকার এক ডাক্তার দেখালাম। তিনি দেখে এক গাল হেসে বলল, ‘দুশ্চিন্তার কিছু নেই, আক্কেল দাঁত উঠতেছে।’ভাবটা এমন দেখাল যেন ‘ঘরে নতুন অতিথি আসছে’ সেই খবরটা দিচ্ছে। আমি কু কু করে বললাম, ‘ব্যথা কমানোর জন্য কিছু দেন।’ তিনি পেইন কিলার দিয়ে দিলেন।বাসায় এসে আম্মাকে বলতেই আম্মা বলল, ‘যাক এতদিনে আক্কেল হবে।’

ছোট ভাই তার সব দাঁত দেখিয়ে হেসে বলল, ‘একটা উঠলে তো হবে না। তোমার তো আরও তিনটা আক্কেল দাঁত ওঠার কথা।’

আমি কিছুই বলতে পারলাম না। যেখানে সবসময় বলি সেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম, ‘হাতি গর্তে পড়লে খরগোশও টিটকারি মারে।’ ব্যথার চোটে প্রথমে খরগোশকে ‘খরগোশত’ লিখে ফেলেছিলাম। দুপুরে ব্যথার ওষুধ খেয়ে ঘুম দিলাম, মনে আশা ব্যথার যদি পরিবর্তন হয়। ঘুম থেকে উঠে দেখি দুটি জিনিস পরিবর্তন হয়েছে। গাল আরও ফুলেছে এবং ব্যথা আরও বেড়েছে।

ছোট ভাই সেলফি স্টিক নিয়ে আমার ফোলা গালের সঙ্গে সেলফি তুলতে আসছিল। সেলফি স্টিক দিয়ে পিডাই রুম থেকে বাইর করছি। ব্যথার অবস্থা দেখে বুঝে গেলাম, ডেন্টিস্টের কাছেই যাওয়া লাগবে। কয়দিন আগে কোথায় যেন পড়েছিলাম ‘মহিলা ডাক্তারের কাছে রোগ নিরাময় দ্রুত হচ্ছে।’ সঙ্গে সঙ্গে বিখ্যাত মডেল কাম ডেন্টিস্ট ‘শায়লা নাইম’-এর কথা মন পড়ে গেল। অনেক কষ্টে তার কম্পাউন্ডারের নাম্বার জোগাড় করে কল দিলাম। নাম ধাম সব বলার পর তিনি বলল, ‘আপনার সিরিয়াল পড়ছে ৭২৩ নাম্বার। দেখাবেন ২০২৪ সালের জুনের ১৭ তারিখ।’

আমি কু কু করে বললাম, ‘ভাই ফাইজলামি করতেছেন নাকি?’

তিনি হেসে বলল, ‘ম্যাডামের সিরিয়াল লম্বা। কিছু করার নেই। এর আগে দেখানো সম্ভব না।’ আমি ফোন কেটে দিয়ে কাছেই এক ডেন্টিস্টের কাছে গেলাম। সিরিয়াল পড়ল ১৩। আমি বললাম, ‘ভাই ১৩ নাম্বারটা পরিবর্তন করা যায় না? এইটা আমার জন্য আনলাকি।’

ডেন্টিস্ট মাছি তাড়ানোর ভঙ্গিতে বলল, ‘ভাই সরেন তো। দিকদারি কইরেন না। ১৩ না নিলে আর আছে ২৭। চলব?’

আমি দিকদারি না করে বসে পড়লাম। মাত্র পাঁচ নাম্বার সিরিয়াল চলছে। এতক্ষণ আর কী করব। মোবাইল বের করলাম ব্রাউজ করার জন্য। দেখি নেট শেষ। নেট ছাড়া ডাক্তারের চেম্বারে ওয়েট করা আর পানি ছাড়া টয়লেটে যাওয়া একই কথা। একটু পরেই খেয়াল করলাম ডাক্তারের চেম্বারে ওয়াই-ফাই সাইন। কম্পাউন্ডারকে পাসওয়ার্ড জিজ্ঞাসা করলাম। সে বলল, ‘Teeth007.’

বাহ, জেমস বন্ডের দাঁত! ফ্রি ওয়াই-ফাই পেয়ে স্লগ ওভারের মতো শট শুরু করলাম। নেট ইউজ করতে করতে বিরক্ত হয়ে গেলাম। আমার ডাক আসছে না। বসে থাকতে থাকতে ডেন্টিস্ট নিয়ে জোকস মনে পড়ে গেল। এক ডেন্টিস্ট এক রোগীকে দাঁত তোলার সময় অনেকক্ষণ ধরে অভয় দিচ্ছিল। একদমই ব্যথা পাবেন না, এইতো হয়ে যাবে। একটু পর খুব সহজে দাঁত চলে এল। ‘এই দেখেন কোনো ব্যথাই পাননি।’ পরে দেখা গেল দাঁত না, রোগীর আলজিহ্বা চলে এসেছে।

অবশেষে আমার ডাক পড়ল। ডাক্তারের রুমে ঢুকে দেখি ডাক্তার আর তার দুই পাশে দুই সুন্দরী। এরা নিশ্চয় ইন্টার্ন করছে।

‘কী সমস্যা?’ ডাক্তার জিজ্ঞাসা করল।

‘আমার আক্কেল দাঁত উঠছে।’ আমার কথা শুনে দুই সুন্দরী খুক খুক করে হেসে ফেলল। মানুষের কষ্টে আজকাল সবাই হাসে। এই হলো দেশের অবস্থা।

‘কোনো সমস্যা নেই। ওয়াশ করে দিচ্ছি। নীলা তাকে ওয়াশ করে দাও।’ ডাক্তার এক ইন্টারনিকে আদেশ দিল। নীলা ওয়াশ করতে লাগল আর আমি ব্যথায় নীল হতে থাকলাম।

শেষ হলে ডাক্তারের ভিজিট ৫০০ টাকা দিয়ে বের হয়ে এলাম। আক্কেল দাঁতের আক্কেল সেলামি ৫০০ টাকা। আসার সময় কম্পাউন্ডারকে বললাম, ‘এই যে জেমস বন্ড ভাই গেলাম।’

কম্পাউন্ডার ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল।

ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে ওষুধ কিনতে গেলাম। সব ওষুধ দিয়ে ছেলেটি বলল, ‘ভাই ৪৫০ টাকা আসছে।’ আমি ৪৫০ টাকা দিয়ে চলে আসার আগে, কী মনে করে

বললাম, ‘ভাই সব ওষুধের দাম পাশে লিখে একটা ক্যাশ মেমো দেন।’ দোকানের ছেলেটা দেখলাম গাঁইগুঁই শুরু করল। ‘ভাই এখন ঝামেলা বেশি।’

‘আরে কীসের ঝামেলা? দেন দেন।’

ছেলেটি স্লিপ করে বলল, ‘ভাই ভুল হইছে। আসলে ৩৫০ টাকা আসছে।’

‘চমৎকার! একটা ভুলে ১০০ টাকা। এরকম দিনে ১০টা ভুল করলে তো দুদিন পর আপনি হাসপাতাল দিতে পারবেন।’

আমার দেখাদেখি আশপাশের আরও অনেকে ক্যাশ মেমো চাইতে লাগল। এইবার লও ঠেলা! বের হওয়ার আগে এক লোক বলল, ‘ভাই ক্যাশ মেমো ধইরা বুদ্ধির কাম করছেন।’

আমি আক্কেল দাঁত দেখিয়ে হেসে ফেললাম। মাত্র তো আক্কেল দাঁত উঠতেছে, সবই তার কেরামতি।

কলি 

অনেক আগের কথা

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
অনেক আগের কথা

অনেক আগের কথা। এক জলদস্যু সরাইখানায় ঢুকে খাবারের অর্ডার দিল। মালিক নিজেই খাবার নিয়ে এলো। জলদস্যুর এক হাতের বদলে হুক, এক পায়ের জায়গায় কাঠের পা, আর এক চোখ কানা বলে পট্টি লাগানো ছিল।

মালিক জানতে চাইল, কাঠের পা কেন?
জলদস্যু বলল, একবার সৈন্যদের সঙ্গে আমাদের ভয়ানক যুদ্ধ হয়েছিল। তখন আমার পা কেটে যায়। সেই থেকে আমার কাঠের পা।
মালিক জানতে চাইল, হাতে হুক লাগানো কেন?
জলদস্যু বলল, এটাও আরেক লড়াইয়ের সময়কার ঘটনা। লড়াইয়ে আমার হাত কাটা পড়ে। তাই হুক লাগিয়ে নিয়েছি।
মালিক জানতে চাইল, তোমার চোখও কি লড়াইয়ের সময় কানা হয়েছে?
জলদস্যু বলল- না, একবার জাহাজের ডেকে বসে চা খাচ্ছিলাম। একটা অ্যালবাট্রস পাখি আমার চোখে ইয়ে করে দিয়েছিল।
মালিক অবিশ্বাসের সুরে বলল, বলো কি? একটা পাখির ইয়েতে তোমার চোখ কানা হয়ে গেল?
জলদস্যু বলল- না, ওইটা আমার হাতে হুক লাগানোর পর প্রথম দিন ছিল।

 অনেক আগের কথা। তখন কাগজ-কলম আবিষ্কার হয়নি। এক রাজ্যের রাজপুত্র ছিল খুবই স্মার্ট আর হ্যান্ডসাম। কিন্তু হলে কি হবে, এক অভিসাপের কারণে সে বছরে কেবল একটা শব্দ বলতে পারে।
পাশের রাজ্যে ছিল এক অতি সুন্দরী রাজকন্যা। যেমন রূপ, তেমনি তার গুণ। রূপকথায় যা হয় আর কি। রাজপুত্র তার প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করল। কিন্তু সেটা ছিল ওয়ান সাইডেড প্রেম। রাজকন্যাকে তো অ্যাপ্রোচ করতে হবে। বলতে হবে তার মনের কথা। তবেই না রাজপুত্র-রাজকন্যার মিলন হবে।
তো হয়েছে কি, রাজপুত্র কথা বলা বন্ধ করে দিল। এক, দুই করে কেটে গেল পাঁচটি বছর। এভাবে রাজপুত্র পাঁচটি শব্দ বলার সুযোগ পেল। খুশিতে সে এক বিশাল কনসার্টের আয়োজন করল। নামিদামি সব রাজপরিবারের সদস্য দাওয়াত পেলেন।
কনসার্ট আলো করে এলেন রাজকন্যা। রাজপুত্রের অপেক্ষার পালা শেষ। সে ইশারায় রাজকন্যাকে ডাকল। কাছে আসতেই বলল পাঁচটি শব্দ, ‘হে রাজকন্যা, আমি তোমাকে ভালোবাসি’।
রাজকন্যা কি উত্তর দিল জানেন?
রাজকন্যা বলল, ‘বুঝলাম না...আবার বলেন!’

কলি