
ইচ্ছা কিংবা স্বপ্ন নেই এমন মানুষ হয়তো পৃথিবীতে একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। মনের ভেতরের ইতিবাচক ইচ্ছাগুলোই আমাদের জীবনে গতি এনে দেয়। আর শিশু-কিশোরদের কল্পনাপ্রবণ উচ্ছ্বল মনের স্বপ্নের সীমানা যেন আকাশ পর্যন্ত। ২৯ এপ্রিল বিশ্ব ইচ্ছা দিবস। ‘মেক এ উইশ’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে দিনটি পালন করা হয় বিশেষত শিশু-কিশোরদের জন্য। বিশেষ এই দিবসের শুরুও এক বালকের ইচ্ছা পূরণের মধ্য দিয়ে। চলো জেনে নেই এই দিবসের আদ্যোপান্ত।
২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ২৯ এপ্রিল পালন করা হয় বিশ্ব ইচ্ছা দিবস। তবে কিভাবে এই দিন উদযাপনের শুরু হল সেটি জানতে ফিরে যেতে হবে বছর তিরিশ পেছনের গল্পে। সময় ১৯৮০ সাল। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার বাসিন্দা ৭ বছর বয়সী ক্রিস্টোফার জেমস গ্রিসিয়াস লড়াই করছিল দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধি লিউকেমিয়ার সঙ্গে। বড় হয়ে নিজেকে পুলিশ অফিসার হিসেবে দেখতে চাইত গ্রিসিয়াস। কিন্তু শরীরে রোগ বাসা বাঁধায় তার বড় হয়ে উঠাই ছিল অনিশ্চিত। কোনো এক ভাবে গ্রিসিয়াসের ইচ্ছার কথা পৌঁছে যায় অ্যারিজেনোর পুলিশ বিভাগের কানে। তার স্বপ্ন পূরণ করতে এগিয়ে আসে অ্যারিজোনার পুলিশ বিভাগ, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুরা। ১৯৮০ সালের ২৯ শে এপ্রিল এই দিনটির জন্য অ্যারিজেনোর ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পায় গ্রিসিয়াস। সেদিন রোগাক্রান্ত গ্রিসিয়াসের মনের অফুরন্ত আনন্দ চোখ এড়ায়নি কারো। তার মতোই দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের মনের ইচ্ছা পূরণের মধ্য দিয়ে তাদের মনে সাহস আনন্দ বাড়াতে এক হতে থাকে চিকিতসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী মানুষ। এই থেকেই গড়ে উঠে শিশু-কিশোরদের ইচ্ছা পূরণের আমেরিকান অলাভজনক সংগঠন ‘মেক এ উইশ।’
এখন পর্যন্ত ‘মেক এ উইশ’ এর উদ্যোগে পূরণ হয়েছে বিভিন্ন দেশের ৫ লক্ষ্য দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের ছোট-বড় স্বপ্ন। শুধুমাত্র আমেরিকাতেই নয়। বিশ্বের ৪৫ টি দেশে এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক। শিশু-কিশোরদের মনের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষাগুলোই তাদের শক্তির উৎস। তাদের স্বপ্ন ও ইচ্ছাকে উদযাপন করতেই গ্রিসিয়াস এর পুলিশ অফিসার হবার দিনটিকে কেন্দ্র করে সংস্থাটি ২৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত করে বিশ্ব ইচ্ছা দিবস। স্বপ্ন আর ইচ্ছা শক্তির মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোররা আনন্দে বাঁচুক এটাই আজকের দিনের কামনা।