ঢাকা ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

‘নীতিনির্ধারকদের কাছে এশিয়ার ফুঁসফুঁস সুন্দরবন আজও গুরুত্বহীন’

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৪, ০১:১৫ পিএম
‘নীতিনির্ধারকদের কাছে এশিয়ার ফুঁসফুঁস সুন্দরবন আজও গুরুত্বহীন’
ছবি: খবরের কাগজ

‘আমাদের নীতি নির্ধারকদের কাছে এশিয়ার ফুঁসফুঁস সুন্দরবন আজও গুরুত্বহীন। প্রাণীর জীবন ধারক অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের আদান-প্রদানের মাধ্যমে সুন্দরবন স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এক সুনিপুণ বুননে গড়ে উঠেছে সুন্দরবন। আমরা এই বনের গর্বিত অভিভাবক হলেও এর অংশীদার পৃথিবীর সব মানুষ। বনবিনাশী কর্মকাণ্ডে সুন্দরবন আজ আর ভালো নেই।’  

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে বিশ্ব বন দিবস উপলক্ষে মোংলার বৈদ্যমারি সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায় বনবন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে বনের সঙ্গে সহাবস্থানের অংশ হিসেবে মানুষ ও বন মিলে এ বনবন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। 

‘সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূর আলম শেখের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের কমলা সরকার, হাছিব সরদার, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর শেখ রাসেল, পরিবেশকর্মী মারুফ বাবু, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের ফকরুল ফকির, শুকুর আলী শেখ, আসাদুল জমাদ্দার প্রমুখ।  

বনবন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা আরও বলেন, সুন্দরবন প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিরক্ষা দেয়াল হিসেবে কাজ করে। দুর্যোগের সময় এটি আমরা ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করি। কিন্তু দুর্যোগ কেটে গেলে তা আমরা ভুলে যাই। 

সভাপতির বক্তব্যে ‘সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূর আলম শেখ বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট বনভূমির প্রায় ৩৮ শতাংশ এই সুন্দরবন। বনের অস্তিত্ব মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। সুন্দরবন এ অঞ্চলের মানুষের জন্য এক অসামান্য প্রাকৃতিক সুরক্ষা বর্ম। বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধ, সুন্দরবনের খালে বিষ প্রয়োগে মাছ ধরা বন্ধ এবং বনবিনাশী কর্মকাণ্ড রুখতে না পারলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব থাকবে না। বনবন্ধন কর্মসূচিতে বনজীবী, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম, কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ সিপিজি, নাগরিক ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতারাসহ নানা শ্রেণি-পেশার শতাধিক মানুষ সুন্দরবনের মধ্যে গাছপালা-বৃক্ষরাজির সঙ্গে সহাবস্থান ও বৃক্ষ জড়িয়ে ধরে মানুষ এবং বনে মিলে বনবন্ধন কর্মসূচি পালন করে। 

রিফাত/ইসরাত চৈতি/অমিয়/

চট্টগ্রামের আড়তে ডিম বেচাকেনা বন্ধ

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৮ পিএম
চট্টগ্রামের আড়তে ডিম বেচাকেনা বন্ধ
ছবি: খবরের কাগজ

সরকারের নির্ধারিত দামে ডিম কিনতে না পারা, রসিদ না দেওয়া, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানার কারণে গতকাল সোমবার থেকে ডিম বেচাকেনা বন্ধ রেখেছেন চট্টগ্রামের আড়তদাররা। যতক্ষণ পর্যন্ত না সরকারের নির্ধারিত দামে ডিম কিনতে পারছেন, ততক্ষণ ডিম বেচাকেনা বন্ধ রাখবেন বলে জানিয়েছেন তারা। 

চট্টগ্রামের আড়তদাররা জানান, চট্টগ্রামে ডিমের বড় আড়ত, পাহাড়তলী বাজার। এ বাজারে ১৫ জন আড়তদার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ডিম কিনে বিক্রি করে থাকেন। সবচেয়ে বেশি ডিম সংগ্রহ হয় টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলা থেকে। এ ছাড়া রাজধানীর তেজগাঁও থেকেও পাহাড়তলী বাজারে ডিম আসে। এতে প্রতিটি ট্রাকে ১ লাখ ৪৪ হাজার পিস ডিম থাকে। আগে এক গাড়ি ডিম কিনতে খরচ হতো ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। বর্তমানে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৮ লাখ টাকা। এত বড় অঙ্কের টাকা জোগান দিতে গিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। পোলট্রি ফার্মগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে। তারা রসিদে সরকার নির্ধারিত দর দেখালেও বাস্তবে বিক্রি করছেন বেশি দামে। পোলট্রি ফার্ম, আড়ত বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আইনের আওতায় না এনে সরকার পাইকারি বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে। তাই প্রকৃত অপরাধীরা রয়ে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কর লিটন খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রতি পিস ডিমের সরকার নির্ধারিত দাম ১১ টাকা ০১ পয়সা। অথচ গত রবিবার আমাদের প্রতি পিস আনতে হয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সায়। আমরা ওই দামেই ডিমগুলো বিক্রি করেছি। এতে প্রতিটি ডিমে ১০ থেকে ২০ পয়সা লোকসান দিয়েছি। শুধু সরকারি দামে ডিম কিনতে পারছি না বলেই লোকসান গুনতে হচ্ছে। এখানে আমাদের দোষটা কোথায়?’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যাদের কাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করি, তারা রসিদ দিতে চায় না। উল্টো তারা বলে, রসিদ ছাড়া নিলে নেন, নইলে নাই। এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে এলে আমরা রসিদ দেখাতে পারি না। এর ফলে আমাদের জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত আমাদের সভাপতিসহ আরও দুই ব্যবসায়ীকে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে। এসব হয়রানি থেকে বাঁচতে, আমরা বাধ্য হয়ে ডিম বেচাকেনা বন্ধ রেখেছি।’ 

পোলট্রি ফার্মের কারণে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, উল্লেখ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, পোলট্রি ফার্মগুলো যেভাবে দাম বাড়ায়, একজন প্রান্তিক খামারি সেভাবে পারে না। এখানে একটা শক্ত সিন্ডিকেট রয়েছে।

এদিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আড়তদাররা বলছেন, খামারি বিক্রি করার কথা ১০ টাকা ৫৮ পয়সা। কিন্তু এর মাঝে আবার মধ্যস্বত্বভোগী আছে। তাদের কাছ থেকে কেনার পর আমরা বিক্রি করার কথা ১১ টাকা ০১ পয়সায়। কিন্তু আমরাই তো সরকারের নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে পারছি না। এ কারণে আমাদের এখানে গত রবিবার থেকে বেচাবিক্রি বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ আমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৯০ পয়সায় বিক্রি করেছি। তাই চট্টগ্রামের আড়তদারকে ১৩ টাকার ওপরে বিক্রি করতে হয়। খুচরায় তো দাম আরও বেড়ে যায়। তাই চট্টগ্রামের আড়তদাররা সোমবার থেকে ডিম বেচাকেনা বন্ধ রেখেছেন। এখন সরকারের কাছ থেকে কি ধরনের সিদ্ধান্ত আসে, তারা সেই অপেক্ষায় রয়েছেন।’ 

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘সারা দেশে দিনে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। বাজারে এখন সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। তাই এখনো মানুষ ডিমের ওপর নির্ভরশীল। ডিমের দাম বেঁধে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এদিকে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামের আড়তদাররা বেচাকেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, ‘ডিম বেচাকেনা বন্ধ রাখা তো সমাধান না, এটা অন্যায়। তারা যদি সরকারি দামে ডিম কিনতে না পারে, তাহলে তো আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে হবে। এ ছাড়া ‘ডিম কেনার সময় রসিদ দিচ্ছে না’ এমন সমস্যার কথা তারা তো বলে না। বিষয়টি অন্তত ক্যাবকে জানাতে পারত। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হলে তারা ব্যবসা বন্ধ করে দেবে, এটার অর্থ হলো তারা আইনের প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছে। চট্টগ্রামের আড়তদাররা সরকারকে সহযোগিতা না করে বরং বাধা দিচ্ছে। যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের সঙ্গে চট্টগ্রামের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীদের বোঝাপড়া অবশ্যই আছে। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের টিম পাহাড়তলীতে অভিযান পরিচালনা করছে। আমরা বেচাকেনার রসিদে গরমিল পাচ্ছি। বাড়তি দামে ডিম বিক্রির প্রমাণ পাচ্ছি। পাশাপাশি পাহাড়তলীর আড়তদাররা ডিম কেনার সময় রসিদ নিচ্ছেন না, সংরক্ষণ করছেন না। তাই আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ 

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মদপানে ২ জনের মৃত্যু, অসুস্থ ৩

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১০ এএম
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মদপানে ২ জনের মৃত্যু, অসুস্থ ৩

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার চর-ভাঙ্গুড়া গ্রামে অতিরিক্ত মদপানে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও তিনজন অসুস্থ হয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব পরবর্তী আনন্দে বন্ধুদের সঙ্গে অতিরিক্ত মদপান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন উপজেলার চর-ভাঙ্গুড়া গ্রামের ঘোষ পাড়ার পাঁচ যুবক।

এদের মধ্যে সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে দশটার দিকে রামচন্দ্র ঘোষের ছেলে রবিন ঘোষ (২৫) মারা গেছেন। এর এক ঘন্টা আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মানিক চৌধুরীর ছেলে হৃদয় চৌধুরী (১৭) মারা যান।

সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. উজ্জল হোসেন বলেন, গুরুতর অসুস্থ ঐ তিন ব্যক্তিকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, 'পুলিশ ঘটনাস্থলে পোঁছে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করছে।'

পার্থ হাসান/জোবাইদা/

শাপলা তুলতে গিয়ে দুই শিশুশিক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৪ এএম
শাপলা তুলতে গিয়ে দুই শিশুশিক্ষার্থীর মৃত্যু

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ডোবায় শাপলা ফুল তুলতে গিয়ে পানিতে ডুবে দুই শিশুশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার দীঘি ইউনিয়নের কায়রা গ্রামের রাস্তার পাশে ডোবায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তারা হলো সদর উপজেলার দীঘি ইউনিয়নের কাগজিনগর গ্রামের বাবু কাজীর মেয়ে আনহা আক্তার (৭) ও একই ইউনিয়নের খরসাতাই গ্রামের রফিক সরদারের মেয়ে স্নেহা আক্তার (৭)। তারা দুজনেই স্থানীয় কয়রা মাদ্রাসাতুল ওহি আল ইসলামি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কয়রা গ্রামের রাস্তার পাশে ডোবায় শাপলা ফুল তুলতে গিয়ে পানিতে ডুবে যায় স্নেহা ও আনহা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে নিহতদের পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উদ্বোধনের আগেই বেহাল সড়ক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০২ এএম
উদ্বোধনের আগেই বেহাল সড়ক
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় খাগরিয়া ইউনিয়নের ভোর বাজারের বেহাল সড়ক। খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় খাগরিয়া ইউনিয়নের ভোর বাজার সড়কটি উদ্বোধনের আগেই বেহাল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গার কার্পেটিং উঠে ৩ কিলোমিটার সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে প্রায় শতাধিক ছোট-বড় গর্ত। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, বিটুমিনের পরিমাণ কম ও নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করায় অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কের এমন অবস্থা হয়েছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, বৃষ্টির কারণে সড়কের কিছু জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার আগে আবার সেগুলো সংস্কার করে দেওয়া হবে।

এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সড়কটির ৩ কিলোমিটার কার্পেটিংয়ের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই সময় ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পান চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাওয়াককুল এন্টারপ্রাইজ। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে কাজটি শেষ করে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও পরে আবার ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, চিবাতল এলাকার করাতকল থেকে ভোর বাজার পর্যন্ত সড়কের পিচ উঠে প্রায় শতাধিক ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে সেখানে পানি জমে আছে। এসব গর্তে জমা বৃষ্টির পানি এড়িয়ে যানবাহন চলাচল করছে। আবার কয়েকটি জায়গায় একসঙ্গে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলোর ওপর দিয়েই গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়। এ ছাড়া দেখা যায়, কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে কার্পেটিং উঠে যেতে শুরু করেছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত সড়কটি উদ্বোধন করা হয়নি। উদ্বোধনের আগেই সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে সড়কের কাজে নয়ছয় হয়েছে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজে অনিয়ম করেছে।

গর্তগুলো মেরামত করা হলেও সড়কটি বেশি দিন চলাচলের উপযোগী থাকবে বলে মনে হয় না। তারপরও দ্রুত সড়কটি মেরামতের পাশাপাশি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আলী আজগর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কে কার্পেটিং করেছে এখনো ৩ মাস পূর্ণ হয়নি। তার আগেই সড়কের বেশির ভাগ অংশজুড়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ভালোভাবে গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।’

স্থানীয় মোহাম্মদ ইউনুচ বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বৃষ্টির মধ্যে সড়কে কার্পেটিং কাজ করেছে। তাই দুই-তিন মাস না যেতেই পিচ উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া বিটুমিনের পরিমাণ কম ব্যবহার করায় পিচ উঠে যাচ্ছে। সড়ক দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ছিল বলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ধারণা করছি।’ 

সড়কের কাজে নিয়োজিত মেসার্স তাওয়াককুল এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার মো. হাসান বলেন, ‘অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখনো মাঝেমধ্যে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছি। এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামত করে দেওয়া হবে।’

এলজিইডির সার্ভেয়ার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেশিনের মাধ্যমে উপকরণ সংমিশ্রণ করে সড়কে কার্পেটিং করেছে। মেশিনে অতিরিক্ত তাপ দেওয়ায় সড়ক সংস্কারে ব্যবহৃত উপকরণের গুণগত মান নষ্ট হয়েছে। তাই বৃষ্টিপাতের সঙ্গে সঙ্গে সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে। পরে সেটি বুঝতে পেরে আমরা সাতকানিয়া উপজেলায় চলমান প্রতিটি সড়ক কার্পেটিং কাজে উপকরণ সংমিশ্রণ মেশিন ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছি।’

এলজিইডির কর্মকর্তা সবুজ কুমার দে খবরের কাগজকে বলেন, ‘বৃষ্টির পানি জমে সড়কের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেরামত করে দেবে। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭৩ লাখ টাকা বিল এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। তারা ঠিকঠাক মতো কাজ বুঝিয়ে দিতে না পারলে আর বিল পাবে না। এ ছাড়া কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার পর আগামী ১ বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে।’

ফরিদপুরে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৫, আহত ২৭

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৫ এএম
আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
ফরিদপুরে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৫, আহত ২৭
ফরিদপুর সদর উপজেলার মল্লিকপুরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ। ছবি : খবরের কাগজ

ফরিদপুর সদর উপজেলার মল্লিকপুরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

আহতদের মধ্যে ২৭ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 
করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে খবরের কাগজকে জানান, ঢাকা থেকে ঝিনাইদহগামী গ্রিন এক্সপ্রেসের সঙ্গে বিপরীত দিকে সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা খাগড়াছড়ি পরিবহনের বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

নিহতদের সবাই খাগড়াছড়ি পরিবহনের যাত্রী বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেন হাইওয়ে থানার ওসি।

আহত ২৭ জনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

সঞ্জিব দাস/অমিয়/