
সফলতার পথে বয়স কোনো বাধা নয়। নানা সময় নানা দেশে এ কথা প্রমাণ করেছে অনেক টিনএজার। বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত এমন কয়েকজন টিনএজার উদ্যোক্তার কথা জেনে নাও আজকের লেখায়।
ড্যানি ড্যারেনবার্গ
যুক্তরাজ্যের টিনএজার ১৭ বছর বয়সী ড্যানি ড্যারেনবার্গ ‘ডগ অ্যাডভাইজর’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। একদিন পথ চলতে চলতে ড্যানির বন্ধু জানায় সে রাস্তায় একটি কুকুর ছানা কুড়িয়ে পেয়েছে। কুকুরটি সঙ্গে তুলে আনলেও কীভাবে তার যত্ন করবে বুঝে উঠতে পারছে না। বন্ধুর এমন প্রশ্নে ড্যানির মাথায় আসে যারা নতুন নতুন কুকুর পালছেন তাদের অনেকেই হয়তো বুঝে উঠতে পারেন না ঠিক কীভাবে যত্ন নেবেন। অনেক সময় মালিকের অজ্ঞতার কারণে ছোটখাটো অসুখে অকালে প্রাণ হারাতে দেখা যায় অনেক কুকুরকে। তাই মানুষের চারপেয়ে এই বন্ধুর জন্য ড্যানি শুরু করেন কুকুরের লালন-পালন সম্পর্কিত ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইট তৈরির পর থেকে ডগ অ্যাডভাইজার কুকুরের যত্ন, লালন-পালন নিয়ে ১০০টিরও বেশি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। ডগ অ্যাডভাইজরের সাপ্তাহিক পাঠক ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি। এ ছাড়া তার উদ্যোগে তৈরি একটি এআই চ্যাটবট কুকুর মালিকদের জন্য তাৎক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে থাকে। ২০২৪ সালে ডগ অ্যাডভাইজর সর্বাধিক পোষ্য পণ্য বিভাগে ইউকে বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।
আলফোনস কোলম্যান
১৪ বছর বয়সী আলফোনস কোলম্যানের যাত্রা শুরু হয় স্কুল কার্যক্রম থেকে। স্কুল প্রজেক্ট হিসেবে কোলম্যান তৈরি করেছিলেন পরিবেশবান্ধব মোমবাতি। নারকেল থেকে তৈরি মোমবাতিগুলো পরবর্তী সময়ে বিক্রি করেন ৩ হাজার ইউরো মূল্যে। কোলম্যান বলেন, মোমবাতি নিয়ে তার মা বেশ শৌখিন। তার মা সব সময় সাশ্রয়ী, সুন্দর ঘ্রাণযুক্ত মোমবাতি খুঁজতেন। মায়ের সহযোগিতায় প্রাকৃতিক পণ্য দিয়ে তিনি এমন মোমবাতি তৈরি করে ফেলেন যেগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য। পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির জন্য কোলম্যান ১৪ বছর বয়সেই উদ্যোক্তা বৃত্তি পায়। কিশোর এই উদ্যোক্তা মনে করে, কোনো কাজ সম্পাদনের জন্য বুড়ো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নেই। বরং আপনার যা আছে তা দিয়েই কাজ চালিয়ে যান।
জাচ ইয়াদেগারি
প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের প্রতি জাচের ছিল ছোটবেলা থেকেই আলাদা ভালোবাসা। মাত্র সাত বছর বয়সেই কোডিং আয়ত্ত করে ফেলেন জাচ। কোডিং শেখার কিছু সময় পর যাচ তৈরি করে ফেলেন টোটালি সায়েন্স নামে একটি গেমিং ওয়েবসাইট। কৈশোরের শুরুতেই চড়া মূল্যে নিজের গেমিং ওয়েবসাইট বিক্রি করেন জাচ। ১৭ বছর বয়সে জাচ সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তৈরি করেন পুষ্টি ট্র্যাকিং অ্যাপ্লিকেশন ক্যাল এআই। মাত্র ১০ মাসের ভেতর তার এআই অ্যাপ্লিকেশনটি ৩.৩ মিলিয়ন ডাউনলোড এবং বার্ষিক ৩০ মিলিয়ন ডলার আয় করে।
জোসেপ সিতাম
১৯ বছর বয়সী জোসেপ সিতাম পুরুষদের জনপ্রিয় ফ্যাশন অনুষঙ্গ ও গহনা বিক্রির ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আইসকার্টেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ছোটবেলা থেকেই ফ্যাশন, ব্র্যান্ডিং নিয়ে আলাদা আগ্রহ ছিল জোসেপের। সেই আগ্রহ কাজে লাগিয়ে ছয় বছর ধরে গড়ে তুলেছে আন্তর্জাতিক মানেই ই-কমার্স ব্র্যান্ড। বর্তমানে আইসকার্টেলের বাৎসরিক আয় ছয় অঙ্কের রাজস্বে পৌঁছেছে। জোসেপ মনে করেন, ব্র্যান্ডিং মোটেই সহজ কাজ নয়। তবে সৃজনশীল পণ্য, ভোক্তাদের মন ও সমসাময়িক বাজার বুঝতে পারলে সফলতা অনেকটা সহজেই
ধরা দেয়।