
সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের সরকারকে সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন করেছে। তিনি নিঃসন্দেহে একজন গুণী মানুষ। তাই আপনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দ্রুত তারিখ ঘোষণা করুন। আপনি বলুন যে এত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। প্রশাসনসহ সবকিছুতে সংস্কার দরকার। কিন্তু এ সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ, বাদানুবাদ, তর্ক-বিতর্ক চললে হবে না।’
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীর শহিদ জিয়া শিশুপার্ক এলাকায় যুবদলের শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। কিন্তু সেটা নিয়ে বেশি দেরি করা উচিত হবে না। ১৭ বছর দেশের মানুষ ভোট দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে উদগ্রীব দেশের মানুষ। বাংলাদেশকে পাশের দেশের কাছে ইজারা দিয়ে রেখেছিলেন শেখ হাসিনা। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল হাসিনার, বাংলাদেশের সঙ্গে নয়।
তিনি আরও বলেন, দিনের ভোট রাতে হবে, এটা হচ্ছে শেখ হাসিনার গণতন্ত্র। শেখ হাসিনার গণতন্ত্র হচ্ছে- নির্বাচনের সময় বিরোধীদলের সবাইকে জেলের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখা। বিএনপির চেয়ারপার্সনসহ সিনিয়র সব নেতা-কর্মীদের জেলে রেখে তিনি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন করেছেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা রিজভী বলেন, উনি যে গণতন্ত্র দিয়েছিলেন তার নমুনা আমরা দেখেছি। ভোটকেন্দ্রে চতুষ্পদজন্তু বিচরণ করতে দেখিছি। মানুষ বা ভোটাররা সেখানে যাননি। এগুলো তিনি কেন করেছেন? এ বাংলাদেশটা তার কাছে ছিল টাকার খনি। এখান থেকে টাকা উত্তোলন করবেন। সেটা বিদেশে পাচার করে সুখে শান্তিতে থাকবেন। আর তার যে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগের নেতারা সেই টাকা দিয়ে দুবাই, কাতার, কানাডা, মালয়েশিয়া, আমেরিকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি কিনবে, সেখানে পরিবার নিয়ে থাকবেন- এটা ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার প্রমাণ আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা সোনার হরিণ ক্ষমতা ধরে রাখতে কত শিশু বাচ্চাকে হত্যা করেছে। আবু সাঈদের মতো টাটকা তরুণ প্রাণকে হত্যা করেছে। মুগ্ধ যে চিৎকার করে বলেছে ‘পানি লাগবে পানি’, তাকে হত্যা করেছে। এত শিশু, এত মাসুম বাচ্চাকে হত্যা করে তিনি তার রাজ সিংহাসনে থাকার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তিনি তার ক্ষমতার রক্ষা করতে শুধু একটি দেশকে সমীহ করতেন। এইজন্য বলেছিলেন ‘আমি ভারতকে যা দিয়েছি, তা কোনো দিন ভুলতে পারবে না।’ উনি কত শক্তিশালী দেশকে গালাগালি করেছেন। ভারত চেয়েছে তাদের স্বার্থ রক্ষায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। সেটি হয়নি। তবে এখন এ দেশ কীভাবে চলবে তা নির্ধারণ করবে এদেশের জনগণ।’
অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন, রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম রবি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এনায়েত করিম/মাহফুজ