নড়াইলে সুলতান মেলায় চিত্রশিল্পীদের আর্ট ক্যাম্প । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

নড়াইলে সুলতান মেলায় চিত্রশিল্পীদের আর্ট ক্যাম্প

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম
নড়াইলে সুলতান মেলায় চিত্রশিল্পীদের আর্ট ক্যাম্প
চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নড়াইলে এস এম সুলতানের বাগানবাড়িতে (মাছিমদিয়া) আর্ট ক্যাম্প প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: খবরের কাগজ

বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নড়াইলে চলছে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলা। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মেলার পঞ্চম দিন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ৩৫ চিত্রশিল্পী ‘আর্ট ক্যাম্প’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এস এম সুলতানের বাগানবাড়িতে (মাছিমদিয়া) এই আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।

আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধূরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মিকুসহ অন্যরা।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিল্পী প্রফেসর আলাউদ্দিন আহম্মেদ ও লায়লা আঞ্জুমান আরা জানান, শিল্পী এস এম সুলতান যে কত বড় মাপের শিল্পী ছিলেন, তা তাদের মতো শিল্পীদের পক্ষে পরিমাপ করা সম্ভব না। এস এম সুলতানের জন্মভূমি নড়াইলের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তারা গর্বিত।

জেলা প্রশাসক ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধূরী বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানের শিল্পীদের সঙ্গে নড়াইলের স্থানীয় শিল্পীদের মেলবন্ধন তৈরি হচ্ছে। আগামীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

গত ১৫ এপ্রিল এস এম সুলতান মেলার উদ্বোধন করা হয়। জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শহরের সুলতান মঞ্চে এ মেলা চলছে। 

প্রসঙ্গত, ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান নড়াইলের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি মারা যান।

পতিসরে রবীন্দ্র জন্মোৎসব উদযাপন

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১২:১৮ পিএম
পতিসরে রবীন্দ্র জন্মোৎসব উদযাপন
ছবি : খবরের কাগজ

নওগাঁর পতিসরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মোৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারও দেবেন্দ্র মঞ্চে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল।

বুধবার (৮ মে) বিকেলে কবির নিজস্ব জমিদারি কালীগ্রাম পরগনার কাছারিবাড়ির আঙ্গিনায় দেবেন্দ্র মঞ্চে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে তিনি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন- নওগাঁ-৩ আসনের সংসদ সদস্য সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, নওগাঁ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্রুহানী সুলতান, নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফৌজিয়া হাবিব ও আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন রবীন্দ্র গবেষক ড. আশরাফুল ইসলাম।

এ ছাড়া নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরীফুল ইসলাম খাঁন, কৃষি অর্থনীতি গবেষক অধ্যাপক মোজাফ্ফর হোসেন আলোচনায় অংশ নেন।

আলোচকরা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মময় জীবনী তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্ম বাঙালিকে আলোর পথ দেখায়।

আলোচকরা বলেন- বিশ্বকবি পতিসর কাছারিবাড়ির আঙিনায় বসে অসংখ্য সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি করেছেন। রবীন্দ্রনাথ জমিদার হয়েও সাধারণ মানুষের কাছে নিজেকে নিবেদন করতেন। তৎকালীন সমাজের বৈষম্য ও কুসংস্কার দূর করে স্বনির্ভর সমাজ করে গড়ে তোলার কাজ হাতে নিয়েছিলেন। নিজস্ব জমিদারি কালীগ্রাম পরগনা থেকেই সে কাজ তিনি শুরু করেছিলেন। সাহিত্য রচনার পাশাপাশি কবি সকল বঞ্চনার মুক্তির পথ দেখিয়েছেন।

আলোচনা শেষে দেবেন্দ্র মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। শিল্পীরা রবীন্দ্র সৃষ্টিকর্ম থেকে আবৃত্তি, গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন।

শফিক ছোটন/অমিয়/

‘বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন, চিন্তা-ভাবনায় অপূর্ব মিল রয়েছে’

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১০:৩৮ এএম
‘বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন, চিন্তা-ভাবনায় অপূর্ব মিল রয়েছে’
ছবি : খবরের কাগজ

বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন এবং চিন্তা-ভাবনায় অপূর্ব মিল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের চিন্তা-চেতনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে সারাজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম ও অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে আমাদেরকে স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। মানুষকে ভালোবেসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত নাইটহুড উপাধি ত্যাগ করেছিলেন, ঠিক তেমনি নিজের জন্য খোঁড়া কবরের সামনে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানি শাসকদের সঙ্গে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তির ব্যাপারে আপস করেননি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এভাবেই বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন ও চিন্তা-ভাবনায় অপূর্ব মিল রয়েছে।’

বুধবার (৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত ‘সোনার বাংলা স্বপ্ন ও বাস্তবতা: রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, ‘পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্ম, চিন্তা-ভাবনা, আদর্শ ও দর্শন বেঁচে থাকবে। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা, গল্প, গান, রচনা, সাহিত্য ও শিল্পকর্মে দরিদ্র্য কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তির গান গেয়েছেন। তাঁরা উভয়ই অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ, উগ্র জাতীয়তাবাদ পরিহার এবং আত্মশুদ্ধির পন্থা অবলম্বন করেছেন।’

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কবিতা ও সাহিত্যকর্মে সমাজের নানা অসঙ্গতি, কুসংস্কার, বৈষম্য, মানুষের কষ্ট, প্রকৃতি, পরিবেশ, মানবপ্রেমসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথ উভয়ই উগ্র জাতীয়তাবাদ বিরোধী ছিলেন। তাঁরা উভয়ই বিশ্বাস করতেন, উগ্র জাতীয়তাবাদ সমাজে সংঘাত সৃষ্টি করে। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাভাবনা ও দর্শন সবার সামনে সব সময় তুলে ধরতে হবে।’

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, ‘সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় ও কর্মে অনেক মিল ছিল। বাঙালির ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে আত্মশক্তি অর্জনে উভয়ই সোচ্চার ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল কাজগুলো তৎকালীন পূর্ববঙ্গের গ্রাম্য জীবন ও পদ্মাপাড়ের মানুষের জীবন নিয়ে রচিত। তিনি যেমন লেখনীর মাধ্যমে মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন করে সমাজ সংস্কার করতে চেয়েছেন, তেমনি বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এককভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’

রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় আয়েজিত ওই আলোচনাপর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

আরিফ জাওয়াদ/অমিয়/

‘মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস করেননি কলিম শরাফী’

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৯:৪৬ পিএম
‘মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস করেননি কলিম শরাফী’
ছবি : সংগৃহীত

ছাত্রজীবনে সমাজতান্ত্রিক আদর্শে উজ্জীবিত হয়েছিলেন তিনি, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশ নেন। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে লঙ্গরখানার জন্য ত্রাণ সরবরাহের পাশাপাশি নিরন্ন মানুষকে জাগিয়ে রেখেছিলেন গানে-গানে। সক্রিয় সেই রাজনীতিকর্মী এরপর সমাজ বদলের পথ হিসেবে বেছে নেন সংগীতকে। রবীন্দ্রসংগীতের পরে গণসংগীতেও তিনি প্রতিবাদ জারি রেখেছিলেন সামরিক শাসন আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে আপসহীন থেকে অচল থেকেছেন নিজস্ব মূল্যবোধে।

দেশের কিংবদন্তিতুল্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কলিম শরাফীকে তার জন্মশতবার্ষিকীতে এভাবেই স্মরণ করেছেন বরেণ্য সংস্কৃতিজনরা।

বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী তার স্মরণসভার আয়োজন করে।

প্রথমে মিলনায়তনের বাইরে কলিম শরাফীর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অনুষ্ঠানে আগত দর্শক ও শিল্পীরা। পরে মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের শুরুতে কলিম শরাফীর জীবনী নিয়ে নিশাদ হোসেন রানা নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া’ প্রদর্শিত হয়। কলিম শরাফীর জীবনী পাঠ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি বেলায়েত হোসেন। এরপর ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’ গানটির সঙ্গে একক নৃত্য পরিবেশন করেন নেওয়াজ মৃন্ময় রহমান। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সংগীত বিভাগের শিল্পীরা পরিবেশন করেন দুটি সমবেত সংগীত।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী, প্রবীণ সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়, উদীচীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচী সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান।

সারওয়ার আলী বলেন, কলিম শরাফী সারা জীবন রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেছিলেন। কিন্তু জাতির সংকটের নানা সময়ে গণসংগীতে তিনি আশ্রয় করেছিলেন। গণসংগীতকে তিনিই নিয়ে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। সারাটা জীবন সংগীতকে বহন করে চলেছেন বলে অনেক বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনোই তিনি গান ছেড়ে দেননি। গানে-গানে তিনি এক বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে গেছেন।

১৯৯১ সালে যুদ্ধাপরাধী গোলম আযমের বিচারের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত গণআদালতের অন্যতম বিচারক ছিলেন কলিম শরাফী। গণআদালতের অন্যতম সংগঠক আবেদ খান বলেন, সেসময়ে এক ভাষণে আমি যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছিলাম। সেই মন্তব্য শুনে শহিদজননী জাহানারা ইমাম ও ফয়েজ আহমেদ আমাকে নিয়ে ভীত ছিলেন। অনেকে আমাকে বক্তব্য সংশোধন করতে বলেছিলেন। একমাত্র কলিম শরাফী আমাকে বলেছিলেন- তুমি যা করেছ ঠিক করেছ। আজীবন সংগ্রামী মানুষটি বলতেন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে যারা থাকবে তাদের কখনো ছাড় নয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী মাহমুদ সেলিম বলেন, রাষ্ট্র কলিম ভাইকে স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক দিয়েছে বটে; কিন্তু সংগীত জগৎ থেকে যে প্রাপ্য সম্মান সেটুকু পাননি। তিনি আপস করতে জানতেন না বলে অনেকের চক্ষুশূল হয়েছিলেন। তিনি কখনো সরল প্রতিবাদ করতেন না। প্রচণ্ড অভিমানী মানুষ ছিলেন। কিন্তু গান তিনি ছেড়ে যাননি কখনো। জীবনে বহু সংগ্রাম-তিতিক্ষার মাঝেও সংগীতকে তিনি জীবনের আধার করেছিলেন। একে একে তিনি বহু সংগঠন তৈরি করে গেছেন যার উত্তরাধিকার বহন করছি আমরা।

বদিউর রহমান তার বক্তব্যে কলিম শরাফীর ১০১তম জন্মদিনের আয়োজনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনের দাবি জানান।

১৯৬৮ সালে উদীচী প্রতিষ্ঠার পরের বছরই কলিম শরাফী সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় আবৃত্তি বিভাগের বাচিক শিল্পীরা। একক সংগীত পরিবেশন করেন মহাদেব ঘোষ, ইকবাল ইউসুফ, মাহমুনা ঐশী এবং মায়েশা সুলতানা ঊর্বি।

রবীন্দ্র পুরস্কার পেলেন ভীষ্মদেব চৌধুরী ও লাইসা আহমদ

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৯:২১ পিএম
রবীন্দ্র পুরস্কার পেলেন ভীষ্মদেব চৌধুরী ও লাইসা আহমদ
অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী ও লাইসা আহমদ লিসাকে রবীন্দ্র পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ছবি : খবরের কাগজ

রবীন্দ্র সাহিত্যের গবেষণা বা সমালোচনা বা অনুবাদে প্রকাশিত গ্রন্থের মান বিবেচনায় অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরীকে এবং রবীন্দ্রসংগীত চর্চায় অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসাকে এ বছর রবীন্দ্র পুরস্কার দিয়েছে বাংলা একাডেমি।

বুধবার (৮ মে) বাংলা একাডেমির ড. মুহম্মদ এনামুল হক ভবনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। রবীন্দ্র পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। একক বক্তৃতা করেন মঞ্চ নির্দেশক ও রবীন্দ্র গবেষক মঞ্চসারথি আতাউর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির প্রতীক। তার জীবনব্যাপী সাধনা বাঙালিকে সৃষ্টিশীলতার নতুন নতুন মাত্রা আবিষ্কারে পথ দেখিয়েছে, স্বপ্নের সহস্র সড়ক খুলে দিয়েছে। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যে খুঁজে পাওয়া যায় সোনার বাংলার কথা যা উত্তরকালে পরিণত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে।’

আতাউর রহমান বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ বাংলা ও বাঙালির গর্ব, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। তিনি আমাদের সাহিত্যকে যেমন নতুন উচ্চতা দান করেছেন তেমনি জীবনের নানা ক্ষেত্রে রেখেছেন নতুন পথের দিশা। পূর্ববঙ্গের মানুষ ও প্রকৃতি যেমন রবীন্দ্রনাথকে নতুন জন্ম দান করেছে তেমনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান পালন করেছে সাংস্কৃতিক সহায়ের ভূমিকা।’

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘যে পূর্ববঙ্গের কথা রবীন্দ্রভাষ্যে উঠে এসেছে তা আজকের বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জাতি অর্জন করেছে স্বাধীনতা। এ জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবুর রহমান রবীন্দ্রনাথের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। তিনি তাকে বরণ করেছেন গভীর শ্রদ্ধায়, প্রদীপ্ত চেতনায়, জ্ঞানের মাহাত্ম্যে, সাহসের বলিষ্ঠতায়, মননের শাণিত প্রভায় এবং দিব্যলোকের অনিঃশেষ যাত্রায়।’

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী এবং শিমুল মুস্তাফা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী লিলি ইসলাম এবং চঞ্চল খান।

শাহজাদপুর কাছারিবাড়িতে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উৎসব শুরু

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৫:০৪ পিএম
শাহজাদপুর কাছারিবাড়িতে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উৎসব শুরু
ছবি : খবরের কাগজ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কাছারিবাড়িতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে উদযাপিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উৎসব।

বুধবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে- গান, আলোচনাসভা, নাচ, আবৃত্তি ও নাটক।

এ উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকেই দর্শনার্থী ও ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কবির স্মৃতিবিজড়িত কাছারিবাড়ি প্রাঙ্গণ।

জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠান ঘিরে পুরো শাহজাদপুরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রেখে যাওয়া স্মৃতি ও সম্পদের দেখভাল করবে সরকার। শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিদারির গোচারণ ভূমি ও জমি যেন বেদখল না হয় সে বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মীর মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) ভিসি প্রফেসর ড. শাহ আজমসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

সিরাজুল ইসলাম/অমিয়/