খুলনা জেলায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে ২৩ ধরনের ওষুধ পেত গ্রামের সাধারণ মানুষ। কিন্তু ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে এসব কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি পর্যাপ্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর অভাবে পরিবার পরিকল্পনা সেবাও ব্যাহত হচ্ছে। চিকিৎসাকেন্দ্রে এসে ওষুধ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।
জানা গেছে, জেলা পরিবার পরিকল্পনার আওতায় ৪৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র, মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র দুটি ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক রয়েছে ৩৪৮টি। এর বাইরে ১৮৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি, বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি, ভান্ডারকোট, ফুলতলা উপজেলা, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি, গদাইপুর, রাড়ুলী, চাঁদখালী, গড়ইখালী ও তেরখাদা উপজেলার আজগড়ায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র পরিচালিত হয়। এসব ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রাথমিক সেবা দেন। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো থেকে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শিশুরোগের সমন্বিত চিকিৎসা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাসেবা ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে ২৩ ধরনের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে রোগীও তুলনামূলক কমে গেছে। স্বাস্থ্য সহকারী রোকসানা আক্তার জানান, রোগীর সংখ্যা আগের মতো নেই। কারণ সরকারিভাবে সরবরাহ করা ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় রোগীকে শুধু ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হচ্ছে। কয়েক মাস ধরে সেবা নিতে এসে কেউই ওষুধ পাননি। শুধু রোগের বিবরণ শুনে প্রেসার আর ওজন মেপে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। তবে তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও রোগ প্রতিরোধের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রূপসা উপজেলার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সরবরাহও কমেছে। ফলে পরিবার পরিকল্পনা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। কবে ওষুধের সংকট কাটবে, সেটা কেউই বলতে পারে না।’
খুলনার দিঘলিয়ায় গত এপ্রিলে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা দম্পতির সংখ্যা ছিল ৭২ হাজার ৪২৪। একইভাবে ডুমুরিয়ায় ৫৪ হাজার ৮১৬, সদরে ৪৪ হাজার ১৬২, দাকোপে ২৫ হাজার ১৮৭, তেরখাদায় ২০ হাজার ৫১, ফুলতলায় ২৩ হাজার ৯৯, বটিয়াঘাটায় ৩২ হাজার ২৭৯, পাইকগাছায় ৪৬ হাজার ৯৮৩, রূপসায় ৩১ হাজার ৩০৬, কয়রায় ৩১ হাজার ৬৫৭ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন, যা আগের মাসের তুলনায় শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ কম।
তবে খুলনা জেলার পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক আকিব উদ্দিন বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে ওষুধ সরবরাহ ছিল না। তবে চলতি মাসের শেষের দিকে সেটা স্বাভাবিক হবে বলে জানা গেছে। আর জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ইতোমধ্যে পৌঁছেছে। যখন জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ঘাটতি ছিল, ওই সময় বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বনে উৎসাহিত করা হয়েছে।’