ঢাকা ২ ফাল্গুন ১৪৩১, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১

রাফার আঁকা পতাকা

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৪ পিএম
রাফার আঁকা পতাকা
আঁকা মাসুম

বাবা-মায়ের সঙ্গে জাপানে বেড়াতে এসেছে রাফা। এখানে ওর বড় মামা থাকেন। রাফা মামাকে জাপানি মামা বলে ডাকে। এখানে এসে রাফা অনেক খুশি। ওকে পেয়ে সাফাও খুশি। সাফা হলো রাফার মামাতো বোন।
সাফা স্কুলে যাচ্ছে। স্কুলটা কাছে। তাই একাই হেঁটে স্কুলে যায় সাফা।
সাফা বলল, ‘চলো রাফা, আমাদের স্কুল থেকে ঘুরে আসি। খুব মজা হবে।’ 
রাফা রাজি হয়ে গেল। দুই বোন স্কুলে যাচ্ছে।
স্কুলে ঢোকার সময় হেডস্যার ডাকলেন। বললেন, ‘সাফা, তোমার সঙ্গে কে?’
সাফা বলল, ‘ওর নাম রাফা। বাংলাদেশ থেকে এসেছে। আমার বোন।’
স্যার বললেন, ‘তাহলে তো রাফা আমাদের অতিথি।’
তারপর স্যার রাফার হাতে একটি ফুল দিয়ে স্বাগত জানালেন। রাফা খুব খুশি হলো।
স্কুলে ঢুকে রাফা অবাক! ওর বয়সী সব শিক্ষার্থী মাঠ পরিষ্কার করছে। শিক্ষকরাও ওদের সঙ্গে কাজ করছেন। কেউ কেউ ফুটবল খেলছে। মাঠের চারপাশে বাগান। সেই বাগান রঙিন রঙিন ফুল ফুটে আছে। কেউ আবার ফুল গাছে পানি দিচ্ছে। সাফাও কাজে লেগে গেল।
তখন রাফা ভাবল, তারও কিছু করা উচিত। কিন্তু কী করবে?
একটু পর ঘণ্টা বাজল, টুন টুন টুন। সবাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে ক্লাসে ঢুকল। স্যার এসে বললেন, ‘ওর নাম রাফা। বাংলাদেশ থেকে এসেছে। রাফা আজ আমাদের অতিথি।’
স্যারের কথা শেষে সবাই উঠে দাঁড়াল। ওরা বলল, ‘স্বাগতম রাফা।’
রাফা দাঁড়িয়ে বলল, ‘তোমাদের ধন্যবাদ।’
স্কুলে এসে রাফার খুব আনন্দ হচ্ছে। কেউ চকলেট উপহার দিচ্ছে। কেউ দিচ্ছে পুতুল। কেউ আবার গল্পের বই দিচ্ছে। সবার ব্যবহারে ও বারবার চমকে যাচ্ছে।
তাই ওকে এমন কিছু করতে হবে যা দেখে সবাই চমকে যাবে। বাংলাদেশকে চিনবে। কিন্তু কী করবে রাফা? 
স্কুলটা রাফার বেশ ভালো লেগেছে। ক্লাসে বসে ঘুমালেও কেউ কিছু বলছে না। এটাই নাকি নিয়ম!
কেউ চিপস খাচ্ছে। কেউ চকলেট খাচ্ছে। খাওয়া শেষে প্যাকেটগুলো ডাস্টবিনে ফেলে আসছে।
স্কুলের সব শিক্ষার্থী বড় হলরুমে বসে আছে। স্যাররাও ওদের সঙ্গে বসে আছেন। এখন বিশেষ ক্লাস হবে। সেখানে যে খুশি অংশ নিতে পারবে।
বিশেষ ক্লাসে অনেকেই অংশ নিচ্ছে। স্যার নাম ধরে ডাকলে একজন করে উঠে যাচ্ছে। কেউ গান গাইছে। কেউ কবিতা আবৃত্তি করছে। কেউ নাচ করছে। কেউ কৌতুক বলছে। আর সবাই করতালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে।
একজন গিয়ে সাদা বোর্ডে একটি ছবি আঁকল। চারপাশে সাদা, মাঝখানে লাল বৃত্ত। এটা জাপানের পতাকা। সবাই উঠে দাঁড়িয়ে পতাকাকে সম্মান জানাল।
এবার স্যার রাফাকে ডাকলেন। রাফা কী করবে বুঝতে পারছে না। ভয়ে ভয়ে এগিয়ে যায় স্টেজে। পেছনে সাদা বোর্ডে লাল বৃত্তের জাপানি পতাকা।
রাফা টেবিল থেকে সবুজ রং নিল। লাল বৃত্তের চারপাশ সবুজে রাঙিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে ভিড় থেকে উঠে দাঁড়াল সাফা। ওর দিকে তাকিয়ে আছে সবাই। কেউ কিছু বুঝতে পারে না।
সাফা চিৎকার করে বলল, ‘ওটা আমার দেশের পতাকা। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি।’
তখন সবাই উঠে দাঁড়াল। সম্মান জানাল বাংলাদেশের পতাকাকে।
সাদা বোর্ডে আঁকা পতাকাতে চুমু দিল রাফা। ওর মুখে ও কপালে লাল-সবুজ পতাকার রং লেগে গেছে। রাফা খুব খুব খুশি।

দুরন্ত ছড়া: বাঙলা ভাষা

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
দুরন্ত ছড়া: বাঙলা ভাষা
এঁকেছেন মুবাশ্বশিরা মুস্তারিন মম

বাঙলা ভাষা
বিজন বেপারী 

 

বাঙলা ভাষার গৌরব গাথা 
বিশ্ব ভুবন জানে
বাঙলা আমার অর্জিত ধন
সব বাঙালি মানে।

বাঙলা ভাষায় লালন হাচন
রবীন্দ্রনাথ জ্বলে 
সেই ভাষার‌ই সম্মান রাখে
রফিক শফিক দলে।

উনিশ শতক বায়ান্ন সাল
একুশে ফেব্রুয়ারি 
ঝরল রক্ত সেই দিনটাকে 
কেমনে ভুলতে পারি?

 

 

 


প্রাণের বাংলা ভাষা
জহিরুল হক বিদ্যুৎ

 

মায়ের মতো মধুর আমার
প্রাণের বাংলা ভাষা,
এই ভাষাতেই পুরাই মনের
সকল স্বপন আশা।

সুখ ও দুঃখ হাসি-কান্না
এই ভাষাতেই গাথা,
মাতৃভাষার গৌরবে আজ
হয় যে উঁচু মাথা।

দোয়েল টিয়া ফিঙে শ্যামা
বাংলাতে গায় গান,
এই ভাষারই দেশের গানে
জুড়ায় মন ও প্রাণ।

সালাম রফিক বরকতেরা
বাংলা ভাষার তরে,
বায়ান্নতে বুক পেতে সব
বীরের মতো মরে।

এই ভাষাতেই বাঁচার স্বপন
এই ভাষাতে মরণ,
রাখব ধরে ভাষারই মান
করব তাদের স্মরণ।

 

 

বই মেলায় যাবে খুকি 
শেখ সোহেল রেজা

 

বাবার সাথে যাবে খুকি 
ঘুরবে বই মেলায়
ছড়ার বই কিনে খুকি 
ফিরবে সন্ধ্যা বেলায়।

কত রকম ছড়ার বই
কিনে খুকি ধন্য
গল্পের বই কিনবে খুকি 
ছোট বোনের জন্য।

বই মেলায় ঘুরে খুকি 
দেখছে ছড়ার বই
ছড়ার বই কিনে খুকি 
করে হইচই।

 

 


বই মেলাতে যাই
কাব্য কবির

 

ইতু, মিতু, রাজু চলো 
বই মেলাতে যাই,
নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে
তৃপ্তি মনে পাই।

বই মেলাতে যায় যে পাওয়া
মজার ছড়ার বই,
মলি, কলি, ওরাও যাবে
বীণা গেল কই?

বই পড়লে বাড়ে জ্ঞান
গুণিজনা কয়
চিরদিনই এই কথাটির
একটুও নেই ক্ষয়।

বই পড়ব মানুষ হব
গড়ব সোনার দেশ,
জ্ঞানের আলোয় আলোকিত
রাখব পরিবেশ।

 

গোলাপি পাখি ফ্লেমিঙ্গো

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০০ এএম
গোলাপি পাখি ফ্লেমিঙ্গো
সংগৃহীত

আগুনে লাল গায়ের রং, বাঁকা ও পুরু ঠোঁট, সরু গলা, অস্বাভাবিক লম্বা পা- দারুণ আকর্ষণীয় এই পাখিটির নাম ফ্লেমিঙ্গো। ক্যারিবিয়ান থেকে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের মিঠা বা নোনাপানিতে বাস করে ওরা। ক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ পরিবেশ বসবাসের জন্য প্রথম পছন্দ ফ্লেমিঙ্গোর।
গোলাপি পালকের জন্য ফ্লেমিঙ্গো বিখ্যাত হলেও সব সময় পালক কিন্তু গোলাপি হয় না! সাদা, কমলা বা লালও হতে পারে। একটি ফ্লেমিঙ্গো কী খাবার খাচ্ছে এবং সেই খাবারে কোন পিগমেন্ট বেশি- তার ওপর নির্ভর করে পালকের রং কেমন হবে। বাচ্চা ফ্লেমিঙ্গো গোলাপি রং নিয়ে জন্মায় না। দুই-তিন বছর লেগে যায় খেয়েদেয়ে এদের গোলাপি হতে।
সাধারণত ফ্লেমিঙ্গোর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় থাকে শৈবাল আর চিংড়ি। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকে। এই বিপুল পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন তাদের শরীরকে লাল বা গোলাপি বানিয়ে দেয়। বিটা ক্যারোটিনের জন্যই টমেটো লাল আর গাজর কমলা হয়!
ফ্লেমিঙ্গো যদি বিটা ক্যারোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেয়, তাহলে এদের গোলাপি পালকগুলো ঝরে যায়। নতুন গোলাপি পালক আর তৈরি হয় না। তখন এদের শরীর সাদা বা ধূসর দেখায়।
একটি প্রাপ্তবয়স্ক ফ্লেমিঙ্গো তিন থেকে চার ফুট উঁচু হয়। ওজন হয় ৯ পাউন্ড। গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো সবচেয়ে লম্বা হয়, প্রায় পাঁচ ফুট। আর লেসার ফ্লেমিঙ্গো সবচেয়ে ছোট আকারের, তিন ফুটের মতো।
ফ্লেমিঙ্গোকে সব সময় এক পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরা ঘুমায়ও এভাবে! শরীরের তাপমাত্রা বাঁচাতে যখন এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তার আরেকটি পা তখন থাকে পালকাচ্ছাদিত শরীরের উষ্ণতায়। মাঝে মাঝে পা বদল করে দাঁড়ায় সে। ফ্লেমিঙ্গোর পায়ের ওপরের দিকে হাঁটু থাকে, একটু বাঁকানো কালো জায়গা। এরা সাঁতরাতে, দৌড়াতে ও উড়তে পারে।

খেলার শব্দ

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম
খেলার শব্দ
এঁকেছেন মাসুম

আমার রুমের সঙ্গে একটা বারান্দা আছে। এক বিকেলে সেখানে দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় চোখ পড়ল সামনের রাস্তায়। অনেকগুলো ছেলে ক্রিকেট খেলছে। আশপাশেই থাকে তারা। প্রতিদিনই খেলতে আসে, তাই চেহারাগুলো পরিচিত। রাস্তাটা ছোট, গাড়িঘোড়ার ভিড় নেই। ওদের খেলাও জমে উঠেছে। পাশের কবরস্থানে প্রায়ই ওদের বল চলে যাচ্ছে। ওরা গিয়ে বল আনছে। 
এখন বিকেল। অবশ্য ওরা সন্ধ্যার পরও সড়কবাতির আলোতেও খেলে। রাতে আমাদের বাসার সামনে ব্যাডমিন্টন খেলাও হয়। মাঝে মাঝে আমিও বাবার সঙ্গে খেলা দেখতে যাই। 
যা-ই হোক, সেদিন বিকেলে খেলা চলার সময় হঠাৎ গলিতে একটি প্রাইভেট কার ঢুকল। এগিয়ে গেল ছেলেগুলোর দিকে। গাড়ির ভেতর কয়েকজন লোক বসেছিল। তাদের হাতে লাঠি। লাঠি দিয়ে তারা রাস্তার ছেলেদের কয়েকজনকে আহত করল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। 
আম্মু এল তখনই। জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে?
বললাম, কয়েকজন দুষ্ট লোক এসে যারা খেলছিল, তাদের মারল। 
আম্মু শুনে অবাক হলেন। বললেন, আমাদের এখনই পুলিশ ডাকতে হবে। 
আমরা ফোন করে পুলিশকে আসতে বললাম। পুলিশ আসার আগেই খারাপ লোকগুলো পালিয়ে গেল। 
আহত ছেলেগুলোর মধ্যে একজন ছেলে আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে থাকে। আম্মু তাকে দেখতে গেল। বাসায় ফেরার পর জিজ্ঞেস করলাম, আম্মু, পচা লোকগুলো কেন ওদের মারল?
আম্মু বলল, শুনলাম পাড়ার অন্য ছেলেদের সঙ্গে বড় মাঠে তাদের মারামারি হয়েছিল। সেজন্য ওরা এসে এটা করেছে।
ওরা কি কালকেও নিচের রাস্তায় খেলতে যাবে?
না। আম্মু বলল, সবাই বলছে রাস্তায় খেলতে যাওয়ার দরকার নেই। ওরা ছাদে খেলবে।
কিন্তু ছাদ থেকে বল পড়ে গেলে?
নিচে গিয়ে নিয়ে আসবে। এখন যাও, পড়তে বসো।
আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললাম, না মা, ছাদে খেলতে মানা করে দাও। কেউ যদি খেলতে গিয়ে ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়? 
বাজে কথা বলো না তো। কখনোই তোমার মুখ দিয়ে ভালো কথা শুনি না। এখন যাও তো, পড়তে বসো।- আম্মু আমাকে ধমক দিয়ে পড়তে বসতে পাঠিয়ে দিল। 
তারপর থেকে প্রতিদিনই ছেলেরা ছাদে খেলে। একদিন খুব দুঃখজনক ব্যাপার ঘটে গেল। 
খেলার সময় একটা ছেলে কীভাবে যেন ছাদ থেকে পড়ে গেল। হাসপাতালে নেওয়ার পরও ছেলেটাকে বাঁচানো 
গেল না।
এখন আর কারও ছাদে যাওয়ার অনুমতি নেই। ছাদ তালা দিয়ে রাখা হয়। তবু সন্ধ্যার পর থেকে ছাদে বল খেলার আওয়াজ পাওয়া যায়। আর সবাই সেই আওয়াজ শুনতে পায়। প্রতিদিনই আমরা ছাদে খেলার শব্দ শুনি। প্রতিদিনই আমরা ভয় পাই। 
আমার এখন রাতে ভয়ে ঘুম আসে না। একটি কথাই বারবার মনে পড়ে, সেদিনের মারামারিটা না হলে আজ ছাদে এসব হতো না। 

লেখক উত্তরার ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।

ফুলের নাম জেসমিন

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:০০ পিএম
ফুলের নাম জেসমিন
স্টার জেসমিন

জেসমিন সাধারণত আমাদের দেশে জুঁই নামে পরিচিত। জেসমিন শব্দটি এসেছে ফারসি শব্দ ‘ইয়াসমিন’ থেকে, যার অর্থ ‘উপহার’। এই ফুল থেকে তেল, প্রসাধনী ও সুগন্ধি তৈরি হয়। এর সৌন্দর্য ও সুঘ্রাণ যে কাউকে মোহিত করে। 
জেসমিনের প্রায় ২০০টি প্রজাতি রয়েছে। জুঁই পত্রঝরা অথবা চিরহরিত্‍ উভয় ধরনেরই হতে পারে। তাদের পাতা উল্টোদিকে গজায়। ফুলগুলো সাধারণত ২.৫ সেমি হয়ে থাকে। এটি বাগানে সৌন্দর্য বর্ধনে ও সুগন্ধের জন্য গৃহস্থালী উদ্ভিদ হিসেবে চাষ করা হয়। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নারীরা সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এই ফুল চুলে লাগায়।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ককে বলা হয় ‘জেসমিনের শহর’। থাইল্যান্ডে একে মাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। ‘জেসমিন’ নামটি বিভিন্ন দেশে মেয়েদের নাম হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। কিছু দেশ ও রাজ্য জুঁইকে সম্মান করে জাতীয় প্রতীক হিসেবে। যেমন- যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপে জেসমিন একটি জনপ্রিয় ফুল। এটি স্থানীয়ভাবে ‘পিকাকে’ নামে পরিচিত। জুঁই নিয়ে তাই হাওয়াইতে রচিত হয়েছে অনেক গান।
ইন্দোনেশিয়ায় Jasminum Sambac প্রজাতির জেসমিন জাতীয় ফুল হিসেবে গৃহীত হয় ১৯৯০ সালে। স্থানীয়ভাবে ‘মেলাতি পুতিহ’ নামে ডাকা হয় একে। ইন্দোনেশিয়ান বিয়েতে জেসমিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফুল। এটিকে ‘এরাবিয়ান জেসমিন’ নামেও ডাকা হয়। 
জেসমিন ফিলিপিন্সের জাতীয় ফুল। পাকিস্তানের জাতীয় ফুল হলো সাধারণ জুঁই, যা জেসমিনিয়াম অফিশনাল নামেও পরিচিত। এটিকে পাকিস্তানে ‘চাম্বেলি’ ও ‘ইয়াসমিন’ নামেও ডাকা হয়। পাকিস্তানে জুঁই একটি খুব সাধারণ উদ্ভিদ এবং যেকোনো বাগানে এটি পাওয়া যায়। 
তিউনিসিয়ার ২০১১ সালের বিদ্রোহকে ‘জুঁই বিদ্রোহ’ বলা হয়। সৌদি আরবের তিনটি জাতীয় ফুলের মধ্যে জেসমিন একটি। সেখানে এটি রয়্যাল জেসমিন নামে পরিচিত। বাংলাদেশে সাধারণত গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে জুঁই ফুল বেশি ফোটে। বিশেষ করে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ফুল ফোটার মৌসুম চলে। তবে কিছু প্রজাতি সারা বছরই ফুল দেয় যদি সঠিক যত্ন নেওয়া হয়।
এ ছাড়া আতর তৈরির উৎকৃষ্ট উৎস হিসেবে জুঁই ব্যবহৃত হয়। জুঁই ফুল দিয়ে চা বানানো হয় চীনে। জাপানে এই চা ‘সানপিন চা’ নামে পরিচিত। তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহর জুঁই উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।

জাদুর ডায়েরি

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০০ এএম
জাদুর ডায়েরি
এঁকেছেন মাসুম

বাবলু আজ ডায়েরিটা কিনেই ফেলল। স্কুলের সামনের দোকানটায় প্রতিদিনই ডায়েরিটা দেখত সে। নীল রঙের ডায়েরি। তালা সিস্টেম। লেখার পর তালা দিয়ে রাখা যায়। প্রথম দেখাতে ডায়েরিটা বাবলুর পছন্দ হয়েছিল। মনে মনে ভাবল, সেখানে মজার মজার ছড়া লিখবে। তারপর তালা দিয়ে লুকিয়ে রাখবে, যেন কেউ না দেখে। 
সেদিন সন্ধ্যায় খেলাধুলা করে আসার পর ডায়েরিটা হাতে নিল বাবলু। তালাটা খুলল। পাতাগুলো চকচকে সাদা। প্রথম দিকের একটা পাতায় নিজের নাম লিখল। পরের পাতায় গেল ছড়া লেখার জন্য। 
বাবলুর জানালার পাশেই একটা ডালিম গাছ। সেটা নিয়েই লিখল ছড়া...

ডালিম গাছে ডালিম নাই
ঝুলে ক্রিকেট বল,
মাঠে গিয়ে খেলব ক্রিকেট
বন্ধুরা সব চল।

ওইটুকু লিখেই ডায়েরিটা আবার তালা মেরে রেখে দিল। তারপর পড়াশোনা করে প্রতিদিনের মতোই ঘুমিয়ে গেল। 
পরদিন ভোরে বিছানা থেকে জানালার ওপারে চোখ পড়তেই চমকেই উঠল সে। ডালিম গাছে অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে গেছে। ডালিমের বদলে 

ঝুলছে থোকা থোকা ক্রিকেট বল। ঠিক যেমনটা সে ডায়েরিতে লিখেছে। 
বাবলু নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে ইচ্ছেমতো গাছ থেকে ক্রিকেট বল ছিঁড়তে লাগল। মাঠে গেলে বারবার ক্রিকেট বল হারিয়ে যাওয়ার কারণে খেলতে সমস্যা হয়। তাই এবার বেশি করে বল নিল বাবলু। কিন্তু জানালার ছোট্ট ফাঁকা দিয়ে বলগুলো ভেতরে আসছিল না। তাই সে নিচে ফেলে দিল। মনে মনে ভাবল, বাইরে গিয়ে নিয়ে আসবে। 
বল আনতে খাট থেকে নামতে যাবে, ঠিক তখন মা চেঁচিয়ে উঠল, এই বাবলু, স্কুলে যাবি না? ঘুম থেকে ওঠ...!
এবার বাবলু চমকে উঠল। লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়ল। ভাবল, এতক্ষণ তাহলে আমি স্বপ্ন দেখছিলাম! 
বিছানা থেকে নেমে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল বাবলু। সত্যি সত্যি ডালিম গাছের নিচে ক্রিকেট বল পড়ে আছে। সে অবাক হলো। স্বপ্ন তাহলে সত্যি হয়েছে। 
বাবলু ডায়েরিটার কাছে ছুটে গেল। তালা খুলে পৃষ্ঠা উল্টালো। একটা পাতায় লেখা...

জাদুর ডায়েরিতে লিখবে যা
বাস্তবে তা পাবে,
দেখবে সেসব স্বপ্ন ঘুমে
সব তোমার হবে।

বাবলু ছড়াটি পড়েই বাইরে বেরিয়ে এল। লাল লাল ক্রিকেট বলগুলো যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে।