যে দ্বীপ শুধুই খরগোশের । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

যে দ্বীপ শুধুই খরগোশের

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম
যে দ্বীপ শুধুই খরগোশের
পর্যটকরা প্রচুর পরিমাণে খাবার সরবরাহ করে। তাই খরগোশগুলো ওকুনোশিমা দ্বীপে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ায় ও অনিয়ন্ত্রিত হারে বংশবিস্তার করে । ছবি: সংগৃহীত

আমরা পৃথিবীর অনেক দ্বীপের কথা জানলেও ‘খরগোশের দ্বীপ’ বলে যে একটা দ্বীপ আছে সেটা কি জানি? একজাপানের কথায়, খরগোশময় দ্বীপ। যতদূর চোখ যায়, শুধু খরগোশ আর খরগোশ! যদি কখনো ভুলেও সেখানে চলে যান, তাহলে অনায়াসে আপনি হারিয়ে যেতে পারেন এসব খরগোশের মাঝে। জাপানে ওকুনোশিমা নামে একটি দ্বীপ আছে, যা খরগোশের জন্য বিখ্যাত। স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় উসাগি শিমা, যার অর্থ খরগোশের দ্বীপ (rabbit island)।

দ্বীপটির ইতিহাস 
ইতিহাস বলছে, রুশ-জাপান যুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত ওকুনোশিমা দ্বীপটি ছিল কৃষিভূমি। যুদ্ধ চলাকালে নিরাপত্তা বাড়াতে জাপান এ দ্বীপে নির্মাণ করে ১০টি দুর্গ। আর তখন থেকে দ্বীপটি ব্যবহৃত হতে থাকে সামরিক কাজে। অবশ্য দ্বীপটির অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি ইতিহাসও রয়েছে। ১৯২৫ সালে জাপান সব ধরনের রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে জেনেভা চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও চীনের সঙ্গে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হওয়ায় জাপানের উন্নত রাসায়নিক অস্ত্রের জন্য তাদের সামরিক বাহিনীর প্রকৌশল ও গবেষণা বিভাগ এমন একটি জায়গা খুঁজছিল যেখানে গোপনে রাসায়নিক অস্ত্রের গবেষণা ও প্রয়োগকেন্দ্র গড়ে তোলা যায়। ওকুনোশিমা দ্বীপটি ছিল এজন্য আদর্শ একটি স্থান।

কারণ টোকিও শহর থেকে দ্বীপটি ছিল অনেক দূরে এবং আশপাশে কোনো জনবসতি ছিল না। কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ চলে ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত। এরপর অতি গোপনে এখানে চলে ক্ষতিকারক গ্যাসের পরীক্ষা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে ১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তি দ্বীপটি দখল করে নেয় এবং রাসায়নিক কারখানাগুলোর সন্ধান পায়। এরপর তারা সব বিষাক্ত গ্যাস নষ্ট করে ফেলে। যুদ্ধে এ দ্বীপে উৎপন্ন গ্যাসের ব্যবহারে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৮৮ সালে এখানে একটি জাদুঘর বানানো হয়, যেখানে ওই সময় রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম রাখা আছে। জাদুঘরে দেখতে পাবেন রাসায়নিক গ্যাসের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ঐতিহাসিক জিনিসপত্র। 

ওকুনোশিমা দ্বীপে কীভাবে এত খরগোশ এল তা নিয়ে একাধিক মতবাদ প্রচলিত আছে। তবে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য মতবাদটি হলো, দ্বীপের গ্যাস কারখানার গবেষণা কাজে ব্যবহৃত হতো খরগোশ। গবেষণামূলক কাজে তখনকার সময় ইঁদুর এবং খরগোশের ওপর বিষাক্ত গ্যাসের প্রয়োগ করা হতো। আবার অনেক সময় ঘোড়ার ওপরও প্রয়োগ হতো।

যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনী দ্বীপের দখল নেয়, তখন খরগোশগুলোকে দ্বীপে ছেড়ে দেয়। আবার অনেকের মতে, খরগোশগুলো কারখানা বন্ধ হওয়ার পর দ্বীপের ভেতরে পালিয়ে যায়। সেই পালিয়ে যাওয়া খরগোশ থেকেই আজ দ্বীপভর্তি খরগোশ। আরেকটি মতবাদ হলো, ১৯৭১ সালে দ্বীপটিতে ঘুরতে আসা স্কুলের শিক্ষার্থীরা বাচ্চা কয়েকটি খরগোশ ছেড়ে দেয় দ্বীপে। সেখান থেকেই এত খরগোশের জন্ম। যে কারণেই দ্বীপটিতে খরগোশ আসুক না কেন, বর্তমানে তাদের সংখ্যা এক হাজারের বেশি।

পর্যটকরা প্রচুর পরিমাণে খাবার সরবরাহ করে, তাই খরগোশগুলো এ দ্বীপে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ায়। খরগোশের যেহেতু প্রজনন ক্ষমতা বেশি এবং দ্বীপে কোনো শিকারি প্রাণী নেই, তাই তারা অনিয়ন্ত্রিত হারে বংশবিস্তার করতে পারছে। সম্প্রতি ওকুনোশিমা দ্বীপে পর্যটকদের কুকুর-বিড়াল নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে জাপান সরকার। এ দ্বীপের খরগোশগুলোর সুরক্ষায় কাজ করছে জাপানের বন্যপ্রাণী অধিদপ্তর।

যেভাবে যাবেন
সমুদ্র পরিবেষ্টন করে রাখা ওকুনোশিমা দ্বীপ হিরোশিমা প্রিফেকচারের তাকেহারা শহর থেকে ২ মাইল দূরে অবস্থিত। দ্বীপটির আয়তন ৪ দশমিক ৩ বর্গ কিলোমিটার। হিরোশিমা থেকে ওকুনোশিমায় ফেরিতে যাওয়া সম্ভব। মাত্র ১৫ মিনিটে পর্যটকরা সেখানে পৌঁছাতে পারেন। খরগোশের পাশাপাশি দ্বীপটিতে পর্যটকদের রয়েছে সূর্যাস্ত উপভোগের জন্য অসাধারণ জায়গা।

কলি

ওয়ান ম্যান আর্মি

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০১:১৪ পিএম
ওয়ান ম্যান আর্মি

মা,
তোমাকে লিখতে গেলে বাবার প্রসঙ্গ চলে আসে। মধ্যবিত্ত পরিবারে বাবার সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্ক থাকে শাসনের। মা-ই থাকেন আশ্রয়ের হিমালয়। বাবার পুলিশি শাসন থেকে বাঁচতে মধ্যবিত্তের টানাপোড়েনের পরিবারে মা হয়ে ওঠেন সন্তানের জন্য ওয়ান ম্যান আর্মি।

মা, তোমার মনে আছে নিশ্চয়ই, ক্যানসার শনাক্তের পর বাবার চিকিৎসাযুদ্ধের দিনগুলোর কথা। প্রথম প্রথম বাবা একাই সব জায়গায় যেতেন চিকিৎসার জন্য। একদম শুরুতে তো কাউকে বলেননি উনার ক্যানসার হওয়ার বিষয়টি। একপর্যায়ে বাবা দুর্বল হতে লাগলেন। তাকে সাহায্য করার জন্য তুমি এগিয়ে এলে। আমার তখন কতই-বা বয়স?

আমি অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, আমার যে মা কখনো একা একা শহরে যায়নি, সে মা বাবার চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলের এ ওয়ার্ড থেকে ও ওয়ার্ডে যাচ্ছে। ল্যাবটেস্ট করাতে বিভিন্ন ল্যাবে যাচ্ছে। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসা বুঝে নিচ্ছে। যখন বাবাকে মেডিকেলে ভর্তি করানো হলো, সঙ্গে তুমি থাকলে মা। এর আগে কখনো কি তুমি মেডিকেলে ছিলে মা? আমি জানি না। কখনো জিজ্ঞেস করিনি। কত কিছুই তো জানি না মা আমি। বাবা যখন প্রথম আমাকে এসে বলল, ‘আমার তো অপারেশন লাগবে বাবা।’ আমার খুব কান্না পেল মা। আরেকদিন বাবা বলল, ‘আমি মনে হয় বাঁচব না মনা। চিকিৎসা বন্ধ করে দিই!’ আমার সেদিনও কান্না পেল। কাঁদলাম, কেউ দেখল না।
বাবার চিকিৎসার বড় একটি সময় তুমি বাবার সঙ্গে ছিলে মা। আমার মতো তুমিও কী লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদেছো মা? আমি জানি না। কখনো জানতেও চাইনি। বাবা গত হওয়ার পর কখনোই বাবার বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস হয়নি আমার। স্মৃতি খুঁড়ে বেদনা জাগাতে আমারও ভালো লাগে না। ক্যানসার যে পরিবারে দাগা দিয়েছে, সে পরিবারে সহসা সুখের আবাদ হয় না।

আজম রোড, নাজিরহাট
ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

প্রকৃতির সৃষ্টি শিলাবৃষ্টি

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০১:১০ পিএম
প্রকৃতির সৃষ্টি শিলাবৃষ্টি
অনেক সময় শিলাবৃষ্টির কারণে প্রাণহানি ঘটে থাকে। তাই শিলাবৃষ্টির সময় আমাদের সতর্ক থাকা উচিত ।ছবি: সংগৃহীত

শিলাবৃষ্টি আমাদের দেশের জন্য নতুন কিছু নয়। সাধারণত গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরমের কারণে শিলাবৃষ্টি হয়। ওয়েদার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গ্রীষ্মকাল না বলে প্রাক-মৌসুমি সময় বলা যায়। সেটি এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এটি সাধারণত মার্চ মাসের শেষদিকে শুরু হয়। কখনো কখনো ফেব্রুয়ারিতেও দেখা যায়। তাই চৈত্র মাসেও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

এই ভারী শিলাবৃষ্টির কারণে চৈত্র মাসে উঠতি ফসলসহ অন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। শিলার আকার বড় হওয়ায় বসতঘরের টিনের চাল ফুটো হতে দেখা যায়। অনেক দেশে এখন শিলাবৃষ্টির ধরন পাল্টে গেছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ু বদলে যাচ্ছে, এটিই হয়তো ধরন পাল্টানোর প্রধান কারণ।
বাংলাদেশে মার্চ-এপ্রিলে শিলাবৃষ্টির প্রবণতা বেশি। এর সঙ্গে আবহাওয়ার পাশাপাশি ভৌগোলিক কারণও জড়িত। কোনো স্থানের আবহাওয়া হঠাৎ খুব উত্তপ্ত হলে সেখানকার বাতাস হাল্কা হয়ে দ্রুত ওপরের দিকে উঠে যায়। একে বলা হয় বাতাসের ঊর্ধ্বমুখী চাপ। ঊর্ধ্বাকাশের ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে এসে সেই বাতাস ঠাণ্ডা হয়ে ঝোড়ো মেঘে পরিণত হয় এবং শুরু হয় ঝড়।

একপর্যায়ে ঊর্ধ্বাকাশে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে প্রথমে হাল্কা তুষার ও পরে ঘন পানির বিন্দুতে পরিণত হয়, যা বৃষ্টির ধারায় নেমে আসে। বৃষ্টির ফোঁটাগুলো পড়ার সময় কখনো কখনো মাঝপথে বাতাসের ঊর্ধ্বমুখী চাপের মধ্যে পড়ে। ফলে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো নিচে নামতে নামতে তার কিছু অংশ আবার ওপরে উঠতে শুরু করে এবং আরও ঠাণ্ডা হতে থাকে।

ঘনীভূত পানির ফোঁটাগুলো আরও ভারী হয়ে আবার নিচে নামতে থাকে এবং আবার গরম বাতাসের ঊর্ধ্বমুখী চাপে পড়ে তার কিছু অংশ আবার ওপরে উঠতে থাকে। এ রকম কয়েকবার ওঠানামা করতে করতে পানির ফোঁটাগুলোর কিছু অংশ ছোট ছোট বরফখণ্ডে পরিণত হয়। এগুলো বেশি ভারী বলে আর ওপরে উঠতে পারে না। বৃষ্টির ধারার সঙ্গে নিচে নেমে আসে। এটাই শিলাবৃষ্টি।

এবার জেনে নিই শিলার আকার কেমন হতে পারে? জানা যায়, সাধারণত ১৪ হাজার ফুটের নিচে যদি হিমাংক রেখা (যেখান থেকে বাতাসের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নেমে যায়) থাকে এবং সেখানে বজ্রমেঘ তৈরি হয়, তা হলে শিলা হয় আকারে তুলনামূলক বড়। এগুলো কম দূরত্ব পেরিয়ে নেমে আসে। কিন্তু হিমাংক রেখা যদি আরও ওপরে চলে যায়, সে ক্ষেত্রে শিলাবৃষ্টির স্থায়িত্ব কমে আসে। ওই দূরত্ব অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠে আসতে আসতে শিলাখণ্ড গলতে থাকে।

ইউএস ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুসারে, ঘণ্টায় ১০৩ কিলোমিটার বেগের ঊর্ধ্বমুখী বাতাস একটি গলফ বলের সমান শিলার টুকরা ধরে রাখতে পারে। আবার ২৭ শতাংশ ক্ষেত্রে শিলার টুকরা বেসবল আকার পর্যন্তও পৌঁছাতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়ের মেঘে তৈরি হওয়া একেকটি শিলা আকারে ২৫ মিলিমিটার বা ১ ইঞ্চিরও বেশি হতে পারে।

সম্প্রতি শিলাবৃষ্টি নিয়ে কাউকে কাউকে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায়। তারা শিলা হাতে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লাস করেন। কিন্তু অনেক সময় এই শিলাবৃষ্টি কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রাণহানিও ঘটে থাকে। তাই শিলাবৃষ্টির সময় আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।

কলি 

বিশ্বের যেসব স্থানে তাপমাত্রা ৫৬ ডিগ্রি!

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
বিশ্বের যেসব স্থানে তাপমাত্রা ৫৬ ডিগ্রি!
ছবি: সংগৃহীত

তীব্র গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। এ মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে তাপমাত্রা যতই হোক না কেন অনুভূত হচ্ছে তারচেয়েও বেশি। নানাভাবে মানুষ গরম থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছে।তবে জানেন কি, বিশ্বের এমন কিছু স্থান রয়েছে যেখানে তাপমাত্রা ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১২৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত পৌঁছে যায়? আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এসবই গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য হচ্ছে।

কিন্তু বিশ্বের উষ্ণতম স্থানগুলোর কথা ভাবলে এই গরম কিছুই নয়। আসুন এমনই কয়েকটি জায়গার কথা জেনে নেওয়া যাক-

কেবিলি, তিউনিশিয়া
সাহারা মরুভূমিতে অবস্থিত কেবিলি জ্বলন্ত তাপমাত্রা এবং খেজুর গাছের জন্য বিখ্যাত। এখানকার গড় তাপমাত্রা ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১৩১ ডিগ্রি ফারেনহাইটকেও ছাড়িয়ে যায়।

কেবিলি 

লুট মরুভূমি ও আহভাজ, ইরান
বিশাল লুট মরুভূমির সর্বকালের উষ্ণ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। এর ডাকনাম ‘দশত-ই-লুট’। এ ছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানের প্রধান শহর আহভাজ। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং চিরন্তন চেতনার ধারা বহমান। এখানকার সাধারণ তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়।

ফার্নেস ক্রিক, ডেথ ভ্যালি যুক্তরাষ্ট্র
নামই ফার্নেস। এখানে এলে যে ভাজাপোড়া হতে হবে বোঝাই যাচ্ছে। যাই হোক, অনেকে এই অঞ্চলকে ডেথ ভ্যালি বা মৃত্যু উপত্যকাও বলেন। এখানকার গড় তাপমাত্রা ৫৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১৩৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। হাড় কাঁপানো শুষ্ক বাতাস ফার্নেস ক্রিকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

ফার্নেস ক্রিক

মিত্রিবাহ, কুয়েত
এই প্রত্যন্ত অঞ্চলেই এশিয়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, এখানকার গড় তাপমাত্রা ৫৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১২৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট।

মেক্সিকালি, মেক্সিকো
সোনোরান মরুভূমিতে অবস্থিত মেক্সিকালির বাসিন্দারা ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২৫.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রা সহ্য করেন। মেক্সিকান সংস্কৃতি এবং মরুভূমির জন্য পর্যটকদের প্রিয় এই শহর।

ডাল্লোল, ইথিওপিয়া
শুধু গরম নয়, ডাল্লোল এক অন্য জগৎ। লবণাক্ত ভূমি এবং সালফিউরিক হট স্প্রিংস এখানকার বৈশিষ্ট্য। ডাল্লোল জনবসতিপূর্ণ স্থান।

ডাল্লোল

তিরাত জভি, ইসরায়েল
জর্ডান উপত্যকায় অবস্থিত এই অঞ্চলের তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে যায়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, তিরাত জভি কৃষিপ্রধান অঞ্চল। চরম তাপমাত্রাতেও দিব্যি ফসল ফলান এখানকার কৃষকরা।

তুর্বাত, পাকিস্তান
বেলুচিস্তানের একটি জায়গার নাম তুর্বাত। গ্রীষ্মকালে ৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২৮.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রা থাকে। তবে তীব্র গরমেও দিব্যি কাটান এখানকার বাসিন্দারা।

তুর্বাত

আল জাজিরা বর্ডার গেট, সংযুক্ত আরব আমিরাত
এটা একটি ছোট ফাঁড়ি। এ সীমান্ত দিয়ে পারাপার হয় মানুষ। ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী এখানকার গড় তাপমাত্রা ৫২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১২৫.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট।

সমুদ্রতলে নদী!

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ১২:৫৬ পিএম
সমুদ্রতলে নদী!

পৃথিবীর অন্যতম সুন্দরতম নিদর্শন সাগর। ভূপৃষ্ঠে স্থলভাগকে বেষ্টন করে আছে বিশাল সাগর, মহাসাগর। বলা হয় পৃথিবীর তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ স্থল। পৃথিবীর অসংখ্য দেশ-মহাদেশ, দ্বীপকে ঘিরে আছে সাগর। আবার দেশে দেশে ছড়িয়ে আছে হাজারও নদী, হ্রদ। স্থলভাগে অজানা অনেক কিছুই আবিষ্কার করতে পারলেও বিশাল সমুদ্রের নিচের জগৎ নিয়ে মানুষের জানার পরিধি এখনো স্বল্প। সমুদ্রতলের অনেক কিছুই আবিষ্কৃত হচ্ছে, যা মানুষকে বিস্মিত করছে প্রতিনিয়ত। এমনই এক আবিষ্কার সমুদ্রতলে নদী।

সমুদ্র নিজেই বিশাল জলরাশিবেষ্টিত এলাকা। আবার তার নিচেই নদী! অদ্ভুত ব্যাপার না? অদ্ভু্ত ব্যাপার হলেও এমনই বিস্ময়কর জলপ্রবাহ আছে সমুদ্রের নিচে। মেক্সিকোর সমুদ্রের নিচে আছে এমনই এক নদী। ইউকাটান উপদ্বীপের টুলুম থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত এই প্রাকৃতিক বিস্ময়। সমুদ্রের নিচে স্কুবা ডাইভিং করে গেলে মনে হবে পানির নিচে হয়তো মিঠা পানির আরেকটি ধারা তৈরি হয়েছে।

অথবা খাদ সৃষ্টি হয়ে বয়ে চলেছে নদী। তবে আদতেই এই নদী মিঠা পানির। সমুদ্রের লবণাক্ত পানির নিচে বিস্ময়করভাবে অবস্থান করছে মিঠা পানির নদী। বিজ্ঞানীদের মতে, এসব নদী হাইড্রোজেন সালফেটের একটি স্তর দ্বারা ওপরের লবণাক্ত পানি থেকে পৃথক হয়। ফলে নিচে এক ধরনের মিঠা পানির নদী তৈরি হয়। এসব নদীর ওপরে হাইড্রোজেন সালফেটের ঘন আস্তরণ দেখা যায়। একে বলা হয় হ্যালোক্লাইন। যা দেখতে অনেকটা মেঘের মতো। এই মেঘের আস্তরণ পার হলেই দেখা পাওয়া যায় নদীর।
পৃথিবীতে সাগরের তলদেশে এমন অনেক নদী আছে। যার মধ্যে মেক্সিকোর সিনোট এঞ্জেলিটা অন্যতম। ধারণা করা হয়, আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বছর আগে

চুনাপাথরের ধসে ভূগর্ভস্থ পানি উন্মুক্ত হওয়ার ফলে তৈরি হয় এই নদী। এখানে লবণের কুয়াশা বা মেঘ ভেদ করে দেখা যায় বয়ে চলেছে নদী। যার দুই পাশে গাছ আর ঝরা পাতা দেখা যায়। ডুবুরিরা এখানে স্কুবা ডাইভিং করে আসে। কেউ কেউ মাছ ধরে নদীতে।

ইউনিভার্সিটি অব লিডসের ড. ড্যান পারসনের দল কৃষ্ণ সাগরের তলদেশে আরেকটি নদী আবিষ্কার করেছিল। এই নদীটিকে পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম নদী হিসেবে গণনা করা যেতে পারে। কেননা, এই নদীতে যথেষ্ট প্রবাহ আছে এবং আকারে বিশাল। আবার বিভিন্ন জায়গায় বেশ গভীর। নদীটি ঘণ্টায় চার মাইল বেগে প্রবাহিত হতে পারে এবং এই নির্দিষ্ট চ্যানেলের মধ্য দিয়ে প্রায় বাইশ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হতে পারে।

সূত্র: মেরিনইনসাইট ডট কম, রোআরিং ডট আর্থ, দিজইজকলোস্যাল ডট কম।

কলি 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের অজানা কিছু তথ্য

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অজানা কিছু তথ্য
বুর্জ খলিফা (সংগৃহীত)

অফুরান তেলের খনি, প্রাচুর্য ও আভিজাত্যে অতুলনীয় এক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। মুসলিম বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথম শীর্ষ দেশ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তালিকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩১তম দেশ। আরব আমিরাতে রয়েছে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন ও গগনচুম্বী ভবন।

সংযুক্ত আরব আমিরাত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত সাতটি স্বাধীন আমিরাতের একটি ফেডারেশন। সাতটি আমিরাতের নাম হলো আবুধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রা-আস আল খাইমাহ, আশ শারজাহ্ এবং উম্ম আল ক্বাইওয়াইন। আবুধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী ও দুবাই দেশের বৃহত্তম শহর।

যুক্তরাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিষ্ঠিত হয়। সাতটি আমিরাতের মধ্যে ছয়টি ওই দিন সংযুক্ত হয়। সপ্তমটি, রা-আস আল খাইমাহ, ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে যোগদান করে।

প্রতিটি আমিরাত একটি উপকূলীয় জনবসতিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত এবং ওই লোকালয়ের নামেই এর নাম। আমিরাতের শাসনকর্তার পদবি আমির।পশ্চিম এশিয়ার ওমান উপসাগর ও পারস্য উপসাগর ঘেরা এই দেশ বিশ্বের কাছে যেন ঠিক এক স্বপ্নপুরী। চলুন জেনে নিই সেই স্বপ্নপুরী সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য-

১. সাতটি আমিরাতকে সংযুক্ত করে বিশ্বের মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে আরব দুনিয়ার এই দেশ। দেশের রাজধানী আবুধাবি হলো বৃহত্তম আমিরাত। গোটা দেশের আয়তনের ৮৭ শতাংশ রাজধানীর দখলে। ক্ষুদ্রতম হলো আজমান, মাত্র ২৫৯ কিমি. যার আয়তন।

২. যদিও আবুধাবি বৃহত্তম, তবুও জনসংখ্যায় এগিয়ে দুবাই আমিরাত। আর ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে দুবাই-ই হলো অন্যতম একটি জনপ্রিয় স্থান।

৩. দেশে ভিনদেশিদেরই আধিক্য বেশি। আরব দুনিয়ার বাসিন্দা এখানে সংখ্যায় নগণ্য। আমিরাতে ভিনদেশিদেরই আধিক্য বেশি। মোট জনসংখ্যার ২৭.১৫ শতাংশ ভারতীয়, ১২.৫৩ শতাংশ পাকিস্তানি, ১১.৩২ শতাংশ আমিরাতি, ৭.৩১ বাংলাদেশি, ৩.১৩ শ্রীলঙ্কান ও অন্যান্য জাতির লোক ৩৮.৫৬ শতাংশ।

৪. আমিরাতের পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালানো বেশ কঠিন কাজ। কারণ, দুবাই পুলিশের কাছে আছে ল্যামবর্ঘিনি, বেন্টলি এবং ফেরারির মতো ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস গাড়ি।

৫. এই দেশে আছে গোল্ড এটিএম। হ্যাঁ, ঠিক পড়েছেন- সোনা। সেই এটিএম-এ টাকা ঢোকালেই মিলবে দামি গয়না ও সোনার ঘড়ির মতো জিনিস।

৬. দেশটিতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং বুর্জ খলিফা। এর ৮০ তলার ওপরে যারা বাস করেন তাদের রমজানের সময় অতিরিক্ত ২-৩ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় ইফতারের জন্য। কারণ, উঁচুতে সূর্যকে বেশ কিছুক্ষণ দেখতে পান তারা।

৭. আবুধাবির মাসদার শহর পুরোপুরি সৌরশক্তি ও অন্যান্য বিকল্প শক্তিতে নির্ভরশীল। প্রাইভেট গাড়ি এ শহরে নিষিদ্ধ। পরিবহন ব্যবস্থা এখানে ইলেকট্রিক গাড়ি, পরিশুদ্ধশক্তির গাড়ি এবং ব্যক্তিগত পড কারের ওপরই টিকে রয়েছে। এখানে দূষণের কোনো নামগন্ধ নেই।

৮. বুর্জ খলিফার নাম প্রথমে রাখা হয়েছিল বুর্জ দুবাই। কিন্তু এই বিল্ডিং নির্মাণে আবুধাবি সাহায্য করেছিল বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক প্রেসিডেন্ট খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের নামে এর নামকরণ হয়।

৯. আবুধাবিতেই রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ইনডোর বিনোদন পার্ক ফেরারি ওয়ার্ল্ড।

১০. বিশ্বের কর্মরত ক্রেনের ২৫ শতাংশই দেখা যাবে দুবাইয়ে। এই দেশ অনবরত নির্মীয়মাণ। উন্নতির যেন কোনো বিরাম নেই!

কলি