ঢাকা ২১ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪

পর্দা আল্লাহর অমোঘ বিধান

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৭ এএম
পর্দা আল্লাহর অমোঘ বিধান
বোরকা পরা মুসলিম নারীদের ছবি। ইন্টারনেট

ইসলাম পর্দার বিধান দিয়েছে নারীকে সম্মানের স্থানে অধিষ্ঠিত করা, তাদের সতীত্বের হেফাজত এবং ব্যভিচারমুক্ত সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করতে। এই বিধান মানা মুসলমানদের জন্য ফরজ। এটি পরিত্যাগের কোনো সুযোগ নেই।  আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে নবি, আপনি মুমিন (পুরুষদের) বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নিচু করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, এটা তাদের জন্য অধিকতর পবিত্র। তারা যা কিছু করে আল্লাহ সে বিষয়ে অবগত। এবং ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান; তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দিয়ে আবৃত করে।’ (সুরা নুর, আয়াত: ৩০-৩১)। এই আয়াত দিয়ে প্রমাণিত হয়, পর্দার বিধান সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে এবং পবিত্র কোরআনে একাধিক জায়গায় এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্ত্রীরা আল্লাহর এই বিধান পালনের মাধ্যমে সমাজে এক অনন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কোরআনে নবির স্ত্রীদের বা উম্মুল মুমিনদের পর্দা নিয়ে কয়েকটি আয়াত রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবি, আপনি আপনার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৯) । দুঃখজনক যে, ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়েও অনেকে এই বিধান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে; যা কাম্য নয়। 

আরও পড়ুন : স্বপ্নে জাহান্নাম দেখলে কী হয়?

বহুকাল ধরে প্রচলিত আছে, পর্দা হচ্ছে নারীর রক্ষাকবচ। কেননা একজন নারী পর্দার মাধ্যমে যেভাবে নিজেকে আবৃত করে; এর মাধ্যমে সমাজে সে শঙ্কামুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারে। কেননা বখাটে ছেলেরা বোরকাবিহীন নারীকে উত্ত্যক্ত করলেও একজন পর্দানশীন নারীর দিকে স্বভাবত খারাপ দৃষ্টিতে তাকায় না। তবে লক্ষণীয় যে, পর্দার নামে শরীর দেখা যায় বা শরীরের অঙ্গপ্রতঙ্গ বাহ্যিকভাবে বোঝা যায় এবং পর-পুরুষকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে, এমন পোশাক পরা হারাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জাহান্নামবাসী দুই প্রকার মানুষ, আমি যাদের (এ পর্যন্ত) দেখিনি। একদল মানুষ, যাদের সঙ্গে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, তা দ্বারা তারা লোকজনকে মারবে এবং একদল স্ত্রী লোক, যারা কাপড় পরিহিত উলঙ্গ, যারা অন্যদের আকর্ষণকারী ও আকৃষ্ট, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের মতো। ওরা জান্নাতে যেতে পারবে না, এমনকি এর সুগন্ধিও পাবে না। অথচ এত এত দূর থেকে এর সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।’ (মুসলিম, হাদিস: ৫৪৭৫) 

বর্তমানে এই মুসলিমপ্রধান দেশে অনেককে পর্দা ও বোরকার বিরোধিতা করতে দেখা যায়। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, সমকালীন সময়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন তথা বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার নামে পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ ও অনুসরণ করা হচ্ছে। যা একটি মুসলিমপ্রধান দেশে কখনোই কাম্য নয়; বরং এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা হওয়া উচিত অশ্লীলতামুক্ত ও ইসলাম অনুমোদিত পন্থায়। যেখানে একজন ব্যক্তি শৈশব থেকেই কোরআন-সুন্নাহর জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে খোদাভীরু হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। 
পর্দাহীনতা মানুষকে ব্যভিচারের দিকে নিয়ে যায়। ব্যভিচার হারাম। ব্যভিচারকারীদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের ভয়ংকর আজাব। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩২)

আরও পড়ুন : কখন তায়াম্মুম করতে হয়?

আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার নামে কেউ যদি ইসলামি জ্ঞানার্জনে অবহেলা করে, পাশ্চাত্যের অনুসরণ করে এবং আল্লাহর বিধান পালনে বাধা দেয়, তার জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।’ (সুরা নুর, আয়াত: ১৯) 
পর্দা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এটি মানা ফরজ। এ সম্পর্কে সবাইকে যেমন সচেষ্ট হতে হবে, তেমন এই বিধান পালনে একজন মুসলিম হিসেবে অন্যদের উৎসাহিত করতে হবে। 

লেখক: খণ্ডকালীন শিক্ষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম

 

সন্তান প্রসবের সময় নারী মারা গেলে সওয়াব পাবে?

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ এএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ এএম
সন্তান প্রসবের সময় নারী মারা গেলে সওয়াব পাবে?
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: অনেক সময় সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু হয়। এমন মায়ের জন্য বিশেষ সওয়াব আছে কি?

আশরাফ হাসান, বগুড়া

উত্তর: পবিত্র কোরআনে মায়ের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করে মাকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভধারণ করেছেন এবং দুই বছর দুগ্ধপান করিয়েছেন।’ (সুরা লোকমান, আয়াত: ১৪)। একজন গর্ভবতীর জন্য মহান আল্লাহ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। গর্ভকালে সে আল্লাহর পথে সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পায়। তার যখন প্রসবব্যথা শুরু হয়, তখন তার জন্য নয়ন শীতলকারী কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসী জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার পরিবর্তে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এই সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (অসুখ ইত্যাদির কারণে বিরক্ত করে মাকে ঘুমাতে না দেয়), তা হলে সে আল্লাহর পথে নিখুঁত ৭০টি দাস আজাদ করার সওয়াব পাবে। (তাবরানি, হাদিস: ৬৯০৮)

সন্তান প্রসবের সময় নারী মারা গেলে শহিদের মর্যাদা পায়। তার আমলনামায় অনেক সওয়াব লেখা হয়। সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে শহিদ। পানিতে ডুবে মরলে শহিদ। পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকরী শহিদ এবং যে স্ত্রীলোক সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা যায়, সেও শহিদ।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৫৩০৭)

আরও পড়ুন: হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?

হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, ইবনুত তিন (রহ.) বলেছেন, ‘এমন মৃত্যু অনেক কষ্টের। আল্লাহতায়ালা উম্মতে মুহাম্মাদির ওপর অনুগ্রহ করে এমন মৃত্যু তাদের জন্য গুনাহ মাফ ও সওয়াব বৃদ্ধির মাধ্যম বানিয়েছেন। এর মাধ্যমেই আল্লাহতায়ালা তাদের শহিদের মর্যাদায় উন্নীত করবেন।’ (ফাতহুল বারি, ৬/৫২)

শুধু সওয়াব ও মর্যাদার দিক থেকে তারা শহিদের মতো। তবে তাদের গোসল ও কাফন সাধারণ মৃতদের মতোই হবে। (ফাতহুল কাদির, ২/১০৩; আদ-দুররুল মুখতার, ২/২৫২)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে কোরআন তেলাওয়াত করতে হয়

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ পিএম
স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে কোরআন তেলাওয়াত করতে হয়
পবিত্র কোরআনের ছবি। ইন্টারনেট

নামাজে তারতিলের (স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে) সঙ্গে পরিষ্কারভাবে কিরাত পাঠ করা বা কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে। কারণ আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘আর কোরআন তেলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত: ৪)

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআনকে তোমাদের সুর দিয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত করো।’ (ইবনে মাজহ, হাদিস : ১৩৪২)

নামাজে লাহনে জলি বা মারাত্মক ভুল পড়ার দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায় এবং লাহনে খফি বা অসুন্দর পড়ার দ্বারা নামাজ মাকরুহ হয়ে যায়। মারাত্মক ভুল যেমন—ভিন্ন মাখরাজের ভুল উচ্চারণ। যদিও শুনতে কাছাকাছি মনে হয়। হরকত বা জের, জবর ও পেশের পরিবর্তন। যার দ্বারা অর্থের সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়, এমনকি কুফরিও হয়ে যায়। মদের হরফকে টেনে না পড়া। 

আরও পড়ুন: জোহর-আসর নামাজে অনুচ্চস্বরে কিরাত পড়তে হয় কেন?

অসুন্দর পড়া যেমন—গুন্নাহ, ঈদগাম, ইজহার, ইখফা ও কলকলা ইত্যাদি যথাযথ নিয়মে আদায় না করা। এর দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে, কিন্তু তেলাওয়াত অসুন্দর হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কোরআনকে সুন্দর স্বরে পড়ে না, সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৫২৭)

নামাজে কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে মধ্যপন্থায়। আল্লাহ বলেন, ‘বলে দাও, তোমরা আল্লাহ বা রহমান যে নামেই ডাকো না কেন, সব সুন্দর নাম তো তাঁরই। নামাজে তোমাদের স্বর খুব উচ্চ বা অতিশয় ক্ষীণ করো না, বরং এ দুইয়ের মধ্যপন্থা অবলম্বন করো।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১১০) 

নামাজে যে পরিমাণ কেরাত যথেষ্ট, তার সর্বনিম্ন পরিমাণ ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে এক আয়াত। আর ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ (রহ.)-এর মতে, ছোট তিন আয়াত অথবা দীর্ঘ এক আয়াত।

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ এএম
হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?
নামাজ আদায় করছেন এক নারী। ছবি: ইন্টারনেট

প্রশ্ন: গরমকালে মাঝেমধ্যে থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরি আমি। এর হাতা কব্জি ও কনুইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত লম্বা হয়। এর সাথে ছোট ওড়না পরে নামাজ পড়লে রুকুর সময় ও রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানো অবস্থায় হাতের খালি অংশ খোলা দেখা যায়। হাতের এতটুকু অংশ খোলা থাকলে নামাজে কোনো সমস্যা হবে?

খাদিজা আখতার, নারায়ণগঞ্জ

উত্তর: থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়া অবস্থায় হাতের খালি অংশ যদি এক রোকন পরিমাণ (তিন তাসবিহ পড়ার পরিমাণ) বা তার চেয়ে বেশি সময় অনাবৃত থাকে, তা হলে নামাজ বিশুদ্ধ হবে না। কেননা নামাজে নারীদের হাত কব্জি পর্যন্ত ঢেকে রাখা আবশ্যক। হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত এ অংশ থেকে এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি যদি এক তাসবিহ পরিমাণ খোলা থাকে এবং এ অবস্থায় এক রোকন পরিমাণ সময় অতিবাহিত হয়, তা হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ ধরনের জামা পরে ছোট ওড়না দিয়ে নামাজ আদায় করা নিরাপদ নয়। সামান্য অসতর্কতার কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ছোট হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়তে চাইলে করণীয় হলো, বড় ওড়না বা হিজাব পরে নেওয়া। যেন হাতের খোলা এ অংশ নামাজের সময় অনাবৃত না হয় এবং নামাজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও না থাকে। (আলমাবসুত, সারাখসি, ১/২৯৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৯; রদ্দুল মুহতার, ১/৪০৯)

আরও পড়ুন: ডায়মন্ডের গয়নার জাকাত দিতে হবে?

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো সতর ঢেকে রাখা। নামাজে পুরুষের নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ। নারীদের মুখমণ্ডল, দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া সব অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। তবে বিনা ওজরে পুরুষের মাথা, পেট-পিঠ, হাতের কনুই খোলা রেখে নামাজ পড়লে তা আদায় হয়ে গেলেও মাকরুহ হবে। (ফতোওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১০৬)

ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে যায়, তা হলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম হলে চাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়- নামাজ নষ্ট হবে না। (রদ্দুল মুহতার, ১/৩৭৯, তাবইনুল হাকায়েক, ১/৯৭) 


লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

জোহর-আসর নামাজে অনুচ্চস্বরে কিরাত পড়তে হয় কেন?

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
জোহর-আসর নামাজে অনুচ্চস্বরে কিরাত পড়তে হয় কেন?
সৌদি আরবের মদিনার মসজিদে নববিতে জামাতে নামাজ আদায়ের ছবি। হারামাইন

জোহর ও আসরের নামাজে অনুচ্চস্বরে কিরাত পাঠ করতে হয়। মাগরিব, এশা এবং ফজরের নামাজে কিরাত জোরে বা উচ্চৈঃস্বরে পড়তে হয়। এটা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমল দ্বারা প্রমাণিত। আবু মামার (রহ.) খাব্বাব (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) জোহর ও আসরের নামাজে কিরাত পাঠ করতেন? তিনি (খাব্বাব) বলেন, হ্যাঁ। মামার (রহ.) পুনরায় জানতে চাইলেন, সেটা কীভাবে বোঝা যেত? খাব্বাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দাড়ি মোবারকের নড়া দেখে বোঝা যেত।’ (বুখারি, ১/১০৫)

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক নামাজে তেলাওয়াত করতেন। তিনি যে নামাজগুলোতে আমাদের শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন; সেসব নামাজে আমরাও তোমাদের শুনিয়ে তেলাওয়াত করি। আর তিনি যেসব নামাজে আমাদের না শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন, সেসব নামাজে আমরাও তোমাদের না শুনিয়ে তেলাওয়াত করি।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৩৮)

আরও পড়ুন: সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা পড়ার বিধান

ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘সুন্নত হচ্ছে ফজর, মাগরিব ও এশার দুই রাকাতে এবং জুমার নামাজে উচ্চৈঃস্বরে তেলাওয়াত করা। আর জোহর ও আসরের নামাজে এবং মাগরিবের তৃতীয় রাকাতে এবং এশার তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে চুপে চুপে তেলাওয়াত করা। সুস্পষ্ট সহিহ হাদিসের সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর ঐকমত্যের ভিত্তিতে এসব বিধান সাব্যস্ত।’ (আল-মাজমু, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৩৮৯)

জোহর ও আসরের নামাজে নিচু আওয়াজে আর মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজে উঁচু আওয়াজে কিরাত পড়ার বিধান খুবই যুক্তিসঙ্গত।  এতে হেকমতও রয়েছে। মাগরিব, এশা ও ফজরের সময় লোকেরা কাজকর্ম, কথাবার্তা ও আওয়াজ থেকে নীরব থাকে। পরিবেশ থাকে নীরব। রাতের বেলা কথা কান অতিক্রম করে অন্তরে গিয়ে প্রবেশ করে এবং পূর্ণ প্রভাব সৃষ্টি করে। জোহর ও আসরের নামাজে নিচু আওয়াজে কোরআন পড়ার হিকমত হলো, দিনের বেলা হাট-বাজারে ও বাড়ি-ঘরে শোরগোল থাকে, বিভিন্ন আওয়াজ ও চিন্তা-ফিকিরের কারণে অন্তর বেশি ব্যস্ত থাকে এবং কথার প্রতি মনোযোগ থাকে না। 

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সম্মাননা পেলেন মাওলানা মুনীরুল ইসলাম

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ পিএম
আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পিএম
শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সম্মাননা পেলেন মাওলানা মুনীরুল ইসলাম
অতিথিদের কাছ থেকে সম্মাননা নিচ্ছেন মাওলানা মুনীরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সম্মাননা-২০২৩ পেয়েছেন লেখক, সম্পাদক ও সংগঠক কবি মাওলানা মুনীরুল ইসলাম। সফল সংগঠক হিসেবে তিনি এই সম্মাননা পেয়েছেন। 

সম্প্রতি রাজধানীর পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে ‘উদীয়মান বাংলাদেশ’-এর এক অনুষ্ঠানে তার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। 

এ সময় দেশের বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, ভিসি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

আলেম লেখক ও কবি মুনীরুল ইসলাম একজন সুনামধন্য লেখক। এ পর্যন্ত সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয়ে তার ৮০টির মতো বই প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি আলেম লেখকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি পর্যায়ক্রমে সংগঠনটির সহ-সাধারণ সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। 

এ ছাড়া তিনি সম্পাদনা কেন্দ্রের পরিচালক এবং সাহিত্য সাময়িকী লেখকপত্রের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৩ সালে ঢাকায় আসার আগে সরকার অনুমোদিত সেবামূলক সংগঠন আল-এহসান পরিষদ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। 

এর আগে তিনি লেখালেখি ও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদান রাখার জন্য অনেক সম্মাননা পদক ও পুরস্কার লাভ করেছেন।

রায়হান/মিরাজ রহমান