বাসচাপায় দুই সহপাঠী নিহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। পাশাপাশি হল ছাড়ার নির্দেশ আসায় ক্ষুব্ধ হয়ে দুটি বাসে আগুন দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় তারা।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রের অকালমৃত্যুতে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের এবং আগামীকাল শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা দেড়টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক মো. রেজাউল করিম প্রমুখ।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত আসার পর বিশেষ করে ক্যাম্পাস ও হল ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আসায় আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ক্ষিপ্ত হয়ে তারা ক্যাম্পাসের মূল সড়কের বাইরে ও ক্যাম্পাসের ভেতরে গোলচত্বরে দুটি বাসে আগুন দেয়। বর্তমানে ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
চুয়েটে একাডেমিক ভবনে তালা, চতুর্থদিনে সড়ক অবরোধ
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তারা কেউ হল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাবেন না। বরং আন্দোলন চলছে, চলবে।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে আজ চতুর্থদিনের মতো সড়ক অবরোধ চলছে। ফলে সোমবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে ১০ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি আমাদের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের একটি দাবিও মেনে নেওয়ার আশ্বাস পাইনি। ফলে আমাদের আন্দোলন চলছে।’
সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চুয়েটের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও এক শিক্ষার্থী।
আবদুস সাত্তার/সালমান/