
ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ মাছের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে সবজির দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া গরু-খাসির মাংস, মুরগি ও ডিমের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) সকালে শহরতলীর ঐতিহ্যবাহী শম্ভুগঞ্জ বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ ভালো মানের বেগুন ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে এখন এই বেগুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া শসা, গাজর, বরবটি ও কচুর লতি ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০, টমেটো ও কাঁচামরিচ ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪০, ঢেঁড়স ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি পিস ফুলকপির দাম ১০ টাকা কমে ৫০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। লেবু গত সপ্তাহে ৪ টাকা হালিতে বিক্রি হলেও এখন ৫-৬ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ৫০, করলা ৪০, পটোল ৪০, জিঙা ৫০, ধুন্দল ৫০, সজনা ৯০ ও মিস্টি লাউ ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৬০ ও চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের দামে উত্তপ্ত বাজার। মৃগেল, রুই, কাতল, সিলভার কার্প, বাউশ, শিং, পাবদা, শোল, ট্যাংরা, গুলশা ও টাকির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে আকার ভেদে মৃগেল ১৭০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৮০-২৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া রুই ও কাতল ২৪০-৩১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ২৫০-৩২০, সিলভার কার্প ১৬০-২৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৭০-২৪০, বাউশ ১৯০-২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২০০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে শিং, পাবদা, শোল, ট্যাংরা, গুলশা ও টাকি মাছের দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এখন আকার ভেদে শিং ২৫০-৫৭০, পাবদা ৩০০-৩৬০, শোল ৫১০-৮০০, গুলশা ৩৪০-৯৫০, টাকি ৩১০-৪৯০ ও ট্যাংরা ৪৮০-৭৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পাঙাশ ১৬০-১৯০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২৪০ ও কৈ ২২০-৩৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে স্থিতিশীল অবস্থায় গরুর মাংস ৭৫০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০, সাদা কক ২৫০, লাল কক ২৫০ টাকা কেজি, মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালিতে ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আহমেদ হোসেন নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়।
তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘ধীরে ধীরে সবজির দামে বাজার উত্তপ্ত হচ্ছে। এখন যৎসামান্য দাম কমানো হয়েছে। দাম আরও কমানো প্রয়োজন।’
মাছ কেনার সময় কথা হয় জাহিদুর রহমান নামের আরেকজন ক্রেতার সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘বাজারে মাছের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবুও বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে কেজিতে ১০ টাকা দাম বাড়িয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করলে মাছের বাজার আরও উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।’
সবজি বিক্রেতা আব্দুল কাদির বলেন, ‘গত দুইদিন থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। কিন্তু বাজারে সবজির অতিরিক্ত সরবরাহ রয়েছে। ফলে দাম কমিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।’
মাছ বিক্রেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে মাছের অনেক খামার থেকে মাছ তুলেননি খামারিরা। মাছের চাহিদার তুলনায় বাজারে মাছের সরবরাহ কম। ফলে ক্রেতা পর্যায়ে দাম সামান্য বেড়েছে।’
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘নিত্যপণ্য ন্যায্য দামে বিক্রি করা হচ্ছে কি না তদারকি করা হবে। অহেতুক দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের ঠকানোর প্রমাণ মিললে অভিযান চালিয়ে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কামরুজ্জামান/পপি/