ঢাকা ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
English

ময়মনসিংহে সবজির দাম কমলেও উত্তপ্ত মাছের বাজার

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ০২:১৮ পিএম
ময়মনসিংহে সবজির দাম কমলেও উত্তপ্ত মাছের বাজার
ময়মনসিংহে সবজি ও মাছের বাজার। ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ মাছের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে সবজির দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া গরু-খাসির মাংস, মুরগি ও ডিমের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

শনিবার (৩১ মে) সকালে শহরতলীর ঐতিহ্যবাহী শম্ভুগঞ্জ বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।

ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ ভালো মানের বেগুন ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে এখন এই বেগুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া শসা, গাজর, বরবটি ও কচুর লতি ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০, টমেটো ও কাঁচামরিচ ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪০, ঢেঁড়স ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি পিস ফুলকপির দাম ১০ টাকা কমে ৫০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। লেবু গত সপ্তাহে ৪ টাকা হালিতে বিক্রি হলেও এখন ৫-৬ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ৫০, করলা ৪০, পটোল ৪০, জিঙা ৫০, ধুন্দল ৫০, সজনা ৯০ ও মিস্টি লাউ ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৬০ ও চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মাছের দামে উত্তপ্ত বাজার। মৃগেল, রুই, কাতল, সিলভার কার্প, বাউশ, শিং, পাবদা, শোল, ট্যাংরা, গুলশা ও টাকির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে আকার ভেদে মৃগেল ১৭০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৮০-২৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া রুই ও কাতল ২৪০-৩১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ২৫০-৩২০, সিলভার কার্প ১৬০-২৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৭০-২৪০, বাউশ ১৯০-২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২০০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে শিং, পাবদা, শোল, ট্যাংরা, গুলশা ও টাকি মাছের দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এখন আকার ভেদে শিং ২৫০-৫৭০, পাবদা ৩০০-৩৬০, শোল ৫১০-৮০০, গুলশা ৩৪০-৯৫০, টাকি ৩১০-৪৯০ ও ট্যাংরা ৪৮০-৭৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পাঙাশ ১৬০-১৯০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২৪০ ও কৈ ২২০-৩৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে স্থিতিশীল অবস্থায় গরুর মাংস ৭৫০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০, সাদা কক ২৫০, লাল কক ২৫০ টাকা কেজি, মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালিতে ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আহমেদ হোসেন নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। 

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘ধীরে ধীরে সবজির দামে বাজার উত্তপ্ত হচ্ছে। এখন যৎসামান্য দাম কমানো হয়েছে। দাম আরও কমানো প্রয়োজন।’

মাছ কেনার সময় কথা হয় জাহিদুর রহমান নামের আরেকজন ক্রেতার সঙ্গে। 

তিনি বলেন, ‘বাজারে মাছের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবুও বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে কেজিতে ১০ টাকা দাম বাড়িয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করলে মাছের বাজার আরও উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।’

সবজি বিক্রেতা আব্দুল কাদির বলেন, ‘গত দুইদিন থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। কিন্তু বাজারে সবজির অতিরিক্ত সরবরাহ রয়েছে। ফলে দাম কমিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।’

মাছ বিক্রেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে মাছের অনেক খামার থেকে মাছ তুলেননি খামারিরা। মাছের চাহিদার তুলনায় বাজারে মাছের সরবরাহ কম। ফলে ক্রেতা পর্যায়ে দাম সামান্য বেড়েছে।’

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘নিত্যপণ্য ন্যায্য দামে বিক্রি করা হচ্ছে কি না তদারকি করা হবে। অহেতুক দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের ঠকানোর প্রমাণ মিললে অভিযান চালিয়ে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কামরুজ্জামান/পপি/

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম
ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে রাসেল (২০) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার (১২ জুলাই) ভোরে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তের ৩৫৩ নম্বর প্রধান পিলারের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রাসেল হরিপুর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার নিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানিয়েছে, ভোর ৪টার দিকে রাসেলসহ কয়েকজন সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে গেলে ভারতের কিষাণগঞ্জ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে রাসেল ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার মরদেহ ভারতের অভ্যন্তরে প্রায় ২০০ গজ ভেতরে পড়ে রয়েছে।

ঘটনার পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তা জোরদারে সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। একইভাবে ভারতের পক্ষেও অতিরিক্ত বিএসএফ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

দিনাজপুরে অবস্থিত ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মইন হাসান জানান, ঘটনার পরপরই আমরা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি। নিহতের মরদেহ ফেরত আনতে পতাকা বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং কূটনৈতিকভাবে বিষয়টির সুরাহায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

নবীন হাসান/মাহফুজ 

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
ভুক্তভোগী নারী নওরিন সিদ্দিকা সংবাদ সম্মেলনে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন। ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে মারধর, জীবননাশের হুমকি, প্রতারণার অভিযোগে স্বামী অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস, এম তাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী স্ত্রী নওরিন সিদ্দিকা।

শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১১টায় জেলা শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই নারী নওরিন সিদ্দিকা লিখিত বক্তব্যে বলেন, পরিবারিকভাবে ২০১০ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি আমার সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস.এম তাজ উদ্দিনের বিয়ে হয়। আমাদের সংসারে ২ সন্তান রয়েছে। বিয়ের ১ বছর পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে আমার স্বামী তাজ উদ্দিন বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আমাকে নির্যাতন শুরু করে। আমি ভদ্র পরিবারে সন্তান, মানুষের জীবনে বিয়ে একবার হয় বলে সকল নির্যাতন আমি সহ্য করে স্বামীর সংসার করেছি। আমার স্বামী একজন নারীলোভী প্রকৃতির মানুষ, তার পরকীয়া আমার কাছে ধরা পড়ে যাওয়ায় আমি বাধা দিই। এরপর থেকেই শুরু হয় আমার ওপর অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। আমার স্বামীর নির্যাতনের কারণে রক্তাক্ত অবস্থায় বার বার ঢাকা মেডিকেল ও গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বহু রেকর্ড আছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার স্বামী তাজ উদ্দিন অর্থ মন্ত্রণালয়ে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। সে একজন সিবিএ নেতা ছিল। আমি বার বার তার অফিসে তার ঘৃণ্য এই কার্যকলাপের জন্য লিখিত আবেদন করেছি, কিন্তু তার ক্ষমতার কাছে তার অফিসও হার মেনেছে। আমি কোনো বিচার পাই নাই। আমি যাত্রাবাড়ি থানায়ও অভিযোগ করেছি, যাত্রাবাড়ি থানা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহচর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিপি (বাগেরহাট বাড়ি) আমাকে ও আমার পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আমাদের লালবাগের সরকারি বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে আবারো নির্যাতন করেছে। এক পর্যায়ে আমাকে আমার স্বামী ঘরের ভিতরে আটকিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে, আশপাশে লোকজন টের পেয়ে ছুটে আসলে আমি বেঁচে যাই। সে আমার সঙ্গে প্রতারণা করে আমার ২ ছেলেকে ঢাকা নিয়ে গেছে। আমার সঙ্গে আমার সন্তানদের যোগাযোগ করতে দেয় না।

নারীলোভী আমার স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবশেষে গোপালগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত আমাদেরকে ৩১শে অক্টোবর মীমাংসা করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। তারপরেও আমার নারীলোভী স্বামী তাজ উদ্দিন আমি বাসায় না থাকায় বিভিন্ন মেয়েদের নিয়ে বাসায় আসতো। পাশের বাসা থেকে এসব তথ্য আমাকে দিত। আমি জিজ্ঞেস করলে মারধর করতো। এক সময় আমি গোপন সূত্রে এক সময় জানতে পারলাম আমার স্বামী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী এলাকার শেখ আসমা সুলতানা নামক এক ডিভোর্সি নারীকে গোপনে বিবাহ করেছে ২০২৪ সালের ৮ই জুলাই। ওই বিয়ে করে সে আমার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ডিভোর্সের কাগজ পাঠিয়েছে, তাতে তারিখ দেওয়া আছে ২৪শে ডিসেম্বর ২০২৪। শুধু তাই নয়, সে আমার ভাইকে বার বার মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে জগন্নাথের ওই ভিপিকে দিয়ে।

ভুক্তভোগী নারী নওরিন সিদ্দিকা আরো বলেন, এখানেই শেষ নয়, আমার পাষণ্ড স্বামী জুলাই আন্দোলনের সময়কালে লালবাগ পুলিশের ধাওয়া খেয়ে জীবন বাঁচাতে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা আমাদের কোয়াটারে আশ্রয় নিতে আসলে ও পুলিশ ডেকে তাদেরকে ধরিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পর ঐ সকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তাকে বাসায় বার বার খুঁজতে আসলে তাকে পায় নাই। প্রায় দীর্ঘ ২ মাস সে পালিয়ে বেড়িয়েছে। এখন সে আবার পূর্বের ন্যায় দাপটের সহিত কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করছি যে, আমি আমার ১৫ বছরের সংসার ফিরে পাওয়াসহ ওই নারীলোভী পাষণ্ডের সকল ঘৃণিত কর্মকাণ্ড নজরে এনে বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানাই।

বাদল সাহা/মাহফুজ

গোপালগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
গোপালগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ
ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে নৈশপ্রহরী গৌতম গাইন (৩৫) হত্যার ঘটনায় মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর দাবি, গৌতমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতার এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।

গৌতম গাইন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের কলিগ্রামের বিমল গাইনের ছেলে।

শনিবার (১২ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে গৌতমের মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হলে নিজ এলাকায় নিয়ে আসা হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের জলিরপাড় জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয় সামনে এ বিক্ষোভ
সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ওই এলাকার তিনশতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।

এর আগে ওই এলাকার বঙ্গরত্ন মহাবিদ্যালয়ের সামনে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে উজানি- জলিরপাড় সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিলসহ মরদেহ নিয়ে জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যানয়। এ সময় তার গৌতম গাইনের
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীলরতন বালা, রুপালতা মন্ডল, বিএনপি নেতা চিন্তাহরন মন্ডল।

নিহত গৌতম গাইনের ভাইজি সমর্পিতা গাইন বলেন, 'আমার কাকা একজন নিরীহ লোক ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে কেনো নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো? কি অপরাধ করেছিলো আমার কাকা? আমার জন্মের পর এমন হত্যাকাণ্ড দেখিনি। সরকারের কাছে
আবেদন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।'

নিহতের ভাইয়ের স্ত্রী স্বরসতি বৈরাগী বলেন, 'আজ ছোট দুটি সন্তান বাবা হারা হলো। অন্যের বাবারা যখন সন্তানদের আদর করবে তখন এ এতিম বাচ্চাদের কি জবাব দেবেন? আমরা চাই আর কোনো সন্তান যেন তার বাবাকে না হারায়, আর কোন ভাই যেন ভাই হারানো বেদনা নিয়ে চলতে না হয়।'

মুকসুদপুর থানার পরিদর্শক শীতল চন্দ্র পাল জানান, নিহতের স্ত্রী মিলি বৈরাগী বাদি হয়ে একটি অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয় যান গৌতম। সেখান থেকে নিখোঁজ হন তিনি। ওই রাতে কল দিলে মুঠোফোন বন্ধ পায় পরিবারের সদস্যরা। পরদিন বৃহস্পতিবার মুকসুদপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয় (জিডি নং-
৫১৫)। এর পর শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর থানা পুলিশ কংশুর মধুমতি বিলরুট চ্যানেল থেকে গৌতমের মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।

বাদল/মেহেদী/

ছাত্রকে অপহরণের পর আটকে রেখে বলাৎকার, মাদ্রাসাশিক্ষক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম
ছাত্রকে অপহরণের পর আটকে রেখে বলাৎকার, মাদ্রাসাশিক্ষক গ্রেপ্তার
অভিযুক্ত শিক্ষক বেলাল উদ্দিন

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা থেকে এক মাদ্রাসাপড়ুয়া শিশুকে অপহরণের পর একটি আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে বলাৎকারের অভিযোগে বেলাল উদ্দিন নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১২ জুলাই) ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানায় একটি মামলা করেছেন।

বেলাল উদ্দিন কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের শীলখালী সবুজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি লোহাগাড়া উপজেলায় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। ভুক্তভোগী শিশু একই মাদ্রাসার ছাত্র।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে বেলাল উদ্দিন শিশুটিকে মাদ্রাসা থেকে অপহরণ করে চকরিয়া পৌরসভার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। পরে সেখানে তাকে আটকে রেখে বলাৎকার করেন। এ ঘটনা কাউকে জানালে হত্যা করা হবে বলেও শিশুটিকে হুমকি দেন ওই শিক্ষক।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, 'অপহরণের আগেও শিক্ষক বেলাল উদ্দিন শিশুটিকে মাদ্রাসায় একাধিকবার বলৎকার করেছেন। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মেহেদী/

জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত ইমরানের

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত ইমরানের
তার পরিবারের সঙ্গে ইমরান। ছবি: খবরের কাগজ

দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা ও মা-বাবার নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নিজের প্রচেষ্টায় এ বছর মাধ্যমিকে ঢাকা বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ইমরান। 

জেলার শিবচর উপজেলার মাদবরেরচরের রহিম উদ্দিন মাদবর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তার এই কৃতিত্বে শিক্ষক ও এলাকাবাসী খুশি হলেও পরিবারে এখন আনন্দের পরিবর্তে দুশ্চিন্তা যেন সঙ্গী হতে চলেছে। অর্থের অভাবে ইমরানের উচ্চশিক্ষা নিয়ে চিন্তিত সবাই।

উপজেলার মাদবরেরচর ইউনিয়নের ডাইয়ারচর গ্রামের অটোচালক আবু কালাম মিনা ও গৃহিণী হামিদা বেগম  দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান ইমরান। সারাদিন অটো চালিয়ে বাবা আবু কালাম মিনা যে টাকা উপার্জন করেন সেটা দিয়ে সংসার চালাতেই শেষ হয়ে যায়। 

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ইমরান। তার বড় ভাই হাসান স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়েন। আর ছোট বোনটি পড়েন প্রথম শ্রেণিতে। ছোটবেলা থেকেই পড়ার প্রতি বেশ আগ্রহ ছিল ইমরানের। নিয়মিত বিদ্যালয়ে ক্লাস করতেন আর শিক্ষকদের পরামর্শ নিত নিয়মিত। এখন ভালো কোনো কলেজে ভর্তি ও পড়ালেখায় প্রয়োজনীয় টাকা তার দিনমজুর বাবার পক্ষে জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। এজন্য ইমরান এক ধরনের অনিশ্চয়তা নিয়ে এখন দিন পার করছে বলে জানা গেছে।

তবে পরিবারের লোকজন জানান, ইমরানকে অনেক দূর পড়াশোনা করার স্বপ্ন তাদের আগে থেকেই ছিল। সেটাই করার চেষ্টা করেছেন তারা। ইমরানের পড়াশুনার আগ্রহ ও এবারের এসএসসির রেজাল্ট দেখে তারা ইমরানকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন । তবে যখন তারা জানতে পেরেছেন এরপরে ছেলের উচ্চ শিক্ষা নিতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন হবে, তখন থেকেই তাদের মনটা খুবই খারাপ হয়ে আছে। আসলে তাদের পক্ষে অনেক টাকা খরচ করে ওকে পড়াশোনা করানো সম্ভব নয়। তাই  সরকারসহ সবার সহযোগিতা চান তারা।

ইমরান বলেন, আসলে পড়াশোনা নিজের ব্যাপার। যদি নিয়মিত পড়াশোনা করা যায় আর শিক্ষকদের পরামর্শ নেওয়া যায় তাহলে কোনো কিছুই বাধা হয় না। আমার এই ফলাফলের পেছনে প্রথমে আমার মা পরে আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবদান। শিক্ষকরা কখনো আমার বেতন নেননি। আমার বাবা অটোচালক। তিন ভাইবোন আমরা। সংসার চালিয়ে আমাদের পড়াশোনা করাতে বাবার অনেক কষ্ট হয়।আমি চাই সামনে আরও ভালো পড়াশোনা করে বুয়েটের ভর্তি হতে। প্রকৌশলী হবার ইচ্ছে আমার। তাই আমি সরকারসহ সমাজের সবার সহযোগিতা চাই।

ইমরানের মা বলেন, আমার ইমরান খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে। কোনোদিন স্কুলে থেকে এসে দেখছে ভাত রান্না হয়নি, সে কিন্তু ভাত না খেয়েই আবার স্কুলে চলে গেছে। পরে এসে ভাত খেয়েছে। পড়ায় কখনো ফাঁকি দেয়নি। ওর স্কুলের শিক্ষক ও মামাদের সহযোগিতায় আজ সে এই ফল করেছে। আমরা আত্মীয় স্বজনেরা সবাই খুশি। সামনে যে আবার ভালো কলেজে ভর্তি হবে, সেখানে অনেক টাকা খরচ হবে। এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত। ওর পাশে আপনারা থাকবেন।

মাদবরেরচর রহিম উদ্দিন মাদবর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মোতালেব শিকদার বলেন, ২০২৫-এর এসএসসি পরীক্ষায় ইমরান জিপিএ ৫ পেয়েছে। সে একজন গরিব পরিবারের সন্তান। সে আগাগোড়াই একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সে কখনো সেকেন্ড হয়নি। প্রথমই হয়েছে। তার লেখাপড়ার বিষয় আমাদের সব শিক্ষকই সার্বিক সহযোগিতা করেছে। তার আচার আচরণে আমরা মুগ্ধ ছিলাম। যেহেতু সে গরিব পরিবারের সন্তান সমাজের সবার কাছে আবেদন তারা যেন তার পাশে দাঁড়ান। আমি তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।

রফিকুল ইসলাম/সুমন/