
ফ্যাশনপ্রেমীরা ঈদে নান্দনিক পোশাক পরতে পছন্দ করেন। এবার ঈদে আবহাওয়া থাকবে গরম। তাই পোশাক হতে হবে আরামদায়ক। সেই সঙ্গে হতে হবে স্টাইলিশও। বর্তমানে ইন্টারনেট, ফেসবুক ও বিদেশি ম্যাগাজিনের কারণে বিশ্বের যেকোনো ফ্যাশন ট্রেন্ড সবার হাতের মুঠোয়। আমাদের দেশীয় ফ্যাশনও তাই প্রতিনিয়ত তাল মিলিয়ে চলছে বৈশ্বিক ট্রেন্ডের সঙ্গে। ফ্যাশন ডিজাইনাররাও প্রতিনিয়ত আনছেন নিত্যনতুন ডিজাইন। ডিজাইনের বৈচিত্র্য এখন সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে কুর্তিতে।
কুর্তিতে ফুর্তি
ফ্যাশনেবল তরুণীরা কুর্তি পরতে পছন্দ করে। কাট আর প্যাটার্নের নান্দনিক উপস্থাপনা হওয়ার কারণে সব সময়ের ফ্যাশনে মানানসই। অফিসে, ক্লাসে এমনকি ইনফরমাল পার্টিতেও খুব সহজে পরতে পারবেন। কেবল সাদামাটা নয়, গর্জিয়াস আউটলুকের কুর্তি যেকোনো অনুষ্ঠানে পরে যাওয়া যায়। এই কুর্তিকে আসলে মিনিমাল ফ্যাশনের সমকালীন ধারাকে নতুনভাবে সামনে নিয়ে এসেছে। তাই এবারের ঈদে কুর্তি কাটিং ও প্যাটার্নে রয়েছে ভিন্নতা। গলায়, হাতা অথবা বটম লাইনে নিয়ে আসা হয়েছে বৈচিত্র্যতা। শর্ট স্লিভ, কোয়ার্টার, সেমি কোয়ার্টার ও ফুল স্লিভ সব রকম হাতার কুর্তি রয়েছে। আভিজাত্য এনে দিতে এসব পোশাকে হাতায় বৈচিত্র্যের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে ফ্লাওয়েন্স, লেয়ার্ড ট্রাম্পেটস। নতুনত্ব এসেছে নেক লাইনেও। বড় গোল গলা থেকে শুরু করে বোট নেক, ব্যান্ড কলার, হাইনেক, কোল্ড শোল্ডার, অফ শোল্ডার, পাঞ্জাবি গলাসহ সবই দেখা গেছে এবারের ঈদের পোশাকে।
কাপড়ে বৈচিত্র্যতা
পোশাকের কাপড় হিসেবে সুতি, জর্জেট ও লিনেন কাপড় প্রাধান্য পেয়েছে। অনেকে গর্জিয়াস পোশাক পছন্দ করে, তাদের কথা মাথায় রেখে মসলিন, কোটা সিল্ক, অ্যান্টি সিল্ক ও সিনথেটিক, ভিসকস, ডবি সিল্ক, নিট, জ্যাকার্ড কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে। জর্জেট ও মসলিন থ্রি-পিসের কাপড়ে হাত, গলা কিংবা পুরো জমিনে গোটাপাত্তি, জরি-চুমকি ছাড়াও সুতার ওপর পাথরের কাজে করে ঈদের দিনের জন্য জমকালো পোশাক। গরমের ভাবনায় সেগুলোকে আরামদায়ক রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।

নকশা যেমন
ঈদ ফ্যাশনে তরুণীরা সুতি, লিনেন, জর্জেট কাপড়ের টুপিস সেটগুলো বেশ পছন্দ করছে আরও আছে ফিউশনধর্মী কুর্তি। এগুলোর নকশাও বেশ নজরকাড়া। কুর্তিগুলোর জমিনজুড়ে স্ক্রিন প্রিন্ট, সাবলিমেশন প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি, জিওমেট্রিক, ট্র্যাডিশনাল, ফ্লোরাল প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট করা হয়েছে। অধিকাংশ ফ্যাশন হাউস পোশাকের মোটিফ ও নকশায় রেখেছে উৎসবের আমেজ।
পোশাকের রঙের মধ্যে রয়েছে অ্যাশ, লাইট ব্রাউন, মেরুন, সাদা, কালো, ক্রিম, ফিরোজা অফ হোয়াইট, লাল, গোলাপি, সবুজ, নীল, গ্রিন পিচ ও সি গ্রিন, ম্যাজেন্টা, স্কাই ব্লু। রঙের ফিউশন কিংবা নতুন রঙের ব্যবহারও অনেক ফ্যাশন হাউস করতে চেয়েছে। তবে তা খুব বেশি নয়। গরমের ফিচার রংগুলোর দিয়েই পোশাক নকশা করা হয়েছে।
গ্রীষ্ম মাথায় রেখে বেশির ভাগ হাউসেই রঙের উজ্জ্বল ব্যবহার বা ফুলেল মোটিফ ব্যবহার করা হয়েছে। কুচি দেওয়া কুর্তিগুলো বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে। তাই তো ঈদের সময় বন্ধুবান্ধব কিংবা আত্মীয়ের বাসার দাওয়াতে গেলে পরা যাবে অনায়াসে। দেশের অন্যতম ফ্যাশন হাউস গ্রামীণ চেক সব সময়ই চেষ্টা করে ঈদের পোশাকের ডিজাইনে ভিন্নতা আনতে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাশন সচেতন ক্রেতাদের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাক ডিজাইন করেছে। পোশাকের ডিজাইনে করা হয়েছে নানা নিরীক্ষাধর্মী কাজ।
শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি কুর্তির ডিজাইনে রয়েছে আধুনিকতা। গলা, হাতা এবং পোশাকের প্যাটার্নের নিরীক্ষাধর্মী কাজগুলোয় সমকালীন ট্রেন্ডের প্রকাশ ঘটেছে। তাতে তরুণীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ওয়েস্টার্ন কাটিং ড্রেস পরতে পারে, সেভাবে পোশাক ডিজাইন করা হয়েছে। পোশাকে পুরোপুরি ওয়েস্টার্ন লুকও নেই, তবে তাতে বাঙালিয়ানা খুঁজে পাওয়া যাবে। সুতি, জ্যাকার্ড কটন, ভয়েল, লিনেন, সিল্ক, মসলিন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, দুবাই সিল্ক, অরগাঞ্জা, ধুপিয়ান সিল্ক, মমো সিল্ক, সুইস কটন, ভিসকস, বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের উপর এমব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, ব্লক, হাতের কাজ, হ্যান্ডপেইন্ট, টাইডাই প্রভৃতি বেশি ব্যবহার করে ডিজাইন ও প্যাটার্নে আনা হয়েছে নতুনত্ব।রঙ হিসেবে সাদা, নীল, হলুদ, লাল, টিয়া, সাদা, কমলা, কালো, সবুজ, গোলাপি, আকাশিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
যা দিয়ে পরবেন
বাটন, ডেনিম কিংবা পেনসিল কাটের ফরমাল প্যান্ট দিয়ে পোশাকগুলো পরলে স্টাইলিশ লাগবে। এ ছাড়া টপসের সঙ্গে প্লাজো বেশ আরামদায়ক। কুর্তি সঙ্গে প্লাজো পরলে দেখতেও লাগবে বেশ ট্রেন্ডি।
কোথায় পাবেন
গ্রামীণ চেক, কে ক্র্যাফট-এর ইয়াংকে, অঞ্জন’স-এর নতুন ব্র্যান্ড মার্জিন, নিপুণ-এর মাকু, এক্সট্যাসি, টুয়েলভ, সেইলর, ক্লাবহাউজ, রঙ বাংলাদেশ, বিবিয়ানাতে পেয়ে যাবেন চমৎকার সব কুর্তি। এ ছাড়া নিউ মার্কেট, গাউসিয়া, মৌচাকসহ বিভিন্ন মার্কেটে নতুন কাট ও প্যাটার্নের সুন্দর ট্রেন্ডি কুর্তি পাবেন।
কলি