একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও দেশের ভাষা শহিদ স্মরণে মাদ্রাসাগুলোতে নেই শহিদ মিনার। সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই।
মাদ্রাসাগুলোতে শহিদ মিনারে নির্মাণে তাদের কোনো আগ্রহও নেই সরকারের কড়া কোনো নির্দেশনা না থাকার কারণে। সরকার ঘটা করে দেশে-বিদেশে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকে, কিন্তু এদিকে কোনো নজর নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাদ্রাসার শিক্ষক জানিয়েছেন, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। সে জন্য ভাষা শহিদদের স্মরণে মাদ্রাসাগুলোতে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয় না। এ কারণে শুধু নড়াইল জেলাতেই নয়, দেশের কোনো মাদ্রাসায় শহিদ মিনার আছে বলে জানা নেই। তবে সরকারিভাবে যদি বিশেষ কোনো নির্দেশনা থাকে যে মাদ্রাসাগুলোতেও ভাষা শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মাণ করতেই হবে, সে ক্ষেত্রে শহিদ মিনার নির্মাণ হতে পারে বলে সূত্র জানায়।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলে মোট ৪৪টি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬টি, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় ১৪টি করে। এসব মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত। তারা সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে।
নড়াইল শাহাবাদ মাজীদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা কে এম হাসমত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসায় কোনো শহিদ মিনার নেই। আমার জানামতে, দেশের কোনো মাদ্রাসায় শহিদ মিনার নেই।’
নড়াইল ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আশরাফ আলী বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসায় শহিদ মিনার নেই। আমি এখানে দায়িত্ব নেওয়ার আগেও ছিল না।’ তবে এ বিষয়ে নিউজ না করার অনুরোধ করেন তিনি।
জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জেলার মাদ্রাসাগুলোতে ভাষা শহিদদের স্মরণে কোনো শহিদ মিনার নেই বললেই চলে। বিষয়টি আমি বিভিন্ন সময়ে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় তুলেছি। আলাপ-আলোচনা হয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তুতি সভায়ও এ বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মাদ্রাসাগুলোতে শহিদ মিনার করার জন্য আমরা কমিটির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের বলেছি। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে মিটিংগুলোতে বলা হয়েছে।’