গরম গরম । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

গরম গরম

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
গরম গরম
ফার্নেস ক্রিক, ডেথ ভ্যালি, যুক্তরাষ্ট্র

চলছে গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মকাল মানেই গরম। তাই বলে এত গরম! দেশের ৪০টিরও বেশি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তাপদাহে পুড়ছে দেশ। এই যে এত্ত গরম, এটা কি শুধু বাংলাদেশে? না বিশ্বের অনেক দেশের তাপমাত্রা বাংলাদেশের চেয়েও বেশি। তো বিশ্বের দশটি গরম এলাকার তাপমাত্রা সম্পর্কে জানা যাক

১০
জেদ্দা, সৌদি আরব
সৌদি আরবের পশ্চিমের অঞ্চল জেদ্দায় তাপমাত্রা উঠেছিল ৫২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত। তারিখটা ছিল ২০১০ সালের ২২ জুন। 


ম্যাক্সিকালি, মেক্সিকো
১৯৯৫ সালের ২৮ জুলাই ম্যাক্সিকোর ম্যাক্সিকালি উপত্যকায় তাপমাত্রা উঠেছিল ৫২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। ওদিকে এ উপত্যকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়েছিল মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।


আলজাজিরা বর্ডার গেট, সংযুক্ত আরব আমিরাত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল জাজিরা বর্ডার গেটে তাপমাত্রা উঠেছিল ৫২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সময় ছিল ২০০২ সালের জুলাই মাস। ২০১৩ সালে ৫১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। যদিও এই তাপমাত্রা ১৫ মিনিটের মতো স্থায়ী ছিল।


তুরবাত, পাকিস্তান
২০১৭ সালের ২৮ মে পাকিস্তানের তুরবাত এলাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৫৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


বসরা, ইরাক
২০১৬ সালের ২২ জুলাই, ইরাকের বসরায় তাপমাত্রা ছিল ৫৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস


মিত্রিবাহ, কুয়েত
২০১৬ সালের ২১ জুলাই কুয়েতের মিত্রিবাহ আবহাওয়া দপ্তর তাপমাত্রা রেকর্ড করেছিল ৫৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস- যা ছিল ওই অঞ্চলের ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।


তিরাত তজভি, ইসরায়েল
১৯৪২ সালের ২১ জুন রেকর্ড করা হয় ইসরায়েলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা-৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আহভাজ, ইরান
২০১৭ সালের ২৯ জুন স্থানীয় সময় ৪টা ৫১ মিনিটে ইরানের আহভাজে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৫৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস।


কাবিলি, তিউনিসিয়া
আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তিউনিসিয়ার কাবিলিতে। সেদিন ছিল ১৯৩১ সালের ৭ জুলাই। আর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


ফার্নেস ক্রিক, ডেথ ভ্যালি, যুক্তরাষ্ট্র
পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের ডেথ ভ্যালির ফার্নেস ক্রিকে। ১৯১৩ সালের ১০ জুলাই রেকর্ড করা হয় ৫৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। গ্রীষ্মে এখানকার সাধারণ তাপমাত্রাই থাকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১৯৭২ সালের ১৫ জুলাই ডেথ ভ্যালির মাটির তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৯৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।     সূত্র বিবিসি

জাহ্নবী

আমরা আঁকি

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:১০ পিএম
আমরা আঁকি

অনূঢ়া বড়াল

বয়স: ৭ বছর

ঢাকা

 

জাহ্নবী

গরমে ঠাণ্ডা

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
গরমে ঠাণ্ডা
ওইমিয়াকনের একমাত্র দোকানে সবই জমে শক্ত হয়ে আছে

গরমে অনেকেই ঠাণ্ডা খাবার পছন্দ করো। পছন্দ করাটাই স্বাভাবিক। গরমে ঠাণ্ডা খেলে মনে হয় গরম বুঝি কম লাগবে। আর সে কারণে আইসক্রিম, কোমল পানীয়, ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি, বরফ দেওয়া জুস-খুব খাচ্ছো। যদিও চিকিৎসকরা বলেন, গরমে এতটা ঠাণ্ডা খাবার শরীরের জন্য ভালো নয়। এতে শরীরের স্বাভাবিকতা নষ্ট হয়। আমাদের সবার শরীর গরম থেকে হঠাৎ ঠাণ্ডা মানিয়ে নিতে পারে না। আর মানিয়ে নিতে পারে না বলেই নানান রকম সমস্যা তৈরি করে। সে কারণে অতিরিক্ত গরমে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা খাওয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তবে গরমে তো ঠাণ্ডা চাই।

চরম গরমে তাহলে এবার চরম ঠাণ্ডা একটা গ্রামের গল্প শোনাই। সে গ্রামের নাম ওইমিয়াকন। পৃথিবীর সবচেয়ে ঠাণ্ডা গ্রাম বলা হয় একে। যদিও অনেকেই ইয়াকুতস্ককে সবচেয়ে ঠাণ্ডা স্থান হিসেবে মনে করেন। তবে ওইমিয়াকনই হচ্ছে সবচেয়ে ঠাণ্ডা। ওই দুটো জায়গাই রাশিয়ায়। ওইমিয়াকন থেকে দুদিনের পথ ইয়াকুতস্ক।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘরে ফিরছে এক শিক্ষার্থী

 

এই যে এখন বাংলাদেশের তাপমাত্রা চরম আকার ধারণ করেছে, দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের উপর দিয়ে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসও পেরিয়েছে কয়েক জায়গায়, এসময় ওইমিয়াকনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন মাইনাস ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শীতকালে ওইমিয়াকনের স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল গ্রাম হিসিবে চিহ্নিত ওইমিয়াকনের জনসংখ্যা ৫০০-এর আশপাশেই থাকে। কিন্তু কেন এত ঠাণ্ডা?

সবচেয়ে কাছের শহর ইয়াকুতস্কে যাওয়ার রাস্তা

 

এত ঠাণ্ডার কারণ দুটো উপত্যকা। ওইমিয়াকনের পাশেই রয়েছে দুটো উপত্যকা। এই উপত্যকায় ওইমিয়াকন নদী থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস আটকে থাকে আর ওইমিয়াকন গ্রামকে শীতল করে রাখে। এতটাই শীতল যে, বসন্ত আর শরতে তো পড়েই, গ্রীষ্মকালেও সেখানে বরফ পড়ে। কেবল গ্রীষ্মকালে সেখানকার তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর ওঠে। তাপমাত্রা মাইনাস ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেই সেখানকার স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯২৪ সালে এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল মাইনাস ৭১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ওইমিয়াকনের একটি টয়লেট। বেশিরভাগ টয়লেটই বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে

 

বছরে সবচেয়ে বড় দিনটার দৈর্ঘ্য তিন ঘণ্টার কাছাকাছি। এখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক একদমই নেই। প্রচণ্ড শীতের কারণে কোনো শস্য হয় না। গোটা গ্রামে রয়েছে একটি মাত্র দোকান যা সবার দরকার মেটায়। এখনো প্রচুর বাড়ি রয়েছে যাদের টয়লেট ঘরের বাইরে। নিজেদের গরম রাখার জন্য কয়লা আর কাঠ পুড়িয়ে আগুন জ্বালায় লোকজন। অনেক সময় কলমের কালিও জমাট বেঁধে যায়।

এই প্রচণ্ড গরমে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে এই গ্রাম থেকে ঘুরে আসতে পারো। মনে হয় তাতে গরম কিছুটা হলেও কমবে। তবে ভুলেও গরমে ঠাণ্ডা খাবার খেও না যেন!

জাহ্নবী

 

অঙ্ক স্যার কি ভূত হয়ে গেলেন

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
অঙ্ক স্যার কি ভূত হয়ে গেলেন

রাত প্রায় ১১টা। রাতের খাবার খেয়ে অঙ্ক করার জন্য বসেছি। বেশ কয়েকটা অঙ্ক ইতোমধ্যে করেও ফেলেছি। কিন্তু একটা অঙ্ক কিছুতেই মেলাতে পারছি না। কোনোভাবেই মাথায় আনতেও পারছি না। আগামী সপ্তাহ থেকে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু। তাই পড়াশোনার চাপও বেশি। মা বলেছেন, পরীক্ষা শেষ হলেই শহরে মামার বাসায় বেড়াতে নিয়ে যাবে। এই আনন্দে পড়াশোনাটাও ঠিকঠাক চলছে।

যখন অঙ্কটা কিছুতেই মেলাতে পারছি না, ঠিক তখনই মনে হলো- স্যারের কাছে গিয়ে সমাধান করে নিয়ে আসি। যেই ভাবনা সেই কাজ। অঙ্ক স্যারের বাড়ি আমাদের গ্রামের শেষ সীমানায়। স্যার একটু-আধটু লেখালেখি করেন। তাই আশা করলাম, স্যার অবশ্যই জেগে আছেন। তাছাড়া স্যারও অনেক দিন ক্লাসে বলে থাকেন। তিনি এখনো অনেক রাত জেগে বিভিন্ন বই পড়ে থাকেন।

স্যারের বাড়ি মূলগ্রাম ছেড়ে একটু দূরে। স্যারের বাড়ি যেতে একটা সরু পথ। সেই পথটুকু হেঁটে পার হতে মিনিট দু-এক লাগবে।

মা-বাবাকে না জানিয়ে স্যারের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলাম। বাম হাতে বই-খাতা। আর ডান হাতে একটা ছোট্ট টর্চ লাইট। লাইটে খুব বেশি আলো দেয় না। মিটমিটে আলোতেই পথ দেখে চলছি। পথ ছাড়া কোনো দিকে আলো ছটকাচ্ছি না। সরু পথে ঢুকতেই গা ছমছম করে উঠল। একটু ভয়-টয় কাজ করতে লাগল। কিন্তু মনের জোর ছিল, তাই ভয় কাটিয়ে হেঁটেই চললাম। হেঁটে চলেছি বেশ দ্রুতগতিতে। কিন্তু মনে হচ্ছে, অনেকক্ষণ ধরে হাঁটছি। দুই মিনিটের পথ তবু শেষ হচ্ছে না।

মনে মনে এ-ও ভাবলাম, আমি কি ভুল পথে চলে এসেছি! কিন্তু তা তো হওয়ার নয়। কারণ এই একটাই পথ স্যারের বাড়ি যাওয়ার। যাই হোক একসময় ঠিকই স্যারের বাড়ি পৌঁছে গেলাম।

স্যার যে ঘরে থাকেন সেই ঘরের সামনে গিয়ে স্যার, স্যার বলে ডাক দিলাম। আমার ডাক শুনে স্যার দরজা খুলে দিলেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে স্যারকে সালাম দিলাম। স্যার উত্তর দিলেন কি না শুনতে পেলাম না। স্যার শুধু হাত ইশারায় আমাকে ভেতরে ঢুকতে বললেন। তারপর চেয়ার দেখিয়ে বসতে বললেন।

আমি যেন স্যারকে আগেই ফোন করে এসেছি, স্যারের কার্যক্রম দেখে বোঝা গেল। কিন্তু আমার কাছে তো ফোন নেই। ফোন করে আসব কেমনে! বাবার একটা ছোট্ট বাটন মোবাইল ফোন থাকলেও বাবার কাছ থেকে নিয়ে ফোন করে আসিনি। কারণ তখন তো মা-বাবা ঘুমিয়ে পড়েছিল।

স্যার বললেন, তোমার কোন অঙ্কে সমস্যা? বের করো।

বই খুলে স্যারকে অঙ্কটা দেখিয়ে দিলাম। স্যার খাতা-কলম নিয়ে অঙ্কটি করে বুঝিয়ে দিলেন। তাতে আমার যে ঘাটতি ছিল, তা সহজেই সমাধান পেয়ে গেলাম। আমিও বেশ খুশি হলাম।

আবার স্যার বললেন, আর কোনো অঙ্কে সমস্যা আছে?
না স্যার। আপাতত নেই। সমস্যা হলে আবার আসব।
ঠিক আছে। বলেই স্যার বিছানা ঠিক করতে লাগলেন। আর আমি স্যারের ঘর থেকে বেরিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে লাগলাম। বাড়ি এসে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৩টা বাজছে। তার মানে রাত ৩টা! সময় দেখে আমি বেশ আশ্চর্য হলাম। বই-খাতা টেবিলে রেখেই শুয়ে পড়লাম। বেশ কিছু সময় পার হলেও ঘুম আসছে না।
শুধুই মনের ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে- স্যারকে আজ এমন কেন লাগল? স্যার তো অনেক হাসিখুশি মানুষ। স্যারের কাছে গেলে কখনোই বিরক্ত হতে দেখিনি। স্যারের কাছে গেলে, স্যার তো আরও খুশি হয়ে বেশ আগ্রহ নিয়ে অঙ্কের সমাধান করে দেন। কিন্তু স্যারকে, আজ কেমন যেন লাগল! কণ্ঠস্বরও আলাদা, কর্কশ লাগল। মনে হলো, স্যার আমার ওপর রাগ করে আছেন। ভালোভাবে কথা বললেন না। তাহলে কি এত রাতে যাওয়ায় স্যার বিরক্তবোধ করলেন। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। সকালে মায়ের ডাকে যখন ঘুম ভাঙল তখন সকাল ৯টা। আমি কখনোই এত দেরি করে উঠি না। যাই হোক, তড়িঘড়ি করে ফ্রেশ হয়ে স্কুলে গেলাম। প্রথম পিরিয়ডে অঙ্ক ক্লাস। কিন্তু অঙ্ক স্যার না এসে, এলেন বাংলার ম্যাডাম। ম্যাডাম এসেই বললেন, আজকে তোমাদের অঙ্ক ক্লাসটা পরের ঘণ্টায় হবে। কারণ তোমাদের অঙ্ক স্যার ছুটিতে আছেন। তার বিশেষ কাজে ঢাকা গেছেন।

ম্যাডামের কথা শুনে জানতে চাইলাম, ম্যাম, স্যার কবে গেছেন?
ম্যাম বললেন, গত বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর।
ম্যামের কথা শুনে তো আমার চক্ষুচড়ক। রাতে যে স্যারের কাছে অঙ্ক করে এলাম। তবে কী তিনি স্যার ছিলেন না! মনে মনে বেশ ধাক্কা খেলাম। কিন্তু কারও সঙ্গে শেয়ার করার সাহস হলো না। এই কথা বলতে যদি আমাকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করে দেয়। আমাকে বেশ ভাবনায় দেখে ক্লাসমেট ফাহিম জিজ্ঞেস করল, কী রে জুনাইদ। কী ভাবছিস?

না কিছু না। বলে ক্লাসে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ক্লাসে মন বসছিল না। শুধু ভাবনাজুড়ে রাতের ঘটনা। তাহলে আমাকে রাতে কে অঙ্ক করে দিলেন! স্যারের তো কোনো ভাইও নেই। তাহলে কী স্যারের রূপ ধরে ভূত-টুতে আমাকে অঙ্ক করে দিল। এ কী করে সম্ভব! তবে কি স্যার ভূত হয়ে গেলেন?

জাহ্নবী

ঈদের দিনে অভিযান

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:০১ পিএম
ঈদের দিনে অভিযান

সকালে মা আমাকে ডাক দিলেন। বললেন: ওঠো ওঠো, সকাল হয়ে গেছে।
আমি: উঠছি মা।
মা: তাড়াতাড়ি ওঠো। গোসল করতে হবে তোমার।
আমি: ঠিক আছে।
আজ ঈদ। আমি ঘুম থেকে উঠে গোসল করে আমার নতুন জামা পরি। মা আমাকে বাটিতে করে সেমাই দেন। আমি খুব মজা করে খাই। হঠাৎ দেখি মিতু, আয়শা, লাবিবা ও সারা বাসায় এসে হাজির।
সারা: এশা আয়।
আমি: আসছি।
হঠাৎ করে মা বলে ওঠেন-
মা: তোমরা সেমাই খেয়ে যাও।
মিতু: ঠিক আছে।
সবাই টেবিলে বসে সেমাই খেলো। মা আমাদের সালামিও দিলেন। খেয়ে আমরা সবাই বাইরে যাই। আমরা সবাই পার্কে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে পড়ে বল্টুদের বাড়ি। বল্টু একটি বোকাসোকা ছেলে। সে আমাদের বয়সী কিন্তু এক ক্লাস নিচে পড়ে। কিন্তু বল্টুর বাবা খুব ধনী। তারা ফ্ল্যাটে থাকে না। একটি বাড়িতে থাকে। আমরা আমাদের আস্তানায় পৌঁছাই। যেটা একটা ভাঙা বাসা। সে পার্কে বাসাটি আছে। সেটি এখন মানুষে ভরা। যেখানে অনেকে বসে আছে। আমরা আমাদের আস্তানায় এসে কথা বলা শুরু করি।
মিতু: তোরা সবাই কি দুপুরে বল্টুর বাসায় খেতে আসবি?
আয়শা: হ্যাঁ, অবশ্যই যাব। বল্টুর বাবা তো এলাকার সবাইকে দাওয়াত দিয়েছে।
লাবিবা: খুব মজা হবে।
সবাই বলল, হ্যাঁ।
দেখতে দেখতে নাস্তার সময় হয়ে গেল। সবাই নাস্তা খেতে নিজ নিজ বাসায় যাওয়ার সময় বল্টুদের বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন বল্টুর বাবাকে দারোয়ানের সঙ্গে চিন্তিত হয়ে কথা বলতে দেখলাম। খুব দূর দিয়ে হাঁটছিলাম না, তাই সব শুনতে পারছিলাম।
বল্টুর বাবা: যে লকারে আমার অনুষ্ঠানের টাকাগুলো ছিল তা সব চুরি হয়ে গেছে।
দারোয়ান: কীভাবে?
বল্টুর বাবা: আমি কীভাবে জানব? তোমার তো জানার দরকার।
দারোয়ান: আমি তো কিছু দেখিনি বা শুনিনি। পুলিশকে বলুন।
বল্টুর বাবা: বলেছি, তারা কিছু খুঁজে পায়নি।
আমি: আমি দেখেছি। আপনার বাড়ির দোতালার পেছনের জানালা দিয়ে কে যেন বের হচ্ছে। তখন
আমি ভেবেছিলাম বিড়াল।
লাবিবা: এখন টাকাগুলো হারিয়ে গেছে। দুপুরের অনুষ্ঠানটা কীভাবে হবে?
আমি: আমরা যদি টাকাগুলো খোঁজার চেষ্টা করি।
আয়শা: হ্যা! খোঁজার চেষ্টা করি।
সারা: আগে বাসা থেকে নাস্তা খেয়ে আসি।
সবাই বলল, ঠিক আছে।
নাস্তা খেয়ে আমরা বল্টুর বাড়ির পেছনে যে জায়গা ছিল সেখানে যাই। যেখানে একটি বিল্ডিং তৈরি হবে। কাজ এখনো শুরু হয়নি। সেখান থেকে বল্টুর বাড়ির দোতালার জানালা খুব ভালো করে দেখা যায়। আমি নিচে তাকিয়ে দেখি একটি ৫০০ টাকার নোট নিচে পড়ে আছে।
আমি: দেখ নিচে ৫০০ টাকার একটি নোট পড়ে আছে।
সারা: চোর চুরি করার সময় হয়তো পড়ে গেছে।
[টাকাটা বাঁকা হয়ে পড়েছিল]
মিতু: যদি আমরা টাকাটা যেদিকে পড়ে আছে সেদিকে যাই।
আয়শা: ঠিক আছে চল।
টাকাটার দিকে যেতে যেতে আমরা একটা অন্ধকার গলি দেখতে পেলাম।
আমি: চল এর ভেতরে যাই।
মিতু: না, আমার ভয় লাগছে।
সারা: ভয়ের কী আছে? চল।
আমরা গলিটির ভেতর যাই। গলিটি ছিল ছোট ও দুই বিল্ডিংয়ের মাঝখানে। বাম দিকের দেওয়ালে কী যেন লেখা খুবই বড় করে।
আয়শা: এটা কী লেখা?
সারা: ভিন্ন ভাষায় মনে হয়।
লাবিবা: আরে গাধারা এটা বাংলাই কিন্তু উল্টা করে লেখা।
আমি: কী লেখা?
লাবিবা উচ্চস্বরে বলে ‘এখানে’।
মিতু: কী এখানে?
লাবিবা: না! লেখাই এখানে।
আমি: তার মানে এখানে কিছু আছে।
সারা: দেখ নিচে একটা পাপোশ।
আমি পাপোশটি সরালাম দেখি নিচে একটা গর্ত আর বাম দিকে একটা মই।
আমি: এটা দিয়ে নামতে হবে।
সারা: চল।
আমরা নিচে নেমে দেখি একটা রুম। রুমের ভেতর একটি বস্তা। এর ভেতর সব টাকা আছে। টাকাটা পাওয়ার পর বল্টুর বাবাকে এই খবরটা দিই। বল্টুর বাবা খুব খুশি হন ও আমাদের নানান উপহার দেন এবং সবাইকে বলেন যে, আমরা টাকাগুলো খুঁজে পাই। পুলিশ পরে বের করে যে, অন্য এলাকার চোররা সবাই একজোট হয়ে প্ল্যান করে টাকা চুরি করার। পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায় ও দুপুরে এলাকার সবাই বল্টুদের বাড়িতে খায়। খুব মজা হয় ও ঈদের দিনের এই অভিযানটাও ভালো লেগেছে।

হুমায়রা রহমান আনিশা

ষষ্ঠ শ্রেণি

ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

বনশ্রী শাখা, ঢাকা

জাহ্নবী

গরমের ছড়া

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
গরমের ছড়া

গ্রী‌ষ্মের সূর্য
জিকরুল ইসলাম

সূর্য মামা গ্রীষ্মকা‌লে
রা‌গে একটু বেশি
রে‌গে গি‌য়ে গরম ছড়ায়
অতিষ্ট দেশবা‌সী

দাদু ঢা‌কে টাক মাথা‌কে
মস্ত ছাতা দি‌য়ে
বাবা মা‌য়ের ঝগড়া চ‌লে
হাত পাখাটা নি‌য়ে

খোকন শোনা খেল‌তে গি‌য়ে
গা‌য়ে ঝড়ায় ঘাম
সূর্য ব‌লে, কে-‌রে বাবা
কী তোমার নাম?
আমি হলাম গাঁ‌য়ের ছে‌লে
চল‌বে আমার কাজ
আমার কা‌ছে হে‌রে গি‌য়েও
নেই কি তোমার লাজ।

খুকুর মামার বাড়ি 
নকুল শর্ম্মা

মামার বাড়ি পদ্মপুকুর 
সেই পুকুরে সকাল দুপুর 
পদ্ম ফুলের মেলা,
খুকু দেখে প্রজাপতি
সঙ্গে নিয়ে খেলার সাথী
কাটায় সারাবেলা। 

পুকুরপাড়ে গাছের সারি 
পাকা খেজুর কাড়ি কাড়ি
ঝুলছে গাছে গাছে, 
খুকু বেড়ায় আপনমনে
আম কাঁঠালের বনে বনে 
খেলছে ঘূর্ণি নাচে।

বছর পরে মামার বাড়ি
চড়ে এলো রেলের গাড়ি 
দূরের শহর ছেড়ে, 
মাঠ পেরিয়ে সবুজ ঘাসে 
শিশির জলে মুক্তা হাসে
মন নিয়ে যায় কেড়ে।

বোশেখ মাসে
নুশরাত রুমু

বোশেখ মাসে ঝড় এলো রে
পড়ছে কাঁচা আম
খোকা-খুকু আয় কুড়াতে
টুকরি হাতে নাম।

শনশনিয়ে বাঁশের পাতা
দুলছে ভীষণ জোরে
দড়াম করে বন্ধ কপাট
পাগলা হাওয়ার ঘোরে।

উড়ছে ধুলো খুব দাপটে
যাবে না চোখ খোলা
মাঠের ওপার ঘন আঁধার
করছে আত্মভোলা।

কালো মেঘে কড়াৎ সুরে
ফেলছে শোনো বাজ
গ্রীষ্মকালে প্রকৃতিতে
চলে রুক্ষ সাজ।

গরমে নাকাল জীবন
জহিরুল হক বিদ্যুৎ

লাগছে গরম খুব বেশি
খোকার মুখে নাই হাসি
হাঁটছে এ ঘর ও ঘর,
করছে কেবল উহ আহ
বাড়ছে শুধুই তাপ দাহ
আসতে পারে জ্বর।
ভীষণ তাপে ঘুম হারাম
দাদুর মনে নাই আরাম
এপাশ-ওপাশ করে,
যাদের ঘরে নাই এসি
কষ্ট তাদের খুব বেশি
ঘাম যে শুধুই ঝরে।
পুড়ছে শহর রাস্তা-ঘাট
রৌদ্রে খাঁখাঁ দূরের মাঠ
সূর্যের আগুন দৃষ্টি,
হে দয়াময় দাও তুমি
ঠান্ডা করো এই ভূমি
নামাও অঝোর বৃষ্টি।

জাদুর পাখি
সাঈদুর রহমান লিটন 

মেলা থেকে কিনেছি এক লাল-খয়েরি পাখি
যত্ন করে পড়ার ঘরে আগলে আগলে রাখি।
মাঝে মাঝে গান গেয়ে যায় ভাটিয়ালি সুরে,
সেই পাখিটি ছেড়ে দিলে আমার পাশে ঘোরে।
বাড়ির পাশে আম বাগানে আম পাতার মাঝে
লুকিয়ে থাকে চুপটি করে আমের পাতার ভাঁজে। 
খুঁজে তারে না পাই যদি ফিসফিসিয়ে ডাকে
হঠাৎ করে করে উড়ে যাবে পলক পড়ার ফাঁকে।
লম্বা লেজে গাজের ডালে হেলেদুলে হাঁটে
আমার হাতে বসে বসে যাবে খেলার মাঠে।
সবার সাথে ভাব জমিয়ে বুট ভাঁজা সে খাবে
সবার চোখে ধুলো দিয়ে বাড়ি চলে যাবে।
সন্ধ্যা হলে পড়ার ঘরে একটু একটু পড়ে
সেই পড়াটি জাদুর পাখি এই আমাকে ধরে।
যেই বা আমি পাখি পড়া আর পারি না পড়তে
মুচকি হাসি হেসে আমায় বলে কানটি ধরতে।

আমাদের ছোট গ্রাম
মো. দিদারুল ইসলাম 

আমাদের ছোট গ্রাম ছিল সুখে ভরা,
পথ-ঘাটে ছায়া ছিল, ছিল নাকো খরা।
সবুজ গাছের সারি ছোট ঘরবাড়ি,
ঘাসে ঢাকা সরু পথে ছিল নাকো গাড়ি।
গাছে গাছে আম-জাম ছিল কত ফল,
মেহমান এলে ঘরে দিত মুড়ি জল।
ফসলের মাঠ ছিল সারা গাঁওজুড়ে,
দলবেঁধে পাখিসব নীড়ে যেত  উড়ে।
গ্রামের পাশেই ছিল টলটলে নদী,
খোকা-খুকি ডুব দিত ফাঁক পেত যদি।
জেলেদের জালে ছিল মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে,
গুণ টানা নাও ছিল নদীর ঐ বাঁকে।
বরষার জল এলে মাটি পেত প্রাণ,
দখিনা পবনে ছিল ফসলের ঘ্রাণ।
আমাদের গ্রামে নেই অতীতের বায়ু,
দূষণের চাপে পড়ে কমে গেছে আয়ু।

লাগছে ভীষণ গরম
জোবায়ের রাজু 

ভীষণ গরম পড়ছে এখন
শরীর ভিজে ঘামে,
তাই তো খোকা স্নান করিতে 
জলের ঘাটে নামে।

পুকুরের জল নয়তো শীতল
গরম রবির তাপে,
পুকুরপাড়ে শালিক পাখি
কষ্ট পেয়ে কাঁপে।

দীর্ঘ সময় ধরে খোকা
সাঁতার কাটে খুব,
বারে বারে দিচ্ছে খোকা
মাঝ পুকুরে ডুব।

এমন গরম পড়ছে কেন
নড়ছে না তো পাতা,
রোদের তাপে খোকার দাদু
মাথায় দিলেন ছাতা।

জানালার সব কপাটগুলো 
রাখা আছে খোলা,
একটুখানি বাতাস এসে 
দেয় যদি দেয় দোলা।

এমন গরম ভাল্লাগে না
খারাপ খোকার মন,
ভাবছে খোকা শীতের বুড়ি
আসবে যে কখন!

গরমের ঘোরে
হাফিজুর রহমান

ডিম পাড়া মুরগিটা
গরমেতে হাঁসফাঁস,
তাপ মাখা বাতাসের 
বৈশাখ এই মাস।

হাই তুলে হাঁপানোয়
উচ্চ ডানায়,
পুকুরের জলে হাসে
মাছের ছানায়।

সূর্য দোলায় জল
দোলে গাছ-পাতা,
এই দেখে মুরগিরও
ঘুরছে যে মাথা।

ঝড় চাই বৃষ্টি চাই
এম. আব্দুল হালীম বাচ্চু 

বৈশাখী ঝড় চাই সাথে টানা বৃষ্টি
আকাশের দিকে আর দেব কত দৃষ্টি!
আয় মেঘ ছুটে আয় সারা দেশজুড়ে
পাই যেন শীতলতা পথঘাট ঘুরে।

মাঠঘাট ভিজে যাক উবে যাক তাপ
খাল বিলে ডেকে ডেকে ব্যাং দিক ঝাঁপ!
শিশুদের খেলাধুলা হোক অবারিত
কৃষকেরা কৃষিকাজে হোক পুলকিত।

আগুনের মতো এই বৈশাখ মাসে
পাখিদের নীড়ে যেন সুখ ফিরে আসে।
রাতে হোক দিনে হোক চাই ঝড় বৃষ্টি
ফিরে চাই আগেকার বৈশাখী কৃষ্টি।

জাহ্নবী