আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে ভোট৷ জেলাগুলোর অন্তর্গত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে রয়েছে চারটি ইলেকশন বুথ ৷ এই বুথগুলোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওপারে থাকা ভোটারদের জন্য এক ঘণ্টা গেট খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে বিস্তীর্ণ এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। ইতিমধ্যেই সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশ ও ভারত-ভুটান সীমান্তের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে যানবাহন ও দুই দেশের মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন বলেন, "ভোটের জন্য ভুটানের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। যার যে রকম নিয়ম আছে সেটাই মেনে চলা হবে। ভোটের আগে দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ থাকবে। ভুটানের দিকটা এসএসবি দেখবে এবং ভারত-বাংলাদেশের দিকটা পুরোপুরি বিএসএফ দেখছে। আমাদের আন্তর্জাতিক সীমান্তে চারটে নাকা চেকিং পয়েন্ট আছে। এ ছাড়া আমাদের জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের চারটি এমন বুথ আছে, যা কি না কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে আছে। ফলে ভোট শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগে সিএসএফ গেট খুলে দেবে। ভোট দিতে কারও যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তার জন্যও বিএসএফ সব রকমভাবে সাহায্য করবে।"
জলপাইগুড়ি জেলার একদিকে ভারত-ভুটান সীমান্ত এবং অন্যদিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। ভারত-ভুটান সীমান্ত রয়েছে ৪৪ কিলোমিটার এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে ৯৪ কিলোমিটার। জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত নাগরাকাটা, চামুর্চি এলাকায় সীমান্তের ভুটান গেট এসএসবি নিরাপত্তা দেয়। ইতিমধ্যেই সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বিএসএফের নিরাপত্তার আওতায়৷ জলপাইগুড়ি সেক্টরের ৫২টি বর্ডার আউট পোস্টেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কাঁটাতারহীন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার বাংলাবান্ধা ও কোচবিহার জেলার চ্যারাবান্ধায় আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে দুই দেশের যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের সাহায্য নিয়ে নাকা চেকিং করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ার জেলার ভারত-ভুটান সীমান্তের গেট বন্ধ করা হয়েছে। শুক্রবার ভোটপর্ব মিটে গেলে ফের ভারত-ভুটান ও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ চালু হবে।
লোকসভা ভোট : ভবিষ্যদ্বক্তাদের ৫০ লাখের চ্যালেঞ্জ!
অলৌকিক ক্ষমতার দাবিদারকে ৫০ লাখ টাকার খোলা চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জ? কে জানাচ্ছেন? ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সহ-সভাপতি সন্তোষ শর্মা এই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন সব রাজনৈতিক নেতানেত্রীকে৷
ভারতে শুরু হচ্ছে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন ২০২৪। ভারতীয় লোকসভা নির্বাচনের গণনা এবং ফল ঘোষণা ৪ জুন। এই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর স্পষ্ট হয়ে যাবে কোন দল কেন্দ্রের ক্ষমতায় বসবে।
সন্তোষ শর্মা বলেন, “এই লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-কে কেন্দ্র করে আমি ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সহ-সভাপতি সন্তোষ শর্মা সেই সকল যোগী, রেইকি-গ্র্যান্ডমাস্টার, ফেংশুই বিশেষজ্ঞ, বাস্তু বিশেষজ্ঞ, জ্যোতিষী, তান্ত্রিক, ওঝা, গুণীন ও উপাসনা-ধর্মের গুরু, বাবাজী বা অলৌকিক ক্ষমতার দাবিদারকে ৫০ লাখ টাকার খোলা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, যারা দাবি করেন জ্যোতিষশাস্ত্রের সাহায্যে বা অলৌকিক ক্ষমতাবলে সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব।”
“খোলা চ্যালেঞ্জ, যদি কোনো জ্যোতিষী, তান্ত্রিক বা অলৌকিক ক্ষমতার দাবিদার লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সম্পর্কিত নিম্নলিখিত ১৮টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে ২ জুন ২০২৪ পর্যন্ত ইমেলের মাধ্যমে দিতে পারেন। সাধারণ নির্বাচনের ২০২৪-এর গণনা এবং ফল ঘোষণা ৪ জুন হবে। এক পর সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করা উত্তরদাতাকে চ্যালেঞ্জ জেতার জন্য ৫০ লাভ টাকা প্রদান করা হবে।”
ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির শর্ত, ১৮টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে ইমেলের মাধ্যমে আমাকে পাঠানোর অন্তিম তারিখ ২ জুন ২০২৪ পর্যন্ত।
লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সম্পর্কিত নিম্নলিখিত ১৮টি প্রশ্ন করেছেন ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সহ-সভাপতি। কয়েকটি প্রশ্ন হলো, বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি) কতগুলো লোকসভা আসনে জয়লাভ করবে? আইএনসি (ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস) কতগুলো লোকসভা আসনে জয়লাভ করবে?
প্রশ্ন-৩, সিপিআইএম (ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)) কতগুলো লোকসভা আসনে জয়লাভ করবে? বিএসপি (বহুজন সমাজ পার্টি) কতগুলো লোকসভা আসনে জয়লাভ করবে? এনপিপি (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি) কতগুলো লোকসভা আসনে জয়লাভ করবে? এএপি (আম আদমি পার্টি) কতগুলো লোকসভা আসনে জয়লাভ করবে? টিএমসি (তৃণমূল কংগ্রেস) কতগুলো লোকসভা আসনে জয়লাভ করবে?
মানুষ না যাওয়া পর্যন্ত ইসরোর চন্দ্রাভিযান চলবে
ইসরোর সাফল্য অব্যাহত। মুকুটে একাধিক পালক জুড়েছে ইতিমধ্যেই। আরও অনেক পথচলা বাকি। চন্দ্রযান ৩-এর অবিশ্বাস্য সাফল্যের পর এবার চন্দ্রযান-৪ নিয়ে মাতামাতি চলছে। এর মধ্যেই গগনযানে চাপিয়ে মহাকাশে মানুষ নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ইসরো-প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, চাঁদে মানুষ নিয়ে যাওয়াই অন্যতম লক্ষ্য। যত দিন না সে লক্ষ্য পূরণ হয়, তত দিন চাঁদে মহাকাশযান থুড়ি চন্দ্রযানই পাঠিয়ে যাবে ইসরো।
গত ২৩ আগস্ট চাঁদ ছুঁয়েছে ইসরো। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করেছিল চন্দ্রযান-৩। আর সামগ্রিকভাবে চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের পৃষ্ঠে মহাকাশযান নামিয়ে কৃতিত্ব অর্জন করেছে ইসরো। তারপর ১৪ দিন ধরে চাঁদের বুকে একাধিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান। টাস্ক শেষ করে চাঁদের পিঠে ঘুমিয়ে পড়েছে দুই 'সহোদর'।
ইসরো-কর্তা বলছেন, চাঁদে যান পাঠানোই একমাত্র লক্ষ্য নয়, সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হলো চাঁদে মানুষ পাঠানো। ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর মিশন সফল করতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৬ বছরের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না এখনো স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি ইসরো। এস সোমনাথ বলছেন, চাঁদে মানুষ নিয়ে যাওয়ার জন্য সেই মতো অত্যাধুনিক যান তৈরি করতে হবে। এটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ইসরোর কাছে অসম্ভব নয়। যত দিন না সেই চ্যালেঞ্জ পূরণ হচ্ছে, তত দিন চাঁদে চন্দ্রযান পাঠিয়েই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৪ মিশন খুব তাড়াতাড়ি আসবে। এটি হবে আরও বড়, আরও রাজকীয়। কারণ শুধু চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটিতে নেমেই গ্যাঁট হয়ে বসে থাকবে না, চাঁদের মাটি সঙ্গে নিয়ে ফিরবে পৃথিবীতে। ‘মামার বাড়ি ভারী মজা’ হলেও এবার আর চন্দ্রযানকে চাঁদে রেখে দেবে না ইসরো। ফিরিয়ে আনবে পৃথিবীতে।
পাঁচখানা ভারী যন্ত্র নিয়ে উৎক্ষেপণ খুব জটিল হবে বলেই দুই পর্যায়ে চন্দ্রযান ৪-এর উৎক্ষেপণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরো। প্রোপালশন মডিউল, ডিসেন্ডার মডিউল ও অ্যাসেন্ডার মডিউল নিয়ে উড়ে যাবে LVM3 রকেট। এই উৎক্ষেপণ চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মতোই হবে। বাকি দুটি মডিউলকে নিয়ে উড়বে ইসরোর আধুনিক PSLV রকেট। এতে চাপিয়ে মহাকাশে পাঠানো হবে ট্রান্সফার মডিউল এবং রি-এন্ট্রি মডিউলকে। তবে কোনটির উৎক্ষেপণ আগে এবং কোনটির পরে, তা এখনো খোলসা করেনি ইসরো।
লেখক: কলকাতা প্রতিনিধি, খবরের কাগজ