প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর নির্ধারিত সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। আল্লাহ বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ কায়েম করা মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)। নামাজ আদায় করতে গিয়ে আমাদের কিছু ভুল হয়; এগুলো মূলত প্রচলিত ভুল। এখানে তেমন ৫টি ভুল নিয়ে আলোচনা করা হলো—
তাড়াহুড়ো করা: নামাজে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজ ধীরস্থিরভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় চোর ওই ব্যক্তি, যে তার নামাজ চুরি করে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সে কিভাবে নামাজ চুরি করে? তিনি বলেন, ‘সে নামাজে রুকু ও সিজদা স্থিরতার সঙ্গে পূর্ণভাবে আদায় করে না।” (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২২৬৯৫)
জামাত চলাকালে সুন্নত নামাজ পড়া: অনেক মুসল্লি আছেন, জামাত চলাকালেও সুন্নত নামাজ পড়তে থাকেন। এমনটি করতে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন জামাতের ইকামাত হয়ে যায়, তখন ফরজ নামাজ ছাড়া আর কোনো নামাজ নেই।’ (মুসলিম, হাদিস: ৭১০)
ইমামের সঙ্গে রুকু-সিজদা করা: ইমাম ‘আল্লাহু আকবার’ বলার পর মুক্তাদি ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। অনুরূপভাবে ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলবে। রুকু, সিজদা এবং সালাম ফিরাবে ইমামের পর। ইমামের সঙ্গে সঙ্গে কোনো কাজ করবে না।
সালাম ফেরানোর পরপরই দাঁড়িয়ে যাওয়া: অনেক মুসল্লি ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পরপরই সুন্নত আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে যান, এটি ঠিক নয়। সুন্নত হলো, ফরজ আদায়ের পর মাসনুন দোয়া, জিকির ও তাসবিহ-তাহলিল পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যদি অজু ভেঙে না যাওয়া পর্যন্ত নামাজের জায়গায় বসে থাকে, তবে তার জন্য ফেরেশতারা এ বলে দোয়া করে যে, ‘হে আল্লাহ, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও, হে আল্লাহ, তুমি তাকে রহমত করো।” (বুখারি, হাদিস: ৬২৬)
একাকী ফরজ নামাজ পড়া: অনেকে ফরজ নামাজ একাকী আদায় করে থাকেন, এটা ঠিক নয়। একাকী নামাজের তুলনায় জামাতে নামাজ পড়া উত্তম। আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, “একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজ শেষ করার পর এক লোক মসজিদে প্রবেশ করল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে আছে যে, এ ব্যক্তির সঙ্গে দাঁড়িয়ে (জামাতে নামাজ আদায় করে) সদকা প্রদান করার সাওয়াব অর্জন করবে? তখন এক লোক আগত ব্যক্তির সঙ্গে পুনরায় (জামাতে) নামাজ আদায় করলেন।” (বুখারি)
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক